Digital startup – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Fri, 23 Jul 2021 03:22:55 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png Digital startup – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 ডিজিটাল স্টার্ট আপই ভারতের ভবিষ্যৎ https://ekolkata24.com/uncategorized/digital-startups-will-shape-the-future-of-india Fri, 23 Jul 2021 03:22:39 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=1200 নিউজ ডেস্ক: প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টায় ২২৪ কিলোমিটার৷ আর তাতেই বদলে দিতে পারে মানসিকতা৷ বদলে দিতে পারে জীবনের চালচিত্র৷ এটা বেঙ্গালুরুর অঙ্কিত ভাটির চেয়ে ভালও আর কে-ই বা জানে সে কথা৷

২০১০ সালের গোড়ার দিকে বেঙ্গালুরু থেকে বন্দিপুর যাচ্ছিলেন অঙ্কিত৷ পাড়ার ট্র্যাভেল এজেন্সি থেকে ভাড়া করেছিলেন একটি গাড়ি৷ কিন্তু মাঝ রাস্তায় পৌঁছে ড্রাইভার অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন৷ অঙ্কিত স্বভাবতই তা দিতে রাজি হননি৷ অগত্যা মাঝরাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন ওই চালক৷ অঙ্কিত জড়িয়ে পড়েন তর্ক-বিতর্কে৷ কলকাতাসহ ভারতে এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন অনেকেই৷ কিন্তু মুম্বই আইআইটি’র ছাত্র অঙ্কিত সেই ঘটনাটিকেই জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে নিলেন৷

অঙ্কিত অবশ্য চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন অনেক আগেই৷ ভালো বেতনের চাকরির মোহ ছেড়ে ডিজিটাল স্টার্ট আপের পরিকল্পনা আগেই ছিল তাঁর৷ সেই মতো সেট আপও তৈরি করছিলেন৷ কিন্তু বেঙ্গালুরুর ঘটনার পর তিনি ঠিক করে ফেলেন, পরিবহন ক্ষেত্রেই স্টার্ট আপ তৈরি করবেন৷ আরও পাঁচটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো অঙ্কিতের পরিবারও এই ভাবনায় খুশি হয়নি৷ আইআইটি পাশ ছেলে শেষ পর্যন্ত ‘ট্র্যাভেল এজেন্ট’? কিন্তু নিজের লক্ষ্য থেকে সরেননি অঙ্কিত৷ পুরনো স্টার্ট আপের সেট আপেই ট্যাক্সি অ্যাপ তৈরির কাজ শুরু করেন৷ সঙ্গে পেয়ে যান বন্ধু ভবিশ আগরওয়ালকে৷ পরিবহনের ব্যবসায় নিজেদের গাড়ি না-কিনে অঙ্কিত এবং ভবিশ একটি অ্যাপ তৈরির কাজ শুরু করেন৷ অনেকটা পশ্চিমের দেশে প্রচলিত ‘উবার’এর মতো৷ কিছুদিনের মধ্যেই দু’জন বিনিয়োগকারীও পেয়ে যান তাঁরা৷ ফলাফল, ভারত জুড়ে ‘ওলা ক্যাব’, এই মুহূর্তে যার বার্ষিক টার্ন ওভার প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার৷ শুধু তাই নয়, ভারত জুড়ে ১১০টি শহরে ৬ লক্ষের বেশি গাড়ি এখন ওলার দখলে৷ ট্যাক্সি থেকে শুরু করে অটো পর্যন্ত নানা ধরনের গাড়ির স্টিকারে এখন ‘ওলা’৷

New startup body to confront Big Tech policies

ইউরোপ এবং আমেরিকায় স্টার্ট আপের রমরমা শুরু হয়েছিল একুশ শতকের গোড়ার দিকেই৷ ‘অরকুট’ ‘ফেসবুক’এর মতো বহু সংস্থাই কাজ শুরু করেছিল স্টার্ট আপ হিসেবে৷ ‘ফেসবুক’ পরবর্তী ভারতেও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ডিজিটাল স্টার্ট আপ তৈরির উৎসাহ এখন চোখে পড়ার মতো৷ পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ডিজিটাল স্টার্ট আপ তৈরির নিরিখে ভারতের স্থান তিন নম্বরে৷ আমেরিকা এবং ব্রিটেনের পরেই৷

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, ভারতে স্টার্ট আপ ভাবনা আগে থেকেই ছিল৷ যদিও ‘স্টার্ট আপ’ শব্দটির অস্তিত্ব ছিল না তখন৷ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কো-অপারেটিভ মুভমেন্টকে অনেকেই স্টার্ট আপের পূর্বসুরী বলে মনে করেন৷ ‘আমুল’ যেভাবে শুরু হয়েছিল, অনেকেই তাকে স্টার্ট আপ বলতে চাইছেন ইদানীংকালে৷ বস্তুত, মধ্য প্রাচ্য থেকে ফিরে এসে অতি সামান্য অর্থ নিয়ে ধীরুভাই আম্বানি যেভাবে রিল্যায়েন্স প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাকেও একপ্রকার স্টার্ট আপই বলা যায়৷ তবে ডিজিটাল স্টার্ট আপ শুরু হয়েছে ফেসবুক পরবর্তী সময়েই৷ ‘ওলা’, ‘ফ্লিপ কার্ট’, ‘বিগ বাস্কেট’কে যার পথিকৃৎ বলা চলে৷

বর্তমান ভারতে স্টার্ট আপ একটি ইন্ডাস্ট্রি৷ কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিও স্টার্ট আপে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ করে দিচ্ছে৷ সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবও খানিক সেরকমই৷ ২০১৫ সালে সারা ভারতে স্টার্ট আপে বিনিয়োগ হয়েছিল ৪ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার৷ ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার৷ ২০১৭ সালে অঙ্কটি এক লাফে গিয়ে পৌঁছেছে ১৩ দশমিক ৭ বিলিয়ান ডলারে৷ তবে সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে অনেক বেশি স্টার্ট আপ কোম্পানি ফান্ড পেয়েছিল৷ ২০১৬ সালে পেয়েছিল ১,০৩৪টি কোম্পানি৷ ২০১৫ সালে পেয়েছিল ৯১৩টি কোম্পানি৷ ২০১৭ সালে সেই সংখ্যাটি কমে দাঁড়িয়েছে ৮২০৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন স্টার্ট আপের চেয়ে প্রতিষ্ঠিত স্টার্ট আপগুলিতেই বিনিয়োগকারীরা টাকা ঢেলেছেন বেশি৷ তাঁরা বলছেন, মোট বিনিয়োগের ৭০ শতাংশ গিয়েছে মাত্র ১০টি কোম্পানির কাছে৷

ফ্লিপ কার্ট, ওলা কিংবা পেটিএমের মতো কোম্পানিগুলিতে বিনিয়োগকারীরা আরও টাকা ঢালতে আগ্রহী৷ যদিও তাঁদের মতে, এই কোম্পানিগুলিকে আর স্টার্ট আপ বলা যায় না৷ কারণ বিপুল পরিমাণ ব্যবসার মুখ ইতিমধ্যেই কোম্পানিগুলি দেখে ফেলেছে৷

তবে একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ভারতে ডিজিটাল স্টার্ট আপের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে৷ কারণ, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি স্টার্ট আপ তৈরিতে উৎসাহ দিচ্ছে৷ দু’টি বিষয় সরকারের কাছে স্পষ্ট৷ আগামী কয়েকবছরের মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় শতাংশ হবে তরুণ প্রজন্ম৷ বিশ থেকে ত্রিশের কোঠায় যাঁদের বয়স৷ তাঁদের জন্য কর্মসংস্থান করতে হলে নতুন নতুন কোম্পানি দরকার৷ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কেবলমাত্র বড় কারখানা এবং শিল্পেই গুরুত্ব দিয়েছিল তৎকালীন সরকার৷ কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি দেখে বর্তমান সরকার বুঝে গেছে যে, স্টার্ট আপই ভবিষ্যৎ৷ শুধু তাই নয়, দেশে আইটি প্রফেশনালের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ তাঁদের যদি দেশে রাখতে হয়, তাহলে স্টার্ট আপ তৈরির পরিবেশ তৈরি করতে হবে দেশ জুড়ে৷ গড়ে দিতে হবে কাজের পরিসর৷

পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও৷ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের মতে, রাজ্য সরকার স্টার্ট আপ তৈরির জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ সম্প্রতি স্টার্ট আপের জন্য একটি বড় ফান্ডও তৈরি করা হয়েছে৷ নতুন নতুন কোম্পানি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে এই ফান্ডের জন্য দরখাস্ত করতে পারে৷

ব্রিটেনের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ রায় ভারতের স্টার্ট আপ নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা করেছেন৷ তাঁর মতে, দেশের মানসিকতার মধ্যেই এখন ডিজিটাল হাওয়া৷ বিষয়টিকে তিনি দু’দিক থেকে দেখতে চাইছেন৷ ছোট ছোট এলাকাতেও যুবকেরা ছোট ছোট ব্যবসা তৈরির পরিকল্পনা করছেন৷ এই চেষ্টা আগেও ছিল৷ কিন্তু এখন আর সাধারণ একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি খুলে খরিদ্দারের অপেক্ষায় কেউ বসে থাকছেন না৷ বাড়িতে বসে ট্র্যাভেল এজেন্সি খুলে কোনও ডিজিটাল স্টার্ট আপকে সেই এজেন্সির ডিজিটাল পোর্টাল তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, যাতে বাড়িতে বসেই অনেক বড় পরিসরে ব্যবসা চালানো যায়৷ ইন্দ্রজিত রায়ের মতে, এর ফলে দু’দিক থেকে স্টার্ট আপের রমরমা বাড়ছে৷ ডিজিটাল স্টার্ট আপ নিয়ে কথা বলতে হলে তাই অন্যান্য ক্ষেত্রের স্টার্ট আপগুলিকেও মাথায় রাখতে হবে৷ তাঁর বিশ্বাস, এভাবে চললে আগামী ১০ বছরের মধ্যে স্টার্ট আপ ইন্ডাস্ট্রিতে ভারত বিশ্বের দরবারে আরও বড় জায়গা করে নেবে৷ তিনি মনে করেন, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি ইতিমধ্যেই স্টার্ট আপ তৈরির জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷ প্রয়োজন সরকারের সেই সুযোগ সুবিধাগুলি সকলের কাছে পৌঁছানো৷ অনেকেই সেই বিষয়ে এখনও অবগত নন৷ যদিও, অঙ্কিত-আম্বানিরা পারলে, বাঙালি যুবকরাও চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত৷

]]>