নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (line of actual control) সংলগ্ন এলাকায় চিনের (China) সক্রিয়তা কমার কোনও চিহ্নই দেখা যাচ্ছে না। বরং সীমান্ত এলাকায় চিনের লালফৌজের (PLA) গতিবিধি ক্রমশই বাড়ছে।
কয়েকদিন আগেই উপগ্রহ চিত্রে (Satellite Picture) দেখা গিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশের (Arunachal Pradesh) সীমান্তে চিন রীতিমত একটি গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে। এমনকী, ভারত ভুটান (Bhutan) সীমান্তেও তৈরি হয়েছে চিনের গ্রাম। কিন্তু এবার সামনে এল আরও এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। জানা গিয়েছে পূর্ব লাদাখে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার একেবারে কাছেই একটি হাইওয়ে তৈরি করছে বেজিং। শুধু তাই নয়, সীমান্তের গা ঘেঁষে চিনের রকেট ও মিসাইল রেজিমেন্টকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবেই লালফৌজের এই অতি সক্রিয়তায় উদ্বেগে পড়েছে ভারত। পূর্ব লাদাখ সেক্টরের ঠিক বিপরীত দিকে এই হাইওয়ে তৈরি করছে চিন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রাস্তা তৈরির ফলে যে কোনও সময় ও পরিস্থিতিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে দ্রুত ভারতীয় ভূখণ্ডে পৌঁছে যাবে লাল ফৌজ। শুধু রাস্তা তৈরি নয়, সীমান্তে তারা রীতিমতো অস্ত্র মোতায়েনও করছে।
সম্প্রতি আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দেওয়া এক উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, তিব্বতের স্বশাসিত এলাকায় চিন রকেট ও মিসাইল মোতায়েন করেছে। সেনাবাহিনীকে লুকিয়ে রাখার জন্য তৈরি করেছে বিশেষ ধরনের বাঙ্কার। পাশাপাশি বাড়িয়েছে সেনার সংখ্যাও। একইভাবে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে বেজিং ড্রোন মোতায়েন করেছে। এই মুহূর্তে লালফৌজ তাদের পরিকল্পনাতেও কিছু বদল এনেছে। চিনা সেনা চাইছে, লাদাখের স্থানীয় বাসিন্দাদেরকেই ভারতের বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সীমান্তে চিনের প্রস্তুতি অনেকটাই পরিকল্পিত। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই তারা সীমান্তে সমরসজ্জা এবং পরিকাঠামো তৈরির কাজ চালাচ্ছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দফতর পেন্টাগন এক রিপোর্টে জানিয়েছে, তিব্বতের স্বশাসিত অঞ্চল এবং অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ১০০টি বাড়ি তৈরি করে রীতিমত একটি গ্রাম গড়ে ফেলেছে বেজিং। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায় বেড়েছে লাল ফৌজের সংখ্যাও।
যদিও নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রী তথা চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত জানিয়েছেন, ভারতীয় ভূখণ্ড ও সংলগ্ন এলাকায় চিন গ্রাম গড়ে তুলেছে এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। অন্যদিকে, দেশের বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, চিনকে ভয় পাচ্ছে মোদি সরকার। সে কারণেই তার চিনের যাবতীয় অবৈধ কার্যকলাপ দেখেও চোখ বুজে থাকছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সীমান্তে চিন তাদের সক্রিয়তা বাড়িয়েছে এমন কোনও প্রমাণ সরকারের কাছে নেই। তবে চিন যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তবে ভারতও তার উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।