puja – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Thu, 14 Oct 2021 08:08:51 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png puja – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 Kolkata Weather Update: পূজো কাটলেই ধেয়ে আসছে দুর্যোগ, জানাল আলিপুর https://ekolkata24.com/uncategorized/kolkata-weather-update-chances-of-heavy-rain-after-puja Thu, 14 Oct 2021 08:08:51 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=7601 নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: পুজোয় নয়, তারপরে দুর্যোগ নামতে পারে দক্ষিণবঙ্গে।এমনটাই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এমন পরিস্থিতি শুরু হবে রবিবার থেকে। ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টির সর্তকতা জারি করল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। শনিবার থেকে বাড়বে বৃষ্টি। রবিবার আরও বাড়বে রয়েছে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি। উপকূলের জেলায় বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়ছে।

এদিকে কলকাতার সংলগ্ন কিছু এলাকা ছাড়া বাকি অংশ থেকে বর্ষা কিন্তু নিয়ে নিয়েছে । এর কারণ কী? হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, পূর্ব-মধ্য আরব সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে তামিলনাড়ু উপকূলেও। আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে উত্তর আন্দামান সাগরে।

এই ঘূর্ণাবর্তটি পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন আন্দামান সাগর এলাকায় একটি নিম্নচাপ তৈরি করবে। নিম্নচাপ তৈরি হয়ে সেটি ২৪ ঘন্টার মধ্যে উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূলে অবস্থান করবে।নিম্নচাপটি পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে দক্ষিণ ওড়িশা ও উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে। এর সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইবে ৫০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার গতিবেগ পর্যন্ত।

এর প্রভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টি হবে উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূলে। হালকা থেকে মাঝারি বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি বাংলাতেও। আগামী কয়েকদিন মধ্য মহারাষ্ট্র কঙ্কন ও গোয়া কেরালা তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস।শনিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ ও ব্যাপকতা বাড়বে। রবি ও সোমবারে ঝড় ও বৃষ্টির সর্তকতা দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জেলায়।

]]>
Durga Puja 2021: পুজোর মাত্র চার পাঁচদিনের আগে বেলুড়ে দুর্গোৎসবের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বামীজী https://ekolkata24.com/offbeat-news/durga-puja-2021-thats-how-puja-started-in-belur-math-by-swamiji Wed, 13 Oct 2021 06:38:27 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=7489 বিশেষ প্রতিবেদন: ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠে প্রথম দুর্গাপুজো করলেন। আর সেই থেকেই বেলুড় মঠে দুর্গাপুজোর প্রচলন হল। কিন্তু কীভাবে শুরু হয়েছিল সেই পুজো?

বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই স্বামী বিবেকানন্দের মনে ইচ্ছে ছিল যে তিনি বেলুড়মঠে দুর্গাপুজো করবেন। কিন্তু নানা কারণে তা আর হয়ে উঠছিল না। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে বেলুড়মঠ প্রতিষ্ঠার পর স্বামীজী প্রায়ই তাঁর প্রিয় বেলগাছতলায় বসে সম্মুখে প্রবাহিতা গঙ্গার দিকে তাকিয়ে আপন মনে গাইতেন, “বিল্ববৃক্ষমুলে পাতিয়া বোধন/গণেশের কল্যাণে গৌরীর আগমন।/ঘরে আনব চণ্ডী, কর্ণে শুনব চণ্ডী,/আসবে কত দণ্ডী, জটাজুটধারী।…”

১৯০১ সালের মে-জুন মাস। স্বামীজির অন্যতম গৃহী শিষ্য শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তী বেলুড়মঠে এলে বিবেকানন্দ তাঁকে ডেকে রঘুনন্দনের ‘অষ্টবিংশতি তত্ত্ব’ বইটি কিনে আনার জন্য বললেন। শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তী কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি রঘুনন্দনের বইটি নিয়ে কি করবেন?’ স্বামীজি বলেছিলেন, ‘এবার মঠে দুর্গোৎসব করবার ইচ্ছে হচ্ছে। যদি খরচ সঙ্কুলান হয় ত মহামায়ার পুজো করব। তাই দুর্গোৎসব বিধি পড়বার ইচ্ছা হয়েছে। তুই আগামী রবিবার যখন আসবি তখন ঐ পুস্তকখানি সংগ্রহ করে নিয়ে আসবি।’ যথাসময়েই শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তী বইখানি বিবেকানন্দকে এনে দিয়েছিলেন। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে বইটি পড়া শেষ করে বিবেকানন্দ তাঁর স্নেহভাজন শিষ্যের সঙ্গে আবার দেখা হতেই জানিয়েছিলেন, ‘রঘুনন্দনের স্মৃতি বইখানি সব পড়ে ফেলেছি, যদি পারি তো এবার মার পূজা করব।’

এরপর দীর্ঘদিন কেটে যায়। পুজোর সময়ও এসে যায়। কিন্তু পুজোর এক সপ্তাহ আগেও এ নিয়ে কোনও কথাবার্তা বা উদ্যোগ দেখা গেল না। হয়ত এ বারও বিবেকানন্দের ইচ্ছাটির পূরণ হল না। কিন্তু হঠাৎই একদিন, তখন পুজোর আর মাত্র চার-পাঁচ দিন বাকি, স্বামীজি কলকাতা থেকে নৌকা করে বেলুড়মঠে ফিরেই ‘রাজা কোথায়? রাজা কোথায়?’ বলে স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের খোঁজ করতে লাগলেন। (স্বামী ব্রহ্মানন্দকে স্বামী বিবেকানন্দ রাজা বলে সম্বোধন করতেন)। স্বামী ব্রহ্মানন্দকে দেখতে পেয়েই বিবেকানন্দ বলে উঠলেন, ‘এবার মঠে প্রতিমা এনে দুর্গাপূজা করতে হবে, তুমি সব আয়োজন করে ফেলো।’ সবে আর মাত্র চার-পাঁচটা দিন বাকি রয়েছে। এত কম সময়ের মধ্যে সব আয়োজন কীভাবে করবেন, প্রতিমাই বা পাওয়া যাবে কি না, এই সব ভেবে ব্রহ্মানন্দজী স্বামীজির কাছে দুটো দিন সময় চাইলেন। স্বামীজি বললেন, ‘আমি ভাব-চক্ষে দেখেছি এবার মঠে দুর্গোৎসব হচ্ছে এবং প্রতিমায় মার পূজা হচ্ছে।’

তখন স্বামী ব্রহ্মানন্দজীও তাঁর এক অদ্ভুত দর্শনের কথা স্বামী বিবেকানন্দকে জানালেন। দিন চারেক আগের ঘটনা। ব্রহ্মানন্দজী বেলুড়মঠের গঙ্গাতীরে বসেছিলেন। হঠাৎই দেখলেন দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে মা দুর্গা গঙ্গা পার হয়ে মঠের বেলগাছতলায় এসে উঠলেন।

স্বামীজি আর ব্রহ্মানন্দ মহারাজের মধ্যেকার এই সব কথাবার্তা বেলুড়মঠের অন্যান্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পরতেই বেশ হই হই পড়ে গেল। ব্রহ্মানন্দ মহারাজ ব্রহ্মাচারী কৃষ্ণলালকে কলকাতার কুমারটুলিতে পাঠালেন কোনও প্রতিমা পাওয়া যাবে কি না দেখে আসতে। আর কী আশ্চর্য! ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলাল কুমারটুলিতে গিয়ে দেখলেন যে মাত্র একটিই সুন্দর প্রতিমা সেখানে অবশিষ্ট রয়েছে। যিনি বা যাঁরা সেই প্রতিমাটি তৈরি করতে দিয়েছিলেন, সে দিনও পর্যন্ত তাঁরা সেটি নিতে আসেননি। ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলাল শিল্পীকে ওই প্রতিমাটি পাওয়া যাবে কি না জিজ্ঞাসা করতে শিল্পী একটি দিন দেখে নেওয়ার সময় চাইলেন। বেলুড়মঠে ফিরে এসে এই খবর স্বামী বিবেকানন্দকে জানাতেই তিনি ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলালকে বললেন, ‘যেমন করেই হোক তুমি প্রতিমাখানি নিয়ে আসবে।’

পরের দিন স্বামী বিবেকানন্দ স্বয়ং ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলাল ও স্বামী প্রেমানন্দকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীর দেবীর কাছে গেলেন বেলুড়মঠে দুর্গাপুজো করার অনুমতি চাইতে। শ্রীশ্রীমা সানন্দে অনুমতি দিলেন, শুধু পশুবলি দিতে নিষেধ করলেন। ইতিমধ্যে স্বামী প্রেমানন্দ কুমারটুলিতে সেই প্রতিমা শিল্পীর কাছে গিয়ে দেখলেন প্রতিমাটি সে দিনও কেউ নিতে আসেনি। তিনি প্রতিমা শিল্পীর সঙ্গে সমস্ত কথাবার্তা ঠিক করে প্রতিমাটি বায়না করে এলেন। অন্যদিকে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজ পুজোর সমস্ত আয়োজন করে ফেললেন।

সেবার দুর্গাপুজোর তিথি পড়েছিল কার্তিক মাসে। ১লা কার্তিক, শুক্রবার (১৮ই অক্টোবর) ছিল ষষ্ঠী। তার আগের দিন অর্থাৎ পঞ্চমীর দিন ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলাল, স্বামী নির্ভয়ানন্দ এবং আরও কয়েক জন সন্ন্যাসী ও ব্রহ্মচারী মিলে কুমারটুলি থেকে নৌকা করে দুর্গা প্রতিমাখানি মঠে নিয়ে এলেন। মঠের উত্তর দিকের জমিতে দুর্গাপুজোর এক বিরাট মণ্ডপ বানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রতিমাখানি সেখানে না নিয়ে গিয়ে ঠাকুর ঘরের নীচতলার দালানে রাখা হল। এর কিছুক্ষণ বাদেই আকাশ ভেঙে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি শুরু হল। তবে তাতে প্রতিমা বা মণ্ডপের কোনও ক্ষতি হয়নি।

ষষ্ঠীর দিন সকালে বাগবাজার থেকে শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণী তাঁর অন্যান্য ভক্তদের নিয়ে বেলুড়মঠে চলে এলেন। তাঁর থাকবার ব্যবস্থা হয়েছিল নীলাম্বর মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। বলা হয় যে সন্ন্যাসীদের কোনও পুজো বা বৈদিক ক্রিয়াকাণ্ডে অধিকার নেই। কেননা তাঁরা সর্বত্যাগী। তাই শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীর নামেই পুজোর সংকল্প করা হয়েছিল। আজও বেলুড়মঠের পুজোয় শ্রীশ্রীমায়ের নামেই সংকল্পের প্রথা অব্যাহত রয়েছে। স্বামীজির প্রিয় বেলগাছতলাতে বোধন অনুষ্ঠান হল। এরপর ঠাকুর দালান থেকে প্রতিমাকে মণ্ডপে এনে স্থাপন করা হল। যেন মহোৎসব শুরু হল। অধিবাস, ষষ্ঠীর পুজো ইত্যাদি। শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীর অনুমতি নিয়ে পুজো করতে বসলেন ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলাল। সঙ্গে তন্ত্রধারকরূপে ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র ভট্টাচার্য।

২রা কার্তিক (১৯ অক্টোবর) শনিবার ছিল সপ্তমীপুজো। স্বামী বিবেকানন্দ ওই দিন যেন ছিলেন পূর্ণ আনন্দে উজ্জীবিত। কখনও এ দিক ও দিক পায়চারি করে সবকিছু তদারকি করছেন, কখনও বা মণ্ডপে বসে সকলের সঙ্গে হাসি গল্পে মেতেছেন। কিন্তু ৩ কার্তিক (২০ অক্টোবর) রবিবার মহাষ্টমীর দিন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়লেন। সেদিন আর মণ্ডপেই আসতে পারলেন না। দোতলায় নিজের ঘরে ভীষণ জ্বরে শস্যাশায়ী থাকলেন। তবে ৪ঠা কার্তিক (২১শে অক্টোবর) সোমবার ভোরবেলা সন্ধিপুজোর সময় স্বামীজী মণ্ডপে এসে বসলেন। শ্রীশ্রীদুর্গামায়ের পাদপদ্মে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করলেন।

এরপর কয়েকজন কুমারীর পুজো হল, স্বামীজীর অনুরোধে গৌরী মা (শ্রী রামকৃষ্ণদেবের মন্ত্র শিষ্যা ও একমাএ সন্ন্যাসিনী শিষ্যা, প্রথম নারী মঠ শ্রী শ্রী সারদেশ্বরী আশ্রমের প্রতিষ্ঠাএী ) কুমারী পূজার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। পাদ্য- অর্ঘ- শঙ্খবলয় – বস্ত্রাদি দিয়ে স্বামীজী নয়জন কুমারীকে পূজা করেন । স্বামীজী সেই সকল কুমারীদিগকে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করেন। ভাবাবস্থায় একজন কুমারীকে ( শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীর মন্ত্র শিষ্যা ও একমাএ সন্ন্যাসিনী শিষ্যা, সারদেশ্বরী আশ্রমের দ্বিতীয় অধ্যক্ষা দূর্গা পুরী দেবী ) কপালে রক্তচন্দন পড়াবার সময় স্বামীজী শিহরিয়ে উঠে বলেছিলেন- “আহা দেবীর তৃতীয় নয়নে আঘাত লাগে নি তো।” উক্ত কুমারীদের মধ্যে রামলাল দাদার কনিষ্ঠা কন্যা রাধারানীও অন্যতমা ছিলনে । শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং এই দিন রামলাল দাদার জ্যেষ্ঠা কন্যা কৃষ্ণময়ীদিদিকেএবং আরও কয়েকজন সধবাকেও ‘এয়োরানী পূজা’ করেন। সে এক অপূর্ব দৃশ্য। ওই দিনই মহানবমীর সন্ধ্যায় আরতির পর স্বামীজী একের পর এক ভজন গাইলেন।

৫ই কার্তিক (২২শে অক্টোবর) মঙ্গলবার ছিল বিজয়া দশমী। পুজোর অন্যান্য দিনগুলির মতো বিকেল বেলা প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতেও অসংখ্য মানুষের ভিড় হয়েছিল। শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণী দুর্গাপ্রতিমা বরণ করলেন, বরণের সময় শ্রীশ্রীমায়ের দুচোখ বেয়ে জলের ধারা প্রবাহিত হচ্ছিল। তিনি বরণ শেষে ঘরের মেয়ে উমা কে চিবুক ধরে চুমো খেয়ে বিদায় জানলেন এবং পরের বছর পুনরায় আসার কথাও তাঁর কানে কানে বলে দিলেন। এরপর ঢাক-ঢোলের বাজনার সঙ্গে সঙ্গে ভক্ত, ব্রহ্মচারী, সন্ন্যাসীগণ সবাই মিলে “মহামাঈ কী জয়”, “দুর্গা মাঈ কী জয়” ধ্বনি দিতে দিতে প্রতিমাকে নৌকায় ওঠালেন। কেউ কেউ তখন বাজানার তালে তালে নাচছিলেন। এমন সময় স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজও এসে নৌকায় উঠলেন। তারপর প্রতিমার সামনে ভাবে বিভোর হয়ে নৃত্য করতে লাগলেন। অসুস্থতার জন্য স্বামীজী দশমীর দিনও দোতলার ঘর থেকে নিচে নামেননি। কিন্তু স্বামী ব্রহ্মানন্দ নৌকায় নাচছেন শুনে আর থাকতে পারেননি।

গঙ্গার ঢেউয়ে ঢেউয়ে ঢাক,ঢোল, কাঁশির তালে তালে নৌকা এগিয়ে চলেছে প্রতিমা নিরঞ্জনের। মাঝে মাঝে সমবেত ধ্বনি উঠছে “দুর্গা মাঈ কী জয়” আর এসবের মাঝেই তুমুল ভাবে বিভোর হয়ে স্বামী ব্রহ্মানন্দজী নেচে চলেছেন। দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাসি হাসি মুখে স্বামীজী এই দৃশ্য দেখতে লাগলেন। এইভাবেই বেলুড়মঠের প্রথম দুর্গোৎসবের সমাপন ঘটল। আজ স্বামীজির করা সেই দুর্গোৎসব এক মহীরুহে রূপান্তরিত হয়েছে। সারা পৃথিবী থেকে ভক্তেরা আসেন এই মহোৎসবে সামিল হতে। স্বামীজি বিশ্বকে জ্যান্ত দুর্গার পূজা দেখাতে চেয়েছিলেন তা তিনি করে দেখিয়েও ছিলেন। পরবর্তী কালে ব্রহ্মানন্দজী বলেছিলেন এই পূজা আমাদের শ্রীশ্রীমাতাঠাকুরাণীরই পূজা মৃণ্ময়ী প্রতিমায়। তিনি এবার সব অস্ত্র রেখে দুইহাত কোলে রেখে এসেছেন “অভয়া” রূপে। তিনিই আমাদের দুর্গোৎসবের প্রাণপ্রতিমা। 

তথ্যসূত্র : সারদা রামকৃষ্ণ , মঠে স্বামীজী দূর্গা পূজা।

]]>
এই বাড়িতে দুর্গা পূজিতা হন সর্বমঙ্গলা রূপে https://ekolkata24.com/uncategorized/howrah-durga-here-gets-puja-as-howrah-sarvamangala-devi Thu, 07 Oct 2021 06:00:31 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=6827 বিশেষ প্রতিবেদন: হাওড়া জেলার প্রাচীন বনেদি পরিবারের মধ্যে অন্যতম এই দুর্গাপুজো। তবে মা এখানে পূজিত হন সর্বমঙ্গলা রূপে। এখানকার পূজা জমিদার বাড়ির পূজা না হলেও পূজার সাথে যুক্ত আছে মায়ের এক আধ্যাত্মিক ও অলৌকিক কাহিনী।

স্বর্গীয় ধীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এই পূজার প্রথম সূচনা হয় হাওড়া জেলার ঝিকিরা গ্রামে। আনুমানিক ৮০ বছর আগে ১৯৪১ সালে এই পূজার সূচনা হয়।তবে সময়ের পরিবর্তনে পরিবারের সকল সদস্যরা বর্তমানে হাওড়ার বকুলতলা লেনে রামরাজতলা এলাকায় চলে আসে। ২০০৫ সালে দুর্গা পুজো শুরু হয় ঘট ও মা এর পট চিত্রে ও নবপত্রিকা তে। ২০০৯ সালে মৃন্ময়ীরূপে মা এর আগমন চক্রবর্তী বাড়িতে তারপর থেকে বর্তমান বাড়িতে পুজো হয়ে আসছে।

এবার একটু বলা যাক বাড়ির পূজা সূচনার বিষয়টি।পূজার সূচনার বিষয়টি বলতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় ৬০ বছর পিছনে।পুরাকালে মা কালীর স্বপ্নাদেশ এই বাড়িতে স্থাপন হয় বুড়িমার ও মা মঙ্গলা কালীর মন্দির। মায়ের স্বপ্নাদেশে এখানে দুর্গার পূজা শুরু হয়। প্রথমেই বাড়িতে পটে পুজা হত। তবে পরবর্তীতে মা মঙ্গলার নির্দেশে পরবর্তীতে মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি পূজা শুরু হয়।পূর্বে নিজ গৃহেই প্রতিমা তৈরি হতো তবে কর্মব্যস্ততায় জীবনের ফলে এখন প্রতিমা কুমোরটুলি থেকে আনা হয়। রথের পরে যে প্রথম শনিবার আসে সেই দিন মূর্তির মূল্য পূজার মধ্য দিয়ে মায়ের পূজার সূচনা হয়। তারপর মায়ের মূর্তি তৈরি শুরু হয় বর্তমানে কুমারটুলির মহিলা শিল্পী কাকলি পালের হাতে।

Howrah sarvamangala devi

এবার বলা যাক বাড়ির মূল পূজা সম্পর্কে,বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী মহালয়ার আগের দিন অর্থাৎ মাতৃপক্ষ শুরুর আগের দিন কুমোর শালা থেকে বাড়ির গর্ভগৃহে ( গৃহমন্দিরে ) মূর্তি আনায়ন করা হলেও দেবীর বোধন হওয়ায় মহাষষ্ঠীতে। বাড়ি ব্রাহ্মণ বংশ জাত হ‌ওয়ার কারণে পরিবারের সদস্যরাই এই পূজার মূল পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করে আসেন। আর পাঁচ দিন ধরে মায়ের বিশেষ পূজা চলে সম্পূর্ণ শাক্ত মতে। বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী এখানে নবপত্রিকা স্নান বাড়ির মধ্যেই সম্পন্ন হয়। সপ্তমীতে দেবীকে দেওয়া হয় অন্নভোগ এবং সঙ্গে থাকে শুক্ত, ভাজা, আলু ভাজা ,আলুর দম, ডাল এবং বড়ির ঝাল তরকারি , পরমন্ন, চাটনি দই , মিষ্টি , পান যেটা এই বাড়ির বিশেষত্ব। এবং অষ্টমীতে থাকে লুচি ,আলুরদম, ফুলকপির ডালনা, সুজির পায়েস, চাটনি ও মিষ্টি এবং নবমীতে হয় পোলাও, আলুর দম ,পনিরের তরকারি, চাটনি, পরমান্ন এবং দশমীতে মায়ের কোন অন্নভোগ হয় না সেদিন দেওয়া হয় দোধিকর্মা ( দই , চিড়ে , মুড়কি মিষ্টি )। মা এর স্বপ্নাদেশে এই বাড়ির বিশেষত্ব ও মায়ের প্রধান ভোগ হল চিঁড়ে, মুড়কি যা অন্ন ভোগের আগে নিবেদন করা হয়। এই ভোগ মহা সপ্তমী অষ্টমী ও নবমীতে নিবেদন করা হয় ।

বৈদিক শাস্ত্র মতে দুর্গাপূজার বলি হিসাবে পাঁঠার কথা উল্লেখ থাকলেও এই বাড়িতে কোন দিনই বলি হয় না ,বলির বদলে দেওয়া হয় বিল্ব পত্রের মাল্য। বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী দশমীতে অপরাজিত পূজার পর ব্রাহ্মণ নবপত্রিকা ও মায়ের স্নান দর্পণ, একটি অস্ত্র ও বিল্লবাসিনি দুর্গা মাকে প্রতিষ্ঠিত জলাশয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়। তারপর হাওড়া ময়দান সংলগ্ন গঙ্গার ( রামকৃষ্ণপুর ) ঘাটে দেবীর মূর্তিমান প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বিসর্জনের পর গঙ্গার জল দেবী ঘটে ভোরে আনা হয় যা সারা বছর বড়ির গৃহ মন্দিরে মায়ের বেদীতে পূজা হয়। এইভাবে ধীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পরবর্তী প্রজন্ম এই বাড়ির পূজার ধারক ও বাহক হয়ে আসছেন।

তবে দূর্গা পূজা পাঁচ দিন ধরে চললেও এই বাড়িতে সারা বছরই উৎসব লেগে থাকে, প্রতি আমাবস্যায় গৃহ মন্দিরে চলে বিশেষ পূজা এবং ভোগ নিবেদন। বৈশাখী আমাবস্যা চলে মা মঙ্গলা কালীর প্রতিষ্ঠাতা পূজা এবং হাজির হয় অজস্র ভক্তণন। এই ভাবে বংশপরম্পরায় মায়ের বিভিন্ন রুপে পূজা হয়ে আসছে এই চক্রবর্তী বাড়িতে। প্রতিবছর মা এর আরাধনায় মেতে ওঠে গোটা পরিবার। এই পরিবারে মাতৃ আরাধনায় আন্তরিকতা ও ভক্তিভাবের কোনও অভাব থাকে না ।

]]>
সুন্দরী গরান রোপণের বদলে গ্রামবাসীদের পুজোর জামা উপহার ‘ম্যানগ্রোভ ম্যানে’র https://ekolkata24.com/offbeat-news/mangrove-man-will-gift-puja-sharee-and-shirts-to-villagers-who-fights-to-save-mangrove Tue, 05 Oct 2021 12:48:17 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=6666 বিশেষ প্রতিবেদন: তিনি বাংলার ম্যানগ্রোভ ম্যান (Mangrove man)। পরিবেশবিদরা বলছেন পরিবেশ বাঁচাতে ম্যানগ্রোভ রোপন করতে। একার চেষ্টায় তা করে যাচ্ছেন বছর বিয়াল্লিশের গোসাবার বাসিন্দা উমাশঙ্কর মন্ডল ওরফে ম্যানগ্রোভ ম্যান। এবার তিনি পুজোয় এক দারুণ উদ্যোগ নিয়েছেন। যে গ্রামবাসীরা ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে লড়াই করছেন তাঁদের পুজোর স্পেশ্যাল গিফট দেবেন তিনি।

অনেকটা ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব ‘, এমন শোনাল কী? উমাচরণ বাঁচার স্বাধীনতা দেবেন। তাঁর কথায়, ‘যারা সারাবছর সুন্দরবন বাঁচানোর লড়াই করেন, আপনার আমার অক্সিজেনের যোগান দেওয়ার কাজ করে থাকে, পূজোয় কিছু উপহার দেওয়ার চিন্তাভাবনা তাদের জন্য।’ ম্যানগ্রোভ ম্যান’ উমাশঙ্কর মণ্ডল মনে করেন, সুন্দরবনের স্বার্থে আরও বেশি করে ম্যানগ্রোভ চারা লাগাতে হবে। আর পরিচর্যাও করতে হবে। ম্যানগ্রোভ চারা লাগানো আর পরিচর্যার উৎসাহ দিতেই পুজোর আগে গ্রামবাসীদের নতুন পোশাক বিতরণের ভাবনা। ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে এই কাজের আর্থিক তহবিল গড়ার কাজ করছেন তিনি।

Mangrove man Umashankar mandal

তিনি বলেছেন, “বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা স্বত্বেও আমরা মেতে উঠব উৎসবের আনন্দে, সমস্ত ভয় ভীতি আতঙ্ক জয় করে। জীবনের, বেঁচে থাকার, ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে মানুষের সাথে নিজেকে এক করে জীবন উপভোগ করার নামই হলো উৎসব। সামনেই বাঙালির অন্যতম বড় উৎসব দুর্গাপূজা।

প্রান্তিক মানুষের কাছে উৎসব এখন বাড়তি বোঝা। তাই আমরা ঠিক করেছি সুন্দরবনের একেবারেই প্রান্তিক এলাকার ২ থেকে ১০ বছরের বাচ্চাদের হাতে নতুন জামা উপহার। যাতে তাঁরাও উৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়।পাশাপাশি বাঘের দ্বারা আক্রান্ত পরিবার ও একেবারেই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ৩৫০ জন মায়েদের একটি ছাপা শাড়ী দিয়ে সাহায্য করা। বিভিন্নভাবে বির্পযস্ত হয়ে যাওয়া মানসিক স্বাস্থ্যর কিছু উন্নতি ঘটানো। “

Mangrove man Umashankar mandal

একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আপনার নিজের পরিবারের পাশাপাশি বৃহৎ পরিবারের কথা ভেবে সাধ্যমত সামান্য সাহায্যের আবেদন নিয়ে হাত পেতে দাঁড়ালাম। উৎসবের দিনগুলিতে সুন্দরবনের সেই বাচ্চাটার গায়ের নতুন জামায় আপনার ভালবাসায় ছোঁয়া থাকুক, সেই প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুটির সারা গায়ে ভালবাসা হয়ে জড়িয়ে থাকুন উৎসবের কটা দিন। একটু চোখ বন্ধ করে ভাবুন উৎসবের দিনে একঝাঁক ফুলের মত শিশুর আনন্দ উচ্ছ্বাসে জড়িয়ে আছেন আপনি; নিজের হৃদয় নিজের সবটুকু ভালবাসা দিয়ে।”

Mangrove man Umashankar mandal

প্রাথমিক ভাবে ৪০০ শিশুর মুখে হাসি ফোটানর লক্ষ্যমাত্রা তাঁর। ৫০টি মেয়েদের কুর্তি ও ৩৫০ মায়ের হৃদয়ের টুকরোর উৎসবে মেতে ওঠার আনন্দ।বর্তমান সময়ে সকলের অর্থনৈতিক সঙ্কট। তবু সাহস করে এই কাজে নেমেছেন তিনি। তাঁরমূল লক্ষ্য, ১) দশ হাজার ম্যানগ্রোভ রোপন (২) চারশ শিশুকে জামা দেওয়া। (৩) তিনশ পঞ্চাশ জন মায়েদের ছাপা সূতির শাড়ী। (৪) কুড়ি জন মেয়েকে কুর্তি। (৫) পচিঁশ জন ছেলেদের গেঞ্জি দেওয়া।(৬) দুশজন বাচ্চা ও মায়ের দুপুরের খাওয়ার ব্যাবস্হা। এরা সকলে ম্যানগ্রোভ রোপন ও পরিচর্যার সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত।

]]>
Durga Puja: বাজেটে বড় রেখে নির্বাধ পুজোর প্রস্তুতি টালা পার্ক প্রত্যয়ের https://ekolkata24.com/uncategorized/tala-park-patyay-helping-poor-people-of-our-socity-producing-a-big-budget-puja-in-corona-situation Fri, 01 Oct 2021 14:21:48 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=6251 অনলাইন ডেস্ক: কোনও কাটছাঁট নয়। করোনা আছে বলে সবকিছুতে দিনের পরদিন কাটছাঁট আর চাইছেন না ওঁরা। পুজো হবে বড় করেই। পুজো হবে বড় বাজেট নিয়েই। তা নিয়েই এগিয়ে গিয়েছে টালা পার্ক প্রত্যয়।

ক্লাবের এবারের পুজোর বাজেট ৬০ থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা। এত বড় বাজেট এই পরিস্থিতিতে? এর কারণ কী? কেন এত বিগ বাজেটের পুজো? কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, “নানা শিল্প ও শিল্পীর সংযুক্ত উদ্যোগে আজ বাংলার দুর্গাপুজোকে শিল্পে পরিণত করেছে। এই কর্মযজ্ঞের উপর নির্ভরশীল অজস্র মানুষ ও তাঁদের পরিবার। আজকের দিনে পুজো শিল্প এমন এক মাধ্যম যা কর্পোরেট সংস্থার বিজ্ঞাপন থেকে সংগৃহীত পুঁজিকে বহু সংগঠিত ও অসংগঠিত শিল্পী কারিগরদের কাছে পৌঁছে দেয়।”

তাই সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে এই অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে বিগ বাজেটের পুজো করা এক জনকল্যাণমূলক প্রচেষ্টা বলে তাঁরা মনে করছেন। এখানে ২০০ লোক টাইম শেডিউল ভাগ করে ভ্যাক্সিন নিয়ে এবং যাদের তা না হয়েছে ভ্যাক্সিন দিইয়ে কাজ করার এবং অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে টালা পার্ক প্রত্যয়। মূল উদ্দেশ্য একটাই কর্পোরেট থেকে প্রাপ্ত অর্থ ডাউনলাইন ধরে সমাজে পাঠিয়ে দেওয়া। সেই কাজে সফল তারা।

tala park patyay

এই ভাবনা থেকেই তাঁদের থিমের নাম নির্বাধ। ক্লাব কর্তারা জানাচ্ছেন, “এক দুর্বিষহ ও আতঙ্কের চৌহদ্দিতে অবরুদ্ধ আমাদের বর্তমান জীবন। এই বাঁধনের শেষ কোথায়?এর থেকে মুক্তির কি উপায় তা আমাদের অজানা। তবে এবার সময়, চৌহদ্দির অন্ধকার অতিক্রম করে আলোয় ফিরে যাওয়ার। আবদ্ধতা ভেঙে নির্বাধ হয়ে আমরা পৌঁছে জাব আলোর উৎসে, শক্তির উজ্জাপনে’।

গতবার তাঁদের থিম ছিল লোকাহিত। অর্থাৎ মানুষের জন্য কাজের বার্তা। ত্রিনয়নে স্যানিটাইজেশনের অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিল এই ক্লাব। মুদিয়ালির সঙ্গে একসঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য এই কাজ করেছিল তারা। পাড়া স্যানিটাইজেশনের পাশাপাশি একে অপরের মণ্ডপ চত্বর স্যানিটাইজেশন করেছিল তাঁরা। বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছিল ‘সকলের তরে সকলে আমরা’। সেই ভাবনা মাথায় রেখেই এবারও মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়াতে চাইছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

]]>
Durga Puja: NRC, CAA বিরোধী মণ্ডপ গড়ে উঠছে শহরের বুকে https://ekolkata24.com/offbeat-news/a-puja-pandal-made-against-caa-and-nrc-bill Mon, 20 Sep 2021 14:51:20 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=5142 বিশেষ প্রতিবেদন : এনআরসি , সিএএ বিল নিয়ে উত্তাল হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজনীতি। কেন্দ্রের বিল পাসে মাথায় হাত পড়েছিল বহু মানুষের। এবার কী ঠাঁই ডিটেনশন ক্যাম্প। হঠাৎ ভিটে মাটি হারানোর ভয় জাগতে শুরু করে মানুষের মনে। কোথা থেকে দেখাবে কাগজ? সেই কাঁটাতারের ভয়ের কথা ফুটে উঠবে উল্টোডাঙ্গা বিধান সংঘের পূজো মণ্ডপে। বলা যেতে পারে এনআরসি , সিএএ’এর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী মণ্ডপ গড়ে উঠছে কলকাতার উল্টোডাঙ্গা বিধান সংঘে।

একদিকে দেশভাগ অন্য দিকে ভাষা আন্দোলন। লড়াই যে, কতটা তা সেই মানুষগুলোই যানে যাদের আধখানা ধুতি বা গামছায় মুড়ে জীবনের শেষ সম্বলটুকু আঁকড়ে ধরে নিজের পৈতৃক ভিটে ছেড়ে অনিশ্চিত পারাপারের খেলায় নিজেদের জীবনকে সপে দিতে হয়েছিল। আজও কাঁটাতারের অপর দিকে তাকিয়ে থাকেন একবুক স্মৃতি আর ভয় মাখা রক্তাক্ত দিন গুলির ছবি বুকে নিয়ে। ভিটেহারা মানুষটি বুঝতেই পারেনি কখন যেন নিজের গ্রাম ছেড়ে সে হয়ে উঠেছিল উদ্বাস্তু। শেষে ঠাঁই হয়েছিল নাম-গ্রোত্রহীন কোনও এক ফালি জমিতে। ঠিকানা কলোনি বা খেটে খাওয়া মানুষের পাল l

দিন যায় রাত আসে, বারুদের গন্ধভরা ভয়ে ভয়ে কেটে যায় বছরের পর বছর। জন্ম নেয় নতুন সংসার, তৈরী হয় নতুন জীবন কাহিনী, নতুন ঠিকানা, নতুন দেশ, কাল, গোত্র, সবই ঠিক চলছিল। দেশভাগের পর কেটে গিয়েছিল অনেকগুলি বছর, নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল, হয়েছে জীবন ধারণের উন্নতি, জুটেছে ভাত, কাজ, শিক্ষা, সঙ্গে হয়েছে পুনর্বাসন, পালন হয়েছে ভাষা দিবস l সেই প্রান্তিক মানুষগুলো আজ অনেকেই কালের নিয়মে একবুক রক্তক্ষরণ নিয়ে অন্তিম যাত্রায় গিয়েছেন, রেখে গিয়েছেন তাদের পরবর্তী প্রজন্ম, আবার কেউ কেউ আজও এক চিলতে সুখ খুঁজে যাচ্ছেন। জোগাড় করেছে তার স্বাধীনতার সুখ, পেয়েছে গনতন্ত্রের অধিকার সঙ্গে আধার, জীবন যখন কিছুটা স্থিতিশীল হতে চলেছে তখন শুরু হয়েছে নতুন করে আবার কাঁটাতার বিছানোর খেলা।

puja pandal made against CAA and NRC

শিল্পী প্রশান্ত পাল জানিয়েছেন, “জন্মের পর থেকে গণতন্ত্র প্রয়োগ করা আজকের মানুষটিকে নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জ্বালা কাঁটাতার হয়ে বুঁকের মাঝে গেঁথে যায়। আচ্ছা, সত্যিই কি এই মানুষগুলো তাদের এই অবস্থার জন্য নিজেরা দায়ী? কে ভাবে তথাকথিত উদ্বাস্তু মানুষগুলোর কথা। সেদিনও কিছু স্বার্থন্বেষী মানুষ নিজেদের আখের গোছাতে এই মানুষগুলোকে ব্যবহার করেছিল। স্বাধীনতার চুয়াত্তর বছর পরও রাষ্ট্রের চোখ রাঙানিতে তাদের রাতের ঘুম যেন চোখের জলে ভেজে, মনে হয় এই বুঝি প্রাণের মাঝে কাঁটাতারের বেড়া দিতে হবে। লুকোতে হবে আধপেটা খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর জীবন কাহিনী, কত প্রশ্ন হয় তাদেরকে নিয়ে। এইতো সেদিনও রাষ্ট্র বলে উঠেছে প্রমান চাই? না হলে ফিরতে হবে l কোথায় ফিরবে? এলো প্রমান করার পালা, জন্ম তারিখ কত? কত সালে এসেছো? এপার না ওপার? ইলিশ না চিঙড়ি? ঘটি না বাঙাল? ওপারের কোথায় বাড়ি ছিল? কাগজ পত্র আছে কি?’

তিনি আরও বলেন, “আজও ৪০ ঊর্ধ ছেলেটা তার বৃদ্ধ বাবা মায়ের মাতৃভূমির ভাষা আর বেঁচে থাকার অধিকারের হাজার প্রশ্নের মুখে পরাধীনতার গ্লানি তাকে এপার না ওপার ভাবিয়ে তুলছে l আজও আপন করতে পারেনি রাষ্ট্র। এনআরসি’র নাম করে আবারও ঠেলে দিচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। আবারও ভিটে হারানোর ৭১ সালের ভয় তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। “

শিল্পীর কথায়, “আমরা এক ৭৫ বছরের স্বাধীন দেশের নাগরিক । বর্তমান মহামারী পৃথিবী ও দেশকে যখন অচল করেছে, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে আমাদের দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে ঠিক তখনো আমরা মনে করি কিছু দায়িত্ব আমাদেরও আছে । আর সেই দায়িত্ববোধ থেকেই এই প্রান্তিক মানুষগুলোর তখন থেকে এখন পর্যন্ত যে ধারাবাহিক জীবনযাত্রা তাকে তুলে ধরতেই আমাদের এই উদ্যোগ। আমরা বেঁচে নিয়েছি এক মায়ের কান্না থামাতে আরেক মায়ের বোধনকে। দেখেছি অসুর কূলকে ধ্বংস করতে মায়ের দশাবতারে দশ হাতে অস্ত্র ধারণ করতে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে যুগে যুগে, কোনো সময় কবির লেখার জোরে, আবার কখনো অস্ত্র হাতে, আজ শিল্পীর প্রতিবাদ হোক শিল্পকর্মের মাধ্যমে। আর সেই অস্ত্র নিয়েই আজ আমরা প্রান্তিক মানুষদের পাশে। আসুন আজ আমরা তাদের হাত ধরে নির্ভরতা টুকু অন্তত ফিরিয়ে দিই । দুচোখে আশার আলো দেখাই আর চিৎকার করে বলি আমরা একই মায়ের সন্তান। মাকে কোনদিন টুকরো করা যায় না বাধা যায়না কাঁটাতার দিয়ে l চাইনা জাতের লড়াই, চাইনা ধর্মের লড়াই l

তাইতো আসুন সবাই মিলে বলি, কিসের কাগজ? কিসের জাত? ধর্ম যখন পেটের ভাত। রাষ্ট্র তোমার আমার সবার, লড়াই করে দুহাতে ভাঙবো ‘কাঁটাতার'”

]]>
১০৪তম বছরে পূজো বান্ধবদেরই থিমের অঙ্গ করছে এই ক্লাব https://ekolkata24.com/offbeat-news/the-theme-of-this-years-puja-hal-chhero-na-bandhu Thu, 16 Sep 2021 11:28:02 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=4758 বিশেষ প্রতিবেদন: এরাই একটা পুজোকে ১০৪ বছর ধরে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। এখনকার পুজোয় পুরস্কারের দৌড়ে ওদের কথা বিশেষ মনে থাকে না পুজো উদ্যোক্তাদের। তাদেরকেই সম্মান দিয়ে থিমের অঙ্গ করে তুলছে সরকার বাগান।

বিগত প্রায় দেড় বছর ধরে চলা করোনা মহামারীর এই কঠিন পরিস্থিতিতে ১০৪তম বর্ষে তাঁদের নিবেদন ” হাল ছেড়ো না বন্ধু” । বছরে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এক অভিনব পন্থা নিয়েছে এই পূজো কমিটি। যার বিষয়ের নাম “হাল ছেড়ো না বন্ধু”! কিন্তু কারা এই বন্ধু? কাদের হাল ছাড়তে বারণ করা হয়েছে? সরকার বাগানের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, বন্ধু তারাই যারা বছরের পর বছর ধরে নানাভাবে সরকার বাগান সম্মিলিত সংঘের দুর্গাপূজা আয়োজনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, যাদের বহু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে আমাদের পুজোর সাফল্যমন্ডিত হওয়ার পিছনে। মন্ডপ থেকে শুরু করে আলোকসজ্জা ও প্রতিমা গড়ার পেছনে বিগত বছরগুলোতে যারা আমাদের পুজো উদযাপন করতে সহায়তা করেছেন, পাশে থেকে পুজোকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন, এই বছর সরকার বাগান সম্মিলিত সংঘ তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে।

বিগত বছরগুলোতে মণ্ডপ সজ্জা, আলোকসজ্জা , এবং আনুসাঙ্গিক বিভিন্ন কাজে যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের প্রত্যেকের থেকে কিছু কিছু জিনিস নিয়েই সেজে উঠবে তাদের ১০৪তম বর্ষের মণ্ডপ। এই মণ্ডপে যেমন থাকবে পুরুলিয়ার ছৌ নাচ, তেমন থাকবে বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির কাজ। এই করোনা পরিস্থিতিতে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের নানারকম হাতের কাজের জিনিসও এবারের মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহৃত হবে।

সমগ্র মন্ডপ পরিকল্পনায় থাকছেন অমিত ও অরিন্দম। মাতৃ রূপ সম্পূর্ণ সাবেকি। মাতৃ প্রতিমায় রূপদান করবেন সনাতন পাল। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যথেষ্ট আশাবাদী। তাঁরা জানাচ্ছেন, ‘ স্বল্প বাজেটের মধ্যে পুজো করা ও কিছু মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সরকার বাগান সম্মিলিত সংঘের প্রধান লক্ষ্য। আমরা আমাদের এবারের এই মানবদরদি প্রচেষ্টা শিল্পের সাথে যুক্ত বেশ কিছু মানুষের বেশ কিছু মানুষের আর্থিক সংস্থানে কাজে আসবে বলেই আমাদের বিশ্বাস’।

]]>