নিউজ ডেস্ক, শ্রীনগর: গত কয়েকদিন ধরে কাশ্মীরে জঙ্গিদের সক্রিয়তা বেশ বেড়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সেনা কর্মী শহিদ হয়েছেন। পাশাপাশি খতম হয়েছে কয়েকজন জঙ্গিও। একের পর এক জঙ্গি হানার ঘটনায় কাশ্মীরের পরিস্থিতি ক্রমশ আতঙ্কজনক হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় রাজ্যজুড়ে ফের ধরপাকড় অভিযান শুরু করল নিরাপত্তা বাহিনী।
রবিবার সকালে জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার মেনধার থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। ধৃতরা জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের খবর পাচার করত বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে গোয়েন্দা বাহিনী এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠন কাশ্মীরের নিরীহ সাধারণ মানুষ ও অকাশ্মীরিদের হত্যার পরিকল্পনা করেছে।
২৪ ঘণ্টা আগেই জঙ্গি হানায় রাস্তার ধারের এক ফুচকা বিক্রেতা ও এক সাধারণ মজুর প্রাণ হারিয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিনই জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে। গোয়েন্দা বাহিনী সতর্কবার্তায় জানায়, উপত্যকার কিছু মানুষ পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের বিভিন্ন গোপন খবর পাচার করছে। ওই খবর পাওয়ার পরই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ কাশ্মীর ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি মিলিয়ে মোট ১৮ জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। আটক করে ৭০০-র বেশি মানুষকে। যার মধ্যে ৫৭০ জন কাশ্মীরের বাসিন্দা। এদের মধ্যে কয়েকজন জামাতে ইসলামির মত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশের অনুমান।
শুধু জঙ্গিহানা প্রতিরোধই নয়, মেয়েরা যাতে নিজেদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেরাই নিতে পারে তার জন্য তাদের আত্মরক্ষার পাঠ দেওয়া শুরু করল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকজন মেয়েকে বেছে নিয়ে পুলিশ মার্শাল আর্ট শেখানো শুরু হয়েছে উধমপুর জেলায়। ধাপে ধাপে রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও এই প্রশিক্ষণ চালু হবে। রাজ্যের ৪৫ টি স্কুল ও কয়েকটি কলেজের ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিশন শক্তি’। তবে শুধু ছাত্রীদের নয়, প্রতিটি স্কুল থেকে একজন করে শিক্ষিকাকেও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জনবহুল এলাকায় মেয়েদের উপর হামলার ঘটনা প্রায়শই ঘটে। পুলিশ পৌঁছনোর আগে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। কিন্তু মেয়েরা যদি নিজেদের আত্মরক্ষার কৌশল রপ্ত করতে পারে তবে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে। সেজন্যই মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠ দেওয়ার চিন্তাভাবনা।
এরইমধ্যে গোয়েন্দা বাহিনীর এক সতর্কবার্তা জানিয়েছে, কাশ্মীরে পাক জঙ্গির মূলত অকাশ্মীরি ও নিরীহ সাধারণ মানুষকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে। এজন্য জঙ্গিরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পাকিস্তান থেকে এই সমস্ত জঙ্গিদের হাতে ড্রোনের মাধ্যমে পৌছে দেওয়া হচ্ছে অস্ত্র। নিরীহ মানুষকে এই হত্যার পরিকল্পনায় যুক্ত রয়েছে লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠন। কাশ্মীর পুলিশ স্বীকার করে নিয়েছে, সীমান্ত জঙ্গি অনুপ্রবেশ আরও বাড়ছে।