নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের (winter season) শুরুতেই বিজেপি (BJP) সাংসদদের মধ্যে ছিল একটা গাছাড়া মনোভাব। অনেকেই সংসদ এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। এই বিষয়টি নজর এড়ায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi)। যে কারণে ৭ ডিসেম্বর সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সেই বৈঠকে বিজেপির ৩০৩ জন সাংসদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২৫০ জন। সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী হুমকি দেন, সাংসদরা ঠিকমতো কাজ না করলে আগামিদিনে তাঁদের সরিয়ে দিতে দ্বিতীয়বার ভাববে না দল।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই হুমকির পরেও বিজেপি সাংসদদের (bjp mp) মধ্যে তেমন কোনও ভাবান্তর লক্ষ্য করা যায়নি। বরং দেখা যাচ্ছে, যে সাংসদরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করছেন তাঁরাই সভায় উপস্থিত থাকছেন না।
মঙ্গলবার (tuesday) বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছে প্রশ্নকারী ৯ বিজেপি সাংসদ সভায় গরহাজির ছিলেন। অন্যদিকে প্রশ্ন করলেও সভায় হাজির ছিলেন না ৫ কংগ্রেস সাংসদ। বিজেপির অনুপস্থিত সাংসদদের তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের নাম।
সাধারণ নিয়ম হল, প্রশ্ন করার পর কোনও সাংসদ যদি অনুপস্থিত থাকেন তাহলে দল এবং স্পিকারকে সেটা জানাতে হয়। কিন্তু বিজেপির নয় অনুপস্থিতি সাংসদের কেউই সেটা করেননি। বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ছোট মেয়ের শারীরিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত সঙ্কটজনক। সেকারণেই তিনি দিল্লি যেতে পারেননি। তবে সে বিষয়টি তিনি কাউকে জানানোর প্রয়োজন আছে বলে মনে করেননি।
বিজেপি সংসদের এই আচরণে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, দলের মধ্যে মোদীর নিয়ন্ত্রণের রাশ ক্রমশই আলগা হচ্ছে। যদি সেটা না হত তবে প্রধানমন্ত্রী হুমকির পরেও এভাবে বিজেপি সাংসদরা সভায় অনুপস্থিত থাকতেন না। বিশেষ করে যে সমস্ত সাংসদ প্রশ্ন করেছেন তাঁদের অনুপস্থিতর তালিকাটা এত দীর্ঘ হত না। তবে যদি এই পরিস্থিতি বজায় থাকে তাহলে সেটা নিশ্চিতভাবেই মোদী-অমিত শাহর পক্ষে অত্যন্ত উদ্বেগের।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের এখনও আড়াই বছর বাকি আছে। কিন্তু বিজেপির সাংসদদের এই আচরণ যদি আরও বাড়তে থাকে তবে সেটা দল ও মোদীর পক্ষে বিশেষ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠবে। বিশেষ করে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে টিকিট পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিজেপি সাংসদদের মধ্যে অসন্তোষ আরও বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি প্রত্যেক সাংসদের উপর নজর রাখছেন। তাঁদের আচরণের ভিত্তিতেই টিকিট দেওয়ার বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। সে ক্ষেত্রে যাঁরা আগামী দিনে বাদ পড়তে পারেন এমন সম্ভাবনা তৈরি হবে বা প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহ যাদের বাদ দেবেন তাঁরা যে অবশ্যই বিরোধী শিবিরে গিয়ে ভিড়বেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।