বিশেষ প্রতিবেদন: ‘দারুণ বিপ্লব-মাঝে তব শঙ্খধ্বনি বাজে
সঙ্কটদুঃখত্রাতা। জনগণপথপরিচায়ক জয় হে ‘। কবি শঙ্খ ঘোষকে অনেকটা এমনভাবেই দেখতে চাইছে জগৎ মুখার্জি পার্ক। কারণ তাঁদের এবারের পুজোয় পাথেয় সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তি কবিই।
শঙ্খ ঘোষের কবিতার লাইনই এবার জগত্ মুখার্জি পার্কের দুর্গা পুজোর থিম। তেমন ভাবেই সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। উদ্যোক্তাদের দাবি, করোনা বিধি মেনে এমনভাবে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ, যাতে বাইরে থেকেই দর্শকরা প্রতিমা দর্শনের সুযোগ পান। কীভাবে শঙ্খ ঘোষকে থিমের অঙ্গ করেছ এই ক্লাব?
“আয় আরো হাতে হাত রেখে আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।” কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতার এই লাইনই কোভিডের বিপন্ন সময়ে কলকাতার জগত্ মুখার্জি পার্কের এবারের দুর্গাপুজোর থিম। শঙ্খ ঘোষ করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন চলতি বছরের ২১ এপ্রিল। ক্লাব কর্তা দ্বৈপায়ন রায় জানিয়েছেন, ” কবিকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই আমাদের এই বিষয় ভাবনা। পাশাপাশি অসহায় মানুষের আরও হাতে হাত রেখে বেঁধে বেঁধে থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করছি এবারের দুর্গোৎসবের মণ্ডপে।’
জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজোর কলকাতা জুড়ে এক বিশাল সুনাম রয়েছে। সময় যত গড়িয়েছে ততই এখানকার থিমের চিন্তাভাবনা উন্নত থেকে উন্নততর হয়েছে। এবারের বিষয় ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলতে জোরকদমে চলছে মণ্ডপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কারণ পুজো আসতে যে আর মাত্র দশটা দিন বাকি।
জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজোর এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি হলেন সোনাই সরকার বলেন, “আমরা এই থিমটাকে বেছে নিয়েছি কারণ সম্প্রতি বাংলা সাহিত্যের তারকা কবি শঙ্খ ঘোষ মারা গিয়েছেন। তিনি এই কবিতা যখন লিখেছেন তখন হয়তো সময় করোনার প্রকোপ ছিল না , সেটাকে নিয়ে ভেবে তিনি তাই লেখেননি কিন্তু আজকে পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে কোভিডের জন্য সবসময় এক মানুষ অপর মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে। আজকে যখন কোভিডের জন্য আমাদের কাছের অনেক মানুষ চলে যাচ্ছেন তখন আমাদের এটাই উপলব্ধি হচ্ছে যে এই প্যান্ডেমিক পরিস্থিতিতে যদি এক মানুষ অপর মানুষের পাশে একত্রিত হয়ে শারীরিক, আর্থিক কিংবা মানসিক ভাবে না দাঁড়ায় তাহলে এই প্যান্ডেমিক থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে৷ তাই এ বছর আমরা থিমের বিষয় হিসেবে শঙ্খ ঘোষের কবিতা ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’কেই বেছে নিয়েছি।”