নিউজ ডেস্ক: স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সামলেছেন মোট ৪৮ জন। সম্প্রতি ৪৮ তম প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের (Chief Justice of India, Supreme Court) দায়িত্ব নিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টের নুথালপাটি ভেঙ্কট রামন। মোট ৪৮ জন প্রধান বিচারপতির প্রত্যেকেই ছিলেন পুরুষ। কিন্তু আর মাত্র ছ’বছর পর তৈরি হতে পারে ইতিহাস, দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের সর্বোচ্চ পদে বসতে পারেন এক মহিলা।
আরও পড়ুন সংসদের বাদল অধিবেশনে বিরোধীদের ‘হাঙ্গমায়’ ক্ষতি ১৩০ কোটি টাকা
বিভি নাগরথনা। বর্তমানে কর্ণাটক হাইকোর্টের অন্যতম বিচারপতি। আইনজীবি হিসেবে বেঙ্গালুরুতে নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। প্র্যাকটিসের ক্ষেত্র ছিল সাংবিধানিক আইন, বাণিজ্যিক আইন, বীমা আইন, পরিষেবা আইন, প্রশাসনিক ও পাবলিক আইন, জমি সংক্রান্ত আইন, পারিবারিক আইন, পরিবহন সম্পর্কিত আইন প্রভৃতি। ২০০৮ সালে নিযুক্ত হন অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে। দু’বছর পর, ২০১০ সালে উন্নীত হন কর্ণাটক হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি পদে।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া তার দেওয়া যুগান্তকারী রায়গুলির মধ্যে একটি। ২০১২ সালে একটি মামলার রায়ে তিনি লিখেছিলেন, “যদিও তথ্যের সত্যিকারের প্রচার কোনও ব্রডকাস্টিং চ্যানেলের অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা, ‘ব্রেকিং নিউজ’, ‘ফ্ল্যাশ নিউজ’ বা অন্য কোনও আকারে অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি করা অবশ্যই বন্ধ করা উচিত।” তিনি গণমাধ্যমগুলিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত এবং সংবিধিবদ্ধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্যও কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেন।
২০১৯ সালের একটি রায়ে, নাগরথনা আরেকটি য্যগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেন। তিনি রায় দেন যে মন্দির কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয় এবং মন্দিরের কর্মচারীরা পেমেন্ট অফ গ্র্যাচুইটি আইনের অধীনে গ্র্যাচুইটি পাওয়ার অধিকারী নয়। কিন্তু কর্ণাটক হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং দাতব্য এনডাউমেন্ট আইনের অধীনে তাঁরা এই সুবিধা পেতে পারে।
সম্প্রতি তিন মহিলা সহ ন’জন নতুন বিচারক সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত হয়েছেন। ফলে বিভি নাগরথনার ২০২৭ সালে ভারতের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যদিও নাগরথনা পরিবারে তিনিই প্রথম সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদে বসবেন না। ১৯৮৯ সালে তাঁর বাবা, জাস্টিস এঙ্গালাগুপ্পে সিতারামাইয়া ভেঙ্কটারামিয়াও ছ’মাসের জন্য এই দায়িত্ব সামলেছিলেন।
নাগরথনা ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত অন্য দুই মহিলা বিচারক হলেন তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিমা কোহলি, গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টে যে অন্য বিচারপতিদের নিয়োগ করা হয়েছে তাঁরা হলেন কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি সিটি রভিকুমার, মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ, বিচারপতি অভয় শ্রীনিবাস ওকা (কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি বিক্রম নাথ (গুজরাট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি জিতেন্দ্র কুমার মহেশ্বরী (সিকিম হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি) এবং সিনিয়র অ্যাডভোকেট এবং প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল পি এস নরসিংহ।
মোট ৩৪ জন বিচারক রয়েছেন ভারতের শীর্ষ আদালতে। মোট শূন্যপদ ছিল ১০টি। ন’জন বিচারক নিয়োগ হওয়ায় আর মাত্র একটি শূন্যপদ পড়ে রইল সুপ্রিম কোর্টে।