Lakshmi Sehgal – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Sun, 01 Aug 2021 07:15:43 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png Lakshmi Sehgal – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 লক্ষ্মী সেহগাল: স্বাধীনতার ইতিহাসে রামায়ণের উর্মিলা https://ekolkata24.com/offbeat-news/lakshmi-sehgal-urmila-of-ramayana-in-the-history-of-independence Sun, 01 Aug 2021 07:15:43 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=1653 অনুভব খাসনবীশ, কলকাতা: নেতাজী সুভাষ বসুর ডাকে লক্ষ্মী সেহগাল আজাদ হিন্দ ফৌজের নারী ব্রিগেড “ঝাঁসীর রানী”র দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দেশ থেকে বিতাড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছেন। উদ্বাস্তু শিবির পরিচালনাসহ কলকাতায় বাংলাদেশী শরণার্থীদের চিকিৎসা, সবেতেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যদিও তাঁকে স্বচ্ছন্দে তুলনা করা যায় রামায়ণের উর্মিলার সঙ্গে।

উর্মিলা! রামের অনুজ লক্ষ্মণের স্ত্রী। রাম-সীতা-লক্ষ্মণের বনবাসকালে অযোধ্যায় একাকী কাটিয়েছেন৷ অপেক্ষা করেছেন তাদের জন্য। সরাসরি যুদ্ধে অংশ না-নিলেও মহাকাব্যে তাঁর ভূমিকাও অপরিসীম। অথচ সীতাকে নিয়ে রামায়ণে যে বন্দনা, তার সিকিভাগও জোটেনি তাঁর কপালে। গোটা রামায়ণেই তিনি উপেক্ষিতা। ভারতের স্বাধীনতা ইতিহাসে এই মহীয়সী নারীও অনেকটা সেরকম। যদিও উর্মিলার মত তিনি নতুন ভোরের অপেক্ষাই শুধু করেননি, নেতৃত্ব দিয়েছেন রাতের যুদ্ধেও।

লক্ষ্মী সেহগালের জন্ম ২৪ অক্টোবর, ১৯১৪ সালে মাদ্রাজে (বর্তমান চেন্নাই)। ১৯৩৮ সালে মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। এক বছর পর গাইনোকোলজি এবং অবস্টেট্রিক্স বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী হন। চেন্নাইয়ের ত্রিপলিক্যান এলাকার সরকারি কস্তুর্বা গান্ধী হাসপাতালে ডাক্তার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সাবালিকা অবস্থা থেকেই সামনে থেকে দেখেছেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন। বিশেষত প্রাক-স্বাধীনতা আন্দোলন সেই সময় সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। ক্রমশ বাড়ছে ইংরেজদের অত্যাচার! পাল্লা দিয়ে শহিদ হচ্ছেন দেশের একের পর এক সন্তান। ফলে, দেশসেবার বীজ তাঁর মনে বপণ হয়েছিল প্রায় শিশুকালেই। যদিও তা বৃক্ষের আকার নিল ভারতবর্ষের মাটিতে নয়, সিঙ্গাপুরে।

Lakshmi Sehgal

১৯৪০ সালে সিঙ্গাপুরে পাড়ি দেন লক্ষ্মী সেহগাল। সেখানেই সাক্ষাৎ হয় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু’র ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে। সেখানে ভারতবর্ষ থেকে আসা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্যে একটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। শুরু হয় ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ। এর তিনবছর পর ১৯৪৩ সালে সিঙ্গাপুর যান স্বয়ং নেতাজি। প্রস্তুতি শুরু করেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম অভ্যুত্থানের। শুধু পুরুষরা নন, যাতে অংশ নিয়েছিল বহু মহিলারাও।

এই প্রস্তুতিকালে নারী রেজিমেন্ট গঠনের কথা বলেন সুভাষচন্দ্র বসু। লক্ষ্মী সেহগাল বিষয়টি শোনেন৷ রেজিমেন্টের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসেন৷ পরিচিত হন ‘ক্যাপ্টেন’ লক্ষ্মী সেহগাল পরিচয়ে। পরে তাঁর এবং নেতাজির এই নারী বাহিনীই পরিচিতি পায় বিখ্যাত ঝাঁসির রাণী বাহিনী নামে। আজাদ হিন্দ ফৌজ জাপান সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বার্মা অভিমুখে ডিসেম্বর, ১৯৪৪ সালে রওনা দেয়। কিন্তু মার্চ, ১৯৪৫ সালে প্রবল যুদ্ধে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এর ফলে আইএনএ নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেয় যে, তাদের বাহিনী ইম্ফলে প্রবেশ করবে। ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সেহগাল, ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন এবং পরবর্তী একবছর বার্মায় কারাগারে আটক ছিলেন। দিল্লিতে আইএনএ সদস্যদের বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন তিনি অবিভক্ত ভারতে ফিরে আসেন।

১৯৪৭ সালে তাঁর স্বপ্ন সফল হয়৷ স্বাধীন হয় ভারতবর্ষ। সেই বছরেই লাহোরে কর্ণেল প্রেম সেহগালের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। সেহগাল দম্পতির দু’টি কন্যা সন্তান – সুভাষিণী আলী এবং অনিশা পুরী। বিয়ের পরেই সেবার কাজ থামাননি তিনি৷ কানপুরে গড়ে তোলেন দাতব্য চিকিৎসালয়।

১৯৭১ সালে যোগ সিপিআই (এম)-এ, রাজ্যসভায় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। তার দশবছর পর সিপিআই (এম)-এর অখিল ভারতীয় জনবাদী মহিলা সমিতির নারী শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হন। ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বরে ভূপালের গ্যাস দূর্ঘটনায় চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দেন। সেই বছরেই শিখবিরোধী দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে জনসংযোগ করেন।

২০০২ সালে চারটি বামপন্থী দল – বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দল এবং অল ইন্ডিয়া ফরোয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, সিপিআই (এম.এল) লক্ষ্মী সেহগালকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনিত করেন৷ যদিও তিনি এপিজে আব্দুল কালামের কাছে পরাজিত হন। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সেহগাল হৃদযন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হন। চারদিন হাসপাতালে কাটানোর পর প্রয়াণ ঘটে এই মহীয়সী নারীর।

স্বাধীনতার আন্দোলনে শহিদ হওয়া বিভিন্ন বিপ্লবীর কথা আমরা ইতিহাসে পড়ি৷ তাদের বীরগাঁথা স্মরণও করি বিশেষ বিশেষ দিনে। কিন্তু, এক বীরাঙ্গনাকে সামনে পেয়েও সম্মান জানাতে ব্যর্থ দেশ। অনেকের মতে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশ নিয়েই রাজনৈতিক বিভিন্ন নেতার বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। ফলে সীতা নন, স্বাধীনতার ইতিহাসে উর্মিলা হয়েই রয়ে গিয়েছেন তিনি।

]]>