নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: এ যেন শাঁখের করাত। কৃষি আইন বাতিল করেও সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (narendra modi)। শুক্রবার গুরু নানকের জন্মদিন উপলক্ষে কৃষি আইন বাতিল করার ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (priyanka gandhi) বলেন, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই কৃষি আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোদি। কৃষকদের পাশে থাকতে বা কৃষকদের প্রতি সমব্যথী হয়ে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নয়। আসলে পাঁচ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করাকেই পাখির চোখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রিয়াঙ্কা এদিন স্পষ্ট বলেছেন, নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই মোদি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদি সাম্প্রতিক উপনির্বাচনগুলিতে বিজেপির ভরাডুবি না হত তাহলে মোদি কখনওই কৃষি আইন বাতিলের কথা ভাবতেন না। উপনির্বাচনের ফলাফলেই মোদি বুঝে গিয়েছিলেন যে, গোটা পরিস্থিতি তাঁদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন রাজ্যের জনমত সমীক্ষাতেও বিজেপির (bjp) আসন টলমল সেটাও প্রকাশ্যে এসেছে। তাই পরবর্তী নির্বাচনে দিল্লির কুর্সি দখল করার লক্ষ্যেই কৃষি আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত।
প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, এই বিজেপি খুনিদের আশ্রয়দাতা দল হিসেবে পরিচিত হয়েছে। যে দলের নেতার ছেলে প্রকাশ্যেই কৃষকদের গাড়ির চাকায় পিষে মারে তাদেরকেই বিজেপি আড়াল করে। তাই ভোটের আগে ওরা দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে হাত ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। তবে যা-ই করুক না কেন এতদিনে মানুষ বিজেপির প্রকৃত পরিচয়টা জেনে গিয়েছে।
অন্যদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (aravind kejriwal) বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সেই আইন বাতিল করলেন কিন্তু এটা আরও আগে করলেই ভাল হত। প্রধানমন্ত্রী যদি আইন বাতিলের সিদ্ধান্তটা কয়েক মাস আগে নিতেন তাহলে ৭০০ কৃষককে প্রাণ হারাতে হত না। পরিবারের রোজগেরে সদস্যকে হারিয়ে ওই সমস্ত কৃষক পরিবারকে পথে বসতে হত না। তাই শুধু ক্ষমা চেয়ে হাত ধুয়ে ফেললেই হবে না, প্রধানমন্ত্রী যদি প্রকৃতই মানবিক হন তাহলে মৃত কৃষক পরিবারের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসুন।
তবে প্রিয়াঙ্কা বা কংগ্রেসের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ কৃষি আইন বাতিলের প্রেক্ষিতে মোদির সমালোচনা করলেও রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মুহূর্তে পরিস্থিতি কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। মোদির এই ঘোষণা যে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে তা না বললেও চলে। কংগ্রেস নেতৃত্বও নিজেদের মধ্যে আলোচনায় মোদির এই কৌশলের কথা মেনে নিয়েছেন।
বিজেপি নেতৃত্বও ঠারেঠোরে এটা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই কৃষি আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের (uttetpradesh) ক্ষমতা বিজেপির হাতছাড়া হলে ২০২৪ সালে মোদির দিল্লির কুর্সিতে ফেরা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু কৃষি আইন বাতিল করে বিপক্ষে চলে যাওয়া পরিস্থিতিকে অনেকটাই নিজের অনুকূলে আনতে সমর্থ হয়েছেন মোদি। এখন দেখা যাক আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কোন দল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। তাহলেই পুরো পরিস্থিতি বোঝা যাবে।