computer – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Thu, 30 Sep 2021 13:47:39 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png computer – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 বিশ্বে বন্দিত: দেশে বিস্মৃত ভারতের প্রথম কম্পিউটার এই বাঙালি https://ekolkata24.com/offbeat-news/india-forgot-countries-first-inventor-of-computer-who-was-a-bengali Thu, 30 Sep 2021 13:47:39 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=6133 বিশেষ প্রতিবেদন: কম্পিউটার ছাড়া এখন দিন অচল। ‘টেক-স্যাভি’ জেনারেশনের কাছে চার্লস ব্যাবেজ, স্টিভ জোবস্ বা বিল গেটস্‌-এঁরাই ভগবানতুল্য। ভাগ্যিস এই আবিস্কার হয়েছিল, না হলে কে জানে কি হত! কিন্তু কতজন জানেন, ভারতের প্রথম কম্পিউটার নির্মাতা এক বাঙালি। তিনি বৈজ্ঞানিক সমরেন্দ্র কুমার মিত্রকে।

সমরেন্দ্র মিত্র কলকাতার ‘কম্পিউটিং মেশিন ও ইলেক্ট্রনিক্স’ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। ১৯৫৪ সালে ভারতের প্রথম দেশীয় ইলেক্ট্রনিক অ্যানালগ কম্পিউটারটির নক্সা তৈরি ও নির্মাণের কাজ করেছিলেন। তাঁর তৈরি সেই কম্পিউটার ১০টি চলরাশিযুক্ত সরল সমীকরণ ও তৎসংক্রান্ত গণনার কাজ অনায়াসেই করতে পারত এবং এতে ‘গাউস-সেইডেল পুনরাবৃত্তি প্রক্রিয়া’র একটি পরিবর্তিত সংস্করণের প্রয়োগ করা হয়েছিল। বউবাজার হাইস্কুল ও প্রেসিডেন্সি কলেজের এই প্রাক্তনীর নেতৃত্বে ১৯৬৩ সালে আইএসআই ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ প্রচেষ্টায় ভারতের প্রথম দ্বিতীয়-জেনারেশন দেশীয় ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরির কাজ শুরু হয়। এই যন্ত্রের নক্সা ও নির্মাণের কাজ করেছিলেন সমরেন্দ্রবাবু নিজে। ট্রানজিস্টর-মাধ্যমে তৈরি এই কম্পিউটারটির নাম রাখা হয়েছিল ‘আইএসআইজেউ-১’ এবং এই কম্পিউটারটি কার্যকরী হয় ১৯৬৪ সালে।

samarendra-K-maitra

সমরেন্দ্র কুমার মিত্র ছিলেন একজন স্বশিক্ষিত স্কলার। তাঁর আগ্রহের পরিধি ব্যাপৃত ছিল গণিত, ফিজিক্স, রসায়ন, প্রাণীবিদ্যা, পোল্ট্রি-বিজ্ঞান, সংস্কৃত, দর্শন, ধর্ম, সাহিত্য ইত্যাদি নানা বিষয়ে। ১৯৩৫ সালে রসায়নের জন্য তাঁকে কানিংহ্যাম পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৭-এ রসায়নে ও ১৯৪০-এ ফলিত গণিত বিষয়ে তিনি এম.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন। কিছু বছর পর মেঘনাদ সাহার তত্ত্বাবধানে ফিজিক্সে পিএইচডি করতে শুরু করলেও ১৯৫৬-এ মেঘনাদ সাহার প্রয়াণের পর সেই কাজ থেকে তিনি সরে আসেন।

সমরেন্দ্রবাবু ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত সিএসআইআর-এর তত্ত্বাবধানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালিত ফিজিক্স ল্যাবরেটরিতে রিসার্চ ফিজিসিস্ট-রূপে ‘এয়ার-ড্রিভেন আল্ট্রাসেন্ট্রিফিউজ’-এর নক্সা ও গঠন নিয়ে কাজ করেছিলেন। আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের উচ্চগতির কম্পিউটিং মেশিন বিষয়ে শিক্ষালাভের জন্য তাঁকে ইউনেস্কো কর্তৃক স্পেশাল ফেলোশিপ প্রদান করা হয় ১৯৪৯-৫০ সালে এবং তিনি সেইসময় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিন্সটনের ইন্সটিটিউট অফ অ্যাডভান্স স্টাডিজ ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাথামেটিক্যাল ল্যাবরেটরিতে কাজ করেছেন। প্রিন্সটনে কর্মরত থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে আইনস্টাইন, উলফগ্যাং পাউলি, জন ভন নিউম্যান প্রমুখ ফিজিসিস্ট ও গণিতজ্ঞদের পরিচয় হয়। পাশাপাশি বিজ্ঞানী নীলস্‌ বোর ও রবার্ট ওপেনহাইমারের প্রচুর বক্তৃতায় তিনি আমন্ত্রিত ছিলেন।

samarendra-K-maitra

১৯৫০ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি আইএসআই-তে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন – কখনও অধ্যাপক, কখনও ডিরেক্টর হিসেবে। তিনি ইউনাইটেড নেশন্স টেকনিক্যাল অ্যাসিস্টেন্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেছেন এবং ১৯৫৫ সালে তাঁর নেতৃত্বেই তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া থেকে ১ কোটি টাকার এক বিরাট ‘টেকনিক্যাল-এইড’ ভারতে এসেছিল।

সারাজীবনে সমরেন্দ্র মিত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন, সেগুলির মধ্যে ১৯৫৯ সালে ‘ব্যালেস্টিক ট্রাজেক্ট্রি’ বিষয়ে ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উপদেষ্টার পদ, ১৯৬২-৬৪ সালে ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কমিটি ফর স্পেস রিসার্চ’-এর সদস্যপদ এবং ১৯৬৯-৭৬ সালে ভারত সরকারের ‘ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন’-এর টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজারের পদ অন্যতম। তিনি ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স’ ও আমেরিকার ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারি’ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সদস্য ছিলেন। ‘এন.আর সেন্টার ফর পেডাগজিক্যাল ম্যাথামেটিক্স’-এ প্রফেসর এবং ‘ক্যালকাটা ম্যাথামেটিক্যাল সোসাইটি’র চেয়ারম্যান এবং এমেরিটাস প্রফেসরও ছিলেন সমরেন্দ্র কুমার মিত্র। গণিত, থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে তাঁর প্রচুর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল।

সমরেন্দ্রবাবু ভারত সরকারের নানাবিধ রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৬৫ সালে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউটে আয়োজিত ‘কম্পিউটার সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া’র প্রথম বার্ষিক সম্মেলনের বাস্তবায়নের পিছনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউ-এ যেখানে গুগল, মাইক্রোসফটের মত আজকের বিশ্বের তাবড় তাবড় টেক-জায়ান্ট সংস্থার মুখ্য কার্যালয়, সেখানেই ‘কম্পিউটার হিস্ট্রি মিউজিয়াম’-এ রয়েছে সমরেন্দ্র মিত্রের নামে স্মৃতিফলক। দুনিয়া যাঁকে স্বীকৃতি দিয়েছে, বাঙালি তাঁকে ভুলে গিয়েছে।

]]>