নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: এশিয়ার গরীব ও পিছিয়ে পড়া দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম। দেশের কয়েক কোটি মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে তারা নাজেহাল। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল সরবরাহ কোনটাই যথাযথ নয়। দেশের নাগরিকদের কিভাবে উন্নয়ন করা যায়, জরুরি পরিষেবাগুলি দেওয়া যায় সেগুলি না ভেবে পাকিস্তান সরকার চিন্তিত শুধু কাশ্মীর নিয়ে। পাক বিদেশ মন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি (Shah Mehmood Qureshi) বললেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান না হলে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ফিরবে না।
মঙ্গলবার রাতে কাজাকিস্তানে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈঠকে পাক বিদেশ মন্ত্রী বলেন, ভারত পাকিস্তানের সমস্যা রয়েছে একেবারে শিকড়ে। সেই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি অধরাই থেকে যাবে। কাশ্মীরের মানুষ ও রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের মতামতকে যতদিন না মর্যাদা দিয়ে জম্মু কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে ততদিন দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কুরুশির এই মন্তব্যের পর ভারত পাল্টা জানিয়েছে, জম্মু কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ে অন্য কারও মাথা ঘামানো উচিত নয়। বরং যারা মাথা ঘামাচ্ছে তাদের উচিত নিজেদের সম্পর্কের ভাবনা চিন্তা করা।
বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে কটাক্ষ করে আরও বলা হয়েছে, যারা ভারত বিরোধী প্রচার করে প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা করছে তারা ভুল করছে। বরং তাদের উচিত, কিভাবে নিজেদের দেশ উন্নয়নের পথে হাঁটবে সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা। কোনও প্রতিবেশী দেশের উচিত নয়, নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা। অন্য দেশে নাশকতা চালানোর জন্য জঙ্গিদের নিজের দেশের মাটি ব্যবহার করতে দিয়ে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছে।
কাজাকিস্তানের ওই বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পাকিস্তানের নাম না করে বলেন, সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ কোনও রাষ্ট্রের চিন্তার বিষয় নয়। সন্ত্রাসবাদ এমনই একটি শক্তি যা শুধু ধ্বংস করতে পারে। সন্ত্রাসবাদীরা কোনও গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। কোন দেশের উচিত নয়, সেদেশের মাটি জঙ্গিদের ব্যবহার করতে দেওয়া। কোনও একটি দেশের জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে ওঠা কখনওই কাম্য নয়। এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে গোটা দুনিয়াকে একজোট হয়ে লড়াই চালাতে হবে। যেমনটা গোটা দুনিয়া করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়ছে তেমনটাই লড়তে হবে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধেও।
তবে এ দিনের বৈঠকে পাক বিদেশমন্ত্রী কুরেশি স্বীকার করেন, কয়েক দশক ধরে চলা যুদ্ধ আফগানিস্তানকে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে। তবে আফগানিস্তান নতুনভাবে পথচলা শুরু করেছে। তার জন্য আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে কাবুলবাসীর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়ানোর আর্জি জানান কুরেশি।