helping people – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Wed, 06 Oct 2021 07:10:03 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png helping people – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 বন্যাক্রান্তদের জীবনে পুজোর গন্ধ, আলোর খোঁজে একদল যুবক-যুবতী https://ekolkata24.com/offbeat-news/this-young-peoples-helping-people-who-are-heavily-effected-by-flood Wed, 06 Oct 2021 06:16:58 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=6739 বিশেষ প্রতিবেদন: সবে করোনার ভ্রুকুটি কাটিয়ে ক্রমে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে দেশ ও জাতি। কিন্তু একের পর এক নিম্নচাপের জাঁতাকলে বিদ্ধ বঙ্গবাসী। বাংলার সবচেয়ে বড়ো উৎসবের আগেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাই এবার উৎসব কিছুটা ছন্দহীন। কিন্তু তাতে কী! বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসব বলে কথা। এসব কী আর দমিয়ে রাখতে পারে উৎসবপ্রিয় বাঙালিকে। তাই অন্ধকারের মাঝেও আলোর খোঁজে ব্রতী একদল যুবক-যুবতী। উৎসবের আনন্দকে সমাজের প্রান্তিক শিশুদের সাথে ভাগ করে নিতে এগিয়ে এলো হাওড়া জেলার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমতার ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’।

ঝাড়গ্রাম শহরের অদূরে চিঁচুড়গেড়িয়া গ্রাম। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামের শিশুদের সাথে উৎসবের আনন্দকে ভাগ করে নিলেন অরুণ, তাপস, রাকেশরা। হাওড়া থেকে চিঁচুড়গেড়িয়া গ্রামে গিয়ে গ্রামের সকল শিশুকে নতুন জামাপ্যান্ট, শিক্ষাসামগ্রী ও চকোলেট উপহার দিলেন আমতার স্বেচ্ছাসেবীরা। পুজোয় নতুন জামা পেয়ে রীতিমতো খুশি প্রমিলা, রাজবীর৷ বুদ্ধেশ্বরা। সংগঠনের অন্যতম কর্তা পৃথ্বীশরাজ কুন্তী জানান, প্রতিবছরই আমরা উৎসবের আনন্দকে সমাজের প্রান্তিক শিশুদের সাথে ভাগ করে নিই। এবার আমরা জঙ্গলমহলের শিশুদের মাঝেই আমরা ‘আমাদের ছুটি ছুটি’ অনুষ্ঠিত করলাম। তিনি আরও জানান, এই গ্রাম এখনো শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। এখানেই গত আগস্ট মাস থেকে ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর পক্ষ থেকে একটি অবৈতনিক পাঠশালা ‘বর্ণ পরিচয়’ চালু করা হয়েছে।

Young peoples helping people who are heavily effected by flood

সম্প্রতি জঙ্গলমহলে শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছে তারা। পৃথ্বীশদের স্বপ্ন ছিল জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রামে শিক্ষার আলো জ্বালানোর। ইচ্ছে থাকলেও উপায় সেভাবে হয়ে ওঠেনা। হঠাৎই একদিন মানস তার বন্ধু পঙ্কজের থেকে জানতে পারে তার গ্রামে শিক্ষার আলো এখনো সেভাবে প্রবেশ করেনি। আজও গ্রামের কচিকাঁচাদের অধিকাংশই স্কুলমুখো হয়না। খবর পেয়েই ওরা হাজির হয় ঝাড়গ্রাম শহরের অদূরে জঙ্গল লাগোয়া ছোট্ট একটি গ্রাম চিচুড়গেড়িয়া। ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম ব্লকের অন্তর্ভুক্ত এই গ্রামে ২৭ টি আদিবাসী পরিবারের বাস। সকলেই কোনোরকমে অন্ন সংস্থান করেন। গ্রামে নেই কোনো স্কুল, নেই অঙ্গণওয়াড়ি সেন্টার।

Young peoples helping people who are heavily effected by flood

একদিকে প্রতিকূল আর্থসামাজিক পরিকাঠামো, অন্যদিকে শালের জঙ্গল ও রাস্তা পেরিয়ে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে স্কুলে যেতে হয়। তাই গ্রামের ছেলেপুলেরা সেভাবে স্কুলমুখো হয়না। গ্রামের প্রথম গ্র‍্যাজুয়েট যুবক পঙ্কজ বাস্কে ও তাঁর স্ত্রী উত্তরা মুর্মু বেশকিছুদিন ধরেই নিজেদের গ্রামকে অন্ধকার থেকে আলোয় আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও উপায় আর হচ্ছেনা। গ্রামে গিয়ে এসব জানার পরই চিচুড়গেড়িয়ায় অবৈতনিক পাঠশালা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় হাওড়া জেলার আমতার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর সদস্যরা। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। ভীম মুর্মু, রাগদা বাস্কে, সাগেন মান্ডিরা গ্রামে শিক্ষার আলো জ্বালাতে সাথে সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। কেউ নিজের ঝাড়ের বাঁশ দেন, কেউ স্বেচ্ছাশ্রম। সবুজ প্রকৃতির মাঝে গড়ে তোলা হয় অস্থায়ী চালা। সেখানেই এখন নিয়ম করে বসছে ‘বর্ণ পরিচয়’-এর আসর।

আপাতত শনি ও রবিবার পাঠের আসর বসছে। সকাল হলেই আরশু মান্ডি, সুখলাল হাঁসদা, কানাই মুর্মুরা ব্যাগ নিয়ে পাঠশালায় আসছে। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে পাঠের আসর। তারপর কোনোদিন অ-আ আবার কখনও বা A-B-C-D -এর রব ওঠে শিশু পড়ুয়াদের গলায়। কখনও শুধু রং নিয়ে খাতায় আঁকিবুঁকি কাটে পল্লবী বাস্কে, ফুলমণি মান্ডি, বুদ্ধেশ্বর হাঁসদারা। কোনোদিন ওদের পড়ান গ্রামেরই পঙ্কজ দাদা, উত্তরা দিদি, আবার কোনোদিন হাওড়া থেকে আসেন রাকেশ, প্রসেনজিতরা। ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর কর্তা পৃথ্বীশরাজ কুন্তীর কথায়,”গ্রামে এসে সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে আমরা পাঠশালা তৈরির সিদ্ধান্ত নিই। আমরা আমাদের প্রস্তাব গ্রামের মানুষকে জানাই। তাঁরা একবাক্যে প্রস্তাব গ্রহণ করেন। আমাদের প্রস্তাব শুনেই গ্রামবাসীরা জায়গা ঠিক করে দেন। এমনকি বাঁশ-প্লাস্টিক দিয়ে নিজেরাই তৈরী করে ফেলেন নিজেদের শিশুদের জন্য শিক্ষার মন্দির। শুরু হয় ‘বর্ণপরিচয়’-এর পথচলা।”

জয়রাম মুর্মু, অমর হাঁসদারা নিজেরা পড়াশোনার সুযোগ না পেলেও নিজেদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলতে তাঁরা ভীষণভাবে উদ্যোগী। তাঁরা জানান, আগে কেউ কখনো আমাদের গ্রামে শিক্ষার আলো জ্বালানোর প্রস্তাব নিয়ে আসেনি। তাই আমরা প্রস্তাব পেয়ে আর দু-বার ভাবিনি। ইতিমধ্যেই হাওড়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠশালার তিরিশ জন পড়ুয়ার বই, খাতা-সহ যাবতীয় শিক্ষাসামগ্রী দেওয়া থেকে শুরু করে পাঠশালা পরিচালনার সব দায়িত্ব গ্রহণ করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ক্রীড়াসামগ্রী। শুধু পড়াশোনাই নয়, পাঠশালা প্রাঙ্গণে সবুজায়নের লক্ষ্যে নিজে হাতে গাছ বসানোর কাজও শুরু করেছে কচিকাঁচারা। পালিত হয়েছে রাখিবন্ধন, শিক্ষক দিবসের মতো বিভিন্ন বিশেষ তিথি। এভাবেই হাওড়ার একদল যুবকের নিরলস প্রচেষ্টায় ও স্থানীয় পঙ্কজ বাস্কে, উত্তরা মুর্মুদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ চিচুড়গেড়িয়ার ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে বর্ণের পরিচয়।

]]>