News Desk: চলতি বছরে পদ্মশ্রী (Padma Shri) সম্মানে সম্মানিতদের মধ্যে রয়েছেন মহম্মদ শরিফ (md Shaeif)। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার এই বাসিন্দা সোমবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের (Rannath Kobind) হাত থেকে পদ্ম সম্মান গ্রহণ করেন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। চাচা রাষ্ট্রপতির দিকে এগিয়ে যেতেই প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। মহম্মদ শরিফ পেশায় একজন সাইকেল মিস্ত্রি। এহেন ব্যক্তিকে কেন পদ্ম সম্মান দেওয়া হল তা জানতে সকলেই আগ্রহী।
১৯৯২ সাল। করসেবকদের গাঁইতি ও হাতুড়ির ঘায়ে ভেঙে পড়ল বাবরি মসজিদ। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল সাম্প্রদায়িকতার বিষ। সেই বিষবাষ্পে প্রাণ গিয়েছিল চাচার ছেলে রইসের (rais)। রইস পেশায় ছিলেন একজন কেমিস্ট। সুলতানপুরে (sultanpur) নিজের কর্মস্থলে যাওয়ার পথে খুন হন তিনি। মৃত্যুর দুই দিন পর রেল লাইনের ধার থেকে রইসের দেহ উদ্ধার হয়। কুকুর, শিয়ালে ছিঁড়ে খেয়েছিল রইসের দেহ। ওই ঘটনা শরিফকে তীব্র নাড়া দিয়ে যায়। এরপর থেকে দীর্ঘ তিন দশক ধরে শরিফ চাচা থানা, রেলস্টেশন থেকে মর্গে মর্গে ঘুরে বেড়ান বেওয়ারিশ লাশের সন্ধান। কোন বেওয়ারিশ লাশ পেলেই নিজের হাতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
মৃত ব্যক্তি কোন ধর্মের মানুষ জানতে পারলে সেই ধর্ম অনুযায়ী শেষকৃত্যের সারেন চাচা। মৃতেরা যাতে একটু শান্তি ও মর্যাদা পায় সেজন্য মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষের শেষকৃত্য করেছেন তিনি।
গত তিন দশকে এভাবেই ২৫ হাজারের বেশি বেওয়ারিশ লাশের শেষকৃত্য হয়েছে চাচার হাতে। অযোধ্যা (ajodhya)ও সংলগ্ন এলাকার মানুষ একডাকে চেনে এই অশীতিপর মানুষটিকে। চেনে পুলিশও। তিন দিনের মধ্যে কোনও দেহের যদি কোনও দাবিদার না মেলে তবে পুলিশ সেই দেহটি শরিফ চাচার হাতে তুলে দেয়। তারপর কবর দেওয়া বা দাহ করার দায়িত্বটুকু পালন করেন এই মানুষটি।
ইতিমধ্যেই শরিফ ও চাচার এই সমাজসেবার কথা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আমির খানের সত্যমেব জয়তে টিভির অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শরিফ চাচা। গত বছরই তাঁর পদ্মশ্রী সম্মান নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাজনিত পরিস্থিতিতে পুদ্ম সম্মান প্রদান অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ পাননি তিনি।