নিউজ ডেস্ক: বাঙালি পাঠককুল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী সৃষ্টি ‘চাঁদের পাহাড়’ পড়ে বাওবাব গাছের নামটি জেনেছেন। সেই গাছের গুণাগুণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে। আসলে বাওবাব নিজেই একটি অদ্ভুত চরিত্র। এমন পেটমোটা গাছ যার পেটে রাখা থাকে জল।
দেখলে মনে হবে একটা বিরাট বোতল, কখনও মনে হয় বিরাট একটা হাঁড়ি, কেউ ভাবে গামলা। কারোর চোখে ওয়াটার ফিল্টার ! এমনই সব অদ্ভুত আকারের গাছ রয়েছে দুনিয়ায়। এদের রকম সকম আরও চমকে দেবে। এ গাছ যদিও আমাদের দেশের নয়। আফ্রিকার শুকনো মরু এলাকায় মিলবে। বাওবাব নামেই পরিচিতি। প্রকৃতির বিস্ময়। কারণ বাওবাবের কান্ড ও গুঁড়িতে হাজার হাজার লিটার জল মজুত করা থাকে। নিজের প্রয়োজন মতো এই জল খেয়ে সজীব থাকে বাওবাব গাছেরা।
আফ্রিকার বাওবাব গাছ মূলত শুকনো মরু এলাকায় হয়। সাহারা মরু সংলগ্ন দেশগুলি, দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকা, সুদান, দক্ষিণ সুদান, জিম্বাবোয়ে, সহ বিভিন্ন দেশে বাওবাব দেখা যাবে। আফ্রিকা মহাদেশে বাওবাব গাছের ব্যাপকতা বেশি। মাথার দিকে ডালপালা শিকড়ের মতো ছড়ানো থাকায় অনেকে চমকে যান। ভাবতে থাকেন, গাছটার বোধহয় আকাশের দিকে গোড়া। উল্টো করে দাঁড়িয়ে আছে। তবে কাছে গেলে ভুল ভাঙে।
তবে বছরের নয় মাস এই বাওবাব গাছে কোনও পাতা থাকে না। কিন্তু জল থাকে বিস্তর। বাওবাব গাছ দুশো বছর বয়সী হওয়ার পরেই ফল ধরে। ফুল সাদা রঙের। গন্ধযুক্ত। তবে ফুল ফোটার এক দিনের মধ্যেই বিবর্ণ হয়ে যায়।
বাওবাব আফ্রিকার মরু অঞ্চলের মানুষের কাছে উপকারি এক গাছ।এই গাছের বাকল দিয়ে পোশাক ও শক্ত দড়ি তৈরি হয়। ফল খাওয়া যায়। এছাড়া এই গাছের পাতা থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি হয়। আফ্রিকার আদিবাসীরা প্রকৃতির তৈরি ওষুধের উপর নির্ভর করেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম পার করছেন।
হাজার হাজার লিটার জল দেহের মধ্যে সঞ্চয় করে রাখে বাওবাব। এই জল দিয়েই তার জীবন চলবে যতদিন না পুরো সঞ্চয় শেষ হচ্ছে। এর মাঝে প্রকৃতি থেকে জল সংগ্রহের কাজও চলবে। এই নিয়েই বেশ রয়েছে বাওবাব।