তিমিরকান্তি পতি বাঁকুড়া: সাইকেল নিয়েই ক্লাস করাচ্ছেন স্যার। এমন ধরা অন সাইকেল ক্লাস চলছে বাঁকুড়ার (Bankura) তিলবনীতে (Tilaboni forest)।কেমন সেই ক্লাস?
চলতি করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধ সমস্ত ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরফে ‘অনলাইন ক্লাসে’র মাধ্যমে পড়াশনার কাজ চালিয়ে যাওয়া হলেও গ্রামীণ খেটে খাওয়া পরিবার গুলির ছেলে মেয়েরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এই অবস্থায় নিজের সীমিত ক্ষমতার মধ্যে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন বাঁকুড়ার হীড়বাঁধের তিলাবনী হাই স্কুলের শারিরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক কমলাকান্ত হেমব্রম।
গরীব ছাত্র ছাত্রীদের কথা ভেবে বাড়িতে বসে ‘ছুটি’ কাটাতে মন চায় চায়নি এই শিক্ষকের। খাতড়ার কদমবেড়া গ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে প্রায় প্রতিদিন তিনি পৌঁছে যাচ্ছেন হীড়বাঁধের বেলকানালী, কাজলভোবা, বাউরীডিহা, তিরশুলিয়া, চিতরুঘুটু সহ বেশ কিছু গ্রামে। মূলতঃ এই গ্রাম গুলির ছাত্র ছাত্রীরাই তিলাবনী হাই স্কুলে পড়াশুনা করে। গ্রামের পৌঁছেই একজায়গায় সব ছাত্র ছাত্রীকে বাড়ি থেকে ডেকে তুলে দিচ্ছেন প্রশ্নপত্র। সঙ্গে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে কাগজ, কলম সহ অন্যান্য শিক্ষাসামগ্রী। পরের সপ্তাহে সেই উত্তর পত্র সংগ্রহ করে ভুল ভ্রান্তি ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নতুন প্রশ্নপত্র তুলে দিচ্ছেন তাদের হাতে। এইভাবে বিশেষ ‘টাস্কে’র মাধ্যমে পড়াশুনার মধ্যে ছাত্র ছাত্রীদের রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই শিক্ষক।
হীড়বাঁধের তিলাবনী হাই স্কুলে ৪৫০ জন ছাত্র ছাত্রী। যার একটা বড় অংশ খেটে খাওয়া পরিবার থেকে উঠে আসা প্রথম প্রজন্মের সন্তান যারা হাই স্কুলমুখী হয়েছে। কমলাকান্ত হেমব্রম ইন্দাসের শাসপুর হাই স্কুল থেকে বদলি নিয়ে ২০০৭ সালে এখানে আসেন। তখন থেকেই গ্রামের এই ছাত্র ছাত্রীরাই তাঁর কাছে সব। তাদের পড়াশুনার সার্বিক উন্নয়নে সদা সচেষ্ট থেকেছেন।
কমল স্যারের এই উদ্যোগে খুশি গ্রামের ছাত্র ছাত্রী থেকে অভিভাবক সকলেই। এবিষয়ে শিক্ষক কমলাকান্ত হেমব্রম বলেন, অনলাইন ক্লাস করানোর সুযোগ নেই। স্কুল বন্ধ, তাই ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশুনাও লাটে উঠতে বসেছিল। তাই আর বাড়িতে বসে থাকতে পারিনি। বারবার ছুটে আছে এদের কাছে।