অহ নওরোজের কবিতা

রুপোর সামোভার  তাকে দেখি—ঝলকায়— প্রিয়া বলে : যত ধুলো পড়ে আছে, হাত রেখে মুছে দাও মায়া রেখে চারপাশে, ধুলো ধুয়ে দেখি আরো ঝলমলে— যেন চোখ…

রুপোর সামোভার 

তাকে দেখি—ঝলকায়—
প্রিয়া বলে : যত ধুলো পড়ে আছে,
হাত রেখে মুছে দাও

মায়া রেখে চারপাশে,
ধুলো ধুয়ে দেখি আরো ঝলমলে—
যেন চোখ খুলে গেছে

বহু আগে মানুষের
পশমের কাছে গরম স্বাদের
সুবাসিত সব জল
আর ঈর্ষা হাতে করে
সাক্ষী হয়েছে সে,
রঙ আর মদিরার।

তবু বেলা পার হয়ে গেলে
মানুষ অথবা সামোভার
জল হয়ে গলে পড়ে ধীরে
কিংবা স্বাদ জানে কর্পূরের

ঘাস দেখি

চারপাশে ঘাস দেখি
ছড়িয়ে রয়েছে বাতাসে বাতাসে
সবুজের ভেতর কখনো
মিহি রোদ সরে পড়ে

চারপাশে ঘাস দেখি
আর দেখি খরগোশ
সহজে ধূসরে বয়ে যায়
ঘন কিছু স্মৃতি রেখে যায়

চারপাশে অনেক সবুজ
মৃদু বাঁকা দেহে নুয়ে আছে
হাওয়ায় শাঁ-শাঁ করে
যেন সব ছায়া চলে গেছে

মন্দাক্রান্তায় রুবাইয়াৎ—১৭

উজ্জ্বল জোছনায় বাতাসে ডুবে আজ কাঁপছে মন্থর নিবিড় বন
নীল-ঘুম তন্দ্রায় সেখানে হরিয়াল ডাকছে বারবার—দারুণ ক্ষণ।
নির্জন রাত্রির ভেতরে বহু রোদ আনছে আজকের পাখির গান।
হিমহিম ঠান্ডায় তবুও কিছু এক চাইছে চঞ্চল নরম মন।

মন্দাক্রান্তায় রুবাইয়াৎ—১৮

বিস্তর অঞ্চল শরতে ভেসে খুন, নড়ছে মেঘদল, মলয় রোদ
পাণ্ডুর পথঘাট সহজে ইশারায়, বলছে জল-কাল তামাম শোদ
বিভ্রম চঞ্চল বাতাসে মিহি রাত, কাঁপছে হিমহিম অনর্গল
নিজ নিজ শয্যার ভেতরে তবু গান বাজছে বর্ষার গহিন বোধ।

 


অহ নওরোজের (Aho Nouroz) জন্ম বাংলাদেশের যশোরে। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস। চাকুরিসূত্রে সম্পাদনার সঙ্গে জড়িত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তিনটি। সর্বশেষ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘অতিলৌকিক কবিতাসমূহ’ জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়েছে। কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও জ্যোতির্বিজ্ঞানের ওপর একটি বই লিখেছেন।