এদিন রাজনাথ সিং টুইট করে জানান, ‘আজ আমার করোনা ধরা পড়েছে, সেইসঙ্গে হালকা উপসর্গ রয়েছে। আমি আপাতত হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে যারাই আমার সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের প্রতি অনুরোধ যে তাঁরাও যেন নিজেদের টেস্ট করিয়ে নেন।’
প্রসঙ্গত, চলমান করোনার তৃতীয় ঢেউ ও ওমিক্রনের আবহে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী সহ অনেক নেতা মন্ত্রী করোনার কবলে পড়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী একটি ওয়েবিনারে ভাষণ দিয়েছিলেন যেখানে ১০০টি নতুন সৈনিক স্কুলকে মেয়েদের সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিগত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭২৩ জন। একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের। গতকাল সেখানে মৃত্যু সংখ্যা ছিল ৩২৭ জন। এর ফলে এক ধাক্কায় বাড়ল সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। দেশে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা হল ৭ লক্ষ ২৩ হাজার ৬১৯ জন।
]]>I have tested positive for Corona today with mild symptoms. I am under home quarantine. I request everyone who have recently come in my contact to isolate themselves and get tested.
— Rajnath Singh (@rajnathsingh) January 10, 2022
ওই অনুষ্ঠানে রাজনাথ স্পষ্ট বলেন, যেভাবে সেনা জওয়ানরা দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেন একই রকমভাবে আমাদেরও তাঁদের কিছু ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। আমাদেরকে সুরক্ষা দিতে গিয়েই প্রতিবছর বহু জওয়ান শহিদ হন। এই শহিদ জওয়ানদের পরিবারকে ভাল রাখার দায়িত্ব আমার-আপনার সকলের। আমাদের মনে রাখা উচিত, জওয়ানরা যদি আমাদের নিরাপত্তার দিকটি না ভাবতেন তাহলে কিন্তু তাঁরা কখনওই শহিদ হতেন না। তাঁরা অনায়াসেই আত্মরক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা সেটা না করে নির্ভয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গিয়েছেন। সেনা জওয়ানদের এই অবদান আমরা কোনওভাবেই ভুলতে পারি না। কৃতজ্ঞতাবশতই এই সমস্ত জওয়ানদের পরিবারের পাশে থাকা দরকার। মৃত জওয়ানদের পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রতিবেশীদের এগিয়ে আসা উচিত।
ওই অনুষ্ঠানে রাজনাথ সরাসরি পাকিস্তানের নাম না করে বলেন, আমাদের কিছু প্রতিবেশী দেশ নিজেদের উন্নয়নের কথা ভাবে না। সে দেশের মানুষ অনাহারে, অপুষ্টিতে দিন কাটালেও তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা করে না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হল জঙ্গিদের মদত জুগিয়ে চলা। আসলে এই প্রতিবেশী দেশটি আমাদের দেখে হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে ভারত যখন গোটা বিশ্বের সামনে নিজেদেরকে মেলে ধরেছে, গোটা বিশ্বকে বাধ্য করেছে ভারতকে সমীহ করতে তখন সেই দেশ ক্রমশ পিছিয়ে চলেছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের গায়ে কালি ছেটাতে গিয়ে তারা আরও বেশি করে একঘরে হয়ে পড়েছে কিন্তু তাতেও ওই দেশের কোন শিক্ষা নেই। লজ্জা বোধ নেই।
রাজনাথ পাকিস্তানকে কটাক্ষ করে আরও বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশের হিংসা ও উস্কানিমূলক আচরণের জন্যই আমাদের অস্ত্রশস্ত্র বাবদ বিপুল খরচ করতে হয়। কিন্তু প্রতিবেশী দেশটি যদি অস্ত্রের পিছনে না ছুটে জঙ্গিদের হাতে অর্থ তুলে দিতে গিয়ে অর্থের অপচয় না করত তবে সেই অর্থ দিয়ে তারা দেশের উন্নয়ন করতে পারত। একই কথা প্রযোজ্য আমাদের ক্ষেত্রেও। কারণ আমরাও প্রতিবছর অস্ত্র কিনতে বিপুল টাকা খরচ করি। তবে আমরা কিন্তু শখ করে এই কাজ করি না। আমরা নিজেদের আত্মরক্ষার্থেই অস্ত্র কিনে থাকি। কিন্তু আমরা যে টাকা দিয়ে প্রতিবছর অস্ত্র কিনি সেই টাকা দেশের উন্নয়নের পিছনে খরচ করা গেলে আমরা আরও অনেক এগিয়ে যেতে পারতাম।
]]>কিন্তু পাকিস্তান যদি তাদের এই ভুল অবিলম্বে শুধরে না নেয় তবে ভারত নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকবে না। প্রয়োজনে সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় এই হুমকি দিলেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)।
শনিবার এক অনুষ্ঠানে রাজনাথ বলেন, ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর ভূস্বর্গের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর সন্ত্রাসবাদীরা বিপাকে পড়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের এটা সহ্য হচ্ছে না। ইমরান খান সরকারের আমলে সেদেশে মুদ্রাস্ফীতির হার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি ৭০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাধারণ মানুষের আয়ত্বের বাইরে চলে গিয়েছে।
এই মুহূর্তে পাকিস্তানে যা পরিস্থিতি তাতে বলা যায় সে দেশের গরিব মানুষ দু’বেলা পেটপুরে খেতে পাচ্ছে না। কিন্তু সেই সমস্যার সমাধান না করে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জঙ্গিদের সব ধরনের সাহায্য করছে। তবে পাকিস্তান যদি আমাদের ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভেবে নেয় তাহলে তারা ভুল করবে। প্রয়োজনে আমরা সীমান্ত অতিক্রম করে সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে দ্বিতীয়বার ভাববো না। আমরা যে কি করতে পারি সে অভিজ্ঞতা পাকিস্তানের আছে তাই তাদের উচিত বুঝেশুনে পথ চলা।
ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে রাজনাথ আরও বলেন, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান তো সব ধরনের আন্তর্জাতিক মঞ্চে বহু ছুটোছুটি করেছে। কিন্তু কোনও দেশকেই তারা পাশে পায়নি। বরং কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার মুখ পুড়িয়েছে ইমরান সরকার। কিন্তু তাতেও তাদের শিক্ষা হয়নি। পাকিস্তানের মনে রাখা উচিত, কেন্দ্রে এখন আর কংগ্রেস সরকার নেই।
কংগ্রেস সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নরম মনোভাব দেখাত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শক্ত ধাতের মানুষ। তিনি জঙ্গিদের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য সেনা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন। সন্ত্রাসবাদীরা যেন মনে রাখে তারা যদি সীমান্তের এপারে একজন মানুষকেও খুন করে থাকে তবে তাদেরও পাল্টা রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
]]>