বদ্ধ জীবনে খুশির হাওয়া, কুমোরপাড়ায় খেলা রং তুলির

বিশেষ প্রতিবেদন: ওরা কেউ ক্লাস ফাইভ, কেউ সেভেন, কেউ সদ্য ক্লাস টেন। করোনার জেরে উভয় সংকটে এই সব স্কুল পড়ুয়ারা। তার উপর পারিবারিক পেশা যদি…

drawing competition

বিশেষ প্রতিবেদন: ওরা কেউ ক্লাস ফাইভ, কেউ সেভেন, কেউ সদ্য ক্লাস টেন। করোনার জেরে উভয় সংকটে এই সব স্কুল পড়ুয়ারা। তার উপর পারিবারিক পেশা যদি মৃৎশিল্প হয় এবং বাসস্থান কুমোরটুলি তখন উভয় সঙ্কট থাকেই যে পড়াশোনা নাকি মূর্তি গড়া। বিগত বছর দেড়েক ধরে স্কুল বন্ধ হওয়ায় সংকট বেড়েছে আরও। বদ্ধ ঘরে সারাক্ষণ পড়ে থাকা। এমন সময়ে ওদের মনটাও চায় একটু সুস্থ বাতাসের খোঁজ। সেই ঠিকানা দিতেই আয়োজন হল রং তুলির বিশেষ প্রতিযোগিতা।

শিল্প ওদের রক্তে কিন্তু কে কতটা ভালো তা ফুটিয়ে তুলতে পারে সেটাই আসল কথা। পুরনো কলকাতার গল্প সোসাইটি, কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সমিতি এবং কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সাংস্কৃতিক সমিতির উদ্যোগে ৭৫ টি কুমোরটুলির শিল্পী পরিবারের বাচ্চাদের নিয়ে “বসে আঁকো” প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান করা হয়। “যেমন খুশী আঁকো” থিমকে ঘিরে ঘর বন্দি বাচ্চাদের একটু আনন্দ নিঃশ্বাস নেওয়ার প্রয়াসে এগিয়ে এসেছিলেন কুমোরটুলির বিখ্যাত মহিলা শিল্পী শ্রীমতি মালা পাল।

পুরনো কলকাতার গল্পের পক্ষে স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “প্রতিযোগিতায় কুমোরটুলির আগামী প্রজন্মের রঙ তুলিতে জীবন্ত হয়ে ওঠে খালি ক্যানভাসগুলি। বাচ্চাদের কলকাকলীতে ভরে ওঠে কুমোরটুলি পার্কের আনাচ কানাচ। শিল্পী সুস্মিতা পাল, শিল্পী মৌমনী রুদ্র পাল , শিল্পী সুজাতা পাল এবং সর্বপরি শ্রীমতী মালা পালের সাহায্যে অনুষ্ঠান পূর্ণতা পায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকা সত্ত্বেও এই অনুষ্ঠানটিকে সুসংগঠিত করার জন্য পুরনো কলকাতার গল্প সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক টিমকে জানাই অভিনন্দন।”

গত বছরেও তখন চলছে কড়া লকডাউন। অনেকেই জানেন না কি হতে চলেছে আগামী। তৈরি হয়নি একটাও ভ্যাকসিন। তখনও কুমোরটুলির আগামী প্রজন্মকে নতুন হাওয়ার খোঁজ দিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই অঙ্কন প্রতিযোগিতা। পরিস্থিতি অল্প বদলেছে কিন্তু সমস্যা এখনও যায়নি। ক্রমে স্কুল পাঠশালা ভুলেই যেতে বসেছে শৈশব, কৈশোর। কুমোরটুলির স্কুল পড়ুয়াদের সমস্যা আরও বেশি। এত অন্ধকারের মাঝে একটু আলোর , বাতাসের খোঁজ দিতেই এই অঙ্কন প্রতিযোগিতা।