agannath – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Sat, 10 Jul 2021 04:55:16 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png agannath – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 পুরাণ কথা: জগন্নাথ ও রথযাত্রার ইতিহাস https://ekolkata24.com/uncategorized/history-of-jagannath-rath-yatra Tue, 06 Jul 2021 04:43:21 +0000 https://ekolkata24x7.com/?p=250 প্রথম পর্ব: আগামী সোমবার, ২৭ আষাঢ় অর্থাৎ ইংরাজির ১২ জুলাই শুভ রথযাত্রা৷ তার আগে রথযাত্রা নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন  টিঙ্কু মণ্ডল৷

কথায় আছে, ‘বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন’! আর সেই তেরো পার্বনের একটি হল রথযাত্রা৷ এই রথযাত্রার উদ্ভব পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে৷ আজ আমরা জানবো জগন্নাথ মন্দিরের সেই কাহিনী৷ তবে তার আগে আমাদের জানতে হবে জগন্নাথ মন্দিরের ইতিহাস৷ কীভাবে তৈরি হয়েছিল জগন্নাথ মন্দির? কী-ইবা তার উৎস্য? সেই মূর্তির রহস্যই বা কী?

এই কাহিনীর উৎস্য দ্বাপর যুগের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যুর পর থেকে৷ কৃষ্ণের মৃত্যুর পর যখন অর্জুন দ্বারকাতে আসেন তখন যদু বংশের শেষ হয়েছে৷ অর্জুন কৃষ্ণের দাহ সৎকারের কাজ করার পর দেখেন, দেহ তো সম্পূর্ণরূপে ভষ্মীভুত হয়ে গিয়েছে কিন্তু তাঁর হৃদপিন্ড তখনও নীলরূপে জ্বলছে৷ আর তখন অর্জুন সেই জ্বলন্ত হৃদপিন্ড জলে ভাসিয়ে দ্বারকার শিশু ও মহিলাদের নিয়ে হস্তিনাপুরে চলে যান৷ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জ্বলন্ত হৃদপিন্ড সাগরের নিচে গিয়ে লোহার রডে পরিণত হয়ে যায়৷

অন্যদিকে ভগবান বিষ্ণুর পরম ভক্ত মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্ন স্বপ্নাদেশ পান, নীলমাধব রূপে তাঁর কাছে আসতে চান৷ তারপর তিনি পাগলের মতো চতুর্দিকে শ্রীবিষ্ণুর নীলমাধব মূর্তির সন্ধান করতে থাকেন৷ অবশেষে একদিন সমুদ্রের তীরে তিনি শ্রীবিষ্ণুর নীলমাধব মূর্তি দেখতে পান৷ সেখানেই নীলমাধবের মন্দির স্থাপন করেন৷ এরপর একদিন সমুদ্রের জলে স্নান করার সময় তিনি দেখেন, একটি নরম লোহার টুকরো ভেসে যাচ্ছে৷ তিনি লোহার টুকরোটি হাতে নিতেই এক দৈব্যবাণী শুনতে পান৷ তিনি শোনেন, এই নরম লোহার টুকরোটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় এবং এটি পৃথিবীতে বরাবরের জন্য থাকবে৷ এই টুকরোটি যেন জগন্নাথ দেবের মূর্তির মধ্যেই স্থাপন করা হয়৷ আর এমনভাবে এটি করতে হবে, যাতে তা কোনওদিন কারোর নজরে না-আসে৷

রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন সেই টুকরোটি নিয়ে নীলমাধব মূর্তির মধ্যে রাখেন৷ কিন্তু এরপর থেকে তাঁর চিন্তা আরও বাড়তে থাকে এইভেবে যে, কীভাবে জগন্নাথের মূর্তি তৈরি হবে? এরপর তিনি আবারও একদিন স্বপ্নাদেশ পান যে, সমুদ্রে ভেসে আসা কাঠ দিয়েই জগন্নাথ দেবের মূর্তি তৈরি করতে হবে৷ পরের দিন তিনি দেখেন, সমুদ্রে তিনটি কাঠ ভেসে আসছে৷ তিনি সেই কাঠগুলি সংগ্রহ করেন৷ কিন্তু তাতেও তাঁর চিন্তা দূর হয় না৷ কারণ তিনি ভাবেন, যেকোনও মূর্তি সাধারণত ধাতু এবং কষ্ঠিপাথর দিয়ে তৈরি হয়৷ কাঠ দিয়ে তখনও কোনও দেব-দেবীর মূর্তি তৈরি হয়নি৷ তাহলে তিনি কীভাবে সেই মূর্তি বানাবেন? এমন সময় হঠাৎ করেই এক ব্রাহ্মণ সেখানে উপস্থিত হন৷ তিনি নিজেই কাঠ দিয়ে মূর্তি বানানোর দায়িত্ব রাজার কাছে চেয়ে নেন৷ শুধু একটাই শর্ত তিনি রাজাকে দেন যে, যতদিন তিনি এই মূর্তি বানানোর কাজ করবেন, ততদিন ঘরের দরজা বন্ধ থাকবে৷ কেউ যেন তাঁর ঘরের দরজা না-খোলে৷ যদি দরজা খোলা হয়, তাহলে মূর্তি বানানোর কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে৷

ব্রাহ্মণের শর্তে রাজি হয়ে যান রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন৷ ফলে মূর্তি বানানোর কাজ শুরু হয়৷ রাজা প্রতিদিন মূর্তি বানানোর ঘরের কাছে দাঁড়াতেন এবং বাইরে থেকে আওয়াজ শুনতে পেতেন৷ এইভাবে সাতদিন কেটে যাওয়ার পর রাজা একদিন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন মূর্তি তৈরির আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়৷ ধৈর্য সামলাতে না-পেরে সেই বন্ধ ঘরের দরজা খুলে ভেরতে ঢুকে পড়েন রানি তপসিয়া৷ তখনই তিনি দেখেন যে, সেখানে কাঠমিস্ত্রী নেই এবং মূর্তি নির্মাণের কাজও সম্পন্ন হয়নি৷ মূর্তির হাত গড়ার কাজ তখনও বাকি রয়েছে৷ এতে রাজার চিন্তা আরও বেড়ে যায়৷ তিনি ভাবতে থাকেন, এই অসম্পূর্ণ মূর্তি কীভাবে সম্পন্ন হবে? আর সম্পূর্ণ না-হলে তা পুজো হবে কীভাবে? ঠিক তখনই নারদ মুনির আবির্ভাব হয়৷ তিনি রাজাকে জানান যে, এই রকমই এক অর্ধসমাপ্ত মূর্তি স্বর্গের স্বীকৃতিস্বরূপ৷ তাই সেই মূর্তির পুজো করলে তা মর্ত্যেও স্বীকৃতি পাবে৷ নারদের কথা শুনে রাজা তখন সেই অর্ধসমাপ্ত মূর্তির পুজো শুরু করেন৷ সেই সঙ্গে সমুদ্রে ভেসে আসা নরম লোহার টুকরোটি জগন্নাথ মূর্তির মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেন৷ এমনভাবে স্থাপন করেন, যা আজ পর্যন্ত সকলের দৃষ্টির আড়ালে রয়েছে৷

আজও বারো বছর পর পর সমুদ্রে তিনটি কাঠ ভেসে আসে৷ সেই কাঠ দিয়ে একটি জগন্নাথ দেব, একটি বলরাম এবং আর একটি দিয়ে সুভদ্রার মূর্তি তৈরি করা হয়, যা ‘নবকলেবর’ নামে পরিচিত৷ এই নবকলেবরের নিয়মানুযায়ী আজও যে পণ্ডিত স্বপ্নাদেশ পান, সেই পন্ডিতই সমুদ্রে ভেসে আসা কাঠ সংগ্রহ করেন৷ আর সেই পন্ডিতই দায়িত্ব নিয়ে নবেকলেবর তৈরি করেন৷ কোথা থেকে কাঠ ভেসে আসে, আজও তা সবার অজানা৷ শুধু এটুকু জানা যায় যে, যে কাঠগুলি ভেসে আসে তা শুধুমাত্র সেই গাছেরই হবে যেখানে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম চিহ্নিত থাকবে৷ কিন্তু তা কোথায়, কোন গাছ তার কোনও ঠিকানা মেলেনি৷

আজ আমরা ‘রথযাত্রা’র-প্রথম পর্বে জানলাম জগন্নাথ মন্দির ও জগন্নাথ দেবের মূর্তির আবির্ভাবের কথা৷ পরের অর্থাৎ দ্বিতীয় পর্বে আমরা জানবো রথযাত্রা কী এবং কেন তা পালন করা হয়৷

]]>