‘একই বৃন্তে’ শব্দ দু’টির কথা আমরা কম-বেশি সকলেই পড়েছি বা জেনেছি। দীঘা (Digha), গঙ্গাসাগরের (Gangasagar) ক্ষেত্রেও একই কথা বলা চলে৷ একই রাজ্যের দু’টি জায়গায়। উভয়স্থলই মানুষের প্রিয়। আপন মহীমায় বিরাজমান। তবুও করোনা-বেলায় (Covid 19) দীঘা, সাগর একই বৃন্তের হয়েও যেন সুয়োরাণী এবং দুয়োরাণী। করোনা বাবাজীবন এসে বসিয়ে দিয়েছে ভেদাভেদের প্রাচীর৷
রাজ্য সরকারের বক্তব্য, নোনা জলে করোনার চলাচল অচল। তাই হোক মেলা। কলকাতা হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে মেলা হওয়ার পক্ষেই রায় দিয়েছে৷ জমিয়ে ঠান্ডা পড়েছে, ধর্মের ব্যাপার, সামনে গঙ্গার পার। বসবে মেলা। দারুণ আমেজ! ‘বিশ্বাসে মিলায়ে বস্তু, তর্কে বহুদূর’। শহুরে ব্যস্ততা, কোলাহল, কংক্রিটের জঙ্গল, করোনার পরিসংখ্যান পিছনে ফেলে চলুন যাই গঙ্গাসাগর!
সাগরে যেমন উৎসবের আমেজ, দীঘায় তেমনই লকডাউনের আমেজ। ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের। খালি করে দেওয়া হয়েছে হোটল। কারণ সেই করোনা। যে করোনা ভয় পায় নোনা জলকে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন জাগে, দীঘার সমুদ্রের কি নোনা নয়, স্বাদু জল? কারণ গঙ্গাসাগর মেলা করার জন্য রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, নোনা জলে করোনা ছড়ায় না। সরকার যখন বলেছে, তখন সেটাই নিশ্চয় ঠিক?
নোনা জলে করোনা যদি না থাকে তাহলে দীঘা কেন শুনশান? এ প্রশ্নের উত্তর কী কী হতে পারে। ধ্রুবকের মতো এটা ধরে রাখতে হবে রাজ্য সরকারের যুক্তিটাই শিরোধার্য। তাহলে দীঘা খালি করার পিছনে সম্ভাব্য যুক্তি- দীঘার সমুদ্রের জলের চরিত্র কি বদলাতে শুরু করেছে? এখন কি আর সেই জল নোনা নয়? অপর যুক্তি হতে পারে, সাগর এবং দীঘায় আলাদা আলাদা প্রজাতির করোনা রয়েছে। তেমনটা হলে তো এক বিস্ময়কর ব্যাপার! সম্ভবত বিজ্ঞানীরদের হাতেও এই তথ্য এসে পৌঁছয়নি। আবিষ্কর্তা আমাদের রাজ্য সরকার? আপনাদের কি মনে হয়? করোনা আবহে রাজ্য জুড়ে চলছে চরম বিতর্ক।