language movement – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Mon, 01 Nov 2021 18:41:27 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png language movement – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 বাঙালি ভুলে যায় হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভাষার লড়াই https://ekolkata24.com/offbeat-news/history-of-the-purulia-language-movement Mon, 01 Nov 2021 05:43:19 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=9893 Special Correspondent, Kolkata: পয়লা নভেম্বর। বাঙালি, ভারতবাসী কেউ মনে রাখেনি মাতৃভাষার দাবীতে মানভূঁইয়া গণদেবতার লড়াই। এখন কলকাতায় হিন্দিভাষীদের আগ্রাসন নিয়ে বিরাট হইচই করে এক বাংলা ভাষা আন্দোলনকারীরা দল। তাদেরকেও দেখা যায় না এই পয়লা নিয়ে কোনও কথা বলতে। অথচ বাংলায় হিন্দি আগ্রাসন নিয়েই ছিল সেই আন্দোলন। পরিচিতি মানভূম ভাষা আন্দোলন নামে।

ঘটনা স্বাধীনতার ঠিক পরেরই। ১৯৪৮ সালের।আগ্রাসী হিন্দিভাষীরা তৎকালীন মানভূমের বাঙালিদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল হিন্দি বোঝা। অহল্যার ভূমিপুত্ররা গর্জে উঠল সেদিন। ‘মুক্তি’ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল সেই হিন্দি মুক্তির প্রতিবেদন। বাংলার রাজনীতিতেও তার ছাপ পড়েছিল। জেলা কংগ্রেস ভেঙে গঠিত হয় লোকসেবক সঙ্ঘ। দলে ভারী হয়ে ওঠা বিহারের আগ্রাসীরা চাণ্ডিল, ঝালদায় লুঠ করতে শুরু করে লুঠতরাজ।

১৯৪৯ থেকে ১৯৫১ কার্যত সত্যাগ্রহ আন্দোলনে মুখরিত চারদিক। সাংসদ ভজহরি মাহাতো গান বেঁধেছিলেন, ‘অ বিহারী ভাই, তরা রাইখতে লারবি ডাং দেখাঁই’। ১৯৫৪ সালের ৯ জানুয়ারী থেকে ৮ ফেব্রুয়ারী চলল টুসু সত্যাগ্রহ। স্বাভাবিক নিয়মেই টুসু সত্যাগ্রহীদের উপর নেমে এল রাষ্ট্রীয় অত্যাচার। ৭৩ বছর বয়সী, অসুস্থ নেতা অতুল চন্দ্র ঘোষকে বন্দী করে, খোলা ট্রেনে চাপিয়ে ১৩৫ মাইল দুরে হাজারিবাগ জেলে পাঠানো হয়েছিল। সাংসদ ভজহরি মাহাতোকে হাত কড়া পরিয়ে, কোমরে দড়ি বেঁধে কোর্টে পেশ করা হয়েছিল। বিচারে বিধায়ক সমরেন্দ্র ওঝার ২ বছর, লাবণ্য প্রভা দেবীর এক দফা কারাবাস হয়। বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান রাঘব চর্মকার। বাবুলাল মাহাতো নামের এক জন্মান্ধ বালকেরও সাজা হয়! বান্দোয়ানের মধুপর গ্রামের কুশধ্বজ মাহাতো’র সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। বন্দি করা হয় তাঁর শিশু পুত্রকে। এদের দোষ ছিল এরা বাংলার মাটির ভাষার জন্য দাবী জানিয়েছিলেন।

মানবাজার থানার পিটিদিরি গ্রামে মহিলা সত্যাগ্রহীদের উপর হয়েছিল নগ্ন আক্রমন। বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল পুরুলিয়া। লোকসেবক সাংসদ চৈতন মাঝি জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে প্রতিবাদ জানালেন লোকসভায়। সুচেতা কৃপালনী, নির্মল চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা) প্রমুখ সমর্থন জানান এই গণ আন্দোলনকে।
৭ মে ১৯৫৬, মহাকরণ অবরোধ করে গ্রেফতার বরণ করেন ৯৬৫ জন ভাষা সেনানী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট হল থেকে বিজ্ঞাণী মেঘনাদ সাহা, ভাষাচার্য সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় বিহার সরকারের দমননীতির তীব্র সমালোচনা করে ভাষা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।

ভাষার দাবীতে এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে, ১৯৫৬ সালের পয়লা নভেম্বর গঠিত হয় আজকের পুরুলিয়া জেলা। কলকাতাকে ঘিরে অনেক রাজনৈতিক আন্দোলন হলেও, কোনা ভাষা আন্দোলনের নজির নেই। সেই অপরাধ বোধ হোক বা পিছিয়ে পড়ার প্রতি অবজ্ঞাই হোক, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে কলকাতার বুদ্ধিজীবিরা মানভূমের ভাষা আন্দোলন নিয়ে আশ্চর্য রকম উদাসীন। শিক্ষিত পুরুলিয়ানরা আরো বেশি উন্নাসিক! জীবণ সায়াহ্ণে উপস্থিত ভাষা সৈনিকদের গলায় এখন সেই আক্ষেপ ঝরে পড়ে। এঁদের নামে কোনও ‘একুশে পদক’ নেই!

ফি বছর ক্যালেন্ডারের নিয়মেই ‘২১শে ফেব্রুয়ারী’ আসে, আর বিস্মৃতির সোপান বেয়ে মানভুমের ভাষা সংগ্রামীরা এক ধাপ করে নীচে নেমে যায়। প্রশাসনের অবহেলা আর জেলাবাসীর অজ্ঞতায় চাপা পড়ে যায়, হিন্দী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখা মাটির মানুষের ১৯৩৫ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত দীর্ঘ লড়াই এর কাহিনী। আজ আরও এক অমর একুশে। আরও একবার মৃতের দলে মানভূম ভাষা আন্দোলন।

]]>