sagar day – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Thu, 28 Oct 2021 11:52:47 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png sagar day – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 উত্তরাখন্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়ে মৃত তিন অভিযাত্রীকে চোখের জলে বিদায় জানাল বাগনান https://ekolkata24.com/uncategorized/the-last-rites-of-the-three-dead-expeditions-were-completed-while-trekking-in-uttarakhand Thu, 28 Oct 2021 11:52:47 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=9482 News Desk, Kolkata: “তোমাকে ভালবেসে তোমার পথেই হারিয়ে যাওয়া এক পথিক” — বছরখানেক আগেই নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে অভিমানী পাহাড়কে উদ্দেশ্য করে লাইনগুলি লিখেছিলেন তরুণ চিকিৎসক সাগর দে। বছর ঘুরে অদ্ভুত সমাপতন। সে-ই পথেই চিরতরে হারিয়ে গেলেন বাগনানের সাগর দে, চন্দ্রশেখর দাস ও সরিৎশেখর দাস।

বৃহস্পতিবার সকালে কোলকাতা বিমানবন্দরে তিনজনের কফিনবন্দী দেহ নামানো হয়। সেখান থেকে বাগনানে আনা হয় তিনজনের দেহ। সাগরের মুরালীবাড়ের বাড়িতে সাগরের দেহ, সরিৎ ও চন্দ্রশেখরের বাড়িতে তাদের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিন অভিযাত্রীর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। চন্দ্রশেখর দাস খালোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হওয়ায় তার দেহ গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান পঞ্চায়েত প্রধান সহ অন্যান্যরা।

sagar day bagnan

অন্যদিকে, আমতার উদং পোদ্দারপাড়ায় সাগরের পৈতৃক বাড়িতে সাগরের কফিনবন্দী নিথর দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর বাড়ির লোকজন। সাগর ছিলেন উদং কালীমাতা বালক সংঘের সদস্য। সাগরের মৃতদেহ সেই ক্লাবের মাঠে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তারপর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার উদ্দেশ্যে তিনটি মরদেহ বাউড়িয়া বার্নিং চুল্লিতে নিয়ে আসা হয়। এদিন বাগনানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায়, হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য, হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় সহ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। এদিন সকাল থেকে বাগনান মুরালীবাড়ে ও আমতার উদংয়ে প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কোনো সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই।” তিনি আরও বলেন,”খবর পাওয়ার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাঁর সার্বিক প্রচেষ্টায় উত্তরাখন্ড সরকারের সাথে যোগাযোগ রেখে দেহগুলিকে উদ্ধার করে দ্রুত আনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।” এদিন সকাল থেকেই তিন তরুণকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন বহু মানুষ। চোখের জলে তিন যুবককে বিদায় জানান অজস্র মানুষ।

]]>
“তোমাকে ভালবেসে তোমার পথেই হারিয়ে যাওয়া এক পথিক”- পাহাড়কে খোলা চিঠি বাগনানের সাগরের https://ekolkata24.com/offbeat-news/a-letter-to-the-mountains-by-dead-mountanier-of-howrah-who-lost-life-in-uttarakhand-calamity Wed, 27 Oct 2021 20:19:19 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=9419 Special Correspondent: পাহাড় ছিল তার প্রাণের সমান। পাহাড়েই খুঁজে পেয়েছিলেন বাঁচার রসদ। তাইতো সুযোগ পেলেই পাড়ি দিতেন পাহাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুজোর ছুটি মিলতেই উত্তরাখন্ডের দুর্গম পাসে অভিযানে বেরিয়েছিলেন পেশায় চিকিৎসক বাগনানের সাগর দে। ভাগ্যিস নির্মম পরিহাসে পাহাড়ের কোলেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তরুণ অভিযাত্রী সাগর দে। গতবছর সাগর দে কিছুটা খোলা চিঠি লিখেছিলেন হিমালয়কে। চিঠির একদম অন্তিম লাইনে লিখেছিলেন,”তোমাকে ভালবেসে তোমার পথেই হারিয়ে যাওয়া এক পথিক।” সাগর নিখোঁজ হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সেই খোলা চিঠি ইতিমধ্যেই বেশ কিছু মানুষ শেয়ার করেছেন। 

নস্টালজিয়া মানেই কিছু টুকরো টুকরো স্মৃতির এক সংক্ষিপ্ত সংযোজন বা রচনা, যেটা কি না আমাদের সাহায্য করে তার সুগন্ধের ঘ্রাণ নিতে। যেটা আমাদের ঘ্রাণস্নায়ু পথে দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয় এবং আমাদের শুকিয়ে যাওয়া, অতৃপ্ত আত্মার প্রবল আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করে।

sagar day

আজ এই দীর্ঘ সময় ঘরে বন্দি থেকে অনেক ছোটো ছোটো স্মৃতি ভিড় করে আসছে মনের মণিকোঠায়। চোখের সামনে বার বার ভেসে আসছে নীলচে পাহাড়ের অবয়বটা। মনখারাপের ডালি নিয়ে আজ লিখতে বসলাম কিছু মনের কথা। আমার প্রাণের দোসরের উদ্দেশ্যে একখানি পত্র— এক পথিকের পক্ষ থেকে “পাহাড়”, তোমাকে একটা খোলা চিঠি আজ ডাক বাক্সের একটা কোণে একটা চিঠি রেখে এলাম। জানি না তুমি কবে পাবে এই চিঠি! জানি না আদৌ তোমার কাছে পত্রটি গিয়ে পৌঁছবে কি না! জানি না চিঠিটা পেয়ে তুমি আমায় তার প্রত্যুত্তর দেবে কি না! জানি না প্রত্যুত্তর আসার সময় অবধি আমার এই ভূমন্ডলে অস্তিত্ব থাকবে কি না! তবুও আজ আমি লিখলাম কিছু কথা তোমার উদ্দেশ্যে।

প্রিয়,
আমি জানি তুমি এখন খুবই ভাল আছো। তোমার সংসারে অনেক দিন হল কারও আনাগোনা নেই। তাই দীর্ঘ কোলাহলের পরে এখন একাকিত্বের আঙিনায় তুমি সময় পেয়েছ একটু বিশ্রাম নেওয়ার। সময় পেয়েছ নিজেকে সময় দেওয়ার। নাও বিশ্রাম, ঘুমোও একটু, সমস্ত ক্লান্তি, অবসাদ ঘুচিয়ে একটু শান্তির রাজ্যে পাড়ি দেওয়াও নিজেকে। এখন তো নেই কোনও ভিড়, নেই কোনও জমায়েত, নেই কোনও আড্ডা, নেই কোনও নিস্তব্ধতার পর্দা সরানো শব্দের সমাহার তোমার সংসারে। একলা পাহাড় তুমি এখন একলাই আছো বেশ মেজাজে। জানো, আমরাও এখন আটকে আছি প্রত্যেকে প্রত্যেকের অতি সতর্কতার ঘেরাটোপে। বেরোতে পারছি না কেউই কারও বন্দিদশা ছেড়ে। কারও সঙ্গে গল্প করা তো দূরের কথা, আমরা এখন একে অপরকে স্পর্শ করতে ভয় পাচ্ছি। ভাইরাস উড়ছে বাতাসে। আমরা ভয়ে অতিষ্ঠ। মৃত্যুভয় গ্রাস করছে প্রতি পদে। বেঁচে থাকাটাই যেন এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের কাছে। আমরা এখন আমাদের মনুষ্যত্ব হারিয়েছি শুধুমাত্র নিজেকে ভালবেসে, শুধু একটু বেঁচে থাকার আশায়। আমরা আজ হয়ে উঠেছি বড় স্বার্থপর। কারও বিপদে আজ আমরা ছুটে যেতে পারছি না। গেটের বাইরে থেকে যে কোনও মানুষকে বিতাড়িত করছি। আতিথেয়তা? সে তো এখন অনেক বড় কথা!! মানুষের থেকে দূরে থাকা থেকে শুরু করে তার ছোঁয়া লাগলে নিজেকে শুদ্ধ করা, এ যেন সেই প্রাচীন পর্বে অসভ্য জাতির প্রতি সভ্যজাতির ব্যবহার। অশুচিদের প্রতি শূচিদের নিয়মানুবর্তিতা। আজ আমরা মনুষ্যত্ব হারিয়েছি ভাইরাসের ভয়ে।

এই বন্দি অবস্থায় থেকে তোমার কাছে অনেক কথা জানতে খুব মন চাইছে। শুনতে ইচ্ছে করছে মনুষ্যজাতি ভিন্ন তোমার কথা। দেখতে ইচ্ছে করছে তোমার প্রত্যুত্তরের মধ্যে দিয়ে বাস্তবের শূন্য পাহাড়টাকে। আচ্ছা বলো তো, সেই ঠান্ডা হাওয়াটা কি এখনও রোজ সমগ্র পর্বতপ্রদেশকে শীতলতার মধুর স্পর্শ দিয়ে যায়? সেই প্রেয়ার ফ্ল্যাগগুলো কি সব এখনও প্রতিদিন মেঘলা আবহাওয়ায়, হাওয়ার তালে পতপত করে উড়ছে? মনাষ্ট্রিগুলো থেকে ঢং-ঢং শব্দে ঘন্টার ধ্বনি শুনতে পাও কি তুমি? নাকি সেটাও আজ বন্ধ হয়েছে ভাইরাসের ভয়ে? আচ্ছা, এখনও রোজ দুপুরের পর মেঘেদের ওড়না তোমার গায়ে এসে জড়িয়ে ধরে? কুয়াশারা প্রতিদিন তোমার সঙ্গে এখনও লুকোচুরি খেলে? সেই নীলচে আকাশ, সেই প্রখর রৌদ্র, সেই শান্ত পাখিদের উড়ে চলা— এখনও কি তোমার সঙ্গে এক হয়ে শিল্পীর ক্যানভাস গড়ে তোলে? সেই পাইনের গন্ধ, সেই দেওদার, বার্চ, ফারের ছায়া, সেই ভূর্জপত্র এখনও প্রত্যহ তোমার আঙিনাকে সুগন্ধিতে মশগুল করে তোলে? ঝর্না, পাহাড়ি নদীটা কেমন আছে? তারা কি সেই শান্ত কুলুকুলু ধ্বনিতে এখনও প্রতি মুহূর্তে পাথুরে নুড়িগুলোর উপর দিয়ে শান্ত গতিতে বয়ে চলেছে?

sagar day

পাথরের গায়ে নাম-না-জানা পাহাড়ি ফুলগুলো, তারা এখনও সুন্দর করে নিজেদের বড় করে তুলছে? তারা এখন রোজ সেই শান্ত পাহাড়ি হাওয়াতে নিজেদের মাথাটা দোলায়? নিস্তব্ধ জঙ্গলে পাখিদের কলতান, নির্জনতার দুয়ার ভেঙে তাদের সুমিষ্ট কন্ঠ, এখন আরও বেশি সুন্দর লাগে? বৃষ্টির উল্লাস, ঝড়ের মাতলামি তোমায় এখনো রোজ সিক্ত করে কি? বৃষ্টির শব্দের ঝঙ্কার এখনও কি সেই প্রেমের পরিবেশের বুনন গেঁথে যায়? কালের নিয়মে এখনও আঁধার নামে তোমার শরীরে জানি। সেই জোনাকিগুলো তাদের আলো জ্বালিয়ে তোমায় রোজ পথ দেখায় তো? জানি তারা আজ খুব আনন্দে আছে। এখন যে তাদের বিরক্ত করার কেউ নেই। তারা হয়তো তাদের আলোর রোশনির বলয় তৈরি করে তোমায় আলোকিত করে।

তাই না? ঝিঁঝির ডাক হয়তো এখন অনেকটা বেড়েছে। তাই না? বন্যপ্রাণীরা এখন নিশ্চয়ই মনের আনন্দে, নির্ভয়ে নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময় করে। তাই না? কারণ, এখন তো তাদের ভয় পাওয়ার মতো অসভ্য মনুষ্যজাতিটার আনাগোনা শূন্য হয়েছে। পূর্ণিমার আকাশে চাঁদের রোশনাই তোমাকে এখনও নিয়ম করে জ্যোৎস্নায় স্নান করায় তো? প্রজ্জ্বলিত নক্ষত্রমণ্ডলী মিটমিট করে তোমার দিকে তাকিয়ে এখনও সেই পুরনো ছন্দে হাসে? ছায়াপথে উল্কাঝড়, উল্কাপতন, কালপুরুষ, সপ্তর্ষিমণ্ডলী— তুমি এখনও রোজ রাতে চুপচাপ দেখতে থাকো, না? তাদের সাথে গল্পে মত্ত থাকো, না? জানি এখন তুমি ভাল আছো। তুমি একলা করে নিজেকে আমাদের থেকে সরিয়ে ভালই আছো। আমি চাইও তুমি একাকী কয়েকদিন শান্ত হয়ে বিশ্রাম নাও। কিন্তু জান, এখন সকলে বলছে তুমি আমাদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছ।

তোমাকে জয়ের দুর্নিবার নেশা, তোমার শান্তিতে আমাদের কোলাহলের ব্যাঘাত, তোমার উপর আমাদের অত্যাচার, তোমাতে বাস করা বন্যপ্রাণগুলোকে ভয় দেখানো, তোমার গায়ে নোংরা ছড়িয়ে চলে আসা, শান্ত আঁধারে আগুনের লেলিহান শিখা— এসবই তো তোমাকে কষ্ট দিয়েছে। এসবই তো তোমাকে মুখ বুজে কাঁদিয়েছে। তারই কি প্রতিশোধ এটা? এর উত্তর আমার জানা নেই। জানি না তুমিও এর উত্তর আমায় দেবে কি না। তবে কিছু কথা খুব বলতে ইচ্ছে করছে আজ। হ্যাঁ, আমরা হয়তো অনেক অন্যায় করেছি তোমার উপর। অনেক কষ্টও দিয়েছি তোমায়। কিন্তু ভালবাসায় কোনও খামতি ছিল না। কোনও স্বার্থ ছিল না আমাদের। আমার প্রশ্ন, তুমি কি পারবে আমাদের ছেড়ে থাকতে? তুমি কি পারবে আমাদের ভুলে থাকতে? তুমি কি পারবে আমাদের রেখে একা একা সুন্দর করে সাজতে? একটা শাড়ি যেমন একটা ‘বাহ্ কী দারুণ’ কথাটা শুনতে ব্যাকুল থাকে, ঠিক তেমনই তুষারশিখরে যখন সূর্যের লাল আভায় তোমার মাথায় লাল সিঁদুর ওঠে, তখন তুমিও কি ব্যাকুল থাকো না এই মনুষ্যজাতির থেকে ‘অসাধারণ’ শব্দটা শোনার অপেক্ষায়??

এটা কি অস্বীকার করতে পার তুমি? মেঘে ঢাকা তুমি দূরে হারিয়ে যাও অস্পষ্টতার গভীরে। তবুও যেন তোমার আওয়াজ কানে এসে বেঁধে। ধীরে ধীরে আঁধার নামে তোমায় ঘিরে। আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি ট্রেকার্স হাটের কাঠের বারান্দায়। আমি দাঁড়িয়ে থাকি এক বাকরুদ্ধ পথিকের মতো। চুপচাপ পরিসর, একটা ঠান্ডা হাওয়া এসে জানান দেয় আঁধার নামছে পাহাড়ে। দূরের অস্পষ্ট কালো ছায়ার মতো তুমি যেন আরও আবছায়ায় হারিয়ে যেতে থাকো। নিকষ কালো অন্ধকারের মধ্যে দূরের হাটগুলো থেকে হাল্কা বাতির আলো বেরিয়ে আসে। দূর থেকে ভেসে আসে গাইড, পোর্টার, ইয়াকওয়ালাদের হালকা কন্ঠধ্বনি, হাটের ছাদের উপরেও ছাদ বেয়ে নেমে আসে বৃষ্টির শব্দ। আর সেই নিঝুম সাঁঝে ইয়াকগুলোর গলায় বাঁধা ঘন্টার ধ্বনি। আমি হারিয়ে যাই। চোখের কোণে জল আসে। মুখ থেকে উচ্চারিত হয়, ‘‘এ আমি কোথায়!’’ এই ভালবাসা, এই তারিফ, এই সুন্দরের প্রশংসা, এই আবেগতাড়িত মুহূর্তে আমাদের চোখের জল তোমারও কি দেখতে ইচ্ছে করে না? তুমি কি স্বীকার করতে পারবে, এসব ছাড়া তুমি সম্পূর্ণ? তোমার শরীরে মেঘেদের আনাগোনা, কুয়াশার জালে তোমার ঘুমভাঙা সকাল, শান্ত ও খরস্রোতা নদীর তোমার দেহের উপর দিয়ে বয়ে চলা, নাম-না-জানা পাখিগুলোর তোমার পানে ডানা মেলার প্রেক্ষাপট!

তোমারও কি ইচ্ছা করে না কোনও এক শিল্পীর শৈল্পিক ছোঁয়ায় তোমাতে বিচরিত এই সুন্দর ক্যানভাসটির অবয়ব গড়ে উঠুক? তুমিও কি পছন্দ করো না, যখন কোনও নবযুগল তোমার নীলচে রূপের পানে তাকিয়ে জ্যোৎস্না রাতে একে অপরকে ভালবাসার প্রতিশ্রুতি জানায়। তারাখচিত রাতকে সাক্ষী রেখে তোমার মতো সুন্দরের সন্নিকটে একে অপরকে আলিঙ্গন করে। এ সবই তো শুধুমাত্র তোমারই টানে, সবই তোমার আহ্বানে। এগুলো ছাড়া কি তুমিও একাকী আনন্দ পাবে? আজও তোমাতে পাইনের আতরে যখন মত্ত থাকে দিগ্বিদিক, তখন এই মনুষ্যজাতি ছাড়া কে সেই গন্ধ গায়ে মেখে বলবে ‘‘আহ্!’’ কে বলবে, মা গো এই নৈসর্গের কোলে যদি মৃত্যুবরণ করতে হয়, তা হলে তা হবে আমার শ্রেষ্ঠ মৃত্যু! তুমি কি অস্বীকার করতে পারবে এই ‘ত্যাগ’-কে? সত্যিকারের কত প্রেমের শুরু হয় তোমার রূপকে কল্পনা করে। কত সাহিত্যিক তার সাহিত্যের উপাদান খুঁজে পায় তোমার সৌন্দর্যের প্রতি মুখরিত হয়ে। কত মানুষ শান্ত হয় তোমার নির্জনতাকে উপলব্ধি করে। কত মানুষ নিজেকে খুঁজে পায় তোমার বিশালতার মাঝে। কত নিরাশাগ্রস্ত মানুষ নতুন ভাবে বাঁচতে শেখে শুধু তোমায় দেখে।

হ্যাঁ, আমি মানছি আমরা অনেক দোষী। মানছি তুমি এখন ভারাক্রান্ত হয়ে মুখ ফিরিয়েছ আমাদের থেকে। তুমি শান্তির কোলে মাথা রেখে ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছ। কিন্তু মানুষজনের কথাগুলো যেন সত্যি না হয়! তা হলে মিথ্যা হয়ে যাবে সব কিছু। মিথ্যা হয়ে যাবে তোমার প্রতি আমাদের আমোঘ টান। মিথ্যা হয়ে যাবে তোমাতে আমাদের ভালবাসার শব্দচয়নগুলো। মিথ্যা হয়ে যাবে তোমার দেশে বাস-করা মানুষগুলোর সাথে আমাদের নিঃস্বার্থ সম্পর্কগুলো। মিথ্যা হয়ে যাবে আমাদের মধ্যে থাকা তোমার কাছে বার বার ছুটে যাওয়ার আবেগটা।

আমি জানি, তুমি একদিন আবার সমস্ত কিছু ভুলে, সমস্ত গ্লানি ভুলে আমাদের কাছে টেনে নেবে। আমাদের সমস্ত ভুল ক্ষমা করে আবার তোমার কোলে আমাদের আশ্রয় দেবে। কারণ, তুমি যে বিশালতার এক রূপ। তুমি যে সর্বোপরি। তুমি যে সকলের বেঁচে থাকার দিশা। তুমি যে আমাদেরই সৃষ্টির স্রষ্টা।
ভাল থেকো।

ইতি,
তোমাকে ভালবেসে তোমার পথেই হারিয়ে যাওয়া এক পথিক

]]>