Kishwar Chowdhury – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Wed, 14 Jul 2021 04:30:14 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png Kishwar Chowdhury – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 পান্তাভাত খাইয়ে মাস্টারসেফ প্রতিযোগিতায় প্রথম তিনে বাঙালি রাধুঁনী https://ekolkata24.com/uncategorized/masterchef-australia-contestant-made-panta-bhaat-by-kishwar-chowdhury Wed, 14 Jul 2021 04:30:14 +0000 https://ekolkata24x7.com/?p=714 নিউজ ডেস্ক: অনেক বাঙালিই পান্তা ভাতে অরুচি রয়েছে৷ তবে, সেই পান্তা ভাতই ভিনদেশিদের মন জয় করে নিয়েছে৷ তাও এক এক বাঙালির রাঁধুনির তৈরি করা পান্তা ভাত আর আলু ভর্তাতে৷ অস্ট্রেলিয়ায় রান্না সংক্রান্ত একটি জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো মাস্টারশেফে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরী। আর এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন জাস্টিন। টানা দুই দিন ধরে চূড়ান্ত পর্ব হয় জাস্টিন, পিট ও কিশোয়ার, এই তিন ফাইনালিস্টকে নিয়ে।

প্রথম দিন ফাইনাল ডিশে কিশোয়ার রান্না করেন ‘স্মোকড ওয়াটার রাইস, আলু ভর্তা ও সার্ডিন’। মানে ভেতো বাঙালির কাছে চিরচেনা পান্তা-ভাত, আলু ভর্তা আর সার্ডিন মাছ ভাজি। ফাইনাল ডিশ রান্না নিয়ে কিশোয়ার বিচারকদের বলেন, “প্রতিযোগিতায় এমন রান্না সত্যিই চ্যালেঞ্জের। সাধারণ রেস্টুরেন্টে এমন রান্না হয় না। কিন্তু বাঙালির কাছে এটা পরিচিত রান্না।” আর ফাইনাল ডিশ হিসেবে এটা রেঁধে নিজের তৃপ্তির কথাও জানান কিশোয়ার। তাঁর এই রান্না দেখে এবং খেয়ে বিচারকেরা রীতিমতো অভিভূত হয়ে পড়েন। তিনজন বিচারকই দশে দশ দেন কিশোয়ারকে৷

তবে চূড়ান্ত পর্বের শুরুটা কিন্তু বেশ চ্যালেঞ্জের ছিল কিশোয়ারের জন্য। তিনি হাঁসের একটি পদ রান্না করা শুরু করেছিলেন। বিচারকেরা যখন তাঁর রান্না দেখতে এলেন সবকিছু দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন “এখানে কিশোয়ার কোথায়?” তারপরেই তিনি তার মেন্যু চেঞ্জ করার চিন্তা করেন৷ আর ফাইনাল ডিশ হিসেবে পরিবেশন করেন বাঙালির চির পরিচিত আলু ভর্তা, পান্তা ভাত আর সার্ডিন মাছ৷ এই মাছের স্বাদ অনেকটা ইলিশ মাছের মতোই৷ চূড়ান্ত পর্বে ফাইনাল ডিশ রেঁধে ৫১ নাম্বার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন, প্রথম স্থানে ছিলেন পিট ৫৩ নাম্বার নিয়ে। তবে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া’র ফাইনাল রেজাল্টের আগেই লাখ লাখ বাঙালির মন জয় করে নিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রামসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে বহুল প্রচলিত এবং একই সঙ্গে প্রচণ্ড জনপ্রিয় কয়েক পদের রান্নার ভিডিও৷ আর সঙ্গে পরিচিতি পেয়ে যান এসবের রাঁধুনি। লাউ চিংড়ি, বেগুন ভর্তা, খিচুড়ি, মাছ ভাজা, আমের টক, খাসির রেজালা৷ মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় একের পর এক এমন মুখরোচক খাবার রান্না করে বিচারকসহ বিভিন্ন ভাষাভাষীর দর্শকের নজর কাড়েন এই শেফ। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলার প্রচলিত নানা ধরনের খাবারকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার কারণেই ৩৮ বছর বয়সী এই শেফকে অন্যসব প্রতিযোগী থেকে আলাদা করেছে।

কিশোয়ার চৌধুরী একজন বিজনেস ডেভেলপার, পারিবারিক প্রিন্টিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন তিনি। জন্ম ও বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়ায় হলেও, পারিবারিক আবহটা সবসময়ই ছিল বাঙালিয়ানা। তিনি জানালেন, তাঁর বাবার বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরের আর মা কলকাতার বর্ধমানের। তাঁরা দুজনে প্রায় ৫০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। তবে বিদেশে বসবাস করলেও নিজের দেশের ভাষা, সংস্কৃতি চর্চা সবকিছুই বজায় রেখেছেন কিশোয়ারের বাবা-মা, আর সেটা তারা নিজের সন্তানদেরও ধারণ করতে উৎসাহিত করেছেন।

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় যাত্রা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, চিন্তাটা দুই সন্তানের মা কিশোয়ারের মাথায় আসে৷ ২০২০ সালে সারা দুনিয়ার মতো অস্ট্রেলিয়াতেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর। তিনি বলেন, “গত বছরেই একটা বিষয় বারবার মনে হচ্ছিল যে আমার বাবা-মা যে রকম করে তাদের সংস্কৃতি, খাবার-দাবার সবকিছু আমাদের মধ্যে ইনস্টল করেছেন, আমি সেটা সন্তানদের মধ্যে করে দিতে পারব কি না। এটা শুধু আমার না, আমার মনে হয় দেশের বাইরে যেসব বাবা-মায়েরা থাকেন, সবার মধ্যেই এই চিন্তাটা থাকে”।

আর এমন চিন্তা থেকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটা বই লেখার পরিকল্পনা করেন কিশোয়ার। তিনি বলেন, “আমার ছেলের বয়স এখন ১২ বছর৷ এ রকম একটা বয়সে নিজের সংস্কৃতি, পূর্ব-পুরুষ এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। আমি সবসময় ভাবতাম ওদের জন্য কী রেখে যাওয়া যায়।”

তবে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় আবেদন করার কোন ইচ্ছাই কখনও ছিল না কিশোয়ারের। তাঁর কথায়, “এটা আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল। সে আমাকে প্রায়ই বলত মা তুমি এটা পারবে। তুমি অ্যাপ্লাই কর না কেন। আমার ছেলেকে আমি জুনিয়র মাস্টারশেফের জন্য চেষ্টা করতে বলছিলাম, কারণ সেও ভালো রান্না পারে। তারপর সে যখন বলছিল আমাকে আবেদন করতে, তখন ভাবলাম তাদের কাছে এক্সামপাল সেট করতে – একটা চেষ্টা করে আমি দেখতেই পারি।”

চার বছর বয়সী শিশুকন্যা সেরাফিনা ও বারো বছর বয়সী পুত্র মিকাইলের কথা ভেবে কিশোয়ারের এই চেষ্টায় যেন আরও গতি আসে। আর পাশে সবসময় ছিলেন তাঁর পরিবার ও জীবনসঙ্গী এহতেশাম নেওয়াজ। তার পরই পান্তাভাতক সামনে রেখেই বিদেশ জয় করছেন কিশোয়ার৷

]]>