ত্রিপুরা-পাঞ্জাবে টলমল BJP, পরীক্ষায় মোদী-শাহ

বিশেষ প্রতিবেদন: কৃষি আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে শংকিত বিজেপি পাঞ্জাব বিধানসভা ভোটের আগেই বিরাট ভাঙনের মুখে। ঠিক যেমন করে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভোটে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস…

narendta modi and amit shah

বিশেষ প্রতিবেদন: কৃষি আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে শংকিত বিজেপি পাঞ্জাব বিধানসভা ভোটের আগেই বিরাট ভাঙনের মুখে। ঠিক যেমন করে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভোটে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার হিড়িক লেগেছিল। পাঞ্জাবে বিজেপি শিবিরের পুরনো সহযোগী শিরোমনি আকালি দলে ভিড়ছেন ‘জয় শ্রীরাম’ বলা নেতা কর্মীরা।

একইভাবে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরায় শাসক বিজেপিতে চরম সঙ্কটে। তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে যাওয়ার জন্য অনেকেই সরাসরি কলকাতায় ফোনাফুনি শুরু করেছেন। শাসক দলের ভিতর চওড়া হচ্ছে ভাঙন।
মোদী-শাহ, মমতা, কেজরি, রাহুল, CPIM সবার পরীক্ষা

(১) আগামী বছর ২০২২ সালে পাঞ্জাবে ভোট। ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় ভোট। দেশের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের নির্বাচনে মোদী-শাহের অগ্নিপরীক্ষা। দুজনেই পশ্চিমবঙ্গ দখলে ব্যর্থ হয়েছেন।

(২) পরীক্ষায় বসবে সিপিআইএম। দলটি ত্রিপুরায় টানা ২৫ বছর সরকারে ছিল। গত বিধানসভায় সেই বাম সরকারের পতন হয়। ত্রিপুরায় এখন তারা প্রধান বিরোধী দল। পশ্চিমবঙ্গে শূন্য হলেও কেরলে পরপর দুবার সরকার তারা গড়েছে। ত্রিপুরায় ফিরে আসতে মরিয়া মানিক সরকার।

(৩) পরীক্ষা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতারও। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে টানা তিনবার সরকার গড়েছেন তিনি। দেশের অপর বাংলাভাষী প্রধান রাজ্যে তিনি রাজত্ব সম্প্রসারণে মরিয়া।

(৪) পরীক্ষা দেবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। টানা তিনবার দিল্লির সরকারে আম আদমি পার্টি। পাঞ্জাবে তারা অন্যতম শক্তি। কেজরির লক্ষ্য অন্তত পাঞ্জাবে বিরোধী আসন।

(৫) কেরল দখলে ব্যর্থ হয়ে পাঞ্জাবের মতো দুর্গ ধরে রাখার পরীক্ষায় নামছে কংগ্রেস। সেনিয়া-রাহুল গান্ধীর পাখির চোখ পাঞ্জাব।

পরীক্ষার্থীদের দিকে চোখ রাখলে স্পষ্ট হয় দেশের তাবড় তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অগ্নিপরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। পাঞ্জাব ও ত্রিপুরার ভোট লড়াইয়ে যারা যারা কুর্সিতে যাবে তাদের কাছে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে স্বস্তিকর।

ইতিমধ্যে পাঞ্জাবে বিজেপির অবস্থা সঙ্গীন। কৃষি আইন বিরোধিতার পক্ষে গিয়ে এনডিএ জোটের অতি বিশ্বস্ত শিরোমনি আকালি দল একলা হয়ে গিয়েছে। গতবার তাদের বদান্যতায় পাঞ্জাবে কিছু আসন ছিল বিজেপির দখলে। সদ্য কয়েকটি পুরসভা ও স্থানীয় ভোটে বিজেপি একা লড়ে করুণ অবস্থায়। লেগেছে দলত্যাগ হিড়িক। বরং উঠে এসেছে আম আদমি পার্টি।

ত্রিপুরায় রাতারাতি তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে গিয়ে পাঁচবছর আগে মোদী ঝড়ের ফায়দায় বাম রাজ্যটি ‘রাম রাজ্য’ হয়েছিল। সেই ত্রিপুরায় এখন বিজেপির বিধায়করা মমতা শিবিরে ঢুকতে হত্যে দিতে শুরু করেছেন। দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারবার গিয়েও পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না। দলকে চাঙ্গা করতে বিজেপি বিধায়কের গলায় হাড় গুঁড়ো করার হুঁশিয়ারি তো তালিবানি রীতিতে মারধরের হুমকি শোনা যাচ্ছে। এতে বিব্রত বিজেপি। তার সঙ্গে জুটেছে ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি না পূরণের ক্ষোভ।
সবমিলে রাজনৈতিক লড়াইয়ে দুই রাজ্যে চাপে বিজেপি। ফায়দা লুঠবে কে?