বিশেষ প্রতিবেদন: সর্বেপল্লি রাধাকৃষ্ণন নয়, বিদ্যাসাগরের জন্মদিনকে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখল বাংলাপক্ষ।
বাংলা পক্ষ জানিয়েছে , “সংগঠনের পক্ষ থেকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনকে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালনের জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি।’ এই প্রসঙ্গে বাংলাপক্ষের সদস্য কৌশিক মাইতি জানিয়েছেন , ‘বাংলার চিন্তাশীলতার পরিসরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি কেবল নবজাগরণের একজন কাণ্ডারীই নন, বরং গোটা ভারতবর্ষে চিন্তন এবং মননের পরিসরে আধুনিকতার পথপ্রদর্শক। আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের যে, আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরী। তিনি আক্ষরিক অর্থেই আমাদের জাতির শিক্ষক, কারণ আজও বাঙালির ঘরের সন্তানরা তাঁর বর্ণপরিচয়ের মাধ্যমে অক্ষর জ্ঞান লাভ করে। আমাদের শিক্ষার যে মূল ভিত্তি তার অনেকাংশেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সদা জাগ্রত। নারী শিক্ষার প্রসারে তাঁর ভূমিকা আন্তঃরাষ্ট্রীয় স্তরে স্বীকৃতির দাবি রাখে।’
তাঁরা বলছেন, “আশ্চর্যের বিষয় বাংলা তথা গোটা ভারত এই মহাপুরুষের যথেষ্ট মূল্যায়ন এবং সম্মান এখনও করতে পারেনি। যে সময় হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ভারত রাষ্ট্র তথা বাংলাকে অন্ধকারে ঢেকে ফেলতে চাইছে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে আরও দৃঢ়ভাবে ধারণ করা, তাঁর চেতনা, তাঁর দর্শনের সঙ্গে জাতির সম্পৃক্ততা আরও বিস্তার করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য। এই অন্ধকারের আবহে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সেই আলোকবর্তিকা যা বাঙালি জাতিকে প্রতিরোধের অনুপ্রেরণা জোগাবে।”
এই বিষয় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বাংলাপক্ষের আবেদন, ১) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন অর্থাৎ ২৬শে সেপ্টেম্বর দিনটিকে “বাংলার জাতীয় শিক্ষক দিবস” হিসেবে ঘোষণা করা হোক। ২) বাংলার জনপ্রতিনিধিরা ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে দাবি উত্থাপন করুন যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন যেন “রাষ্ট্রীয় শিক্ষক দিবস” হিসেবে যেন ঘোষণা করা হয়। বিদ্যাসাগরের মহাশয়ের জন্মদিনকে বাংলার জাতীয় শিক্ষক দিবস ঘোষণার দাবিপত্রে সমর্থন জানিয়েছেন, জয় গোস্বামী, পবিত্র সরকার, জয়া মিত্র, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, তপোধীর ভট্টাচার্য, সবুজকলি সেন, সৃজিত মুখার্জী, রূপম ইসলাম, সুবোধ সরকার, রূপঙ্কর বাগচী, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দে, অয়ন চক্রবর্তী, অনির্বাণ মাইতি, সৌমিত্র রায়, ইমন সেন, উজ্জয়িনী ভট্টাচার্যের মতো ব্যক্তিত্ব।
সংগঠনের আশা, এই দুই পদক্ষেপ যদি গ্রহণ করা হয় তাহলে ভারতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিচিতি কেবল বাড়বে না বরং ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় বাংলার বুকে জন্মানো এই মহাপুরুষের মূল্যায়ন আরও অনেক বাড়বে। বিদ্যাসাগর তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা পাবেন।