News Desk: ২৯ অক্টোবর গুনারাম মুর্মুর স্ত্রী সুগি মুর্মু এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পরই ওই শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান মা ও বাবা। সদ্যোজাত শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কারণে ওই শিশুর মা-বাবাকে সামাজিক বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। কারণ ওই সদ্যোজাতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ওই গ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরোধী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার কেওনঝাড় জেলার যুগলকিশোরপুর নামে এক আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে।
গুনারাম জানিয়েছেন ২৯ অক্টোবর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছানোর আগেই তাঁর স্ত্রী সুগি বাড়িতেই এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। প্রসবের পর শিশু ও মায়ের শারীরিক সুস্থতা পরীক্ষার জন্য তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান গুনারাম। এ ঘটনা যুগলকিশোরপুর গ্রামের আদিবাসীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে।
গ্রামের প্রধান এবং অন্য কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁদের নিয়ম হল, কোনও মহিলা সন্তান প্রসবের পরে তাঁক হাসপাতালে পাঠানোর অর্থ গোটা গ্রামকে অপবিত্র করা। সে কারণেই গ্রামপ্রধান গুনারামকে তিনটি মোরগ, কিছু স্থানীয় মদ এবং পূজার উপকরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গুনারাম জানিয়েছেন তিনি এ ধরনের কুসংস্কারে বিশ্বাসী নন। তাই তিনি গ্রামের মোড়লের দেওয়া প্রস্তাব মেনে নেননি।
গুনারাম এভাবে মোড়লের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরেই তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে সামাজিক বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গুনারাম চলতি মাসের ১ তারিখে ঘাসিপুরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে যুগলকিশোরপুর গ্রামে গিয়ে ছিলেন পুলিশ আধিকারিক মানসসরঞ্জন পান্ডা। মানসবাবু জানিয়েছেন, সদ্যজাত সন্তান ও স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কারণেই গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ। সেকারণেই সংশ্লিষ্ট পরিবারকে সামাজিক বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে তিনি গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলছেন।