News Desk, New Delhi: পর্যটকরা যাতে সহজেই বিভিন্ন দর্শনীয় এলাকায় পৌঁছতে পারেন সে কারণে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা চওড়া করে চারধাম প্রকল্পের উন্নয়ন করছে নরেন্দ্র মোদি (Nagendra modi) সরকার। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (supreme Court ) একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানাল, পরিবেশ এবং দেশের সুরক্ষা দু’টোই সমান রকম জরুরি।
উত্তরাখণ্ডে চারধাম যাওয়ার রাস্তা ১০ মিটার চওড়া করার জন্য শীর্ষ আদালতের কাছে অনুমতি চায় কেন্দ্র। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান পরিবেশবিদরা। তাঁরা বলেন, চারধাম প্রকল্পের রাস্তা করতে গিয়ে বহু গাছ কাটা পড়বে। ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে। এমনকী, পাহাড়ে ধসের পরিমাণও বাড়বে। এভাবে অরণ্য সম্পদ ধ্বংস করে চারধাম প্রকল্প করা যায় না।
পরিবেশবিদদের ওই আপত্তির প্রেক্ষিতে কেন্দ্র শীর্ষ আদালতে জানায়, উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় দ্রুত পৌঁছানোটা খুবই জরুরি। কারণ ওই সমস্ত এলাকায় চিন নজর রাখছে। শুধু নজর রাখাই নয়, লালফৌজ (pla) মাঝে মাঝে আগ্রাসন চালানোরও চেষ্টা করে। বিদেশি শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্যই সেনা জওয়ানদের (army) সেখানে দ্রুত পৌঁছানো প্রয়োজন। জওয়ানদের যাতায়াতের সুবিধার জন্যই প্রয়োজন রাস্তা চওড়া করা। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল (kk venugopal) আদালতে বলেন, অরুণাচল (arunachal) সীমান্তে পাহাড়ের অপর প্রান্তে হেলিপ্যাড তৈরি করছে চিন। গড়ে তুলেছে একাধিক স্থায়ী কাঠামো। তাই ভবিষ্যতে ওই রাস্তা দিয়ে যুদ্ধ সামগ্রী, রকেট লঞ্চার এবং ট্যাঙ্ক নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। সে কারণেই রাস্তা চওড়া করার সিদ্ধান্ত।
কেন্দ্রের ওই বক্তব্য মেনে নিয়েও পরিবেশবিদরা আদালতে বলেন, সকলেই দেখেছেন চলতি বছরের উত্তরাখণ্ডে কিভাবে একাধিক ভূমিধস (land slide) ঘটেছে। আমরা এটা বলছি না যে, দেশের সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু আমরা বলতে চাই যে, মোদি সরকার চওড়া রাস্তার কথা বলছে। কিন্তু সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত রাস্তা বাড়ানোর কোনও দাবি জানায়নি। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে জানায়, গত কয়েক মাস ধরে সীমান্তের পরিস্থিতি যথেষ্টই উত্তেজনাপূর্ণ। সেখানে আগের তুলনায় গোলমাল অনেক বেড়েছে। তাই দেশের সুরক্ষাকে নিশ্চিতভাবেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবে তার মানে এই নয় যে, আমরা পরিবেশ রক্ষার কথা ভাববো না। পাশাপাশি পরিবেশকেও গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থাৎ দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে আমাদের এগোতে হবে।
উল্লেখ্য, মোদি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী, কেদারনাথ (kedarnath), বদ্রীনাথকে (badrinath) সংযুক্ত করা হবে। এর জন্য তৈরি করা হবে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার রাস্তা। উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেরাদুনের কাছ থেকেই রাস্তা চওড়া করতে চায় কেন্দ্র। তবে কেন্দ্র রাস্তা ১০ মিটার চওড়া করার দাবি জানালেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই রাস্তা ৫ মিটারের বেশি চওড়া করা যাবে না।