নিউজ ডেস্ক: করোনা আবহে চাকরির আকাল দেখা দিয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। এই অবস্থায় অনেক রাজ্য ভূমিপুত্র সংরক্ষণের পথে হেঁটেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার যাতে সেই নীতি নেয় তার দাবি তুলেছিল বাংলাপক্ষ। অন্যদিকে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার নিয়োগ প্রক্রিয়ায়তেও বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করার দাবি তুলেছিল তারা। কিন্তু তেমন কিছু না হয়ে উলটে অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের চাকরি দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল বাংলাপক্ষ।
আরও পড়ুন বিজেপির বাংলা ভাগ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বাংলাপক্ষের সমাবেশ
এবার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার (West Bengal State Electricity Distribution Company) পরীক্ষায় বাধ্যতামূলক হল বাংলা ভাষার পরীক্ষা। যা নিজেদের দীর্ঘ ৩ বছরের লাগাতার আন্দোলনের জয় হিসেবেই দেখছে বাঙালির হয়ে কথা বলা এই সংগঠন। বাংলাপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার (WBSEDCL) উচ্চ বেতনের চাকরিতে বহিরাগতদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিবাদ আন্দোলন করে আসছি। অন্যান্য রাজ্যের উদাহরণ তুলে ধরে আমরা পরীক্ষায় বাংলা ভাষায় লিখিত ও মৌখিকের দাবি করেছিলাম। সম্প্রতি সংস্থার চাকুরির বিজ্ঞাপনে আমরা লক্ষ্য করি ৫ নম্বর বাংলা ভাষার লিখিত ও ১৫ নম্বর মৌখিক পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে বাংলার ভূমিসন্তানরা চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবে বলেই আমরা আশা করছি। সেই সঙ্গে পরবর্তীকালে ২৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক করার দাবি জানাচ্ছি।’
বহিরাগতদের হাত থেকে বাংলার বিদ্যুৎ দফতরে পুনর্দখল শুরু হয়েছে। বাংলা পক্ষর বিরাট জয়। বাংলা পক্ষর ৩ বছর টানা আন্দোলনের ফলে বিদ্যুৎ দফতরের চাকরি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথমবার বাংলা ভাষা পরীক্ষা। বাংলার নব-নিযুক্ত বিদ্যুৎমন্ত্রী ও বিদ্যুৎ দফতরের সকল বাঙালি কর্মীকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
— বাংলা পক্ষ Bangla Pokkho (@BanglaPokkho) August 25, 2021
বাংলাপক্ষের দাবি মেনে নিয়োগ পদ্ধতিতে বাংলা ভাষাকে যুক্ত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যুৎমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছে তারা। সংগঠনের পক্ষ থেকে এর আগে আন্দোলনের সময় কৌশিক মাইতি বলেছিলেন, “১০০ শতাংশ নিয়োগ অবাঙালিদের, এটা মেনে নেওয়া যায় না। এক জন ছাড়া বাকিরা আবার অন্য রাজ্যের বাসিন্দা। আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েরা কী বানের জলে ভেসে এসেছে? বাংলায় কাজ আছে, বাঙালির কাজ নেই – এটা বাংলায় সব বেসরকারি-সরকারি সংস্থার মত বিদ্যুৎ দফতরেও বাস্তব ছিল। সব রাজ্য সরকারি চাকরি নিয়োগের আগে লিখিত বাংলা ভাষা পরীক্ষা পাশ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। অন্য সব রাজ্যে যে নিয়ম স্বাভাবিক, তা এখানেও সর্বক্ষেত্রে চাই। বাংলা কোনও ধর্মশালা নয়।”
গর্গ চট্টোপাধ্যায় জানান, “এই দাবিতে দীর্ঘ লড়াই হয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তর বাংলাপক্ষর উত্তর চব্বিশ পরগনা সাংগঠনিক জেলার আছে। এই জেলার সহযোদ্ধারা এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রত্যেক সহযোদ্ধা, সমর্থক ও যারা এই দাবির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, সকলকে রক্তজবা শুভেচ্ছা। আমরা বাঙালির চাকরির স্বার্থে লড়াই চালিয়ে যাব। বাঙালি হাসলেই আমাদের শান্তি। মাননীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। জয় বাংলা।”