বিএসএফের আওতা বাড়িয়ে মোদি সরকার রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে: ফিরহাদ হাকিম

নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং পাঞ্জাবে আন্তর্জাতিক সীমানার অভ্যন্তরে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের এর আওতা ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার সিদ্ধান্ত নিল…

Firhad Hakim

নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং পাঞ্জাবে আন্তর্জাতিক সীমানার অভ্যন্তরে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের এর আওতা ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদি সরকার।

কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় কেন্দ্রশাসিত জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখ এবং বাংলা পাঞ্জাব, অসম ও রাজস্থানে আন্তর্জাতিক সীমানার অভ্যন্তরে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা বিএসএফ-এর আওতায় থাকবে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে পশ্চিমবঙ্গ ও পাঞ্জাব সরকার। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।

কেন্দ্রের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এবার পশ্চিমবঙ্গ, অসম, পাঞ্জাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডের ৫০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বিএসএফ প্রয়োজনে যেকোনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে। শুধু গ্রেফতার নয়, চালাতে পারবে তল্লাশি অভিযান এবং যেকোন জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করতে পারবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

নরেন্দ্র মোদি সরকারের এই একতরফা সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম। মন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে অস্বীকার করছে। আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের বিষয়। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে রাজ্যের কাজেও হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। এটা অন্যায় ও অনৈতিক। মোদি সরকার অগণতান্ত্রিক উপায়ে দেশ চালাতে চাইছে। মোদি সরকার যে স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে চলে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে সেটাই আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা কেন্দ্রকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আর্জি জানাচ্ছি। মোদি সরকার যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পথে নেমে লড়াই করব।

ফিরহাদ সুরে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণঞ্জিৎ সিং চান্নি। তিনি বলেছেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। তাই কেন্দ্রকে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।

অন্যদিকে কেন্দ্রের দাবি, সম্প্রতি কাশ্মীর সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে বেশ কয়েকবার ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র পৌঁছে দিয়েছে জঙ্গিরা। এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিএসএফ-এর আওতাধীন এলাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অমিত শাহর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মনে করছে, বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে জঙ্গিদের এ ধরনের কার্যকলাপ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

সে কারণেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে এমন ৩ রাজ্য বাংলা, অসম ও পাঞ্জাবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে নিন্দনীয় বলেছে পশ্চিমবঙ্গ ও পাঞ্জাব সরকার। দুই রাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে মোদি সরকার সরাসরি পেরে উঠতে না পেরে ঘুরিয়ে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। এটা কখনওই মানা যায় না।