News Desk, New Delhi: যোগী আদিত্যনাথ সরকারের আমলে বেশ কয়েক হাজার প্রার্থী প্রাথমিক স্কুলে এবং অন্যান্য সরকারি অফিসে চাকরি পেয়েছেন। অভিযোগ ওঠে, ওই সমস্ত চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেরই ডিগ্রি ছিল জাল। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি হয়।
বিতর্কের অবসান ঘটাতে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য তৈরি হয়েছিল স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট। প্রাথমিক তদন্তের পর সিট স্পষ্ট জানিয়েছে, জালিয়াতির ঘটনায় রাজ্যের দুই উপাচার্য জড়িত রয়েছেন। ওই দুই উপাচার্য ছাড়াও ডিগ্রী কেলেঙ্কারির ঘটনায় আরও ১৯ জন জড়িত আছেন বলে জানিয়েছে সিট।
যে দুই উপাচার্যের নাম সিটের তদন্তে উঠে এসেছে তাঁরা হলেন নরেন্দ্র মোদি বা কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত মহাত্মা গান্ধী রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রজনীশ কুমার শুক্লা এবং কলহন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গঙ্গাধর পাণ্ডা। যোগী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে অধ্যাপক শুক্লাকে উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হয়। অধ্যাপক পাণ্ডাকে নিয়োগ করা হয়েছে ২০২০ সালের মে মাসে। উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠে, সম্প্রতি যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থী চাকরি পেয়েছেন তাদের অনেকেরই ডিগ্রি জাল। শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে চাকরি হাসিল করেছে তারা।
ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু করে সিট। তদন্ত রিপোর্টে সিট স্পষ্ট জানিয়েছে, উপাচার্য রজনীশ শুক্লা এবং উপাচার্য গঙ্গারাম পান্ডা তাঁদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করেননি। চাকরির পরীক্ষা নিয়েও বড়মাপের দুর্নীতি হয়েছে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডিগ্রি কেলেঙ্কারি সামনে আসায় বেকায়দায় পড়েছে যোগী সরকার। ঘটনার জেরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সংশ্লিষ্ট দুই বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, সিটের তদন্তে অভিযুক্ত হিসেবে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই নির্দেশের পরই অভিযুক্ত দুই উপাচার্যকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য শুক্লা অবশ্য সিটের ওই অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন।
অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি সরকারের বিরুদ্ধে এই নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে সরব হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বেছে বেছে বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের চাকরি পাইয়ে দিতেই জালিয়াতি করা হয়েছে। তাই এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হোক। তবে যোগী সরকারের তদন্তের উপর বিরোধীদের কোনও ভরসা নেই। সে কারণে তারা এই নিয়োগ কেলেঙ্কারির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বিরোধীদের দাবি যারা এধরনের কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ সরকার পরিচালিত বারাণসীর সম্পূর্ণানন্দ সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় এই ডিগ্রি কেলেঙ্কারির মূল কেন্দ্র। ডিগ্রী কেলেঙ্কারির তদন্ত শেষ করার পর ইতিমধ্যেই সিট ৯৯ পাতার একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্পূর্ণানন্দ সংস্কৃত কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিজেদের কর্তব্য একাধিক গাফিলতি করেছেন।