#Atmanirbhar Bharat
নিউজ ডেস্ক: এটা কোন সাধারণ বুলেট প্রুফ জ্যাকেট নয়৷ এই জ্যাকেট একদিকে যেমন সেনা-পুলিশ জওয়ানের (soldiers) প্রাণ রক্ষা করবে৷ অন্যদিকে বুলেট থেকেই সরাসরি শত্রুকে লক্ষ্য করে গুলিও করবে৷ আর এই হাইটেক জ্যাকেট (Hi-tech jacket) তৈরি করেছে মিরাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অটল কমিউনিটি ইনোভেশন সেন্টার (Atal Community Innovation Center)৷ এখানে শেষ নয়, এই সংস্থার দাবি, কোনও জওয়ান জখম হলে জ্যাকেটে থাকা হাইটেক প্রযুক্তি সরাসরি তা কন্ট্রোলকে জানিয়ে দেবে৷
আরও পড়ুন: নারীশক্তি: মা মজুর খেটে পিতৃহারা পাঁচ ছেলেমেয়েকেই পুলিশের উর্দি পরালেন
মিরাটের এমআইইটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উদ্ভাবক শ্যাম চৌরাসিয়া দাবি করেছেন, এমন ধরনের একটি হাই-টেক জ্যাকেট ডিজাইন করা হয়েছে, যা গুলি চালানোর পাশাপাশি জওয়ানের আঘাত হওয়ার খবর ও তার অবস্থানসহ বিস্তারিত তথ্য কন্ট্রোল রুমকে জানাবে৷ যাতে আহত জওয়াদের চিকিৎসা অবিলম্বে শুরু করা যায় এবং তাদের জীবন বাঁচানো যায়। শ্যাম আরও বলেছেন, এই জ্যাকেটটি ওয়্যারলেস প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এই হাই-টেক বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের একটি ওয়্যারলেস ট্রিগারও রয়েছে, যার সাহায্যে সেনা জওয়ানরা সীমান্তে ১০টিরও বেশি বন্দুক রেখে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে শত্রুদের উপযুক্ত জবাব দিতে সক্ষম হবে। এই জ্যাকেটটি মাত্র ১৫ দিনে প্রস্তুত করা হয়েছে। হাই-টেক জ্যাকেট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সক্রিয় থাকে।
অটল কমিউনিটি ইনোভেশন সেন্টারের প্রযুক্তিবিদ শ্যাম চৌরাসিয়া জানিয়েছে, এই প্রযুক্তির সাহায্যে সীমান্তে নিযুক্ত জওয়ানরা কখনও একা থাকবে না৷ কারণ, এই জ্যাকেট জওয়ানদের সীমান্তের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে ২৪ ঘন্টা যোগাযোগ রাখবে। জ্যাকেটে ১১ মিমি দু’টি ব্যারেল রয়েছে, যা জ্যাকেটের সামনে বা পিছনে লাগানো যেতে পারে। জ্যাকেটটি লাইভ ক্যামেরা দিয়ে সজ্জিত, যাতে শত্রুরা পিছন থেকে আক্রমণ করতে পারবে না৷ কারণ, কন্ট্রোল রুম এবং জওয়ান পিছনসহ আশপাশের ছবি দেখতে পাবেন. আর সেই মতো শত্রুকে উপযুক্ত জবাব দিতে পারবে৷ জ্যাকেটে থাকা লাইভ বন্দুকটি ইন্টারনেট থেকেও চালানো যায় এবং যদি কোনও শত্রু কোনও জওয়ানকে আক্রমণ করে, তাহলে এই জ্যাকেট তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুলি করবে। দাবি করা হয়েছে, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটে লাগানো বন্দুকের ফায়ার রেঞ্জ ২০০ মিটার। এই জ্যাকেটের সাহায্যে যে কোন ধরনের অস্ত্র চালানো যায়।
আরও পড়ুন: নাম না-জানা জারারাকুস্সু পিট ভাইপারের বিষেই মরছে করোনা ভাইরাস
এই সম্পূর্ণ সিস্টেমটি MIET ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অটল কমিউনিটি ইনোভেশন সেন্টারে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশেষ বিষয় হল এই জ্যাকেটে ইনস্টল করা সমস্ত সরঞ্জাম ভারতীয়। এটি তৈরি করতে ২৫ দিন লেগেছিল। সম্পূর্ণ প্রোটোটাইপ প্রকল্পগুলি প্রস্তুত করতে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এটি কলেজে পড়ে থাকা আবর্জনা থেকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ৩.৭ ভোল্ট ব্যাটারি, ৯ ভোল্ট ব্যাটারি, সোলার প্লেট ৬ ভোল্ট, এলার্ম, ট্রান্সমিটার রিসিভার, জিপিএস, মেটাল পাইপ, রিলে ৫ ভোল্ট, ক্যামেরা, ১০ মিমি পাইপ রয়েছে।
আরও পড়ুন: BA-BCom পাস করে ঠেলাগাড়িতেই স্বপ্নের ঠিকানা খুঁজছেন শহরের চার যুবক
এমআইইটির ভাইস-চেয়ারম্যান পুনিত আগরওয়াল বলেন, যারা কিছু উদ্ভাবক করতে চায়, অটল কমিউনিটি ইনোভেশন সেন্টার সায়েন্স ল্যাব সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা করে শিক্ষার্থীদের৷ যাতে তরুণরা তাদের চিন্তাকে প্রোটোটাইপে রূপান্তর করতে পারে এবং পেটেন্ট করতে পারে। তিনি বলছেন, যে সমস্ত মেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছে না, তারা তাদের নতুন আইডিয়া নিয়ে এখানে প্রজেক্ট তৈরি করছে। এই হাই-টেক জ্যাকেটটিও পেটেন্ট করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেলে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলুন, সুফল পাবেন তাড়াতাড়ি
তবে প্রতিরক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, যতক্ষণ না এর পরীক্ষা শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ এর উপযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। এই প্রকল্পের পেটেন্ট করার আগে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একটি পরীক্ষা করা উচিত৷ তবেই এর উপযোগিতা জানা যাবে। তবে এই জ্যাকেটটি আজকাল মানুষের মধ্যে অবশ্যই আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।