গত ২৪ ঘণ্টায় হংকংয়ে ১১৪ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। এরসঙ্গেই শহর জুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। হংকং প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বার-জিম বন্ধ, রাতে রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া নিষিদ্ধ। প্রশাসনের তরফে শহরে করোনার পঞ্চম ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত শহরটিতে ১১৪ জনের শরীরে ওমিক্রন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই পাওয়া গেছে বিমানবন্দরে অথবা ২১ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায়। কিন্তু সম্প্রতি ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইনের এক কর্মীর সূত্র ধরে সেখানে ছোটখাটো গুচ্ছ সংক্রমণ শনাক্তের পর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের দাবি ওঠে।
হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম্ব জানিয়েছেন, শহরটিতে এবার ওমিক্রনের সম্প্রদায় ভিত্তিক সংক্রমণ ঘটতে পারে। এর জেরে স্থানীয় সময় আগামী শনিবার মধ্যরাত থেকে ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ফিলিপাইন ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দুই সপ্তাহের জন্য সব ধরনের ফ্লাইট বাতিল করেছে হংকং কর্তৃপক্ষ। আগামী শুক্রবার থেকেই জারি করা হচ্ছে নয়া করোনা বিধিনিষেধ।
Hong Kong bans flights from eight countries after Omicron outbreak: AFP
— ANI (@ANI) January 5, 2022
]]>
সূত্রের খবর, ২০২২-এর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিমান চলাচলের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তৎকালীন পরিস্থিতি বিবেচনা করে। অর্থাৎ যদি ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসে তবেই ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হবে আন্তর্জাতিক উড়ান।
চলতি পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা চালু করা যায় কিনা তা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেই সমীক্ষায় দেশের অধিকাংশ মানুষই আপাতত আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রকে রীতিমতো চিঠি দিয়ে এখনই আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু না করার জন্য আর্জি জানিয়ে ছিলেন। ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট রুখতে ইতিমধ্যেই বিশ্বের একাধিক দেশ আন্তর্জাতিক উড়ান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ভারতও এবার সেই পথেই হাঁটল। ওমিক্রন ঠেকানোর লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মোদি সরকার দেশের বিমানবন্দরগুলিকে একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিদেশ থেকে আগত যাত্রী বিশেষ করে কেন্দ্রের নির্দিষ্ট করা ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে একাধিক বিধি-নিষেধ মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেখা গিয়েছে, সম্প্রতি ভারতে যারা ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন তারা সকলেই বিদেশ থেকে ফিরেছেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ থাকায় দেশের পর্যটন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। একইসঙ্গে লোকসানের মুখে পড়েছে বিভিন্ন বিমান সংস্থা। যে কারণে বিমান সংস্থাগুলি করোনা বিধি মেনে আন্তর্জাতিক উড়ান চালু করার দাবি জানিয়েছিল সরকারের কাছে। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা চালু হওয়ার একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সবকিছুই ভেস্তে দিল করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন।
]]>উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট বি ১.১.৫২৯ বা ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট অতি মারাত্মক। কারণ টিকাও এই ভ্যারিয়েন্টের কাছে কোনও কাজে আসছে না। সে কারণেই বিশ্বের প্রায় সব দেশেই নতুন করে ওমিক্রন আতঙ্কে ভুগছে। কিভাবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের মোকাবিলা করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
অনেকেই মনে করছেন, ওমিক্রনের জেরে বিশ্বের অর্থনীতিতে বড় মাপের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। শনিবার সকালে কেজরিওয়াল এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে টুইট করেন, মোদিজির কাছে আমার অনুরোধ, যে সমস্ত দেশে করোনার নতুন স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে সেই সমস্ত দেশ থেকে কোনও বিমানকে যেন ভারতে আসার অনুমতি দেওয়া না হয়। আপনি ভালই জানেন, বহু কষ্টে এবং অনেক সর্তকতা অবলম্বন করে তবেই আমরা করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পেরেছি। তাই আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। নতুন ভ্যারিয়েন্ট যাতে কোনওভাবেই ভারতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
কেজরিওয়াল আরও জানিয়েছেন, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার তিনি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক করবেন। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট থেকে কী ধরনের বিপদ হতে পারে তা নিয়েই তিনি আলোচনা করবেন। একই সঙ্গে এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পেতে কী করা দরকার সে বিষয়েও পরামর্শ চাইবেন বিশেষজ্ঞদের। রাজধানীকে কিভাবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের এর হাত থেকে বাঁচানো যায় সে ব্যাপারেও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ জানতে চাইছেন কেজরিওয়াল।
]]>দীর্ঘ ১১ বছর পর ২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শ্রীনগর-শারজা রুটে বিমান পরিষেবার সূচনা করেন। শ্রীনগর থেকে শারজা পৌঁছতে এই বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করছিল। কিন্তু পাকিস্তান জানিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় বিমানকে তারা নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করার অনুমতি দেবে না। সেক্ষেত্রে শারজাগামী ভারতীয় বিমানকে উদয়পুর, আমেদাবাদ, ওমান ঘুরে শারজায় পৌঁছতে হবে। এর ফলে সময় এক ঘন্টা বেশি লাগবে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে টিকিটের দাম। বাড়তি ভাড়া গুনতে হলে স্বাভাবিকভাবেই এই রুটে বিমানের চাহিদাও কমে আসবে।
শ্রীনগর-শারজা রুটে বিমান চলাচল শুরুর দিনই পাকিস্তান প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন ছিল, পাকিস্তান কি নিজেদের মনোভাব আদৌ বদল করেছে? শ্রীনগর-শারজা বিমান চলাচলের জন্য ইসলামাবাদ কি পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করার অনুমতি দেবে? পাকিস্তান যদি অনুমতি না দেয় তাহলে শ্রীনগর- দুবাই বিমান রুটের মতই শ্রীনগর-শারজা উড়ানের একই পরিণতি হবে।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার শ্রীনগর-দুবাই বিমান চলাচল শুরু করেছিল। কিন্তু পাকিস্তান সে দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না দেওয়ায় অচিরেই সেই বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পক্ষকাল আগে ওমর আবদুল্লা যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তা এদিন সত্যি বলে জানা গেল।
পাকিস্তান ভারতের প্রতি যতই বন্ধুত্বের কথা বলুক না কেন ইসলামাবাদ যে নয়াদিল্লির সঙ্গে বৈরিতা বজায় রাখতে চায় এই সিদ্ধান্ত তারই প্রমাণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্তের কথা জানার পর ওমর টুইট করেছেন, ২০০৯-১০ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করল পাকিস্তান। পাকিস্তান যে তাদের মনোভাব এতটুকু বদলায়নি এই সিদ্ধান্ত তারই প্রমাণ।
ইমরান খান সরকারের আমলে ভারত- পাকিস্তান সম্পর্কের বরফ গলবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু সেটা হল না। পাকিস্তানের সিদ্ধান্তে আমি মর্মাহত। পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্তে এখনই শ্রীনগর-শারজা রুটে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমন কোনও খবর নেই। মোদি সরকার চেষ্টা করছে পাকিস্তানের কাছ থেকে সম্মতি আদায় করতে। যদি সেই সম্মতি না মেলে সেক্ষেত্রে হয়তো শ্রীনগর থেকে শারজাগামী যাত্রীদের কিছুটা বাড়তি ভাড়া গুণতে হবে।
]]>