নিউজ ডেস্ক: উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম ও মিজোরামের পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ৷ দুই রাজ্য পুলিশের মধ্যে ছয় ঘণ্টা ধরে লড়াই চলল৷ এই লড়াইয়ে অসমের ছয় পুলিশ কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আর ৮০।
সোমবার লায়লাপুর সীমানার কাছে অসমের দিকে আসছিলেন কিছু সরকারি কর্মী। তখন উত্তেজিত জনতা তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। এরপর অসম সরকার সীমানায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করে। শুরু হয় দুই মুখ্যমন্ত্রীর টুইট-যুদ্ধ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে টুইট করে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা বলেন, ”আপনি দয়া করে বিষয়টি দেখুন। এখনই এই সব বন্ধ করুন।” অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও টুইট করে অমিত শাহকে বলেন, ”এভাবে সরকার চালান যায় না।” দুই মুখ্যমন্ত্রী টুইটের সঙ্গে করে ভিডিও শেয়ার করেন।
এরপর শুরু হয় দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ। অসমের অভিযোগ, মিজোরাম লায়লাপুরে জঙ্গল কেটে রাস্তা তৈরি করছে পুলিশের একটি ক্যাম্প তৈরির জন্য। অসম সেটা চায় না। অসমের পুলিশ বাহিনীকে প্রথমে দুষ্কৃতীরা আক্রমণ করে। তারপর মিজোরাম পুলিশ আক্রমণ চালায়। তারা লাইট মেশিন গান ব্যবহার করেছে বলেও অসম পুলিশ জানিয়েছে।
মিজোরাম সরকার জানিয়েছে, অসম পুলিশ সীমানা পেরিয়ে তাদের দিকে এসে কোলাসিবে একটি পুলিশের ক্যাম্প ভেঙে দেয়। তারা জাতীয় সড়কে আসে, গাড়ি ভাঙচুর করে এবং মিজো পুলিশের উপর গুলি চালায়।
দুই দিন আগেই শিলংয়ে উত্তর পূর্বের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অমিত শাহ। তারপরেই এই কাণ্ডে উত্তাল উত্তর-পূর্ব ভারত। অমিত শাহ জোরামথাঙ্গা এবং হিমন্ত বিশ্বশর্মা দুই জনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাদের অবিলম্বে বিরোধ মিটিয়ে নিতে বলেছেন।
অসম ও মিজোরামের সীমানা-বিরোধ নতুন নয়। গত জুন মাসেও দুই রাজ্য বিরোধে জড়িয়েছিল। মিজোরামের সঙ্গে অসমের ১৬৪ কিলোমিটার লম্বা সীমানা রয়েছে। মিজোরামের তিন জেলা আইজল, কোলাসিব ও মামিট ও অসমের কাছার, হাইলাকান্দি ও শিলচর সীমানায় অবস্থিত। অসমের মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার শিলচর সফরে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, মিজোরামের পুলিশ কীভাবে আক্রমণ করেছে, তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।
মিজোরাম সরকার সীমানা নির্ধারণের জন্য বাউন্ডারি কমিশন গঠন করেছে। তবে শুধু মিজোরাম নয়, মেঘালয় এবং অরুণাচলের সঙ্গেও অসমের সীমানা-বিরোধ আছে। তবে দেশের মধ্যে দুইটি রাজ্য যেভাবে সীমানা বিরোধে জড়িয়েছে, দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে লড়াই হচ্ছে, পুলিশ কর্মী মারা যাচ্ছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে পরিস্থিতি কতটা খারাপ। আর এই সংঘর্ষ খুব একটা ভালো ছবি তুলে ধরছে না।