linguist  Suniti kumar Chatterjee – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Fri, 26 Nov 2021 11:40:50 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png linguist  Suniti kumar Chatterjee – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 Suniti kumar Chatterjee: ভাষা নিয়ে খেলতেন রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বকবির ভাষাচার্য ছিলেন এই বাঙালি https://ekolkata24.com/offbeat-news/special-story-about-linguist-suniti-kumar-chatterjee Fri, 26 Nov 2021 11:40:50 +0000 https://ekolkata24.com/?p=12495 বিশেষ প্রতিবেদন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ভাষাচার্য উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। কবিকে যেমন শুধু তার জীবন-চরিতে পাওয়া যায় না, তেমনই বিশ্ববিশ্রুত ‘ওরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অব বেঙ্গলি ল্যাংগোয়েজ’ বা ওডিবিএল-এর সীমার মধ্যে আটকা পড়ে থাকার লোক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (Suniti kumar Chatterjee) নন। আসলে তাঁর প্রধান আগ্রহের বিষয় ছিল মানবসভ্যতার আবহমান বৈচিত্র। হিউম্যানিটিজ-এর সামগ্রিক চর্চাতেই তিনি পেয়েছিলেন বেঁচে থাকার জ্বালানি।

তাঁর অভিযানের রাজপথ ছিল, ভাষা। মতি শীলের অবৈতনিক ইস্কুল থেকে ভারতের জাতীয় অধ্যাপক— এই আশ্চর্য উড়ান কিন্তু কোনও দিনই ‘বিদ্যা দদাতি বিনয়ং’ প্রবাদকে চ্যালেঞ্জ জানায়নি। তাঁর প্রতিভার প্রশংসা করলে তিনি অবলীলায় বলতেন, ইউরোপের যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডোর ঝাঁট দিলে নাকি দশ-বিশটা সুনীতি চাটুজ্যে পাওয়া যাবে। আবার ব্যক্তিগত লাইব্রেরির বই কাউকে দেখাতে হলে তাঁকে উৎসর্গ করা বইগুলো লুকিয়ে রাখতেন, পাছে সেটা আত্মপ্রচার হয়ে দাঁড়ায়। কোনও মানুষের, এমনকী ছাত্রছাত্রীদেরও প্রণাম নিতেন না, উলটে তাদের ‘আপনি’ সম্বোধন করতেন।

ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কোনও অজানা বিষয় জানলে অন্য অধ্যাপকদের সামনেই সেই স্বীকৃতি দিতেন। ছাত্রী হিসেবে সুকুমারী ভট্টাচার্য তো এর জন্য লজ্জিত বোধ করার কথাই স্বীকার করেছেন। জ্ঞানচর্চার চূড়ায় পৌঁছে যাওয়ার পরেও কোনও ভাল বক্তৃতা শুনলে বলতেন, ‘এ সব শুনলে বুঝি কত সামান্য জানি, কত জানবার ছিল।’ বার বার বলতেন রবীন্দ্রনাথের কথা। রবীন্দ্রনাথ তাঁর কাছে শুধু প্রিয় কবি নন, ছিলেন আদর্শ মানুষ। রবীন্দ্রনাথের নায়ক অমিত সুনীতিবাবুর বই নিয়ে শিলং-এ গিয়েছিল। সুনীতিবাবুর মনে হত রবীন্দ্রনাথ যেন এ ভাবেই তাঁকে অমরত্ব দিয়ে গেলেন।

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সুনীতিকুমার হাওড়া জেলার শিবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হরিদাস চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ইংরেজদের সদাগরি অফিসের কেরানি। তিনি মতিলাল শীল ফ্রি স্কুল থেকে ১৯০৭ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করে কুড়ি টাকা বৃত্তি লাভ করেন। স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে ১৯০৯ সালে ৩য় স্থান অধিকার করে এফ.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। অতঃপর প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে ১৯১১ সালে ইংরেজিতে সম্মানসহ বি.এ শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করেন। ১৯১৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম.এ শ্রেণীতে ১ম স্থান অর্জন করেন। ১৯১৮ সালে সংস্কৃতের শেষ পরীক্ষায় পাস করেন এবং প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি এবং জুবিলি গবেষণা পুরস্কার অর্জন করেন।

কৃতিত্বের সাথে এম.এ ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি কলকাতা বিদ্যাসাগর কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯১৪ – ১৯১৯ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯১৯ সালে তিনি ভারত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় লন্ডনে যান এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধ্বনিবিজ্ঞানে ডিপ্লোমা লাভ করেন। ১৯২১ সালে ঐ একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁর অভিসন্দর্ভের বিষয়বস্তু ছিল ‘ইন্দো-আরিয়ান ফিললিজ’।

লন্ডনে থাকাকালীন সময়ে তিনি ধ্বনিতত্ত্ব ও ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাতত্ত্ব ছাড়াও প্রাকৃত ভাষা, ফার্সি ভাষা, প্রাচীন আইরিশ ভাষা, পুরনো ইংরেজি ও গোথিক ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। অতঃপর লন্ডন থেকে তিনি প্যারিসে গমন করেন। সেখানে তিনি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে স্লাভ ও ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষাতত্ত্ব, প্রাচীন সগডিয়ান ও প্রাচীন খোতানী ভাষা, গ্রীক ও লাতিন ভাষার ইতিহাস এবং অস্ট্রো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়াটিক ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৯২২ সালে দেশে ফিরে আসার পর স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কর্তৃক ভারতীয় ভাষাতত্ত্বের ‘খয়রা’ অধ্যাপক হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুণরায় কর্মজীবন শুরু করেন। এখানে দীর্ঘ ৩০ বছর কাজ করার পর ১৯৫২ সালে এমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে পুণঃনিযুক্ত হন।

অধ্যাপক তারাপুরওয়ালা’র কাছে আবেস্তা অধ্যয়ন করেন। বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে ৩ খণ্ডের দি অরিজিন এন্ড ডেভেলপম্যান্ট অব দ্য বেঙ্গলী ল্যাঙ্গুয়েজ গ্রন্থখানি রচনা করে অসাধারণ বিদ্যাবত্তার পরিচয় প্রদান করেন। অন্যান্য রচনাবলী হল – বেঙ্গলী ফোনেটিক রিডার, কিরাত জনকৃতি, ভারত-সংস্কৃতি, বাঙ্গালা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা, পশ্চিমের যাত্রী, ইউরোপ ভ্রমণ, জাতি সংস্কৃতি সাহিত্য, ভারতের ভাষা ও ভাষা সমস্যা, সংস্কৃতি কী, দ্বীপময় ভারত, রবীন্দ্র সঙ্গমে, শ্যামদেশ ইত্যাদি।

১৯২৭ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চারজন ভ্রমণসঙ্গীর একজন হয়ে সুনীতিকুমার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে যান। এই সময় তিনি ভ্রমণ করেন বালি, জাভা, কুয়ালালামপুর, মালাক্কা, পেনাং, সিয়াম ও সিঙ্গাপুর। “যাত্রী” গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ এই ভ্রমণের বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন। এসব দেশে তিনি রবীন্দ্রনাথের আদর্শ এবং ভারতীয় সংস্কৃতি ও শিল্প সম্বন্ধে বক্তৃতা প্রদান করেন।

]]>