jagannath – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Sat, 10 Jul 2021 04:53:26 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png jagannath – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 পুরাণ কথা: জগন্নাথ ও রথযাত্রার ইতিহাস-দ্বিতীয় পর্ব https://ekolkata24.com/uncategorized/history-of-jagannath-rath-yatra-2 Thu, 08 Jul 2021 06:19:31 +0000 https://ekolkata24x7.com/?p=342 সোমবার, ২৭ আষাঢ় অর্থাৎ ইংরাজির ১২ জুলাই শুভ রথযাত্রা৷ প্রথম পর্বে জগন্নাথ মূর্তি ও মন্দিরের প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে আমরা জেনেছি৷ দ্বিতীয় পর্বে আমরা জানবো রথযাত্রা কী এবং কেন হয়? যা নিয়ে লিখলেন টিঙ্কু মণ্ডল

রথযাত্রা হল হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব এবং বাঙালির সংস্কৃতি ও সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ এই উৎসবটি কাঠের তৈরি রথে করে কাঠের তৈরি বিগ্রহকে পরিভ্রমণ করানো হয়৷ কথিত আছে, দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দাদা বলরাম এবং বোন সুভদ্রাকে নিয়ে রথে করেই বৃন্দাবনে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন৷ সেই স্মৃতি মাথায় রেখেই আজও এই উৎসব পালিত হয়৷ প্রকৃত অর্থে রথ উৎসব শুরু হয় জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা দিয়ে৷ এখন জেনে নেওয়া যাক, কী এই স্নানযাত্রা?

প্রতি বছর জৈষ্ঠ্য মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পুরীতে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা আয়োজিত হয়৷ এদিন মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে মূর্তি তুলে এনে স্নান মন্ডপে তা স্থাপন করা হয়৷ তারপর সুগন্ধি জল দিয়ে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নান করানো হয়৷ স্নানের পর শুরু হয় মূর্তির সাজসজ্জা৷ কথিত আছে, ১০৮ ঘড়া জলে স্নানের পর জ্বরে কাবু হয়ে পড়েন জগন্নাথ দেব৷ তাই এই সময় তাঁকে গৃহবন্দি অবস্থায় কাটাতে হয়৷ রথ পর্যন্ত বিশ্রাম নেন তিনি৷ ফলে সেই সময় ভক্তদের দর্শন দেন না জগন্নাথ দেব৷ এমনকী এই ক’দিন জগন্নাথের পুজোও বন্ধ থাকে৷ তারপর জ্বর থেকে উঠে রথে চেপে মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন জগন্নাথ দেব৷ জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা রথ চড়ে ‘গুন্ডিচার’ বাড়ি যান৷ যা জগন্নাথ দেবের ‘মাসির বাড়ি’ নামে পরিচিত৷ জগন্নাথ দেবের ‘মাসির বাড়ি’ পর্যন্ত রথ চড়ে যাওয়াকে বলে ‘সোজা রথ’৷ এরপর সাতদিন মাসির বাড়িতে থাকার পর সেই রথে চড়েই পুনরায় নিজের মন্দিরে ফেরেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা৷ তাঁর মাসির বাড়ি থেকে মন্দিরে ফিরে আসার এই যাত্রা ‘উল্টো রথ’ নামে প্রসিদ্ধ৷

রথযাত্রায় তিনটি বিগ্রহ তিনটি আলদা আলাদা রথে থাকে৷ এই রথ গুলির বিশিষ্ট্যও আলাদা৷ সবার প্রথমে থাকে বড় ভাই বলরামের রথ৷ এই রথের নাম তালধ্বজ৷ ১৪টি চাকা বিশিষ্ট এই রথটির উচ্চতা ৪৪ ফুট৷ আর রথের আবরণ নীল রঙের হয়৷ তারপর থাকে সুভদ্রার রথ৷ যার নাম দর্পদলন৷ এই রথটি ১২টি চাকা-সহ ৪৩ ফুট উচ্চতার অধিকারী৷ এই রথের মাথায় একটি পতাকা থাকে৷ যার মধ্যে একটি পদ্মচিহ্ন আঁকা আছে৷ তাই এই রথটিকে পদ্মধ্বজও বলা হয়৷ এই রথটি আবরণ লাল রঙের হয়৷

সর্বশেষে থাকে জগন্নাথ দেবের রথ৷ এই রথটির উচ্চতা ৪৫ ফুট৷ আর এই রথে থাকে ১৮টি চাকা৷ এই রথটির নাম নন্দীঘোষ৷ এই রথের মাথায় যে পতাকা থাকে, তাতে কপিরাজ হনুমানের মূর্তি আঁকা থাকে৷ তাই এই রথের আর এক নাম কপিধ্বজ৷ জগন্নাথ দেবের রথটি সম্পূর্ণ লাল ও হলুদ কাপড় দিয়ে মোড়া থাকে৷ রথের দিন প্রতিটি রথকে ৫০ গজ দঁড়িতে বেঁধে আলাদা আলাদা করে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় মাসির বাড়ির দিকে৷ এই রথকে আমাদের দেহ এবং বিগ্রহগুলিকে আমাদের আত্মার সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে৷

প্রতি বছর পুরীর রথযাত্রার উদ্বোধন করেন এখানকার রাজা৷ রাজত্ব না-থাকলেও বংশপরম্পরায় পুরীর রাজপরিবার আজও আছে এবং সেই নিয়মানুসারে যিনি রাজা উপাধি পান তিনি পরপর তিনটি রথের সামনের অংশ সোনার ঝাড়ু এবং সুগন্ধি জল দিয়ে ঝাঁট দেন৷ তারপর পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করেন এবং রথের দঁড়িতে টান পড়ে৷

কথিত আছে, যে ব্যক্তি রথে চড়ে জগন্নাথ দেবকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড দর্শন করাবেন ভগবান তাঁদের প্রতি অশেষ কৃপা বর্ষণ করবেন৷ ‘বৃহন্নারদীয়’ পুরাণে ভগবান নারায়ণ স্বয়ং লক্ষ্মী দেবীকে বলেছেন, ‘‘পুরুষোত্তম ক্ষেত্র নামক ধামে আমার কেশব মূর্তি বিরাজওমান৷ মানুষ যদি কেবল সেই শ্রী বিগ্রহ দর্শন করেন, তবে খুব সহজেই আমার ধামে আমার কাছে ফিরে আসতে পারবে৷’’

আজ আমরা জানলাম, ভারতের সব থেকে প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান গুলোর মধ্যে ওডিশার পুরী অন্যতম বিশেষ তীর্থস্থান রূপে প্রতিষ্ঠিত৷ পুরীর রথযাত্রার মাহাত্ম্যও প্রচুর৷ তবে কালক্রমে শুধু পুরীতেই নয়, এই উৎসবের প্রচলন ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বিভ্ন্ন অঞ্চলে৷ এর মধ্যে হুগলির শ্রীরামপুরে মাহেশের রথযাত্রা, পুর্বমেদিনীপুরের মহিষাদলের রথযাত্রা, মায়াপুরের ইস্কন মন্দিরের রথযাত্রা খুবই প্রসিদ্ধ৷ এমনকী বাংলাদেশের ধামরাই জগন্নাথের রথ বিশেষ প্রসিদ্ধ৷ তৃতীয় অর্থাৎ শেষ পর্বে আমরা এই অঞ্চলের রথ উৎসব সম্পর্কে জানবো৷
‘জয় জগন্নাথ’

]]>