অনুভব খাসনবীশ: ভারতীয় টেবল টেনিস টিমের কোচ সৌম্যদীপ রায়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ নিয়ে এলেন মণিকা বাত্রা। মার্চ মাসে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনকারী একটি ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন সৌম্যদীপ। টোকিও অলিম্পিকে জাতীয় কোচ সৌম্যদীপের সাহায্য নিতে না চাওয়ার জন্য মণিকাকে কারণ দর্শানোর বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছিল জাতীয় টেবিল টেনিস সংস্থা। শুক্রবার তার উত্তর দিয়েছেন মণিকা। সেখানেই এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তিনি। ঘটনাটি সে সময় টিটি ফেডারেশনের এক কর্তাকেও জানিয়েছিলেন মণিকা, এমনটাই তাঁর দাবি।
আরও পড়ুন গড়াপেটায় ‘অভিযুক্ত’ বাংলার টিটি কোচ সৌম্যদীপ, বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন মণিকা
মণিকা লিখেছেন, “দোহায় মার্চ মাসে অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন পর্বে জাতীয় কোচ আমার উপর চাপ তৈরি করেছিলেন ম্যাচ ছাড়ার জন্য। যাতে ওঁর এক ছাত্রী অলিম্পিকে যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। অলিম্পিকে যাতে শেষ মুহূর্তে মনোযোগ হারিয়ে না ফেলি, তাই জাতীয় কোচকে ছাড়াই খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
কিন্তু জাতীয় কোচ সৌম্যদীপের কোন ছাত্রীর কথা বলতে চাইছেন মণিকা বাত্রা? যার অলিম্পিকের টিকিটের জন্য মণিকাকে ম্যাচ ছাড়তে বলেছিলেন বাংলার প্রাক্তন টিটি প্লেয়ার। সৌম্যদীপের ছাত্রী হিসেবে নৈহাটির সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় ছিলেন অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জনকারী টুর্নামেন্টে। মণিকা এই মুহূর্তে ভারতীয় টিটিতে এক নম্বর স্থানে রয়েছেন। সুতীর্থা দু’য়ে। নৈহাটির টেবল টেনিস খেলোয়াড় ১৯ মার্চ মণিকাকে হারিয়েই টোকিও অলিম্পিকের টিকিট পেয়েছিলেন। তীরন্দাজ অতনু দাসের পর বাংলা থেকে অলিম্পিকে যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন সুতীর্থা।
আরও পড়ুন উৎসবের মন্তব্যে আবার ভাইরাল #RemoveATK, আন্দোলনের পথে সবুজ-মেরুন সমর্থকরা
মণিকা কি ওই ম্যাচটার কথাই বলতে চেয়েছেন? তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে দেশের ক্রীড়ামহলে। পিছিয়ে নেই সোশ্যাল মিডিয়াও। বছর পাঁচেক আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সুতীর্থা। বয়স ভাড়ানোর অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল ফেডারেশন। ফলে যেতে পারেননি রিও অলিম্পিকে। এবার পৌলমী ঘটক, মৌমা দাসের পর বাংলার মহিলা টিটি খেলোয়াড় হিসাবে গিয়েছেন টোকিও অলিম্পিকে। যদিও অলিম্পিকের প্রথম রাউন্ডে পিছিয়ে থেকে অসাধারণ জয় তুলে নিলেও, দ্বিতীয় রাউন্ডে পরাস্ত হন পর্তুগালের ফু য়ু-র কাছে।
টোকিও অলিম্পিকে মণিকা জাতীয় দলের কোচের তত্ত্বাবধানে খেলতে রাজি হননি। নিজের ব্যক্তিগত কোচকে সঙ্গে নিয়েই প্র্যাকটিস সেরেছিলেন। তবে অলিম্পিকের নিয়ম অনুযায়ী, টিম হিসেবে প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে ব্যক্তিগত কোচ ম্যাচের সময় পরামর্শ দিতে পারেন না। তাই সাইড লাইনে কোনও কোচের উপস্থিতি ছাড়া একাই খেলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। পরামর্শ নেননি জাতীয় কোচ সৌমদীপেরও। মণিকা দাবি তুলেছিলেন, সুতীর্থা যদি তাঁর কোচ হিসেবে সৌম্যদীপকে পাশে পান, তা হলে কেন তিনি নিজের কোচকে রাখতে পারবেন না?
India's best TT player, @manikabatra_TT is fighting a battle with the babus at TT Federation of India. All she's asking for is that her personal coach sit with her during her matches. But our babus don't like it for some mysterious reasons.
— S. Sudhir Kumar (@ssudhirkumar) September 4, 2021
এবার আবার সেই ঘটনার কারণ দেখাতে গিয়ে নতুন অভিযোগ এনেছেন তিনি। সৌম্যদীপ, সুতীর্থা দু’জনের সঙ্গেই যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। ভারতীয় খেলাধুলোয় ম্যাচ গড়াপেটার গল্প নতুন নয়, এবার এই অভিযোগ নিয়ে সৌম্যদীপ রায় কী প্রতিক্রিয়া দেন, সেদিকেই তাকিয়ে ক্রীড়ামহল। তাছাড়াও ঘটনা প্রমাণিত হলে, সৌমদীপের সেই ছাত্রী সুতীর্থাই কিনা তা জানতেই উৎসুক দেশের ত্রীড়ামহল।