fake officer – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Sat, 31 Jul 2021 15:10:27 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png fake officer – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 কোনটা মুখ আর মুখোশ বোঝা বড় মুশকিল, কী রয়েছে দেবাঞ্জনদের মনস্তত্ত্বের গভীরে? https://ekolkata24.com/offbeat-news/what-did-the-psychologists-say-about-the-bengali-fake-officer Sat, 17 Jul 2021 01:42:35 +0000 https://www.ekolkata24x7.com/?p=912 সোয়েতা ভট্টাচার্য: কখনও দেবাঞ্জন দেব, কখনও সনাতন রায়চৌধুরী কখনও আবার শুভদীপ ব্যানার্জি। নাম আলাদা, ব্যক্তি আলাদা৷ তবে এক হল ,তাদের অপরাধের ধরন। এ যেন অপরাধ নিজেই নিজের মুখোশ বারবার বদলেছে। গত এক মাসের মধ্যে এই তিন ব্যক্তি ধরা পড়েছে পুলিশের জালে। অভিযোগ সরকারি অফিসার সেজে প্রতারণার। এখানেই থেমে থাকেনি অভিযুক্তরা। রীতিমতো ঘটা করে সরকারি আমলাদের মতো বা অফিসারদের মতো নীল বাতি গাড়িও ব্যবহার করত এই অভিযুক্তরা।

বিধায়ক মিমি চক্রবর্তীকে ভুয়ো টিকা দেওয়ার পর দেবাঞ্জন দেবের একের পর এক কির্তি প্রকাশ্যে আসে। দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সরকারি আমলা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে চলেছিল সে। নীল বাতি গাড়িও ব্যবহার করত সে। দেবাঞ্জন দেবের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক খেলা শুরু হয়ে যায় ।দেবাঞ্জন দেবকে নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পালা রাজ্য সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে এখনও অব্যাহত৷

দেবাঞ্জনকাণ্ডের রেশ কাটার আগেই কলকাতায় ফের নীল বাতি লাগানো গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়। গাড়িতে সিবিআই স্টিকার। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। পুলিশ জানায় বরানগরের বাসিন্দা সনাতন রায়চৌধুরী কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজ্য সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল ও সিবিআইয়ের কৌঁসুলি পরিচয়ে গড়িয়াহাট থানা এলাকায় ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করেন ওই আইনজীবী। নীল বাতি লাগানো গাড়িতে সিবিআই স্টিকার দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। বয়ানে অসঙ্গতি মেলায় সিঁথি এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে গড়িয়াহাট থানার পুলিশ। 

এরপর পুলিশের জালে ধরা পরে শুভদীপ ব্যানার্জি। গত ১২ই জুলাই দিল্লির এক পাঁচতারা হোটেল থেকে শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে জগাছা থানার পুলিশ। রাজধানীতে করে অভিযুক্তকে নিয়ে আসা হয় হাওড়ায়। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই অফিসার পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করে স্বামীর পরিচয় ফাঁস করেছেন। এই অভিযুক্ত ঠিক একইভাবে নীল বাতি গাড়ি ব্যবহার করত। গাড়িতে সাঁটানোর থাকতো সিবিআই অফিসারের স্টিকার ।সেই গাড়িটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এই তিন অভিযুক্ত একে অপরকে না চিনলেও তাদের মধ্যে এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে ।এই তিন জনের অপরাধ করার ধরণটা একরকম ।তিন জনের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে তারা এই ভাবেই প্রতারণা করে চলেছেন । ডিজে দেখবো পরিচয় তৈরি করেছে এই অভিযুক্তরা ।এদের মধ্যে যে বিষয়টী লক্ষণীয় তা হল এই অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই মিথ্যা বচনে পারদর্শী ।তারা স্পষ্টভাবেই জানতেন যেভাবে তারা নিজেদের সরকারি অফিসারের ভূয়ো পরিচয় দিচ্ছে পুলিশের নজর এড়িয়ে গা ঢাকা দিতে পারবে না বেশিদিন। এইটা জানার পরেও এই ধরনের অপরাধ কেন করে দেবাঞ্জন, সনাতন এবং শুভদীপরা। এখান থেকেই প্রশ্ন ওঠে তাহলেকি তাদের মানসিক অবস্থান ঠিক একই রকম।

এই প্রসঙ্গে বিখ্যাত মনোবিদ রাজ্যশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,” এদের মতো লোকেদের পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার থাকে। সোশিওপ্যাথিক পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার অর্থাৎ এরা হচ্ছে সোশিওপ্যাথ ।যারা সোশিওপ্যাথিক হয় তাদের ব্যক্তিত্ব ত্রুটিপূর্ণ হয়ে থাকে। তারা নিজেদের ভুয়ো পরিচয় তৈরি করে। তারা নিজেদের বিষয়ে মানুষকে একাধিক গল্প বানিয়ে বলে। যে কাজটা কখনও তারা করেনি সেবিষয়ে মানুষকে ভুল তথ্য দেয়। তারা নিজেদের সম্পর্কে এমন কিছু কথা বলে বা এমন কোনও কাজ তারা করেছে বলে দাবি করে যেটা আদৌও জীবনে তারা কোনদিনই করেনি।মানুষকে ঠকানোর জন্য এরা ভুয়ো পরিচয় তৈরি করে। এই ধরনের মানুষ জীবনে ঝুঁকি নিতে ভীষণ পছন্দ করে। তাদের ম্যানুপুলেটিভ চরিত্র থাকে। তবে সবার ক্ষেত্রে তারা ম্যানুপুলেটিভ নাও হতে পারে। তারা নিজের মতো করে টার্গেট বেছে নেয়। আর সেই অনুযায়ী লোক ঠকানোর কাজ করে থাকে। এই ধরনের কাজ করে তারা আত্মতৃপ্তি অনুভব করে।

এবার প্রশ্ন হল যে, এই ধরনের মানুষ কেন এমন কাজ করে থাকে? তার উত্তরে রাজ্যশ্রীদেবী বলেন,” এই ধরনের মানসিক স্থিতির জন্য দায়ী হয় মানুষের বেড়ে ওঠা। ছোট থেকে কোনও জিনিস তারা যখন না পায় এবং অন্যদের সে জিনিস পেতে দেখে সেই সম্পর্কে তাদের যখন স্বপ্ন রয়েছে সেই সব ক্ষেত্রে এই ধরনের পার্সোনালিটি তৈরি হয়। এই ধরনের মানসিক অবস্থার মানুষদের মধ্যেই সব সময়ে সব বিষয় নিয়ে অভিযোগ থাকে। একদিকে যেমন ক্ষমতালোভী হয়, অন্যদিকে বাইরের জগৎকে ক্ষমতা প্রদর্শন করার চেষ্টা করে। এই ধরনের মানুষ নিজেদের আত্মতৃপ্তির জন্যই কাজ করে। যে কাজটা করে না সেগুলো মানুষকে বোঝায় যে করে। এই মানুষগুলির পার্সোনালিটি তৈরি হয়ে থাকে এইভাবেই। অর্থাৎ দেবাঞ্জনের মতো সোশিওপ্যাথিক পার্সোনালিটির মানুষেরা, অন্য কোন মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারে না। তারা মিথ্যা কথা বলে। এরা জীবনে জেনেশুনেই এই ঝুঁকিগুলো নিয়ে থাকে এবং একাধিক ভুয়ো পরিচয় তৈরি করতে পছন্দ করে।”

এইরকম নানাবিধ মানসিক জ্বরে জর্জরিত আমাদের সমাজ ।এই ব্যাধি সমূলে উৎপাটিত করতে না পারলে মুখোশের আড়ালে থাকা মুখগুলো বারবার প্রতারিত করে যাবে মানুষকে। সমাজের একটা শ্রেণি বারবার প্রতারণার শিকার হয়েই যাবে।

]]>