history – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Tue, 21 Dec 2021 08:47:28 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png history – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 ইতিহাসের চাকায় টিম ইন্ডিয়ার ট্র্যাক রেকর্ড প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জিং https://ekolkata24.com/sports-news/team-indias-track-record-in-the-wheel-of-history-is-challenging-against-the-proteas Tue, 21 Dec 2021 08:47:28 +0000 https://ekolkata24.com/?p=15678 Sports desk: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বিরাট কোহলি টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর কোহলিকে ওডিআই দলের অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে পরে অনেক বিতর্ক হয়েছে। ভারতীয় দল বর্তমানে তিন টেস্ট ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছে। এই সফর টিম ইন্ডিয়ার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতীয় দলের রেকর্ডই স্পষ্ট বলে দিচ্ছে।
বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, তবে বিরাটের আগে অন্যান্য ভারত অধিনায়কের সময় টিম ইন্ডিয়া দক্ষিণ আফ্রিকায় কেমন পারফরম্যান্স করেছিল ওই দিকেও একবার নজর ঘোরানোর দরকার।

১৯৯২-৯৩’র দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে মহম্মদ আজহারউদ্দিন অধিনায়কত্বতে টিম ইন্ডিয়াতে খেলছিলেন বড় বড় খেলোয়াড়রা। টিমে ছিলেন কপিল দেব, সচীন তেন্ডুলকর, অনিল কুম্বলে, রবি শাস্ত্রীর মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা। এটাই ছিল ভারতের প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। চার ম্যাচে ভারত ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে গিয়েছিল। বাকি তিনটি টেস্ট ম্যাচ ড্র হয়েছে।

ওই সফর ছিল অজয় ​​জাদেজার অভিষেক সিরিজ, যিনি পরে ভারতের কিংবদন্তি খেলোয়াড় হয়েছিলেন। সিরিজের দুই টেস্ট ম্যাচ ড্র হওয়ার পর, প্রোটিয়ার্সরা তৃতীয় ম্যাচে ভারতকে ৯ উইকেটে পরাজিত করে এবং চতুর্থ টেস্ট ম্যাচটিও ড্র হয়। ভারত সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হারে।

১৯৯৬-৯৭’তে সচীন তেন্ডুলকরের নেতৃত্বে ভারতীয় দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিল। তিন ম্যাচের ওই সিরিজে ভারতীয় দল ২-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়। কেপটাউন ও ডারবানে ভারতীয় দলকে হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় ম্যাচ ড্র করতে সফল হয় ভারতীয় দল। ওই ম্যাচে ম্যাচ সেরা হন রাহুল দ্রাবিড়।

২০০১-০২’এ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অধিনায়কত্বে ভারতীয় দল দক্ষিণ আফ্রিকায় মাত্র দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল। এই সিরিজেই অভিষেক হয় বীরেন্দ্র সেহবাগের।

ভারত প্রথম টেস্ট ম্যাচে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবার জয়ের স্বাদ নিতে চেয়েছিল, কিন্তু তা হতে পারেনি। প্রথম টেস্টে ভারতকে ৯ উইকেটে শোচনীয় পরাজয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল। দুই ম্যাচের সিরিজে দ্বিতীয় টেস্ট ড্র করে ভারত ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যায়।

১৯৯২ সালের পর প্রথমবার, ভারতীয় দল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে একটি ম্যাচ জিতেছিল রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে। জোহানেসবার্গে প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১২৩ রানে হারিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। তবে এর পর সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে প্রোটিয়ার্সরা দুর্দান্তভাবে ফিরে আসে এবং ভারতীয় দলও সিরিজ বাঁচাতে পারেনি। সিরিজের ফরসালা ২-১ ব্যবধানে হয়, সিরিজ হেরেছিল ভারত।

২০১০-১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের প্রথম টেস্ট ম্যাচে এম এস ধোনির অধিনায়কত্বে ইনিংস পরাজয়ের পর, টিম ইন্ডিয়া প্রত্যাবর্তন করে এবং ডারবানে দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জয় পায়। ওই ম্যাচ ভারত ৮৭ রানে জিতেছিল। ওই ম্যাচে ভিভিএস লক্ষ্মণ প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ বিবেচিত হন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি ভারতীয় দল।

আবারও ২০১৩-১৪ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্বে দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গেলেও ফলাফল বদলায়নি। দুই ম্যাচের ওই সিরিজের প্রথম ম্যাচ ড্র এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ধোনির নেতৃত্বে আবারও সিরিজ জিততে পারেনি ভারত।

২০১৭-১৮ সালে বিরাট কোহলি যখন প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন, তখন সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কারণ সেখানকার রেকর্ডগুলি সত্যিই টিম ইন্ডিয়ার জন্য ভাল ছিল না। এই সফরেও বিরাট কোহলির কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিল। স্বাধীনতা ট্রফি নামে খেলা ওই সিরিজে ভারতীয় দল মাত্র একটি টেস্টে জয় পেয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতীয় দলকে পরাজিত করে। ভারত দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যায়।

সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে সিরিজ জয় হাতছাড়াই থেকেছে ভারতীয় দলের কাছে। কোনও ভারতীয় অধিনায়ক প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে সিরিজ জয় করতে পারেনি। এবার দেখার বিষয় হবে শত বিতর্কের পর, টিম ইন্ডিয়া কি এই সব ভুলে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম টেস্ট সিরিজ জিততে পারবে? একমাত্র তিন টেস্ট প্লেয়িং দেশ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজ জয়ের রেকর্ডের অধিকারি, “বিরাট” ভারত টিম ইন্ডিয়ার পুরনো ট্র‍্যাক রেকর্ড মুছে ফেলতে পারবে আসন্ন টেস্ট সিরিজে, যা ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে, সেঞ্চুরিয়নে সুপারস্পোর্টস পার্কে।

]]>
Narendra Modi: স্বাধীনতার ইতিহাসে আদৌ গুরুত্ব পাননি আধ্যাত্মিক গুরুরা  https://ekolkata24.com/uncategorized/spiritual-gurus-have-not-been-important-at-all-in-the-history-of-independence-says-narendra-modi Tue, 14 Dec 2021 17:42:24 +0000 https://ekolkata24.com/?p=14880 News Desk: দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে (Indian Freedom Struggle) আধ্যাত্বিক গুরুদের বিশেষ অবদানের কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)৷

তিনি মনে করিয়ে দিলেন, দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এই আধ্যাত্মিক গুরুদের যতটা গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিল তাঁরা আদৌ সেটা পাননি। এমন অনেক আধ্যাত্মিক গুরু ছিলেন, যাঁরা আধ্যাত্বিক ক্রিয়াকলাপ ছেড়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে। তাদের অবদানের কথা কিন্তু ইতিহাসে সেভাবে পাওয়া যায় না। চলতি বছরে আমরা স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব (amrit mohotsav) পালন করছি। এই উপলক্ষে আমরা সেই সমস্ত অজানা গুরুদের কথা সামনে নিয়ে আসব। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। দেশের যুবসমাজের (youth society) সামনে তাঁদের জীবন ও আদর্শের কথা তুলে ধরতে হবে। মঙ্গলবার বারাণসী (varanasi) সফরের দ্বিতীয় দিনে এই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (narendra modi)।

সোমবার কাশী বিশ্বনাথ করিডোর উদ্বোধন করার পর মঙ্গলবার বিকেলে বেনারসে সদগুরু সদাফলদেও বিহঙ্গম যোগ সংস্থানের ৯৮ তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে সাধুসন্তদের কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় অসহযোগ আন্দোলন করে যারা জেলে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম সন্ত সদাফল দেও। একজন আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু যেভাবে ঈশ্বর সাধনা ছেড়ে দেশের সেবাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন তা ভাবতেও অবাক লাগে। প্রত্যেক সাধুসন্তরা তাঁর এই কাজে গর্ববোধ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সদাফল দেও আমাদের স্বদেশীর মন্ত্র শিখিয়েছিলেন। সেই মন্ত্রকেই আমরা পাথেয় করেছি। সেই মন্ত্রকে সামনে রেখেই আজ আমরা আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার কথা বলছি। এই পরিকল্পনায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অন্য দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। দেশের ব্যবসাকে বিদেশের মাটিতে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছি। মোদী বলেন, আমাদের দেশের আধ্যাত্মিক ধর্মগুরুদের অবদান কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় না। যখনই দেশ কোনও সঙ্কটে পড়েছে তখনই তাঁরা বেরিয়ে এসেছেন। দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।

মোদীর এই বেনারস সফরে তার সঙ্গেই আছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সোমবার কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দেওয়ার আগে গঙ্গাস্নান করেছিলেন মোদী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকলেও গঙ্গায় ডুব দেননি যোগী। এ প্রসঙ্গেই মঙ্গলবার যোগীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। গঙ্গা দূষণের কথা টেনে অখিলেশ বলেন, যোগী ভাল করেই জানেন যে গঙ্গা কতটা অপবিত্র, নোংরা হয়ে আছে। সে কারণেই তিনি গঙ্গায় স্নান করেননি। যদিও বিজেপি দাবি করে গঙ্গা পরিষ্কার করতে তারা নাকি কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। আসলে সবই মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া। টাকা খরচের নামে সেই টাকা যাচ্ছে বিজেপির পার্টি ফান্ডে। গঙ্গা কি কোনদিনই পরিষ্কার করবে বিজেপি? তবে গতকাল তিনি কেন গঙ্গায় নামেননি সে প্রসঙ্গে কোনও ব্যাখ্যা দেননি মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ।

]]>
Elizabeth Báthory: রূপ-সৌন্দর্য ধরে রাখতে কুমারীদের খুনের রক্তে স্নান করত এই মহারানী https://ekolkata24.com/offbeat-news/maharani-elizabeth-bathory-the-worlds-most-dangerous-serial-killer Tue, 30 Nov 2021 20:40:17 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=1910 নিউজ ডেস্ক: ইতিহাসের পাতায় যদি আমরা উল্টে দেখি, তাহলে অনেক গল্প এবং রহস্য লুকিয়ে রয়েছে৷ যা সামনে এলে মানুষ আঁতকে উঠবে। ঠিক এমনই একটি ঘটনা যা শুনে রীতিমত শিঁউরে উঠবেন আপনিও। এক মহারানী, যার দুষ্কর্মের গল্প শুনে রীতিমতো আতঙ্কে ভুগবে যে কেউ ৷

এই মহারানী ছিল সে কালের সিরিয়াল কিলার৷ এমনিতে আপনি নিশ্চয়ই অনেক সিরিয়াল কিলারের বিষয়ে শুনেছেন, যারা একের পর এক বিভিন্ন ধরনের হত্যা করেছে৷ তবে এই মহারানীর কাণ্ড শুনলে আপনি কেঁপে উঠবেন। অবিবাহিত মেয়েদের খুন করে, তাদের রক্ত দিয়ে স্নান করত এই মহারানী।

হাঙ্গেরিতে বসবাস করতেন মহারানী এলিজাবেথ ব্যাথোরি (Elizabeth Báthory)৷ এলিজাবেথ ব্যাথোরিকে ইতিহাসে সবথেকে ভয়ানক মহিলা সিরিয়াল কিলারের নামে পরিচিত৷ ১৫৮৫ সাল থেকে ১৬১০ সালের মধ্যে এলিজাবেথ প্রায় ৬০০-র বেশি মেয়েদের হত্যা করেছিল। হত্যার পরে সেই মেয়েদের রক্ত দিয়ে স্নান করেছে। বলা হয়, এলিজাবেথকে এক তান্ত্রিক উপদেশ দিয়েছিল নিজের সৌন্দর্য ধরে রাখতে অবিবাহিতা মেয়েদের মেরে তাদের রক্ত দিয়ে স্নান করতে হবে। তান্ত্রিকের এই উপদেশ মহারানীর যথেষ্ট পছন্দ হয়েছিল।

আরও জানা যায, এলিজাবেথের এই কর্মকাণ্ডে তার সঙ্গ দিত তার তিন পরিচারক। তার এই অপরাধের ষড়যন্ত্রে এই তিনজন মদদাতা ছিল। এলিজাবেথের বিয়ে ফেরেঙ্ক নৈডেস্ডি সঙ্গে হয়েছিল। এই ব্যক্তি তুর্কিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হাঙ্গেরির ন্যাশনাল হিরো ছিলেন।

মহারানী মেয়েদেরকে নিজের শিকার বানানোর জন্য একটি বড় জাল তৈরি করেছিলেন৷ মহারানী আশপাশের গ্রামের গরিব মেয়েদেরকে অনেক বেশি টাকায় কাজে রাখত। মেয়েরা যখন রাজমহলে আসত, সেই সময় তাদেরকে নিজের শিকার বানাত এই মহারানী।

আরও জানা যায়, এই এলাকায় যখন মেয়েদের সংখ্যা কমতে থাকে তখন সমাজের উচ্চশ্রেণির পরিবারের মেয়েদেরকে টার্গেট করা শুরু করল এই মহারানী৷ হাঙ্গেরির রাজা যখন এই বিষয়ে জানতে পারল তখন সে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন৷ এই ঘটনার তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা যখন এলিজাবেথের মহলে পৌঁছায় সেখানে গিয়ে তারা চমকে ওঠেন। তদন্তকারীরা এলিজাবেথের রাজমহল থেকে অসংখ্য মেয়েদের কঙ্কাল উদ্ধার করে।

১৬১০ সালে এলিজাবেথকে তার এই জঘন্য অপরাধের জন্য গ্রেফতার করা হয়৷ এই কুকর্মের জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া হলেও, তাকে তার নিজের মহলের একটি কামরায় বন্দী বানিয়ে রাখা হয়েছিল। এই বন্দিদশায় চার বছর পর ২১ আগস্ট ১৬১৪ সালে মৃত্যু হয় মহারানী এলিজাবেথ ব্যাথোরির ।

]]>
Number of women: দেশের ইতিহাসে এই প্রথম পুরুষের তুলনায় বাড়ল নারীর সংখ্যা https://ekolkata24.com/uncategorized/this-is-the-first-time-in-the-history-of-the-country-that-the-number-of-women-has-increased-as-compared-to-men Thu, 25 Nov 2021 18:07:20 +0000 https://ekolkata24.com/?p=12411 Number of women has increased
নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: দেশের জনসংখ্যার ইতিহাসে তৈরি হল এক নতুন মাইলফলক। দেশের জনসংখ্যার ইতিহাসে এই প্রথম পুরুষের (Male) তুলনায় মহিলার (Female) সংখ্যা বেশি হল। একই সঙ্গে কমল জনসংখ্যা (Population)। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের (National family health survey) সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে ভারতে প্রতি ১০০০ পুরুষে নারীর সংখ্যা ১০২০জন। যা কিছুদিন আগে পর্যন্তও ছিল ৯৯১।

কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্য ড. বিনোদ কুমার পাল ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রকের সচিব রাজেশ ভূষণ এই খবর জানিয়েছেন। এই পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য। কারণ এতদিন দেশে ছেলের তুলনায় মেয়ের সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম। এই প্রথম হিসাবটা পুরোপুরি উল্টে গেল। দেশের ২২ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপর এই সমীক্ষা চালিয়ে ছিল ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে। এটা ছিল তাদের পঞ্চম দফার সমীক্ষা।

দিল্লি, চণ্ডীগড়, ছত্রিশগড়, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, অরুণাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মোট ৭০০টি জেলায় ছয় লাখেরও বেশি পরিবারের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। কয়েক লক্ষ কর্মী এই কাজ করেছেন।

প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, জাতীয় স্তরে মহিলাদের সন্তান জন্ম দেওয়ার সংখ্যাও আগের তুলনায় কিছুটা হলেও কমেছে। ২০২০ সালে দেশের প্রতি মহিলার সন্তান সংখ্যা ছিল ২.২। চলতি বছরে যেটা কমে হয়েছে ২.০। চণ্ডীগড়ে এই হার আরও কম ১.৪। তবে উত্তরপ্রদেশে এই হার জাতীয় স্তরের তুলনায় সামান্য হলেও বেশি। উত্তরপ্রদেশে প্রতি মহিলার সন্তান সংখ্যা ২.৪। সমীক্ষা বলছে, গ্রামীণ এলাকার তুলনায় শহরে মহিলাদের সন্তান জন্ম দেওয়ার হার অনেকটাই কম। ওই সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের জনসংখ্যা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি নয় বরং কিছুটা কমেছে।

সমীক্ষা রিপোর্ট আরও বলছে, সারাদেশে হাসপাতালে শিশু জন্মের হার আগের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে ৮৯ শতাংশ হয়েছে। তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির মত রাজ্যে ১০০ শতাংশ শিশু হাসপাতালেই প্রসব হয়েছে। সেই সঙ্গে অন্য সাতটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে হাসপাতালে শিশু জন্মের হার ৯০ শতাংশেরও বেশি।

]]>
দেব সেনাপতির কাজ ভুলে বাংলার কার্তিক হয়েছেন সন্তান লাভের প্রতীক https://ekolkata24.com/uncategorized/special-report-on-the-history-of-kartik-pujo Wed, 17 Nov 2021 08:41:17 +0000 https://ekolkata24.com/?p=11588 বিশেষ প্রতিবেদন: আমাদের শাস্ত্রজ্ঞান হীনতার আরেক চরম নিদর্শন বঙ্গের কার্তিক পুজো । বঙ্গ দেশে বিভিন্ন পুরাণ ও তন্ত্রে গণেশের মতোই সমাদৃত কার্তিক মজার পাত্রে পরিণত হয়েছেন । দেব সেনাপতি হয়ে গিয়েছেন সন্তান লাভের প্রতীক।

গণেশ যেমন সিদ্ধি প্রদায়ক তেমনই কার্তিক বল বীর্য্য প্রদায়ক । বল হীণের নিকট জগৎ অভিশাপ । কারণ ধরিত্রী বীরভোগ্য । এ চিরকালীন নিয়ম । ষণ্মুখ , সুব্রহ্মণ্য, কুমার , শক্তিহস্ত , ময়ূরবাহন ইত্যাদি বিভিন্ন নামে তিঁনি পরিচিত পুজিত । তাঁর ছয় অক্ষর মন্ত্র অতি প্রসিদ্ধ । ভগবতী ললিতার মতোই কার্তিক এর পঞ্চদশী মন্ত্র অত্যন্ত সম্মানিত ও সমাদৃত । তিঁনি শত্রু বিনাশকারী । মঙ্গল গ্রহের অধিষ্ঠাতা । মঙ্গল গ্রহের গ্রহ দোষ প্রশমন কারী । শত্রু মারণের জন্য তাঁর মন্ত্রের বিশেষ প্রয়োগ আছে যা ঠিক ভাবে প্রযুক্ত হলে বিফল হয় না । এমনও বিশ্বাস আছে যে কার্তিকের মন্ত্র সঠিক প্রয়োগ হলে যেকোনো দুর্দশা কেটে যাবেই কারণ তাঁর শক্তি অস্ত্র অব্যর্থ । এই শক্তি অস্ত্র টি সমস্ত দুর্দশা কে বিণস্ট করে। প্রারব্ধ কে আটকে দেয় কার্তিকের মন্ত্র এক জন্মের জন্য । এমনিই একটি দুর্দশা অপত্যহীনতা । তার প্রতিকার ও তিনিই করেন ।

Special report on the history of Kartik Pujo

এগুলো তাঁর সগুন রূপের প্রয়োগ । আবার নির্গুণ রূপে তিঁনি ব্রহ্ম স্বরূপ। মোক্ষ প্রদানকারী । কার্তিকের মন্ত্রের ছয় লক্ষ জ্পের পুরশ্চরন আত্ম জ্ঞান প্রদান করে ।

এইসব দূরে সরিয়ে রেখে বঙ্গে কার্তিক হয়ে গিয়েছেন সন্তান লাভের মেশিন । তাঁকে দরজার সামনে ফেলে দিলেই সন্তান লাভ নিশ্চিত । আজকাল আর কেউ সন্তান হীনতার অপেক্ষা করে না । লুচি আলুর দম খাবার জন্য কার্তিক ফেললেই হলো । সে এক মাস কারো বিয়ে হলেও হবে । মন্ত্রের অবস্থা ও তথৈবচ । পুজোর আসনে যাঁরা তাঁরা ও পুজো বিষয়ে প্রায় কিছুই জানেন না ।

<

p style=”text-align: justify;”>এই যেখানে অবস্থা সেইখানে বল বীর্য্য লাভ আশা করা যায় না । তাই এই অবস্থার উন্নতি ভীষণ প্রয়োজন । অত্যন্ত শক্তিশালী দেবতার এই প্রকার অপমান কুফল ডেকে আনে ।

]]>
Mythology: সন্তানের কাছে আনতেই তৈরি হয়েছিল বাংলার প্রথম দক্ষিণাকালী https://ekolkata24.com/uncategorized/mythology-know-the-history-of-dakshina-kali Thu, 04 Nov 2021 18:43:13 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=10320 Special Correspondent, Kolkata: কথিত আছে বঙ্গদেশে বর্তমানে প্রচলিত কালী মূর্তির প্রথম রূপদান করেছিলেন নবদ্বীপের কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ। পূর্বে মূর্তি গড়ে কালীপুজোর প্রচলন ছিল না..দেবীর পুজো হোত ঘটে, যন্ত্রে। আবার শাস্ত্রে যে মহাকালের সাথে বিপরীত রতাতুরা উগ্রা কালীমূর্তি আছে তাও তো সাধারনের অবোধ্য। তন্ত্রসার এর রচয়িতা সুপণ্ডিত আগমবাগীশ মহাশয় চাইছিলেন এমন এক কালী যিনি হবেন খুব কাছের, যাকে নিজে হাতে খাওয়ানো যাবে, পাশে বসিয়ে দুটো মনের কথা বলা যাবে। আকুল প্রার্থনা জানালেন দেবীর কাছে। দেবীরও বোধ হয় সাধ হয়েছিল শ্মশান ছেড়ে বঙ্গজীবনের দাওয়ায় এসে বসার। আগমবাগীশ স্বপ্নাদেশ পেলেন, পরদিন প্রত্যুষে ঘর থেকে বেড়িয়ে প্রথম যে নারীমূর্তি দেখবেন, সেই মূর্তিই হবে তাঁর আকাঙ্খিত কালী।

সে রাত্রে উৎকণ্ঠায় ঘুম আসলো না। আলো ফুটতেই বেরোলেন গঙ্গাস্নানে..ব্রাহ্মমুহূর্তে যেতে যেতে দেখলেন এক গোপবধূ ডান পা একটি টিলার উপর রেখে,দেওয়ালে ঘু্ঁটে দিচ্ছেন.. বাম হাতে গোবরের তাল ধরা আর ডান হাতটি ঘুঁটে দেওয়ার উদ্দেশ্যে উপরের দিকে ওঠান। নিম্নবর্গীয় কন্যা, গায়ের রঙ কালো, মাথার ঘন চুল অবিন্যস্ত কপালের সিঁদুর ধেবড়ে গেছে..গায়ে কাপড় প্রায় নেই বললেই চলে..এই কাকভোরে আচমকা রাস্তায় পরপুরুষ কৃষ্ণানন্দকে দেখে লজ্জায় জিভ কেটেছেন। এই তো কৃষ্ণানন্দ পেয়ে গেলেন তাঁর আরাধ্য দেবীকে। বাড়ি ফিরে মূর্তি গড়লেন..গোপবধূ যে টিলার উপর ডান পা রেখেছিলেন সেটাই হলো শবরূপী শিবের বুক।

গোবরের তাল যে হাতে ধরেছিলেন তা হলো কর্তিত মুণ্ড..আর যে হাত ঘুঁটে দেওয়ার জন্য উপরে তুলেছিলেন তা হলো অভয়মুদ্রা। এর সাথে আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে রূপ দিলেন মহাকালের উপর দন্ডায়মানা চতুর্ভুজা কালীর..বাংলার প্রথম দক্ষিণা কালী মূর্তি।

তবে গবেষকদের মতে আগমবাগীশের কয়েকশো বছর আগেও একইরকম কালীমূর্তি পাওয়া গেছে। তাই আগমবাগীশের মূর্তিই প্রথম কালী মূর্তি কিনা সেটি তর্কসাপেক্ষ হলেও এটা বলাই যায় তিনি যে ভাবময়ী মাতৃমূর্তি নবদ্বীপের মাটিতে পুজো করেছিলেন পরবর্তীতে সেই কালীই রামপ্রসাদের বেড়া বেঁধেছেন, কমলাকান্তের শ্যামাসংগীতে সুর হয়েছেন, আবার দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুরকে নিজে হাতে খাইয়েছেন।

]]>
Manohar Dakat Kali: শহরের বুকে নরবলির ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে ছানা কালী https://ekolkata24.com/offbeat-news/the-history-of-manohar-dakat-kali Thu, 04 Nov 2021 12:42:51 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=10283 Special Correspondent, Kolkata: তখন পলাশীর যুদ্ধ শেষ হয়েছে। এই কলকাতার অধিকাংশ অঞ্চলেই ছিল গভীর জংগল। বিশেষ করে আজ যা দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত পাড়া, সেই পূর্ণদাস রোড, রাসবিহারী এভেনুই সব জায়গায় ছিল ঘন জঙ্গল। কালীঘাটের জঙ্গলের পাশ দিয়ে বয়ে যেত আদি গঙ্গা। অবশ্য তখন তার রূপ ছিল অন্য রকম। এই সমস্ত জঙ্গলে ছিল বাঘ আর সাপের ভয়। আর ভয় ছিল মনোহর ডাকাতের। তখন লোকে মনোহর ডাকাতের নামে ভয়ে কেঁপে উঠতো।

ডাকাতদের কালী পূজো নিয়ে মিথ হয়ে আছে প্রচুর কল্প কাহিনী। তাতে দেখা যায় ডাকাতেরা নরবলি বা ছাগবলি দিয়ে সেই রক্ত করালবদনী কালীর খাঁড়ায় ছুঁইয়ে, কপালে রক্ত তিলক কেটে রক্ত বস্ত্র পরে দলবল নিয়ে হা রে রে রে করে ডাকাতি করতে বেরোতো।

এই মনোহর ডাকাত সেই সময় জঙ্গলের মধ্যে একটি ছোট কালী মূর্তি প্রতিষ্টা করেছিলেন। জনশ্রুতি আছে তখন এখানে প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় চালু ছিল নরবলি। কষ্টি পাথরের কালী মূর্তিটি ছোট। তাই অনেকে এই কালী বাড়িকে ছানা কালী অর্থাৎ ছোট কালী বাড়ি বলে উল্লেখ করেন। তবে ডাকাত কালী বাড়ি নামেই এটি সুপ্রসিদ্ধ। তখন কোন অলংকার ছিল না দেবীর গায়ে। দেবী ছিলেন আয়ুধভুষিতা, মুন্ডমালা বিভূষিতা। দেবীর হাতে ঝুলতো কোনও হতভাগ্যের করোটি। বিশেষ কয়েকটি দিন ছাড়া এই মন্দির ফাঁকাই থাকে। তাই অনেক সময় এই মন্দিরে গেলে গা ছমছম করে। দক্ষিণ কলকাতার ঘন জঙ্গলের মধ্যে ছিল কালিঘাটের কালী মন্দির। লোকে আদিগঙ্গা দিয়ে নৌকো করে ,বা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে মাকে দর্শন করতে আসতো। জঙ্গলে মোনহর ডাকাতের ভয় ছিল। মনোহর ছিল অকৃতদার।

history of manohar dakat kali

একবার ডাকাতি করে ফেরার সময় মনোহর দেখে যে এক মহিলা বাঘের হাতে মৃত হয়ে পড়ে আছেন। পাশেই একটু শিশু। শিশুটি তখনও জীবিত। কিন্তু তার পরিবারের খোঁজ পাওয়া সম্ভব ছিল না। মনোহর তখন সন্তান স্নেহে এই শিশুটিকে মানুষ করতে থাকে। এই শিশুটির সংস্পর্শে এসে, মনোহর ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে। শিশুটির নাম রাখে হারাধন। আস্তে আস্তে তার ডাকাতির উৎসাহ কমতে শুরু করে। তার দল ভেঙ্গে যায়। ছেলে বড়ো হচ্ছে, সে যথেষ্ট বুদ্ধিমান। মনোহর ছেলের কাছে তার আসল পরিচয় গোপন করে।

শেষ জীবনে সে চাষকরে একজন চাষীর মত জীবন যাপন করতো। মৃত্যুর আগে গুপ্তধনের নাম করে, ছেলেকে বেশ কিছু মোহর আর সোনা রুপো দিয়ে যায় মনোহর। বলে তার মৃত্যুর পর হারাধন যেন ওই এলাকায় কয়েকটি পুকুর কাটিয়ে দেয়। কারণ সেই সময় ওদিকে খুব জলের কষ্ট ছিল। হারাধন সে কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। সে ওই মনোহর পুকুর সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি পুকুর কাটিয়ে দেয়। আজ সেগুলির প্রায় সব কটাই বুজে গেছে। সেখানে উঠেছে বহুতল বাড়ি। বেঁচে আছে কেবল একটি পুকুর। তার অবস্থা খুবই শোচনীয়।

<

p style=”text-align: justify;”>আজ মনোহর ,হারাধন কেউই নেই। কিন্তু তাদের কীর্তি অমর করে আছে দক্ষিণ কলকাতার মনোহরপুকুর রোড।আর পূর্ণদাস রোডে অবস্থিত এই মনোহর ডাকাতের কালী মন্দির।

]]>
বাঙালি ঘরের হাজার হাতের কালী খুশি হন তামিল ভোগে https://ekolkata24.com/offbeat-news/know-the-history-of-howrah-shibpur-hajar-hat-kali Thu, 04 Nov 2021 12:34:27 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=10280 Correspondent, Kolkata: শতাধিক বছর ধরে এখানে অবস্থান করছেন হাজার হাতের কালী। জাগ্রত দেবী মন্দির প্রাঙ্গণে পূজিতা হন প্রতিদিন। সামনেই কালীপুজো সেদিন হবে দেবীর বিশেষ পূজা। কিন্তু চমক অন্য জায়গায়। শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষে দেবী তামিল ভোগ খান।

শিবপুর অঞ্চলের ওলাবিবিতলা থেকে একটু এগোলেই দেখা মিলবে হাজার হাত কালী মায়ের মন্দিরের। দেবীর নামেই জায়গার নামও হয়ে গিয়েছে হাজার হাত কালীতলা। ভাষার অপভ্রংশে লোকমুখে তা কখনও ‘হাজারাত কালীতলা’ নামেও প্রসিদ্ধ। আসা যাক মন্দিরের ইতিহাসে।

১৯০৫ সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তান্ত্রিক ভক্ত আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। চণ্ডীর এই হাজার হাতের রূপ আসলে স্বপ্নাদেশেই পাওয়া বলে জানা যায়। পাশাপাশি চণ্ডীর ২২তম অধ্যায়ে দেবীর এই রূপের উল্লেখ রয়েছে। চণ্ডী অনুযায়ী অসুর নিধন কালীন দেবী দুর্গা বহুরূপ ধারণ করেছিলেন। তার মধ্যেই অন্যতম হল এই হাজার হাতের রূপ। কাত্যায়নী,মহামায়ার পরেই হুংকারে অসুর নিধন করতে আসেন হাজার হাত রূপিণী কালীমাতা। দক্ষিণবঙ্গের এই শহরের মন্দির বিখ্যাত দক্ষিণ ভারতেও।

বিখ্যাত গায়িকা শুভালক্ষী এই মন্দির দর্শন করে গিয়েছেন। মন্দিরে বাইরে দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা লেখা রয়েছে মন্দিরের নাম। শুভালক্ষীর পর থেকেই বহু তামিল দর্শনার্থী এসে দর্শন করে যান এই মন্দির। শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষে শুক্রবার তামিলনাড়ু থেকে আসেন প্রচুর মানুষ। সেই দিন তারা মা’কে দেন তাঁদের স্পেস্যাল ভোগ। হাওড়ার আমিষ ভোগ ভুলে সেদিন দেবী টক ভাত, ঝাল ভাত, মিষ্টি ভাত, সম্বর, বড়া, দই ভাত, ঝুড়ি ভাজা, মুরুব্বুতে মজেন।

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় , মন্দির তৈরি করার ইচ্ছা থাকলেও সেই সামর্থ্য ছিল না তান্ত্রিক আশুতোষের। মন্দিরের বর্তমান সেবায়েত সেই আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পরিবারই। বর্তমান সেবায়েত মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন ‘সবই মায়ের ইচ্ছা, হঠাৎ করেই মায়ের মন্দির তৈরিতে আগ্রহী হয় জনৈক হালদার পরিবার’। পাশাপাশি এগিয়ে আরও মানুষজন। সবার ইচ্ছাতেই তৈরি হয়ে যায় হাজার হাত কালী মায়ের এই মন্দির।

দেবীর মন্দিরটি চাঁদনী শ্রেণীর। মন্দিরের উত্তর দেওয়ালের কিছু সামনে রূপোলী কেশর জুক্ত হলুদ রং এর পা মুড়ে বসা সিংহের ওপর দেবীর বাম পদ। দক্ষিন পদের অবস্থান এক মহাপদ্মের উপরে। দেবীমূর্তি উচ্চতায় বারো ফুটের মতো। মূর্তির দেহ সংলগ্ন প্রমান মাপের বাম হাত আছে খড়গ এবং ডান হাতে পঞ্চশূল। বিগ্রহের গাত্রাবর্ণ সবুজ। পরনে লালা পাড়যুক্ত সাদা শাড়ী। দুই কাঁধে দুই সর্পফনা,মাথায় পঞ্চপুষের মুকুট। তার কিছু ওপরে রাজচ্ছত্র। দেবীর হাতে বলয়,কানে কানপাশা ,এবং উন্নত নাসিকার নথ। ত্রিনয়নী প্রতিমার তেজপূর্ন চোখের দিকে তাকালে ভয় লাগবে। দেবীর মুখে লোল জিহ্বা প্রলম্বিত নয়,তিনি প্রশান্ত। এখানেই ভয় কাটতে পারে।

মন্দিরে নেই বলিদানের প্রথা। তবে বুদ্ধ পূর্ণিমায় মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস ও কালীপূজা এই ২ দিন বিশাল ধুমধাম কর মায়ের পূজা হয়। এছাড়া প্রত্যহ সকাল সাড়ে ৬টা, দুপুর ২টো ও রাত সাড়ে ৮ টায় মায়ের পূজা ও আরতি হয়। প্রসাদ দেওয়া হয় বিকেল বেলা ও রাত্রিবেলা।

]]>
শুনলে অবাক হয়ে যাবেন এই খাবারগুলির বাঙালির পাতে আসার কাহিনী https://ekolkata24.com/offbeat-news/bengalis-food-history Wed, 03 Nov 2021 08:37:57 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=10133 Special Correspondent, Kolkata: বাঙ্গালিদের থালায় খাবার গুলো এলো কোথা থেকে? মেনে নিতে কষ্ট হলেও এটা সত্ত্যি যে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে খাবার আমরা খাই তার এক বৃহৎ অংশ এসেছে বিদেশ থেকে। বিশেষ করে সব্জী ও ফল ।

এরা আমাদের এত পরিচিত ও বাঙ্গালিয়ানায় ভরপুর যে এদের নাম শুনলে অধিকাংশ বাঙ্গালি বা ভারতীয় বিশ্বাস করবে না বা গাজাখুরি তথ্য বলে ভাববে । এই মুহূর্তে আমাদের খাবারের থালায় থাকা খাদ্যের প্রায় ৬০-৭৫ শতাংশ খাদ্যবস্তু এসেছে ভারতের বাইরে থেকে, আর এনেছেন এদেশে বানিজ্য করতে আসা বনিকেরা।

প্রথমেই নাম করি যে বস্তুটির সেটা হলো আলু। প্রায় ৮০০০ -১০০০০ বছর আগে দক্ষিন আমেরিকার পেরুর রেড ইন্ডিয়ানরা আলুর চাষ শুরু করেছিল আন্দিজ পর্বতমালার ঢালে ও পাদদেশে । পনেরশ শতকে স্পানিশরা দক্ষিন ও মধ্য আমেরিকা থেকে আলু নিয়ে আসে ইয়োরোপে । ভারতে আলু প্রবেশ করে ১৭ শতকে পর্তুগীজ বনিক বা জলদস্যুদের মাধমে যারা এর সাথে পরিচিত হয়েছিল পাশের দেশ স্পেন থেকে । এই মুহূর্তে আলু পৃথিবীর চতুর্থ প্রধান খাদ্য – ভাত, গম, ভুট্টার পরে। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৫০০০ বিভিন্ন প্রজাতির আলু চাষ হয় এবং মানব প্রজাতির (বাঙ্গালিদের ত বটেই ) দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এর গুরুত্ব কি তা বলা নিষ্প্রয়োজন । আলু শুধু সুস্বাদুই নয় ,অন্যতম পুষ্টিকর ও ক্যালরি সমৃদ্ধ এক খাদ্যবস্তু। ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকরা অনেকেই আলু আর ভাত নিষেধ করেন এবং রুটি খেতে বলেন। কিন্তু ১০০ গ্রাম আলু ও গমে ক্যালরির পরিমান যথাক্রমে ১৫৭৪ ও ১৫৩৩ কিলো কালরি এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমান ৮১ ও ৮২ গ্রাম । অর্থাৎ যিনি রুটি খান তিনি রুটির বদলে সম পরিমান আলু খেলে তার খাদ্যে সমান পরিমান কালরি ও কার্বোহাইড্রেট থাকার সম্ভবনা ( এই প্রসঙ্গে একটি কথা জরুরী – আলুর গ্লাইসেমিক্স ইন্ডেক্স গমের চেয়ে বেশি , এটা রক্তে সুগার বাড়াতে পারে)।

বিজ্ঞানীদের মত অনুযায়ী আন্টি অক্সিডেন্ট ( লাইকোপেন ) ও ভিটামিন সমৃদ্ধ সব্জীর মধ্যে অন্যতম হলো টমেটো । এই অতি পরিচিত সব্জীটি প্রথম চাষ শুরু করেছিলো দক্ষিন আমেরিকার আন্দিজ পর্বত মালার পেরু ও ইকুয়েডরের আদি রেড ইন্ডিয়ানরা ও মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো অঞ্চলের আজটেক সভ্যতার রেড ইন্ডিয়ান্ জাতির মানুষেরা। আজটেকদের এক প্রচলিত ভাষা ‘নাহুটি’ তে tomati , স্পানিশে পরিবর্তিত হয়ে হয় tomate , সেখান থেকে ইংরেজি ভাষায় এলো tomato । বলা বাহুল্য পর্তুগীজ বনিকদের হাত ধরেই এই পরিচিত ফল বা সব্জীটি আমাদের দেশে আসে। ১৬ শ শতাব্দীতে বম্বে বন্দরের আশেপাশে প্রথম টমাটোর চাষ শুরু হয়। আর টমাটো সস আমেরিকান দের আবিস্কার ।

পেঁপে , হ্যা ঘোর বাঙালি ও ভারতীয় ফল পেঁপে আমাদের দেশের ফলই নয়। উদ্ভিদবিদ ও কৃষিবিজ্ঞানীদের মতে এরও আদি উৎপত্তি বা চাষ শুরু করেছিলো মধ্য আমেরিকার মেক্সিকোতে রেড ইন্ডিয়ান জাতির মানুষেরা । সেখান থেকে স্পানিশ দের হাত ঘুরে ব্রিটিশ ও ডাচ ঔপনিবেশিকদের দ্বারা এই ফল পৌঁছায় কারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ ও মালয়েশিয়ায়। এরাই ১৫৫০ নাগাদ এই সুস্বাদু ফলকে নিয়ে আসে ভারতবর্ষে । ভারত থেকেই পেঁপে চীনে গিয়েছিল এবং ভারতেই বর্তমানে পেঁপের সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। প্রাচীন মেক্সিকোর রেড ইন্ডিয়ানরা জেনে ছিলো কাচা বা পাকা পেঁপে দিয়ে মাংস মারিনেট করে রাখলে বা সেদ্ধ করলে মাংস খুব তাড়াতাড়ি সুসিদ্ধ হয়। কয়েক হাজার বছর পর আমাদের রান্নার কড়াইয়ে আজও আমরা একই পদ্ধতি ব্যবহার করি। পেঁপে ভিটামিন সি, এ ও আন্টিওক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এক পরিচিত সুস্বাদু ফল , গ্রাম বাংলার প্রায় সব বাড়িতে দেখা যায় এই গাছ।

পিয়ারা মতো অতি পরিচিত ফলের উৎস সন্ধান করলেও বিস্ময়ের সীমা থাকে না। এই ফলটি ও এসেছে আমেরিকা ভুখন্ড থেকে। এর আদিম বাসভুমি মেক্সিকো, মধ্য ও দক্ষিন আমেরিকার উত্তর অঞ্চল । পেরুতে ৪৫০০ বছর আগে পিয়ারার ফলন শুরু হয়েছিলো । ১৮শ শতকে পিয়ারার চাষ শুরু হয় উত্তর আমেরিকায়। ভারতে এই ফলটি নিয়ে আসে পর্তুগীজরা ১৭ শ শতকে ।

আমাদের খুব জনপ্রিয় ফল কলা। না, এটাও ভারতের নয়। কলার আদিমতম উৎস স্থল অস্ট্রেলেশিয়া মহাদেশের পাপুয়ানিউগিনি। নিউগিনির কুক সোয়াম্প অঞ্চলে যে ফাইটোলিথ পাওয়া গেছে তার থেকে জানা যায় প্রায় ৮০০০- ১০০০০ বছর আগে পাপুয়ানিউগিনিতে কলা ফলতো। এখান থেকে ফলটি আসে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায়, মালয় উপদ্বীপে এবং মালয় উপসাগরের ও ভারত মহাসাগরের বানিজ্য পথ ধরে অস্ট্রোনেসিয়ান বনিকদের মাধ্যমে কলার প্রসার ঘটে দক্ষিন এশিয়া, ভারত উপমহাদেশ, আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়া ও এশিয়ার অনান্য অংশে। পাকিস্তানের কোট দিজিতে খনন করে যে ফাইটোলিথ পাওয়া গেছে তা সিন্ধু সভ্যতায় প্রায় ৫৩০০ বছর আগে কলার উপস্থিতি প্রমান করে। ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান বলছে বিশ্বে কলার সরবাধিক উৎপাদনকারী দুটি দেশ হলো ভারত ও চীন (৪০%)।

ঝিঙে ( Sponge gourd ) সব্জীটির আদি উৎপত্তি দক্ষিন ও মধ্য আমেরিকায় । স্পানিশরা এটাকে নিয়ে যায় আফ্রিকায় । মিশর থেকে ঝিঙ্গে ইয়োরোপে প্রবেশ করে ১৬ শতাব্দীতে এবং খুব সম্ভবত পর্তুগীজ বা ইংরেজ বনিকেরা এটাকে নিয়ে আসে ভারতে।

বাঁধাকপি ( cabbage) আমাদের দেশের সব্জী নয়। প্রায় তিন হাজার বছর আগে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে ও উত্তর পশ্চিম ইয়োরোপে এক ধরনের বন্য বাধাকপির চাষ শুরু হয়। ইয়োরোপ থেকে এই সব্জী আসে আমেরিকা ও এশিয়া মহাদেশে মুলত বনিক ও ঔপনিবেশিকদের হাত ধরে। ১৫ শ থেকে ১৭ শ শতাব্দীর মধ্যে এই উপনিবেশিকরাই ভারতবর্ষে বাঁধাকপির আবির্ভাব ঘটায় । ১৮শ শতকে বাঁধাকপি ভারত থেকে যায় জাপানে এদের হাত ধরেই।

বাঁধাকপির মতো ব্রাসিকা গ্রুপের আর একটি অতি সুস্বাদু ও বহুল পরিচিত সব্জী ফুলকপি ( cauliflower )। ফুলকপির চাষ ও ভক্ষন প্রথম শুরু করে ভূমধ্যসাগরের এক ছোট্ট দ্বীপ সাইপ্রাসের লোকেরা। ঐতিহাসিক প্লিনির লেখায় এর উল্লেখ আছে – গ্রীকরা এই সব্জী খাদ্য হিসাবে খুব পছন্দ করতো । ১২শ -১৩ শ শতকের আরব উদ্ভিদবিদ ইবন আল আজম ও ইবন আল বাতরের লেখায় পাওয়া তথ্য অনুসারে মধ্যযুগে সাইপ্রাস থেকেই এই আনাজ আরবে প্রচলিত হয়। কিন্তু অবাক করা তথ্য হলো তারপর আরব বনিকরা ও আরব আক্রমনকারীরা কিন্তু একে নিয়ে আসে নি ভারতের রান্নাঘরে। ভারতের মাটিতে ফুলকপির চাষ শুরু হয়েছে নাকি মাত্র ১৫০ বছর আগে। ডাঃ জেমসন ১৮২২ সালে ইংল্যান্ড থেকে ফুলকপি নিয়ে আসেন ভারতের উত্তর প্রদেশে, এবং সাহারানপুরে নাকি প্রথম ভারতীয় ফুলকপির ফলন শুরু হয়।

বর্তমান ইরান ও আফগানিস্তানে প্রথম গাজরের ( carrot) চাষ শুরু হয়েছিল আজ থেকে অন্তত ছয় হাজার বছর আগে। প্রত্নতাত্বিক খননের ফলে সুইজারল্যান্ড ও জার্মানির বেশ কিছু জায়গায় ৪০০০-৫০০০ বছরের পুরানো গাজরের বীজ পাওয়া গেছে। ১ম শতকে রোমানদের লিপিবদ্ধ করা বিবরনে গাজরের উল্লেখ আছে। ৮ ম শতাব্দীতে আরব মুরদের দ্বারা গাজরের প্রবেশ ঘটে আইবেরিয়ান পেনিন্সুলায় – স্পেনে। প্রাচীন গাজরের রঙ ছিল বেগুনী । এখন যে গাজর আমরা খাই এই কমলা বর্ণের গাজরের চাষ শুরু হয়েছিল আফগানিস্তানেই দশম –একাদশ শতাব্দী নাগাদ।, ভারত ও এশিয়ার অনেক স্থানে দশম শতক নাগাদ যে গাজর ফলত তার রঙ ছিলো বেগুনী । ১১ শ -১২ শতকে ইস্রায়েল ও গাজা পালেস্টাইন অঞ্চলে লাল ও কমলা দুই প্রকারের গাজরের কথা পাওয়া যায় । আরব-আন্দালুস অঞ্চলের ইবন আল আজম ও ইবন আল বাতরের লেখায় একই কথা পাওয়া যায়। ১২ শ শতাব্দী নাগাদ চীনের নদী অববাহিকায় ও ১৬শ -১৭শ শতাব্দীর সময়ে জাপানের কৃষিক্ষেত্রে গাজর ফলতে শুরু করেছিল।

আনারস ( pine apple ) আমাদের দেশের ফল নয়। যতদূর জানা যায় ব্রাজিল ও পারাগুয়ের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া পারানা-পারাগুয়ে নদী অববাহিকায় প্রথম আনারসের চাষ শুরু করেছিলো সেখানকার রেড ইন্ডিয়ান জনজাতির মানুষরা । এখান থেকে এই ফল ছড়িয়ে পড়ে সারা দক্ষিন ও মধ্য আমেরিকায়। খ্রিস্টপূর্ব ১২০০-৮০০ অব্দের মধ্যে পেরুতে এবং খ্রিস্টপূর্ব ২০০সাল নাগাদ মেক্সিকোতে এর ফলন শুরু করেছিলো ইনকা ও আজটেক রেড ইন্ডিয়ান সভ্যতার মানুষরা। সভ্য জগতের বা ইয়োরোপের মানুষদের মধ্যে কলম্বাসই প্রথম আনারসের সাথে পরিচিত হন ১৪৯৩এর ৪র্থ নভেম্বর যখন তিনি গুয়াদেলোপ দ্বীপে পৌছন । ১৫৫০ সাল নাগাদ পর্তুগীজ বনিকেরা আমাদের দেশে নিয়ে আসে আনারস। এবং ভারতের পশ্চিম উপকুল অঞ্চলে এর আবাদ শুরু হয়। স্পানিশরা একে বলত pina , পর্তুগীজ ভাষায় abacaxi , ডাচ ও ফরাসিরা ডাকত anas নামে। এই শব্দ গুলোই বিবর্তিত হয়ে আনারস বা pine-apple হয়েছে।

আলুর কথা আগেই বলেছি । এবার রাংগালুর কথা শুনুন। অধিকাংশ বিজ্ঞানীর মতে প্রায় ৫০০০ বছর আগে মধ্য ও দক্ষিন আমেরিকার নিরক্ষীয় অঞ্চলে রাঙ্গালুর চাষ শুরু হয়েছিলো । প্রায় একই সময়ে ইউকাটান উপদ্বীপ ও মেক্সিকোর অনান্য স্থানে রাঙ্গালুর উপস্থিতির প্রমান পাওয়া যায় । এখান থেকেই এই মিষ্টি আলু পৌঁছয় উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে , কারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ও ইউরোপে । কলম্বাস ইউওরোপীয়দের সাথে নব আবিষ্কৃত ভুভাগ থেকে আনা যে সমস্ত নুতুন বস্তুর পরিচয় করিয়েছিলেন তার মধ্যে ছিলো এই খাদ্যটিও । যদিও আধুনিক গবেষনা বলছে রাঙ্গালুর আদিমতম উৎস ভারতীয় উপমহাদেশ । আড়াই কোটি বছর আগেই গন্ডোয়ানা ভুভাগে মর্নিং গ্লোরি নামক উদ্ভিদ প্রজাতির উদ্ভব হয়। এই মনিং গ্লোরি পরিবারের মধ্যে পড়ে রাঙ্গালু । উত্তরপূর্ব ভারতের মেঘালয়ে ২৫ মিলিয়ন বছরের পুরানো মনিং গ্লোরির ফসিল আবিষ্কৃত হয়েছে।

আপেলের আদি জন্মভুমি মধ্য এশিয়া । তিয়ান সান পর্বতমালায় ৪০০০- ১০০০০ বছর আগে এর চাষ আরম্ভ হয় । তারপর রেশম পথ বেয়ে এই উত্তম উপাদেয় ফল পৌঁছয় পশ্চিম এশিয়ায়, ইয়োরোপে ও আমেরিকায়। স্যামুয়েল ইভান স্টোকস নামে এক আমেরিকান ১৯১৬ সালে হিমাচল প্রদেশের থানেদার নামক এক পাহাড়ি গ্রামে প্রথম ভারতের আপেল গাছটি রোপন করেন। আমেরিকার লুসিয়ানা থেকে রেড ডিলিসিয়াস ও গোল্ডেন ডিলিসিয়াস জাতের আপেল চারা নিয়ে এসে তিনিই প্রথম ভারতীয়দের আপেলের সাথে পরিচয় করান। ১৯২৬ সালে এই বাগানেই ফলে প্রথম ভারতীয় আপেল । ভারতপ্রেমী এই সাহেবের সম্বন্ধে আর একটি তথ্য হলো ইনি ভারতে এসেছিলেন কুষ্ঠ রোগীদের সেবায় জীবন অতিবাহিত করবেন বলে। স্টোকস হিন্দু ধর্ম গ্রহন করে সত্যানন্দ স্টোকস নাম নেন ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে জেল খাটেন।

বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য শষ্য গম । খৃস্টপূর্ব ৯৬০০ এর কাছাকাছি সিরিয়ায় ও দক্ষিণপূর্ব তুরস্কে প্রথম গমের চাষ আরম্ভ হয়। ৬৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই খাদ্য শষ্যের চাষ শুরু হয় গ্রীস , সাইপ্রাস ও ভারতীয় উপমহাদেশে ।
বিশ্বের তৃতীয় প্রধান খাদ্য শষ্য ভুট্টার প্রথম চাষ করেছিল মেক্সিকোর রেড ইন্ডিয়ানরা ৮০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বালসাস নদী উপত্যকায় । এই শষ্য ৬০০০- ৫০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের আশে পাশে পৌঁছায় কলম্বিয়ায় । ৬৭০০ আগে পেরু ও ৪৫০০ বছর আগে আমেরিকার প্রায় সমস্ত অঞ্চলে ভুট্টার ফলন শুরু হয়েছিল। এখন ভুট্টা আমেরিকার দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য শষ্য, গমের পরেই। ভারতে ভুট্টা নিয়ে আসে পর্তুগীজরা ১৭ শতক নাগাদ।

আজকে দুনিয়ার প্রায় সমস্ত রান্না ঘরে প্রস্তুত হওয়া খাবারে লঙ্কা এক অন্যতম উপাদান। সমগ্র এশিয়া, দক্ষিন ও মধ্য আমেরিকা , আফ্রিকা, দক্ষিন ইওরোপের মানুষ খাবারে ঝাল পছন্দ করে। খাদ্যে ঝাল আমাদের স্বাদ কোরককে উজ্জিবীত করে ও লালাগন্থি থেকে লালা নিঃসরন ঘটিয়ে খাদ্যকে স্বাদযুক্ত ও রুচিকর করে তোলে। ভারতে লঙ্কা আসার আগে রান্না করা খাদ্যে ঝাল স্বাদ আনার জন্য ব্যবহৃত হতো গোলমরিচ । গোলমরিচ প্রচুর উৎপাদিত হতো কেরালায় । প্রায় ৭৫০০ বছর ধরে লঙ্কার ব্যবহার হয়ে আসছে বলে জানা গেছে। মধ্য ও দক্ষিন আমেরিকার মানুষরা এর ব্যবহার শুরু করেছিল ৭৫০০ বছর আগেই। দক্ষিন আমেরিকার পেরু, বলিভিয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির লঙ্কার উৎপাদন হতো সেই প্রাচীন কাল থেকেই। কলম্বাসই প্রথম এই বস্তুটিকে নিয়ে আসেন ইউরোপে । স্পেন , পর্তুগাল , দক্ষিন ইউরোপ ঘুরে এই লঙ্কা ভারতে ও এশিয়ার অনান্য স্থানে প্রবেশ করেছিলো ইউরোপীয় বনিকদের মাধমে। পনেরো শতকে ভারতে লঙ্কা নিয়ে আসেন পর্তুগীজ বনিকরা।

আর এক উপকারী মশলা মেথির সাথে ভারতের পরিচয় হয়েছিল বানিজ্যের সুত্রে। সুপ্রাচীন কাল থেকে মধ্য প্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়া ও সুমেরীয়ায় মেথির ব্যবহার হতো। ইরাকের তেল হালাল নামক স্থানে খনন করে ৬০০০ বছরের পুরানো পোড়া মেথি পাওয়া গেছে।

ধনে /ধনেপাতা আর এক অত্যন্ত উপকারি রান্নার উপাদান। ধনে পাতায় আছে প্রভুত পরিমানে ভিটামিন কে , আন্টিওক্সিডেন্ট ও খনিজ পদার্থ । এর আসল উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক আছে। ধনের সব চেয়ে প্রাচীন প্রত্নতাত্বিক নমুনা পাওয়া গেছে ইস্রায়েলের নাহাল হেমার গুহায়, যা ৬০০০-৮০০০ বছরের পুরানো বলে প্রত্নতাত্বিকদের ধারনা। মিশরে তুতেনখামেনের সমাধিতে ধনের অস্তিত্ব প্রমান করে অতি প্রাচীন কালে উত্তর আফ্রিকায় ধনের চাষ ও ব্যবহার হতো । ইবেরাস পাপিরাসে পাওয়া ধনে পাতার উল্লেখও প্রমান করে আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে মিশরে এর ব্যবহার হতো । প্রধানত পশ্চিম এশিয়া আফ্রিকা ও দক্ষিন ইয়োরোপে এর চাষ শুরু হয়েছিলো এবং অই অঞ্চলের সাথে ভারতের সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বানিজ্যের সম্পর্ক থাকায় প্রাচীন যুগেই এই মশালা আমাদের দেশে আসে।

এই প্রসঙ্গে বলি , আমাদের অতি পরিচিত আরও কয়েকটি সব্জী যেমন বেগুন, কচু, লাউ, কুমড়ো , শুক্তোর উপাদান নিম, করলা, উচ্ছে , নানা জাতের সীম ,বিন এবং ফলের মধ্যে আম – এদের আদি উৎপত্তি স্থল বা বাসভুমি এশিয়া , আফ্রিকা , ভারতীয় উপমহাদেশ । সে অর্থে এরা প্রকৃত ভারতীয় বা বাঙ্গালী খাবার।

এই তালিকা দীর্ঘ ও অজস্র ঐতিহাসিক সুত্রের উপস্থিতি এই নিবন্ধকে দীর্ঘতর করবে। ওপরের তথ্যগুলো থেকে এইটুকু ধারনা করা গেলো যে অধিকাংশ বাঙ্গালী ও ভারতীয় খাদ্যের উপকরন বিদেশ থেকে এসেছে ।

অনেক ফল ও সব্জী , আনাজ সারা মানব জাতিকে চিনিয়েছে মধ্য, দক্ষিন ও উত্তর আমেরিকার অর্ধসভ্য রেড ইন্ডিয়ান গোষ্ঠীর মানুষেরা। যাদের ইউওরোপের শ্বেতাঙ্গরা বলতো অর্ধ সভ্য , অসভ্য , বন্য । এবং যাদের সম্পদ , বাসস্থান , চারন ভুমি , অরন্য, দেশ, প্রান সভ্য ইয়োরোপিয়ানরা কেড়ে নিয়ে এদের অস্তিত্বকে করে তুলেছিলো বিপন্ন , তারাই সমগ্র বিশ্বের মানুষের জন্য রেখে গেছে খাদ্যের সম্ভার। আজকের সভ্য দুনিয়ায় আমাদের খাবারের টেবিলে, ফ্রীজে, বাজার ,রেস্ট্রুরেন্টে বা মলে যে বিপুল বৈচিত্র্যময় খাদ্য সাজানো থাকে তাদের মুল উপাদান এই বুনো লোক গুলোই প্রথম আবিস্কার করেছিল কয়েক সহস্র বছর আগে বিপদসংকুল অরন্য, পাহাড়, তৃণভূমিতে খুঁজে খুঁজে ।

আর একটি কথা না বললেই নয়। সারা পৃথিবীকে এত অজস্র খাদ্যের সাথে পরিচয় করিয়েছে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বনিক, জলদস্যু , অভিযাত্রী , আক্রমণকারীরা। আমাদের দেশে অধিকাংশ ফল ও সব্জী এনেছেন পর্তুগীজ বনিকরা। ঔপনিবেশিকতা যেমন মানব সভ্যতার কালো অধ্যায় , তেমনি উপনিবেশিকরাই দুনিয়ার কোনে কোনে মানবজাতির কাছে নিয়ে গেছে নতুন নতুন খাদ্য, নব সংস্কৃতি, ভাষা , সারা পৃথিবীতে হয়ে চলা জ্ঞান, চিন্তা, বিজ্ঞানের নব নব আবিস্কার। মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে এদের অবদানও অনস্বীকার্য ।

]]>
বাঙালি ভুলে যায় হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভাষার লড়াই https://ekolkata24.com/offbeat-news/history-of-the-purulia-language-movement Mon, 01 Nov 2021 05:43:19 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=9893 Special Correspondent, Kolkata: পয়লা নভেম্বর। বাঙালি, ভারতবাসী কেউ মনে রাখেনি মাতৃভাষার দাবীতে মানভূঁইয়া গণদেবতার লড়াই। এখন কলকাতায় হিন্দিভাষীদের আগ্রাসন নিয়ে বিরাট হইচই করে এক বাংলা ভাষা আন্দোলনকারীরা দল। তাদেরকেও দেখা যায় না এই পয়লা নিয়ে কোনও কথা বলতে। অথচ বাংলায় হিন্দি আগ্রাসন নিয়েই ছিল সেই আন্দোলন। পরিচিতি মানভূম ভাষা আন্দোলন নামে।

ঘটনা স্বাধীনতার ঠিক পরেরই। ১৯৪৮ সালের।আগ্রাসী হিন্দিভাষীরা তৎকালীন মানভূমের বাঙালিদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল হিন্দি বোঝা। অহল্যার ভূমিপুত্ররা গর্জে উঠল সেদিন। ‘মুক্তি’ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল সেই হিন্দি মুক্তির প্রতিবেদন। বাংলার রাজনীতিতেও তার ছাপ পড়েছিল। জেলা কংগ্রেস ভেঙে গঠিত হয় লোকসেবক সঙ্ঘ। দলে ভারী হয়ে ওঠা বিহারের আগ্রাসীরা চাণ্ডিল, ঝালদায় লুঠ করতে শুরু করে লুঠতরাজ।

১৯৪৯ থেকে ১৯৫১ কার্যত সত্যাগ্রহ আন্দোলনে মুখরিত চারদিক। সাংসদ ভজহরি মাহাতো গান বেঁধেছিলেন, ‘অ বিহারী ভাই, তরা রাইখতে লারবি ডাং দেখাঁই’। ১৯৫৪ সালের ৯ জানুয়ারী থেকে ৮ ফেব্রুয়ারী চলল টুসু সত্যাগ্রহ। স্বাভাবিক নিয়মেই টুসু সত্যাগ্রহীদের উপর নেমে এল রাষ্ট্রীয় অত্যাচার। ৭৩ বছর বয়সী, অসুস্থ নেতা অতুল চন্দ্র ঘোষকে বন্দী করে, খোলা ট্রেনে চাপিয়ে ১৩৫ মাইল দুরে হাজারিবাগ জেলে পাঠানো হয়েছিল। সাংসদ ভজহরি মাহাতোকে হাত কড়া পরিয়ে, কোমরে দড়ি বেঁধে কোর্টে পেশ করা হয়েছিল। বিচারে বিধায়ক সমরেন্দ্র ওঝার ২ বছর, লাবণ্য প্রভা দেবীর এক দফা কারাবাস হয়। বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান রাঘব চর্মকার। বাবুলাল মাহাতো নামের এক জন্মান্ধ বালকেরও সাজা হয়! বান্দোয়ানের মধুপর গ্রামের কুশধ্বজ মাহাতো’র সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। বন্দি করা হয় তাঁর শিশু পুত্রকে। এদের দোষ ছিল এরা বাংলার মাটির ভাষার জন্য দাবী জানিয়েছিলেন।

মানবাজার থানার পিটিদিরি গ্রামে মহিলা সত্যাগ্রহীদের উপর হয়েছিল নগ্ন আক্রমন। বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল পুরুলিয়া। লোকসেবক সাংসদ চৈতন মাঝি জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে প্রতিবাদ জানালেন লোকসভায়। সুচেতা কৃপালনী, নির্মল চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা) প্রমুখ সমর্থন জানান এই গণ আন্দোলনকে।
৭ মে ১৯৫৬, মহাকরণ অবরোধ করে গ্রেফতার বরণ করেন ৯৬৫ জন ভাষা সেনানী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট হল থেকে বিজ্ঞাণী মেঘনাদ সাহা, ভাষাচার্য সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় বিহার সরকারের দমননীতির তীব্র সমালোচনা করে ভাষা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।

ভাষার দাবীতে এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে, ১৯৫৬ সালের পয়লা নভেম্বর গঠিত হয় আজকের পুরুলিয়া জেলা। কলকাতাকে ঘিরে অনেক রাজনৈতিক আন্দোলন হলেও, কোনা ভাষা আন্দোলনের নজির নেই। সেই অপরাধ বোধ হোক বা পিছিয়ে পড়ার প্রতি অবজ্ঞাই হোক, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে কলকাতার বুদ্ধিজীবিরা মানভূমের ভাষা আন্দোলন নিয়ে আশ্চর্য রকম উদাসীন। শিক্ষিত পুরুলিয়ানরা আরো বেশি উন্নাসিক! জীবণ সায়াহ্ণে উপস্থিত ভাষা সৈনিকদের গলায় এখন সেই আক্ষেপ ঝরে পড়ে। এঁদের নামে কোনও ‘একুশে পদক’ নেই!

ফি বছর ক্যালেন্ডারের নিয়মেই ‘২১শে ফেব্রুয়ারী’ আসে, আর বিস্মৃতির সোপান বেয়ে মানভুমের ভাষা সংগ্রামীরা এক ধাপ করে নীচে নেমে যায়। প্রশাসনের অবহেলা আর জেলাবাসীর অজ্ঞতায় চাপা পড়ে যায়, হিন্দী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখা মাটির মানুষের ১৯৩৫ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত দীর্ঘ লড়াই এর কাহিনী। আজ আরও এক অমর একুশে। আরও একবার মৃতের দলে মানভূম ভাষা আন্দোলন।

]]>
ডোমের হাতে কালীমন্দিরে পূজো করতেন পর্তুগিজরা https://ekolkata24.com/offbeat-news/the-history-behind-portuguese-worshipped-kali-temple Tue, 26 Oct 2021 12:25:50 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=9231 Special Correspondent : তিনি ডোম কিন্তু তিনি চিকিৎসকও। তাঁর হাতেই প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল বসন্ত রোগে আক্রান্ত বহু ফিরিঙ্গি বা পর্তুগিজরা। তাঁদের পূজিত দেবী মন্দিরই আজ পরিচিত ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি।

দ্বিমত রয়েছে কিন্তু, গ্ৰহণযোগ্য দুটি তত্বই। দুভাবেই সত্য বৌবাজারের কালীমন্দিরের কালীর ফিরিঙ্গি রূপ নেওয়ার ইতিহাস। তবু গবেষকদের মধ্যেই দ্বিমত কলকাতার বৌবাজার ফিরিঙ্গি কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা আসলে কে!

কিছু তথ্য পাওয়া যায় ‘কলিকাতা দর্পণ’ বইয়ে, রাধারমণ মিত্র লিখেছেন কটন সাহেব তাঁর বইতে লিখেছেন ‘শ্রীমন্ত ডোম নামে এক ব্যক্তি এই কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন৷তিনি তাঁর মৃত্যুসময় পর্যন্ত ৭০বছর ধরে এই কালীর পূজারীর কাজ করেন৷

শ্রীমন্ত ডোম এই অঞ্জলের বসন্ত রোগীদের চিকিৎসা করতেন৷মন্দিরের ভেতর কালীমূর্তির পাশেই এক শীতলার মূর্তি রাখা আছে৷ এই অঞ্চলের ফিরিঙ্গি বাসিন্দাদের মধ্যে শ্রীমন্ত ডোমের খুব খ্যাতি ও প্রতিপত্তি হয়৷ফিরিঙ্গিরা বসন্ত রোগ থেকে সেরে উঠলে কালীর কাছে পুজো পাঠিয়ে দিত৷সেইজন্য এই কালীর নাম হয় ফিরিঙ্গি কালী’৷

ম্যাককাচন সাহেব লিখেছেন এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠার সময় ৯০৪-৯০৫বঙ্গাব্দ,অর্থাৎ ইংরেজি ১৪৯৮ খ্রীস্টাব্দ৷ রাধারমন বাবু তাঁর বইয়ে লিখছেন অনেকের ধারনা এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি অথবা তাঁর ঠাকুরদা তিনিও আর এক অ্যান্টনি!যদিও কবিয়ালের ঠাকুরদা ছিলেন অ্যান্টনি বাগানের মালিক৷ অভিধানে ‘ফিরিঙ্গি’ মানে ইউরোপের বাসিন্দা বোঝানো হলেও আমরা অনেকেই মনে করি পুর্তুগিজরা আসলে ফিরিঙ্গি৷ ফিরিঙ্গি কালীবাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কালীমূর্তিটি “শ্রীশ্রীসিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা ঠাকুরানি” নামে পূজিত হয়।

১৪৩৭ খ্রিস্টাব্দে ভাগীরথী নদীর অদূরে একটি শ্মশানের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শিব ও কালিকার বিগ্রহ।মন্দিরের তখনও প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির সঠিক প্রতিষ্ঠাকাল জানা যায় না। মন্দিরের সামনের দেওয়াল ফলকে লেখা আছে, “ওঁ শ্রীশ্রীসিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা ঠাকুরাণী/ স্থাপিত ৯০৫ সাল, ফিরিঙ্গী কালী মন্দির”।

এর থেকে অনুমান করা হয়, মন্দিরটি ৯০৫ বঙ্গাব্দে স্থাপিত হয়েছিল।মন্দিরটি প্রথমে ছিল শিব মন্দির। ১৮২০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শ্রীমন্ত পণ্ডিত এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ছিলেন।তিনি নিঃসন্তান হওয়ায় ১৮৮০ সালে শশিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৬০ টাকায় দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে মন্দিরটি বিক্রি করে দেন। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এখনও মন্দিরের সেবায়েত।

ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি একটি চাঁদনি স্থাপত্যের মন্দির। এই মন্দিরের কালীমূর্তিটি মাটির তৈরি। এটি প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট লম্বা সবসনা ত্রিনয়না মূর্তি।কালীমূর্তি ছাড়াও মন্দিরে আছে শীতলা, মনসা, দুর্গা, শিব ও নারায়ণের মূর্তি। মন্দিরে প্রতি অমাবস্যায় কালীপূজা ও প্রতি পূর্ণিমায় সত্যনারায়ণ পূজা হয়।

]]>
Durga Puja 2021: স্বাধীনতা আন্দোলনের ছোঁয়ায় শুরু হয়েছিল এই দুর্গা পুজো https://ekolkata24.com/offbeat-news/durga-puja-2021-history-of-simla-byam-samiti Sun, 10 Oct 2021 06:24:02 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=7102 নিউজ ডেস্ক: তখনও দেশ স্বাধীন হয়নি। ব্রিটিশের চোখে ধুলো দিয়ে কোথায় জমায়েত করা যায়? বিপ্লবীরা যখন বেশ চিন্তায়, তখন মুশকিল আসান করলেন খোদ নেতাজি। তাঁর নির্দেশে অনুগামী বিপ্লবী অতীন বসু দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে আদায় হল চাঁদা। এভাবেই ১৯২৬ সালে কলকাতার সিমলা ব্যায়াম সমিতির (simla byam samiti) পুজো শুরু হয়। পুজোর ঐতিহ্য দিনদিন বেড়েছে। শুধু আড়ালে থেকে গিয়েছেন বিপ্লবী অতীন্দ্রনাথ বসুই।

তখন ১৯২৬ সাল। ব্রিটিশ শাসনে পরাধীন ভারত। দেশ স্বাধীনের লক্ষ্যে সক্রিয় বিপ্লবীরা… বিভিন্ন গোপন আস্তানায় চলছে ব্রিটিশ বিরোধী কাজকর্ম.. ঠিক তখনই কলকাতাতেও বিপ্লবীদের জোটবদ্ধ করতে একটা কনভেনশনের দরকার ছিল। কিন্তু ব্রিটিশদের ফাঁকি দিয়ে জমায়েত কার্যত অসম্ভব। ফন্দি আঁটলেন স্বয়ং নেতাজি ।

সিমলা অঞ্চলের মহেন্দ্র গোস্বামী লেনে বিপ্লবী অতীন্দ্রনাথ বসুর বাড়ি। তাঁর বাড়িতে মাঝেমধ্যেই থাকতেন সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁর নির্দেশেই এই বাড়িতে শুরু হয় কলকাতার প্রথম সর্বজনীন দুর্গোৎসব। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জমায়েতও সহজ হয়… সঙ্গে দেশমাতৃকার জন্য মাতৃ আরাধনার শুরু …

History of simla byam samiti

সিমলা স্ট্রিটের বাড়িতে যুবকদের স্বাস্থ্যচর্চায় জোর দিয়েছিলেন বিপ্লবী অতীন্দ্রনাথ বসু। নেতাজির নির্দেশে পুজো আয়োজনের দায়িত্বে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। পুজোর খরচ উঠল বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা কেটে। তখন এই ভাবনা ছিল একদমই নতুন। হোগলাপাতার বেড়া দিয়ে তৈরি হল সিমলা ব্যায়াম সমিতির প্যান্ডেল। এভাবেই অতীন বসুর হাত ধরে যাত্রা শুরু তিলোত্তমার প্রথম সর্বজনীনের।পুজোয় এসে সবার সঙ্গে পাত পেড়ে খেয়েছেন সুভাষচন্দ্র বসু। একবার বিপ্লবীদের জমায়েত টের পেয়ে পুজো বন্ধ করে দেয় ব্রিটিশ সরকার। বেশিদিন নয়, দু’বছর পরই আবার চালু হয় পুজো।

একচালা দুর্গামূর্তি থেকে পাঁচটি চালচিত্রে ভাঙা দেবীমূর্তির প্রচলনও এখান থেকেই। দেবীমূর্তির চালচিত্র বদলে দেওয়ায় রক্ষণশীলদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে পুজো কমিটি। সমালোচনা থামাতে ১৯৩৯ সালে ফের নেতাজি পুজোর উদ্বোধন করেন। সব কর্মকাণ্ডের নেপথ্য কারিগর একজনই। অতীন বসু। জমিদারবাড়ি বারোয়ারি পেরিয়ে সর্বজনীন পুজোই এখন মেনস্ট্রিম। তবু আড়ালে থেকে গিয়েছেন, কলকাতার সর্বজনীন পুজো সংস্কৃতির প্রবর্তক বিপ্লবী অতীন্দ্রনাথ বসু।

কলকাতার সর্বপ্রথম বারোয়ারী দুর্গাপূজা ভবানীপুরের বলরাম বসু ঘাট রোডের ভবানীপুর সনাতন ধর্মোৎসাহিনী সভার পুজো, শুরু ১৯১০ সাল। তারপর ১৯১১ সালে শ্যামপুকুর আদি সার্বজনীন, ১৯১৩ সালে শিকদার বাগান, ১৯১৯ সালে নেবুবাগান, যা বর্তমানে বাগবাজার সার্বজনীন এবং ১৯২৬ সালে সিমলা ব্যায়াম সমিতি।

]]>
কালের গহ্বরে হারিয়ে গিয়েছে নেতাজীর স্মৃতিধন্য পরিবারের দুর্গোৎসব https://ekolkata24.com/offbeat-news/the-lost-history-of-netaji-subhas-boses-aunts-house Mon, 04 Oct 2021 11:18:50 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=6546 বিশেষ প্রতিবেদন: কাশির ঠাটারিবাজারের কাছেই চৌখাম্বার বসু পরিবার। সেই বাড়িতেই একসময় মহাধুমধাম করে দুর্গোৎসব হতো। এই বাড়ির উঠোনে আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে এক সুদৃঢ় বালকের পা পড়তো। তখন কে জানত যে সেই বালক হবেন আগামীর দেশনায়ক। কালের গহ্বরে আজ সবই গিয়েছে হারিয়ে।

উত্তর কলকাতা দত্ত বাড়ির ছয় মেয়ে। প্রভাবতী, গুনবতী, রূপবতী ,সত্যবতী, ঊষাবতী এবং নিশাবতী। প্রভাবতীর বিয়ে হয় কটকের জানকীনাথ বসুর সঙ্গে। রূপবতীর বিয়ে হয় উপেন্দ্রনাথ বসুর সঙ্গে। নিয়তির খেলায় মারা যান রূপবতী। রেখে যান সন্তানদের। তাদের সামলাবে কে? সেই সময়ের রীতি মেনে দিদির সংসার রক্ষায় এগিয়ে আসেন ঊষাবতী। দুই মাসির বিয়ে একই বাড়িতে। সেই সূত্রেই গাঁথা হয়ে গিয়েছিল সুভাষের সঙ্গে এই বসু পরিবারের যোগ। সেই বাড়িতেই একসময় মহাধুমধামে হতো দুর্গোৎসব।

বিশাল বড় ঠাকুরদালান থেকে শুরু করে সিংহাসনে দেবী মূর্তি সঙ্গে ঢাক ঢোল বাদ্যির বিশাল আয়োজন ছিল। প্রকাণ্ড এক রুপোর পাত বসানো কাঠের সিংহাসন। এর মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকতেন মহিষাসুরমর্দিনী, তার বামদিকে দেবী সরস্বতী ,কুমার কার্তিক, হনুমান ও শ্রীরামচন্দ্র এবং নারায়ন শিলা। ডানদিকে দেবী লক্ষী, সিদ্ধিদাতা গণেশ, মহাদেবের মূর্তি এবং আরেকটি ছোট ধাতুর ছোট সিংহাসন। মায়ের গায়ের রং সোনালী, গা ভরতি সোনার গয়না, অশ্বরূপী সিংহ এবং সিংহাসন এর সামনে ২ টি লম্ফ।সব মিলিয়ে এক বিশাল আয়োজন হত।

the lost history of netaji subhas bose's aunts house

সেই বাড়ির এক জ্ঞাতি রণবিজয় বসু জানিয়েছেন , “আমি ওই বাড়ির পুজো দেখতে গিয়েছিলাম ১৯৯৯ সালে। আসলে আমার মায়ের দাদুর মা ছিলেন ঊষাবতী দেবী, যিনি নেতাজির মাসি। সেই সূত্রেই ওই বাড়ির পুজোয় গিয়েছিলাম। সেই স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল।”

তিনি বলেন, “সন্ধ্যা আরতির দৃশ্য আজও স্পষ্ট। প্রত্যেক ভগবানকে উৎসর্গ করে সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো এক একটি আসন। প্রতিটি লাল কাপড়ে মোড়া। আসনের পিছনে একটি করে রুপোর গারু ও বাটি আসনের সামনে রুপোর থালা। তাতে সাজানো ছিল ফল, বরফি, নানাবিধ খাদ্যসামগ্রী। ধূপ , ধুনোর গন্ধে ভরে উঠত সারা চত্বর।”

দশমীর দৃশ্য ছিল দেখার মতো। সবকটি মূর্তিকে সিংহাসন থেকে বার করে আনা হত। প্রমাণ আকারের দুইটি রুপোর পেট মোড়া বল্লম ঠাকুরদালানে থামে হেলান দিয়ে দাঁড় করানো থাকত। সেগুলো বিসর্জনের সময় বহন করতেন বাড়ির সদস্যরাই। আসলে বাড়ির মেয়েকে বাড়ি পাঠানোর জন্য সুরক্ষা বলয় তৈরি করা। বসত নহবত। পরে আসত ব্যান্ড পার্টি, ট্রাম্পেট, বিউগেল, ড্রাম, ঝুনঝুনি, সঙ্গে সানাই। সামনাসামনি না দেখলে ভাষায় বোঝানো মুশকিল সেই দৃশ্য। এরপর লাল কাপড়ে মোড়া সাজানো পালকি এসে হাজির হতো উঠোনে। এক এক করে মূর্তিগুলি পালকিতে ঢুকিয়ে এমনভাবে বসানো হত যেন মা ও তাঁর সন্তানরা পালকির ভিতরে আরাম করে হেলান দিয়ে বসলেন। এরপর শুরু হত বিসর্জন যাত্রা। প্রথমে বল্লমধারিরা, তারপর ব্যান্ড পার্টি, তারপর পালকিবাহক এবং সব শেষে অগুনতি মানুষের ঢল। ঠাকুর এসে থামত দশাশ্বমেধ ঘাটে। তখনও ওড়ানো হল একজোড়া নীলকন্ঠ পাখি। সাত পাক করে ঘুরিয়ে বিসর্জন। সবাই চেঁচিয়ে বলতেন শুভ বিজয়া।কথিত রয়েছে এই বাড়িতে সুভাষ বোস কিছুদিন ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে থেকেওছিলেন।

২০০০ সালের পরেও বেশ কিছু বছর এভাবেই চলেছে পুজো। তারপর আর কিছুই রক্ষা করা যায়নি। বাড়ি ক্রম অবনতি হওয়ার ফলে ভেঙে পড়ছিল। বাড়িই রাখা দায়, তো পুজো। সে সবকিছুই এখন হারিয়ে গিয়েছে। সুভাষ স্মৃতির সঙ্গে হারিয়েছে শিউলির সুবাস…

]]>
ভারতীয় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর ইতিহাস https://ekolkata24.com/offbeat-news/history-of-indian-science-fiction Thu, 30 Sep 2021 06:57:57 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=6081 বিশেষ প্রতিবেদন: পুরাণ এবং বিজ্ঞানের মধ্যে নিহিত সাহিত্যের এই ধারা বছরের পর বছর ধরে বিকাশ বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ অক্সফোর্ড ডিকশনারি বিজ্ঞান কল্পকাহিনীকে সংজ্ঞায়িত করেছে, “কল্পনা করা ভবিষ্যতের বৈজ্ঞানিক বা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সামাজিক বা পরিবেশগত পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে, প্রায়শই স্থান বা সময় ভ্রমণ এবং অন্যান্য গ্রহের জীবনকে চিত্রিত করে।”

বহুলাংশে, এই সংজ্ঞাটি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে বিজ্ঞান-কল্পকাহিনীর অনেক চিত্রায়নে প্রতিফলিত। কিন্তু যেহেতু কথাসাহিত্য একটি বৃহত্তর দৈহিক বাস্তবতার একটি পারমাণবিক দৃষ্টিভঙ্গি, তাই এটি সর্বদা অনেকগুলি আর্থ-সামাজিক প্রশ্নের ব্যাপক উত্তর দিতে পারে না। এর সামাজিক জটিলতা, বৈচিত্র্য এবং শ্রেণী বৈষম্যের পরিপ্রেক্ষিত, একজনের জন্য কথাসাহিত্য যা অন্য ব্যক্তির জন্য অন্য কিছু হতে পারে না। ঠিক এই বিষয়টি ভারতে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীকে ঠিক কী গুরুত্ব বহন করে তা নির্ধারণ করা কঠিন করে তোলে।

History of Indian science fiction

ভারতীয় বিজ্ঞান কথাসাহিত্য – সহকারী অধ্যাপক সামি এ. খান এই বিষয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন তিনি পশ্চিমে জনপ্রিয় ট্রপের বিনোদন হিসাবে কাজ করেন। তার মতে, “এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আধুনিক ভারতীয় কল্পবিজ্ঞান বিদ্যমান। দুটি ভাষা থেকে উদ্ধৃত করা- তার মধ্যে বাবু কেশব প্রসাদের ‘চন্দ্র লোক কি যাত্রা’ যা সরস্বতীতে প্রকাশিত এবং বাংলাতে হেমলাল দত্তের ‘রহস্য’ যা প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান দর্পণে এবং জগদানন্দ রায়ের ‘শুক্র ভ্রমণ’ এবং জগদীশ চন্দ্র বসুর ‘পলাতক তুফান’ অব্যক্ত এ প্রকাশিত, “।

খান পরামর্শ দেন যে কথাসাহিত্যের প্রকৃতি প্রায়শই সমাজের বিজ্ঞান এবং কল্পনার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়। একজন ব্যক্তি তাত্ক্ষণিকভাবে একটি ফটকা লেখায় A থেকে বিন্দু B পর্যন্ত ভ্রমণ করে। কল্পনায়, এটি অ্যাপারিশন’ (হ্যারি পটার) এর কারণে হতে পারে , অথবা কল্পবিজ্ঞানে এটি টেলিপোর্টেশন (স্টার ট্রেক) দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। পুরাণে এটি একটি ঐশ্বরিক সত্তার ইচ্ছার ফল হতে পারে (বিফ্রাস্ট ইন থর)। যদিও ঘটনা একই থাকে কিন্তু সেটি যেভাবে বর্ণিত হয়েছে তা নির্ধারণ করে যে পাঠ্যটি ফ্যান্টাসি বা পৌরাণিক হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ বা বাজারজাত করা হয়েছে কিনা তার ওপর । বিজয়েন্দ্র মোহান্তি বহু বছর ধরে কল্পবিজ্ঞানমূলক কথাসাহিত্য নিয়ে কাজ করছেন ; একজন প্রাক্তন সাংবাদিক, লেখক সম্প্রতি তার কল্পকাহিনী শিরোনামে অনলাইনে সায়েন্স ফিকশনের অ্যানথোলজি চালু করেছেন।

History of Indian science fiction

বিজ্ঞানের আধিক্য, অতিপ্রাকৃত এবং পরিচিত পৌরাণিক কাহিনী এই চিত্তাকর্ষক সংগ্রহে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে গুজব যা মাধ্যমে বিশ্বাসীর জগৎকে দেখার নতুন উপায় খুঁজে পায়। আমরা নিজেদেরকে বোঝাতে পেরেছি যে সংস্কৃতি একটি স্থির জিনিস যা অনেক আগে অস্তিত্ব পেয়েছিল এবং এখন এটি ” সংরক্ষণ ” করা দরকার। সায়েন্স ফিকশনও সাধারণত একটি শহুরে ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়, যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বিজ্ঞান সাক্ষর। যদিও মহানগরগুলিতে এসএফ শুরু হতে পারে তবে এটি ধীরে ধীরে শহর এবং অন্যান্য অঞ্চলে প্রবেশ করতে শুরু করে । বৈজ্ঞানিক শিক্ষার বৃদ্ধির সাথে কয়েক দশক আগে এসএফের উত্থানের জন্য মঞ্চ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবং ভারতীয় লেখকরা এই নিয়ে খেলেন, যেমন – রায়ের অধ্যাপক শঙ্কু , উদাহরণস্বরূপ তিনি গিরিডিতে থাকেন।

আধুনিক ভারতীয় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী আধুনিক সংবেদনশীলতা এবং উদ্বেগের প্রতিধ্বনি। পৌরাণিক বা ফ্যান্টাসি গল্প প্রায় সব সময় চলমান আছে। পডকাস্ট পরিসংখ্যান আপনাকে বলবে যে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরানার একটি হল পুরাণ। ভারতের অন্য সব কিছুর মতো ভারতীয় কল্পনাও একচেটিয়া নয়। এর বড় অংশগুলি এখনও ফটকা সাহিত্যের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।

]]>
Kolkata: বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরণের ইতিহাসের দ্বিতীয় পর্ব https://ekolkata24.com/offbeat-news/history-of-kolkata-part-2 Thu, 23 Sep 2021 18:58:21 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=5427 অনুভব খাসনবীশ: ১৬৯০ সাল নাগাদ কলকাতা (Kolkata) শহরের গোড়াপত্তন করেন জোব চার্নক। ১৬৯৮ সালে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৎকালীন জমিদার সাবর্ণ চৌধুরীর কাছ থেকে কিনে নিল হুগলি নদীর তীরের তিন তিনটি গ্রাম সুতানুটি, গোবিন্দপুর আর কলকাতা। এই শহর কলকাতারই প্রতিটি অঞ্চল, প্রতিটা রাস্তা, প্রতিটা গলির সঙ্গে মিশে রয়েছে ইতিহাস। 

আরও পড়ুন Kolkata: বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরণের ইতিহাসের প্রথম পর্ব


আরও পড়ুন Chamba Lama: কলকাতার রুপোর গয়নার ওয়ান স্টপ শপ

File:Mahatma Gandhi Road - Kolkata 2011-09-17 00582.jpg - Wikimedia Commons

বৈঠকখানা রোড: ১৭৮৪ সালের লেফট্যানেন্ট কর্নেল মার্ক উডের মানচিত্রে লালবাজার থেকে পূর্বদিকে তৎকালীন মারাঠা খাত (পরে সার্কুলার রোড এবং বর্তমানে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড) পর্যন্ত এলাকার নাম ছিল “বয়টাকোন্না স্ট্রিট” (Boytaconnah Street)। নামটির উৎপত্তি “বৈঠকখানা” নামটি থেকে। সেকালে এই অঞ্চলের একটি প্রাচীন বটগাছের নিচে ব্যবসায়ীরা তাদের মালপত্র নিয়ে বিশ্রাম করতে বসতেন। ইতিহাস বলছে, জব চার্নক এখানে আসতেন। সেই থেকেই জায়গাটির নাম হয় বৈঠকখানা। 

File:Bowbazar Crossing - Kolkata 2015-02-09 2198.JPG - Wikimedia Commons

বউবাজার: বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (বিবাদী বাগ) থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এই রাস্তার নাম বউবাজার স্ট্রিট। ‘বউবাজার’ শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে দুটি মত রয়েছে। একটি মত অনুযায়ী, ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ মতিলাল তাঁর বাঙালি পুত্রবধূকে একটি বাজার লিখে দেন, সেই বাজারটিই ‘বহুবাজার’ (হিন্দিতে ‘বহু’ শব্দের অর্থ ‘পুত্রবধূ’) এবং পরে তা ‘বউবাজার’ নাম নেয়। যদিও আরও একটি মত বলছে, একসময় গোটা এলাকা জুড়ে প্রচুর দোকান এবং বেশ কয়েকটি বাজার ছিল। সেখান থেকেই জায়গাটির নাম ‘বহুবাজার’, পরে লোকের মুখে মুখে পরিবর্তিত হয়ে তা হয়ে যায় ‘বউবাজার’।

Bangabasi College-School, 8/1, Serpentine Ln, Lebutala Park, Lebutala,  Bowbazar, Kolkata, West Bengal 700012, India,

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার: একসময় জায়গাটির নাম ছিল হুজুরিমল ট্যাঙ্ক। পাঞ্জাবি ব্যবসায়ী ৫৫ বিঘার অপর পুকুর খনন করেন । লোকে বলতেন হুজুরিমল ট্যাঙ্ক বা পাদ্মপুকুর। পরে কালের নিয়মে পুকুর ভরাট হয়ে যায়। ভরাট হওয়া জায়গায় থাকতে শুরু করেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কেরানিরা। জায়গাটি পরিচিতি পায় কেরানিবাগান নামে। পরে নাম হয় নেবুতলা বা লেবুতলা। সেখান থেকেই মাঠের নাম নেবুতলার মাঠ। তারও পরে শহীদ সন্তোষ মিত্রর নামে জায়গাটির নাম হয় সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার । 

]]>
Kolkata: ৩০০ বছরে বারে বারে বানে ভেসেছে তিলোত্তমা, রাজপথে নেমেছে নৌকা https://ekolkata24.com/offbeat-news/kolkatas-water-logging-history-of-last-300-years Wed, 22 Sep 2021 19:39:12 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=5308 বিশেষ প্রতিবেদন: কলকাতা প্লাবিত হয়ে যাওয়া নিয়ে চারিদিকে এখন হইচই কাণ্ড। ফেসবুকে হোয়াটস আপে ভরতি মিম। দুয়ারে জল, দুয়ারে সমুদ্র এসব নানাবিধ কথা লিখে। কিন্তু যদি বলা হয় ‘কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই’ অর্থাৎ এই ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত আড়াইশো বছর ধরে এভাবেই কলকাতার পথে চলছে নৌকা। সিরাজ, চার্নক সামলাতে পারেননি। পারেননি জ্যোতি-বুদ্ধ, পারছেন না মমতাও। তফাত একটাই যে এখন একটু বেশি বৃষ্টি হলেই রোজ বানভাসি হচ্ছে কলকাতা কিন্তু তখন বড় কোনও দুর্যোগ না হওয়া পর্যন্ত এমন অবস্থা হত না শহরের।

kolkata water logging

১৭৩৭ সাল, সেই বছরে যে ঝড়-জল হয়েছিল, তাতে কলকাতা শহরের অনেক ঘরবাড়ি ধ্বসে পড়ে গিয়েছিল। ‘ভাগীরথী’ থেকে ‘লবণ হ্রদ’ আজকের সল্টলেক পর্যন্ত ভেসে গিয়েছিল। বহু নৌকা নষ্ট হয়েছিল। এমন জল জমেছিল যে ‘ধর্মতলা’র পূব দিকের নাম হয়ে গিয়েছিল ‘ডিঙ্গাভাঙ্গা’। কিন্তু তা একদিন পরেই নেমে গিয়েছিল। আসলে, তখন বেশি বৃষ্টি হলে জল বেরিয়ে যেত ভাগীরথী কিংবা পূবের লবণ হ্রদে’। লবণ হ্রদ উপচে গেলে প্লাবিত হত শিয়ালদহ, বৈঠকখানা এলাকা।

১৭৫৬, ২১ জুন। ২০ জুন সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা শহর অবরুদ্ধ করেছেন। লড়াইয়ের নিহতদের মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়েছিল শহর কলকাতার নর্দমায়। ২১ জুন ভয়ঙ্কর বৃষ্টি, অতিবর্ষণের মৃতদেহ পচে কলকাতায় মহামারীর সৃষ্টি হয়েছিল। ১৮৬৪,৫ই অক্টোবরে ভয়ঙ্কর ঝড় বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছিল সেবারের ঝড়। শোনা যায় শ্যামবাজারের খাল থেকে নৌকা উড়তে উড়তে উল্টোডাঙ্গায় গিয়ে পড়েছিল।

kolkata water logging

১৮৮৭ সালের ২৫শে মে’তে বিশাল ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে ‘ভাগীরথী’তে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের দেখা দেয়। জলের জমার জেরে স্ত্র্যান্ড রোডে ডিঙ্গি বার করতে হয়েছিল।জল দ্রুতে নেমে গিয়েছিল। আজকের মতো একবার বৃষ্টি হলেই একঘেয়ে জল জমে থাকার অবস্থা হয়নি। সেই ঘূর্ণাবর্তের জলপথে কলকাতা থেকে পুরীতে রথযাত্রা দেখতে যাবার জন্য জাহাজ ছেড়েছিল। ‘স্যার জন লরেন্‌স’ নামের ‘ম্যাকলীন কোম্পানি’র সেই জাহাজে সবমিলিয়ে ১০০০ জন বালেশ্বরে’ যাচ্ছিলেন। জলোচ্ছ্বাসে জাহাজ ডুবি হয়ে সবাই মারা যান। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন সিন্ধুতরঙ্গ কবিতা।

ভয়ঙ্কর অতিবর্ষণ হয়েছিল ১৯০০ সালে। সেবারে টানা সাতদিন ধরে বিপুল বৃষ্টিপাত হয়। বাঙলার সব নদীনালা ভেসে গিয়েছিল। কলকাতায় জলে প্রায় ডুবে যায় যায়। হল না। জল বেরিয়ে গিয়েছিল। ১৯২৫ সালের বর্ষাকালেও এক রাত্রে কলকাতায় অতিবর্ষণে সমস্ত বাড়ির নীচের তলা জলে ভেসে গিয়েছিল। এরপর অতিবর্ষণ ঘটেছিল ১৯৪৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। তারপরে ১৯৫৬, ১৯৫৯, ১৯৭০ ও ১৯৭৮ সালে। সমস্যা বেড়েছে গত বছর চল্লিশে। এর কারণ শহর বড় হয়েছে, জল বেরনোর রাস্তা ছোট হয়েছে। নলগুলির ময়লাচ্ছন্ন। তাই সহজেই বুজে যায়। যে জল বেরোয় তা সবটা ‘বাগজোলা খালে’ গিয়ে পড়ে। খালের অবস্থা খুবই করুণ। তা একটু বেশি বৃষ্টি হলেই বারবার জলমগ্ন হয়ে যায় কলকাতা।

]]>
Kolkata: বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরণের ইতিহাসের প্রথম পর্ব https://ekolkata24.com/offbeat-news/history-of-kolkata Tue, 21 Sep 2021 07:56:21 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=5180 অনুভব খাসনবীশ: ১৬৯০ সাল নাগাদ কলকাতা (Kolkata) শহরের গোড়াপত্তন করেন জোব চার্নক। ১৬৯৮ সালে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৎকালীন জমিদার সাবর্ণ চৌধুরীর কাছ থেকে কিনে নিল হুগলি নদীর তীরের তিন তিনটি গ্রাম সুতানুটি, গোবিন্দপুর আর কলকাতা। এই শহর কলকাতারই প্রতিটি অঞ্চল, প্রতিটা রাস্তা, প্রতিটা গলির সঙ্গে মিশে রয়েছে ইতিহাস। 

আরও পড়ুন ভারতের সবচেয়ে বড় পতিতালয়ের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে ঠাকুরবাড়ির নাম

The Bagbazar Region Is Steeped In The History Of Bengal | WhatsHot Kolkata

বাগবাজার: অনেকে মনে করেন ‘বাগ’ (উদ্যান) বা ‘বাঘ’ শব্দ থেকে বাগবাজার শব্দটির উদ্ভব। তবে ভাষাতাত্বিক সুকুমার সেনের মতে বাগবাজার নামটা সম্ভবত ‘বাঁকবাজার’ থেকে এসেছে। গঙ্গার ওই বাঁকের মুখে বহুদিন বাজার বসত।

শ্যামবাজার: বর্তমান শ্যামবাজার অঞ্চলে অতীতে একটি বিখ্যাত বাজার ছিল। জন জেফানিয়া হলওয়েল এই বাজারটিকে চার্লস বাজার নামে অভিহিত করেন। শেঠ ও বসাক পরিবারগুলি ছিল সুতানুটির আদি বাসিন্দা এবং শোভারাম বসাক ছিলেন অষ্টাদশ শতাব্দীর কলকাতার এক বিশিষ্ট বাঙালি ধনী ব্যবসায়ী শোভারাম বসাক তাঁর গৃহদেবতা শ্যামরায়ের (কৃষ্ণ) নামানুসারে এই অঞ্চলের বর্তমান নামকরণটি করেন।

হাতিবাগান: হাতিবাগান নাম হয় ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদৌল্লার কলকাতা আক্রমণ করার সময় হাতির ছাউনি এখানে পড়েছিল বলে। অন্য একটি মত অনুযায়ী রাজা নবকৃষ্ণ দেবের স্থাবর সম্পত্তি শুধুমাত্র শোভাবাজার অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল না। শোভাবাজারের রাজসীমানার যেই দিকে হাতিশালা ছিল বর্তমানে তার নাম হাতিবাগান। আবার আরেকটি কিংবদন্তি অনুযায়ী, এই অঞ্চলে “হাতি” পদবীধারী জনৈক ব্যক্তির একটি বাগানবাড়ি ছিল। তা থেকেই “হাতিবাগান” নামটি এসেছে। মেহতাব চাঁদ মল্লিক পরে সেই বাগানবাড়িটি কিনে নিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, এই মেহতাব চাঁদ মল্লিকই হাতিবাগান বাজারটি প্রতিষ্ঠা করেন।

Tit Bits – Aranyascope

চিৎপুর: এখনকার কাশীপুর এলাকার গঙ্গার তীরের চিৎপুর অঞ্চলে অবস্থিত ‘আদি চিত্তেশ্বরী’ দুর্গামন্দির। কথিত আছে , ভাগীরথী-হুগলী নদীতে ভেসে আসা এক প্রকান্ড নিম গাছের গুঁড়ি দিয়ে চিতে ডাকাত এই জয়চন্ডী চিত্তেশ্বরী দুর্গা মুর্তি তৈরী করেন। চিৎপুর অঞ্চলের ইতিহাস প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো। পরবর্তীকালে মনোহর ঘোষ এই অঞ্চলে দেবী চিত্তেশ্বরীর (কালী) একটি মন্দির নির্মাণ করেন। সেই মন্দিরের নামানুসারেই এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়।

Making Gods: Exploring Calcutta&#39;s Kumartuli District - Travelogues from  Remote Lands

কুমোরটুলি: শোভাবাজার রাজবাড়িতে দূর্গাপূজার প্রচলন হলে একেবারে প্রথমদিকে একদল কুমোর কে কৃষ্ণনগর থেকে আনা হত মূর্তি গড়ার জন‍্য। এইভাবে কলকাতার দেশীয়দের অঞ্চলগুলি বিভিন্ন পেশাভিত্তিক পাড়ায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। এইভাবেই শুঁড়িপাড়া, কলুটোলা, ছুতারপাড়া, আহিরীটোলা ও কুমারটুলি প্রভৃতি অঞ্চলের উৎপত্তি ঘটে।

ঠনঠনিয়া: কথিত আছে, ঠনঠনিয়া এলাকার কয়েকটি বাড়িতে লোহার কাজ হত। দিন-রাত সেখান থেকে ‘ঠন-ঠন’ শব্দ আসত। অন্য রকটি কিংবদন্তি অনুযায়ী, জঙ্গলের মধ্য থেকে শোনা যেত কালী মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি। ঠনঠন-ঠনঠন। সেই থেকেই এলাকার নাম ঠনঠনিয়া।

]]>
রান্না পূজা: মহিলাদের হাত ধরেই শুরু হয় বাঙালির এই খাদ্যেৎসব https://ekolkata24.com/offbeat-news/the-history-of-ranna-puja Fri, 17 Sep 2021 10:17:43 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=4841 বিশেষ প্রতিবেদন: বাঙালির সব পার্বন বা উৎসবের প্রথা পুরোহিত বা সমাজের কর্তা সদৃশ পুরুষদের দ্বারা প্রবর্তিত হলেও একটি পার্বন শুরু হয়েছিল মহিলাদের হাত ধরে এবং তাদের বিধান মেনেই – সেটি হচ্ছে রান্না পূজা।

প্রামাণ্য তথ্য না থাকলেও পরম্পরা থেকে ধারণা স্পষ্ট হয়। নদীমাতৃক গ্রাম বাংলার এ এক নিজস্ব উৎসব। কোথাও বলে ইচ্ছা রান্না, কোথাও বা ধরাটে রান্না বা আটাশে রান্না, আবার কোথাও বলে বুড়ো রান্না। আসলে এ সবই পার্বনপ্রিয় বাঙালির দেওয়া ডাকনাম। মূল প্রতিপাদ্য জমিয়ে হরেক রকম রান্না , না রেঁধে খাওয়া। বিশ্বকর্মা পুজোর পাশাপাশি আজ বাঙালির হেঁশেল বনধ। অরন্ধন’-এর আভিধানিক অর্থ হল অ রন্ধন অর্থাৎ যে দিন রান্না করা হয় না বা রান্না নিষেধ। আর সেই দিনটি তো আজকেই।

ভাদ্র সংক্রান্তি বা বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন পরিবারের কল্যাণার্থে গৃহিণীরা শিবের মানসপুত্রী দেবী মনসার উদ্দেশে নানা বিধ পদ রান্না করে নিবেদন করেন। রান্নাপুজোর দিন সাধারণত উনুনের পুজো হয়। সারা বছর আমরা যে উনুনে রান্না করি তার উপাসনা করা হয় এই পুজোয়। অন্য দিকে উনুনের গর্ত হল মা মনসার প্রতীক। তাই দেবী মনসার উদ্দেশে পুজো বোঝাতেই এই উনুন পুজো করা হয়।

Ranna Puja

কিন্তু এর কারণ কী? দেবী মনসা বাংলার লৌকিক দেবদেবীর মধ্যে অন্যতম। ভরা বর্ষা কাটিয়ে যখন সূর্যের আলো ঝলমলে রোদ ভূমি স্পর্শ করে, শীতকালে শীত-ঘুমে যাওয়ার আগে গ্রামাঞ্চলে সাপের আনাগোনা শুরু হয়। চাষ করতে গিয়ে অনেক মানুষের জীবনহানিও ঘটে। তাই দেবী মনসাকে সন্তুষ্ট রাখতে, সংসারজীবনে দেবীর কৃপালাভের আশায় আগের দিনের রান্না করা পান্তা ভাত, সজনে শাক, ভাজাভুজি, ওলের বড়া, মাছের বিভিন্ন ধরনের পদ সাজিয়ে দেবীকে নিবেদন করা হয়। ওই দিন বাড়িতে টাটকা রান্নার নিয়ম নেই।

দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে এই উৎসব রান্নাপুজো বলে পালিত হয়। স্বাভাবিক ভাবেই এই পুজোর জন্য দৈনন্দিন ব্যবহারের উনুন গোবর জল দিয়ে পরিষ্কার করে আলপনা দিয়ে মনসা পাতা দিয়ে সাজিয়ে ঘট প্রতিষ্ঠা করে পুজো হয়।

আরন্ধনের উপকরণ কী? পান্তা ভাত, মুগের ডাল, কচু শাক, লতি চচ্চড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, আলু – কুমড়ো নারকেল দিয়ে ছাচি, ইলিশের পাতলা ঝোল, ভাপা ইলিশ আর শেষ পাতে চালতার টক। রসনার তৃপ্তির কথা ভেবে বেশ রসালো ভাবেই শুরু হয়েছিল এই পার্বণের। এখনো গ্রাম বাংলায় অরন্ধনের আগের দিন বাড়ির সকল সদস্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সারা রাত ধরে রান্নার উপচার তৈরি, রান্নাবান্না, কুটনো-বাটনা চলে।

ভাদ্র সংক্রান্তির দিন মা মনসাকে উৎসর্গ করে তবে খাওয়া হয়। গোত্র বা অঞ্চল ভেদে কেউ মনসার মূর্তি বানিয়ে, বা ঘট পেতে বা ফনিমনসার ডাল পুঁতে – মনসার প্রতীক হিসেবে ভেবে পূজা হয়। আগে তিথি অনুযায়ী, সংক্রান্তির দিন ভাদ্র শেষ হয়ে আশ্বিন পড়লে তবে সে খাবার মুখে তুলতেন গৃহস্থ। তাই এই উৎসবকে অনেকে বলেন ভাদ্রতে রান্না করে আশ্বিনে খাওয়া। এই উৎসবের প্রচলন ঘটি এলাকাতেই বেশি। নিজে বাঙাল হলেও কর্মসূত্রে আছি ঘটি প্রধান এলাকায়।

]]>
বিখ্যাত দুর্গোৎসবের আড়ালে ঢাকা পড়ে বিপ্লবীর স্বাধীনতা সংগ্রাম https://ekolkata24.com/offbeat-news/corporate-durga-puja-left-behind-the-history-of-freedom-fighter-santosh-kumar-mitra Thu, 16 Sep 2021 05:15:38 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=4719 বিশেষ প্রতিবেদন: কলকাতার অন্যতম সেরা বারোয়ারি পুজো মধ্য কলকাতার ‘সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার’। রূপোর প্যান্ডেল, প্রতিমার সোনার শাড়ি কিংবা পুরো দুর্গা মূর্তিই সোনার বানিয়ে দেওয়া, সবেতেই চমক। পুজোর জাঁকজমকের আড়ালে কোথাও যেন হারিয়ে যান নামাঙ্কিত পার্কের স্বাধীনতা সংগ্রামী সন্তোষ কুমার মিত্র। যাঁর জন্ম ১৫অগাস্ট মৃত্যু ১৬ সেপ্টেম্বর আজকের দিনে। তাঁর আত্মবলিদান, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ইংরেজদের দিনের পর দিন নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো কিছু নিয়েই আলোচনা হয় না । তাঁর বাড়ি ছিল পূজো প্রাঙ্গণ থেকে কিছু দূরে একটি সরু গলিতে। সে বাড়ির অস্ত্বিত্ব তো নেই, অনেকেই জানেন না কে এই সন্তোষ মিত্র।

durga puja left behind the history of freedom fighter santosh kumar mitra

‘সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার’-এর পুজোর শুরু এই স্বাধীনতা সংগ্রামকে সামনে রেখেই। তবে ব্র্যান্ড সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার-এ ঢাকা পড়েন বিপ্লবী সন্তোষ কুমার মিত্র। পার্কের নাম বদলও আবার ইংরেজ শাসনকালেই। ১৯২০, গান্ধীজীর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন তখন তুঙ্গে। অত্যাচারী ইংরেজকে দেশছাড়া করতে বাংলার প্রত্যেক যুবক তখন প্রায় বদ্ধপরিকর। এমনই এক যুবক ছিলেন সন্তোষ কুমার মিত্র। এই মেধাবী ছাত্র ১৯১৯ সালে বিএ এবং ১৯২১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সসম্মানে মাস্টার্সে উত্তীর্ণ হন। সঙ্গে ছিল এলএলবি ডিগ্রিও। কিন্তু উজ্জ্বল এবং নিশ্চিত ভবিষ্যতকে এক লহমায় দূরে সরিয়ে রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দেশ মাতৃকার সম্মান উদ্ধারের কাজে।

কলেজ পাশ করার পর বিপ্লবী সন্তোষ কুমার মিত্র কংগ্রেসের হয়ে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এই সূত্রে তিনি হুগলি বিদ্যামন্দিরে যাতায়াত করতেন। হুগলি বিদ্যামন্দিরের প্রধান ছিলেন বিপ্লবী ভূপতি মজুমদার। তাঁর সূত্র ধরেই সন্তোষ মিত্রের পরিচয় বিপ্লবী বারীন্দ্র ঘোষ এবং যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের সঙ্গে। ধীরে ধীরে গান্ধীর অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। প্রভাবিত হন সহিংস বৈপ্লবিক মতাদর্শে। ইংরেজদের কুনজরে চলে আসেন সঙ্গে সঙ্গে।

durga puja left behind the history of freedom fighter santosh kumar mitra

১৯২৩ সালে ‘শাঁখারীটোলা হত্যা মামলায়’ এক ইংরেজ পোস্ট মাস্টারকে খুনের অভিযোগে তাঁর উপরে সব সন্দেহ এসে পড়ে। গ্রেফতারও হন। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যান। বিখ্যাত আলিপুর বোমার মামলাতেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রমাণ ছিল না, এবারও ছাড়া পেয়ে যান। সন্তোষ কুমার মিত্র প্রকাশ্যে যেভাবে বৈপ্লবিক মতাদর্শ প্রচার করে বেড়াচ্ছিলেন তা ইংরেজদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাঁর উপর প্রয়োগ করা হয় ‘বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট’ অর্থাৎ তাঁকে দেশের নিরাপত্তার জন্যে বিপদ্জনক ঘোষণা করে দেয় ইংরেজ সরকার। এই আইন অনুযায়ী বিনা বিচারে তাঁকে আটকে রাখা যাবে। হয়ে গেলেন ‘সিকিউরিটি প্রিজনার’।

শুধুমাত্র সন্দেহের বশে গ্রেফতার করে জেলবন্দি করার ফলে শাসকের সামনে আর এক সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রথমত পর্যাপ্ত জায়গার অভাব। আলিপুর ও অন্য বড় জেলগুলোতে সাধারণত দাগি আসামিদের সঙ্গে এঁদের রাখতে হচ্ছিল। দ্বিতীয়ত, এই বন্দিদের কোনও পূর্ব অপরাধের রেকর্ড ছিল না। বন্দি এবং সমাজের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে থাকে। তাই ‘সিকিউরিটি প্রিজনার’ রাখার জন্য ১৯৩১ সালে ইংরেজ সরকার আলাদা তিনটি ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করে। বহরমপুর , বক্সাদুয়ার এবং খড়গপুর রেল জংশনের কাছে হিজলীতে তৈরি হয় তিনটি ক্যাম্প।

]]>
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন কলেজের ইতিহাস https://ekolkata24.com/offbeat-news/the-history-of-the-traditional-old-duff-college-in-calcutta-is-being-ruined-due-to-lack-of-maintenance Sun, 01 Aug 2021 16:55:19 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=1704 অনুভব খাসনবীশ, কলকাতা: হিন্দু কলেজ, বেথুন কলেজ, শ্রীরামপুর কলেজ কিংবা সিটি কলেজ। পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতার পুরনো কলেজ বললে একধাক্কায় মাথায় আসে এই নামগুলো। কিন্তু ডাফ কলেজ? নামটা খানিক অচেনা হলেও কলকাতার অন্যতম পুরনো কলেজ এটি। যদিও, বর্তমানে এই ডাফ কলেজকেই আমরা চিনি অন্য নামে।

রেভারেন্ড আলেকজান্ডার ডাফ, স্কটল্যান্ড থেকে ভারতে এসেছিলেন নিছক ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে। সালটা ১৯৩০। চার্চ অফ স্কটল্যান্ডের অধীনে থেকে কয়েকমাস ধর্ম প্রচারের পর তিনি বুঝতে পারেন, এদেশে প্রয়োজন ইংরেজি শিক্ষার। তাই ধর্মপ্রচারের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার বুকে ইংরাজি শিক্ষার প্রসার এবং সমাজ সংস্কারে উদ্যোগী হলেন তিনি৷ ভারতবর্ষে ইংরেজি শিক্ষার অভাব দেখে সেই সময়েই রাজা রামমোহন রায় এবং তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংয়ের সহায়তায় তিনি ৫১ নম্বর আপার চিৎপুর রোডে ফিরিঙ্গি কমল বসুর বাড়িতে দুটি ঘর ভাড়া নিয়ে ওই বছরেরই ১৩ জুলাই স্কুল খোলেন৷ নাম দেন জেনারেল এসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন। কিছুদিন পরে, সেখান থেকে গোঁরাচাঁদ বসাকের বাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হল এই স্কুল (প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এখনকার রবীন্দ্রসরণির সেই বাড়িতে রয়েছে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি স্কুল)৷ তার ঠিক চোদ্দবছর পর প্রতিষ্ঠা করেন ‘ফ্রি চার্চ ইনস্টিটিউশন, কলকাতার নতুন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

Reverend Alexander Duff

মথুরমোহন সেন। সেই সময়ের কলকাতায় আমদানী হওয়া বাবু কালচারের অন্যতম ধারক এবং বাহক। কলকাতার অন্যতম ধনী ব্যক্তি মথুরমোহনের নিমতলা স্ট্রিটে ছিল বিশাল বাগানবাড়ি। ঠিক তারপাশেই ছিল উমিচাঁদের বাগানবাড়ি। পাশাপাশি দুটি বাগানবাড়ি থাকায় জায়গাটির নাম হয় জোড়াবাগান। যদিও, অনেকে বাগানবাড়িটি মথুরমোহনের বদলে গোবিন্দরাম মিত্তিরের ছিল বলেও দাবি করেন।

সেই মথুরমোহনের বিল্ডিংয়েই প্রথম ক্লাস শুরু করেন আলেকজান্ডার ডাফ। তারপরে ১৮৫৭ সালের মার্চ মাসে ১৮ হাজার টাকায় জমি কেনেন ৭৪ নম্বর নিমতলা ঘাট স্ট্রিটে। তৈরি হয় ‘ডাফ কলেজ। আর্থিক অনুদান পাঠিয়েছিলেন বহু ইংরেজ। স্কটল্যান্ড থেকে বাড়িটির নকশা তৈরি করে পাঠিয়েছিলেন বিখ্যাত বাস্তকার উডকাট সাহেব৷ ‘দ্য ফ্রি চার্চ অফ স্কটল্যান্ড’ এর পক্ষ থেকে এসেছিল প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড। মোট ২৮টি বিশালাকার ঘরে বসার ব্যবস্থা ছিল প্রায় ১০০০ – ১২০০ ছাত্রছাত্রীর। এছাড়াও ছিল তিনটি হলঘর, দুটি গ্যালারি, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, খেলার মাঠ।

kolkata old Duff College
এই ডাফ কলেজেরই অন্যতম কৃতী ছাত্র হলেন রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি, ধর্মযাজক কালীচরণ ব্যানার্জি, শেক্সপেরিয়ান স্কলার জে. সি. স্ক্রিমজেওর প্রমুখ। ১৮৪৩-৪৪ সাল নাগাদ স্কটল্যান্ডে চার্চের মধ্যে বিরোধ শুরু হলে ডাফ সাহেব ‘জেনারেল অ্যাসেম্ব্লিজ ইন্সটিটিউশন ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন। সহযোগীদের সহায়তায় এই আধুনিক কলেজটি বানান।

এই ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায় ফ্রি চার্চ অফ স্কটল্যান্ডের মিশনারী, রেভারেন্ড লালবিহারী দে’র লেখায়। তিনি লিখেছেন, “Just one week after the close of the session of 1843, the missionaries heard that the established Church of Scotland had refused to give them the use of the buildings in Cornwallis Square. Duff was naturally incensed at this decision…as it was chiefly through his own personal exertions that the money for the buildings had been raised.”

পরে অবশ্য স্কটিশদের বিরোধ মিটে গেলে ডাফ সাহেব হেদুয়ার পাশে জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিউটের বাড়িতে চলে যান। ফলে ১৯০৮ সালে হেদুয়ার পাশে চলে আসে ‘ডাফ কলেজ’। আলেকজান্ডার ডাফেরই প্রতিষ্ঠা করা ‘জেনারেল অ্যাসেম্ব্লিজ ইন্সটিটিউশনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এর নামকরণ হয় ‘Scottish Churches College’। যা ১৯৩০ সালে ‘স্কটিশ চার্চ কলেজ’ (Scottish Church College) নামে আত্মপ্রকাশ করে।

১৯২০ সালে ওই বিল্ডিংয়ের চালু হয় জোড়াবাগান থানা। সেসময় ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলন তার চরম সীমায়। তাতে সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহন করেছিল বাংলা এবং বাঙালিরা। কুখ্যাত ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার চার্লস টেগার্ট ছিলেন তৎকালীন জোরাবাগান থানার প্রধান। এই ডাফ কলেজে বিল্ডিংয়ের একটি অংশেই শুরু করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওপর অত্যাচার করা। ১৯৭০ সালের নকশাল আন্দোলন দমনেও তৎপর হয়ে ওঠে কলকাতা পুলিশ, আন্দোলনকারীদের নিয়ে আসা হত এই বিল্ডিংয়েই, টেগার্টের ঠিক করা অংশেই তাদের ওপর চলত অকথ্য অত্যাচার।

১৯৭১-৭২ সাল নাগাদ কালীপুজোর সময় এই থানা খবর পায়, গোপনে অস্ত্র পাচার করা হচ্ছে কলকাতায়। তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় বেশ কয়েকজনকে, বাজেয়াপ্ত করা হয় দু’বাক্স বিস্ফোরক। থানার একটি ঘরেই রাখা ছিল সেই বাক্সদুটি। ঠিকমতো না রাখায় দিনকয়েকের মধ্যেই ঘটে বিরাট বিস্ফোরন। ছিন্নভিন্ন হয়ে যান ঘরে থাকা পুলিশকর্মীরা, উড়ে যায় ঘরের ছাদ। ১৯৮৮ সালে ‘অনিরাপদ’ বলে ঘোষণা করা হয় এই বিল্ডিংকে। থানা সরে যায় পাশের একটি বিল্ডিংয়ে। বর্তমানে কলকাতা কর্পোরেশনের ‘হেরিটেজ কনজারভেশন কমিটি’র পক্ষ থেকে ‘গ্রেড ওয়ান হেরিটেজের’ তালিকায় রাখা হয়েছে ডাফ কলেজের বিল্ডিংকে।

]]>