writer – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com Stay updated with Ekolkata24 for the latest Hindi news, headlines, and Khabar from Kolkata, West Bengal, India, and the world. Trusted source for comprehensive updates Fri, 03 Dec 2021 20:36:14 +0000 en-US hourly 1 https://ekolkata24.com/wp-content/uploads/2024/03/cropped-ekolkata24-32x32.png writer – Ekolkata24: Latest Hindi News Updates from Kolkata – Breaking Stories and More https://ekolkata24.com 32 32 ২৪০ পাতার এই রহস্যময় বই আজও কেউ পড়তে পারেনি https://ekolkata24.com/offbeat-news/heres-what-you-need-to-know-about-the-mysterious-voynich-manuscript Fri, 03 Dec 2021 20:34:28 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=1937 নিউজ ডেস্ক: এই জগতে রহস্য ভরে রয়েছে। কিছু রহস্য ভেদ করতে সফল হয়েছে মানুষ৷ তবে কিছু রহস্য এখনও পর্যন্ত অজানা রয়ে গিয়েছে মানবজাতির কাছেও। ঠিক এমনই একটি রহস্য হল ২৪০ পাতার একটি বই। কথিত আছে, আজ পর্যন্ত কেউ এই বইটি পড়তে পারেনি।

ইতিহাসকারিরা বলছেন, এই রহস্যময় বইটি ৬০০ বছরেরও বেশি পুরনো। কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, বইটি ১৫ শতাব্দীতে লেখা হয়েছিল। এই বইটি হাতে লেখা হয়েছিল। কিন্তু কী লেখা হয়েছিল এবং কোন ভাষায় লেখা হয়েছিল, তা আজ পর্যন্ত কেউ বুঝতে পারেনি৷ বইটি আজ পর্যন্ত রহস্যময় হয়ে রয়ে গিয়েছে। বইটির ‘বায়োনিক ম্যানুস্ক্রিপ্ট’ নামে নামকরন করা হয়েছে। বইটিতে মানুষ থেকে নিয়ে গাছপালার একাধিক ছবি বানানো হয়েছে।

Mysterious Voynich Manuscript

‘বায়োনিক ম্যানুস্ক্রিপ্ট’ নামের এই বইটির সবথেকে অদ্ভুত বিষয় হল, বইটিতে এমন কিছু গাছপালার ছবি রয়েছে, যেগুলির পৃথিবীর গাছপালার সঙ্গে কোন মিল নেই। এই বইটির নাম ‘বায়োনিক ম্যানুস্ক্রিপ্ট’৷ ইতালির একটি বইয়ের ডিলার বিলফ্রিড বায়োনিকয়ের নামে নামকরণ হয়েছে। বলা হয় তিনি এই বইটি ১৯১২ সালে কিনে এনেছিলেন। কিন্তু তিনি কোন জায়গা থেকে বইটা কিনেছিলেন আজ পর্যন্ত বড় রহস্য।

Mysterious Voynich Manuscript

এই রহস্যময় বইটিতে অনেক পাতা ছিল, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পাতাগুলি নষ্ট হচ্ছে। এই মুহূর্তে বইটিতে মাত্র ২৪০টি পাতা রয়েছে৷ এই বিষয়ে বেশি কিছু তথ্য খুঁজে পাওায়া যায়নি৷ কিন্তু এটা স্পষ্ট বোঝা যায় যে, বইটির কিছু শব্দ ল্যাটিন এবং জার্মান ভাষায় রয়েছে।

অনেকে বলে থাকেন, এই বইটি ইচ্ছাকৃতভাবে এইভাবে লেখা হয়েছে৷ যাতে কেউ পড়তে না পারে এবং এর রহস্যভেদ না হয়। তবে সেই রহস্যটা কী, সেটা শুধুমাত্র এই বইটির লেখকই হয়তো জানতেন। কিংবা আগামিদিনে হয়তো কেউ এই বইটিতে কী লেখা রয়েছে, সেই রহস্যভেদ করতে সফল হবে। এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

]]>
Bengali theatre: রুশ সাহিত্যিকের হাত ধরে শুরু হয়েছিল বাঙালির নাটক যাত্রা https://ekolkata24.com/offbeat-news/pioneer-of-bengali-theatre-russian-writer-gerasim-stepanovich-lebedev Thu, 25 Nov 2021 16:19:17 +0000 https://ekolkata24.com/?p=12397 Pioneer of Bengali theatre
বিশেষ প্রতিবেদন, কলকাতা: বাঙালির জন্য প্রথম বাংলা ভাষায় নাটক রচনা,থিয়েটার প্রতিষ্ঠা এবং সেই থিয়েটারে ভারতীয় তথা বাঙালিদের অবাধ প্রবেশের অধিকার যে ভদ্রলোক দিয়েছিলেন তিনি কোনও বাঙালি বা ভারতীয় নন তিনি একজন রুশ,যিনি ভারত ও বাংলাকে গভীরভাবে ভালবেসেছিলেন, ভদ্রলোকের নাম গেরাসিম স্টেপোনোভিচ লেবেদেফ,তিনিই প্রথম পশ্চিমি বাদ্যযন্ত্রে ভারতীয় সুর বাজিয়েছিলেন৷

লেবেদেফ কলকাতায় এসেছিলেন ১৭৮৭ সালের আগস্ট মাসে, তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি ইংরেজি নাটকের বাংলা অনুবাদ করে নাট্যমঞ্চে বাঙালি অভিনেতাদের দিয়ে প্রথম বাংলা নাটক অভিনয় করিয়েছিলেন আজকের এজরা স্ট্রিটে বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাঙালি থিয়েটার নাম ‘দি বেঙ্গলি থিয়েটার’৷ বাংলা নাটকের ইতিহাসের এই মাইলফলকের ঠিকানা ছিল তৎকালীন কলকাতার ২৫, ডোমতলা, বর্তমানে যা ৩৭, এজরা স্ট্রিট। সেই থিয়েটারে প্রায় ৩০০দর্শক বসতে পারতেন, প্রথমবার অভিনয়ের জন্য জোগাড় করেছিলেন তিনজন অভিনেত্রী দশজন অভিনেতা তারা সকলেই ছিলেন বাঙালি৷

বাঙালি সমাজে খবরটা ছড়িয়েছিল ঝড়ের বেগে,লেবেদেফ ক্যালকাটা গেজেটে বিজ্ঞাপন দিলেন ১৭৯৫ সালের ২৭নভেম্বর, শুক্রবার ‘The Disguise’ ( কাল্পনিক সংবদল) নামে একটি কমেডি অভিনীত হবে৷।আত্মকথায় লেবেদেফ বলেছেন উপস্থিত দর্শকের তুলনায় আসন আরও তিনগুণ থাকলেও ভরে যেত৷ কারা এসেছিলেন দর্শক হয়ে?.

pioneer of Bengali theatre

নিশ্চিতভাবে তারা এসেছিলেন শ্বেতাঙ্গসমাজে কিছুটা অবজ্ঞা পাওয়া এবং কৌতূহলের বশে সেইসব গন্যমান্য বাঙালি সেদিন ‘বেঙ্গলি থিয়েটারে’উপস্থিত হয়েছিলেন যারা সাহেবদের রঙ্গালয়ে প্রবেশের সাহস করতেন না,যদিও সেদিন প্রবেশমূল্য নিতান্ত কম ছিল না৷ লেবেদেফের আশঙ্কা ছিল বাংলা ভাষার এই নাটক ইংরেজরা বুঝবে না,সমালোচনা হবে!হল উল্টো,এমন কি অনেকেই সম্পূর্ণ নাটকটি দেখতে চাইলেন,স্বয়ং প্রধান বিচারপতি জন হাইড ঈস্ট,লেবেদেফকে চিঠি লিখে অনুরোধ করলেন ফলে ১৭৯৬সালের ২১মার্চ ক্যালকাটা গেজেটে আবার বিজ্ঞাপন দেওয়া হল,২৪মার্চ তৃতীয়বার বিজ্ঞাপন দিলেন লেবেদেফ৷মূল ইংরেজি নাটকটির ঘটনাস্থল স্পেন,মাদ্রিদ ও সেভিল শহর৷কিন্তু বাঙালি দর্শকদের কাছে দুটি নাম অপরিচিত হতে পারে মনে করে তিনি নাটকে কলকাতা ও লক্ষ্ণৌ শহরের নাম ব্যবহার করেছেন,এবং নাটকের চরিত্রদের নাম দিয়েছেন দেশীয়৷

যেমন ভোলানাথ(নায়ক),সুখময়,ভাগ্যবতী,রতনমণি,তিনকড়ি ও পাঁচকড়ি৷বাংলা ভাষায় ‘Disguise’-এর নাম ছিল ‘কাল্পনিক সংবদল’৷নাটকের বিদেশী স্বাদগন্ধ ছড়িয়ে দেশীয় রূপ দিতে লেবেদেফ যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন৷বাঙালি সমাজ এর আগে কোনও বাংলা নাটকের কোনও মঞ্চাভিনয় দেখেনি,তাই দৃশ্যসজ্জা,সাজপোষাক,নৃত্যগীত,অর্কেস্ট্রা বাদন,আলোকিত(অবশ্যই বাতির আলো) পাঠ্যপীঠ দেখে তারা মুগ্ধ হয়েছিলেন৷যাই হোক লেবেদেফ কে আমরা শ্রদ্ধা করি,কারণ তিনি আমাদের জন্য প্রথমবার বাঙালি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দিয়ে বাংলা নাটক রঙ্গমঞ্চে উপস্থাপিত করেছেন,কলকাতায় থাকার সময় এবং শহর থেকে চলে গিয়েও অনেক দুঃখ পেয়েছেন,বাংলা নাটক ও নাট্যমঞ্চের ইতিহাসে তিনি স্মরণীয়, বরণীয়,পাদপ্রদীপ৷ জন্মগ্রহন করেছিলেন ১৭৪৯সালে ইউক্রেনে,বাল্যকাল থেকে ছিল সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্রের প্রতি অমোঘ টান৷ইতালিতে থাকার সময় দক্ষ বেহালা বাদক হয়ে উঠেছিলেন৷১৭৮৫সালের ১৫আগস্ট এসেছিলেন ভারতে,পৌঁছেছিলেন মাদ্রাজ শহরে৷কিন্তু মনের আশা পূর্ণ না হওয়ায় ওই শহর ছেড়ে ১৭৮৭সালে কলকাতায় এলেন,বেহালায় সুর তুলে আমাদের প্রিয় কলকাতায় জীবিকা অর্জন করতে লাগলেন৷শ্রোতার দল তাঁর গীতবাদ্যে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উঠেছিলেন৷দিনে দিনে তাঁর খ্যাতি তখন মধ্যগগনে৷

১৭৯০সালের ৯ এপ্রিল ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীদের সভায় গান গেয়ে ও বেহালা বাজিয়ে তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন,ওই আসরে প্রতিটি টিকিটের দাম ছিল সিক্কা ১২টাকা, সেকালের হিসেবে গানশোনার দর্শনী যতেষ্ট মহার্ঘ্য ছিল বলতেই হয়৷পরিচয় হয়েছিল বাঙালি গোলোকনাথ দাসের সঙ্গে,তাঁর কাছেই লেবেদেফের বাংলা শিক্ষা,আর গোলোকনাথ দাস বন্ধুর কাছে শিখলেন সঙ্গীত৷তবে ইংরেজদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারেন নি রুশ লেবেদেফ,সেইজন্য ইংরেজ নাট্যকারের ‘Disguise’ এবং মলিয়রের ফরাসি নাটক ‘love is the doctor’ কে বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন৷ভাষা শিক্ষক গোলকনাথ দেশীয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জোগাড় করেছিলেন৷সেই ইতিহাস আমাদের কারও জানা হয়ত অনেকের অজানা! তখন মাত্র দুটি রঙ্গমঞ্চ কলকাতায় একটি ‘দি বেঙ্গলি থিয়েটার’ অন্যটি ইংরেজদের ‘দি নিউ প্লে হাউস’।

শোনা যায়, লেবেদেফের জনপ্রিয়তায় ইংরেজরা ভয় পেয়েছিল। কিছু দিন পরেই তাঁর সেই তিনশো আসনবিশিষ্ট থিয়েটারে আকস্মিক ভাবে আগুন লেগে ছাই হয়ে যায় সব কিছু!তখন তিনি ‘Deserter’নামে একটি গীতিনাট্য অভিনয় করানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন৷লেবেদেফ সুবিচারের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হলেন,কিন্তু শ্বেতাঙ্গ উকিলরা তাঁর হয়ে আদালতে লড়তে রাজি হন নি সরকারি সাহায্য থেকে তিনি বঞ্চিত হলেন কারন তিনি শুধু বাঙালিদের জন্য নাটক প্রযোজনা করেছিলেন৷অনেক বিপদ আর ঝড় এলো রুশ ভদ্রলোকের জীবনে,মিথ্যে ঋণের দায়ে গ্রেফতার হলেও কোনওক্রমে মুক্তি পেয়েছিলেন৷

অবশেষে ঋণগ্রস্ত লেবেদেফ ট্র্যাজেডির নায়কের মত তাঁর সাধের ‘দি বেঙ্গলি থিয়েটার’নীলামে বিক্রি করতে বাধ্য হলেন,এবং ওই ভাড়াবাড়ির মালিক জনৈক জগন্নাথ গাঙ্গুলি তাঁকে নানা ভাবে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেন,তিনি দেহ মনে অসুস্থ হয়ে পড়েন৷অবশেষে স্যার জন শোরের নিকট কাতর প্রার্থনা করে বড়লাটের নির্দেশে বিনা ভাড়ায় ‘লর্ড কারলো’নামে ইংল্যাণ্ডগামী জাহাজের এককোনে ঠাঁই পেয়ে এদেশ ছাড়লেন৷তারপরেও তাঁর জীবনে এসেছে অনেক বিপত্তি৷রুশ দেশের রাষ্ট্রদূত ওরোনজাওয়ের তৎপরতায় ফিরেছিলেন দেশে,সেখানে ভারতচন্দ্রের কাব্যের রুশ অনুবাদ করেছেন৷

শুধু এটুকু বলা যায় বাংলাকে গভীরভাবে ভালবেসেছিলেন লেবেদেফ,তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি বাঙালিকে বাংলা থিয়েটারে বাংলা ভাষায় নাটক দেখার অবাধ সুযোগ করে দিয়েছিলেন৷

তথ্যসূত্র : বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত,অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়

]]>
কাশীশ্বরী স্কুলের ‘আগুনপাখি’ হাসান আজিজুল হক জীবনভর ‘বর্ধমানিয়া’ https://ekolkata24.com/uncategorized/legendary-bangladeshi-writer-hasan-azizul-huq-diad Mon, 15 Nov 2021 17:24:49 +0000 https://ekolkata24.com/?p=11432 প্রসেনজিৎ চৌধুরী: দেশভাগ হয়ে গিয়েছিল। তবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যাতায়াত বেশ চলছিল। বিশেষত পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে। দেশ দ্বিখন্ডিত হওয়ার সুবাদে পশ্চিমবঙ্গের বহু পরিবার পাড়ি জমায় পূর্ববাংলায়। ‘৪৭ সালের অনেক পরেও আরও অনেকে গিয়েছেন। তেমনই ওপার থেকে এসেছেন বহু। প্রয়াত সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক তেমনই এক ‘বর্ধমানিয়া’।

সোমবার রাতে (১৫.১১.২০২১) বাংলাদেশের নন্দিত সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক প্রয়াত হলেন তাঁর বাসভবন রাজশাহীর ‘উজান’ ভবনে। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতি মহল। পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য মহলেও শোক ছড়িয়েছে। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন তিনি।

legendary bangladeshi writer Hasan Azizul Huq diad

হাসান আজিজুল হকের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। তৎকালীন বর্ধমান জেলার (এখন পূর্ব বর্ধমান) মঙ্গোলকোটের যবগ্রামে। সেই সুবাদে তিনি জীবনভর ‘বর্ধমানিয়া’। জীবদ্দশায় ভিটের টানে নাড়ির টানে বারবার এসেছেন পৈত্রিক ভিটে যবগ্রামে। কিংবদন্তি সাহিত্যিক ছিলেন এই জেলার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মহারানী কাশীশ্বরী বিদ্যালয়ের ছাত্র। জেলার কাটোয়া, মঙ্গোলকোটের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ ছিল।

১৯৫৪ সালে কাশীশ্বরী বিদ্যালয় থেকেই হাসান আজিজুল হক ম্যাট্রিক পাশ করেন। এর পরেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তানে। সেখানেই খুলনা ও রাজশাহী থেকে পরবর্তী শিক্ষাজীবন। তারপর রাজশাহীতেই থিতু হন তিনি।

বাংলাদেশ যখন তার স্বাধীনতার লড়াই শুরু করে। সেই ঝঞ্ঝাময় রাজনৈতিক পরিবেশে হাসান আজিজুল হকের কলম পাকিস্তানের সামরিক আইন ও দমননীতির বিরুদ্ধে সচল হতে থাকে। বাঙালি মনন চিন্তনের উপর যে আঘাত তৎকালীন পাকিস্তান সরকার নামিয়েছিল তার বিরুদ্ধেই সরব ছিলেন হাসান আজিজুল হক। তবে যে উপন্যাসের কারণে তিনি স্মরণীয় সেই আগুনপাখি প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে।

আগুনপাখি লেখকের সঙ্গে বর্ধমানের কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ জীবনের সংযোগ ছিল নিবিড়। সেই টানেই পুরনো জীবন খুঁজতে বারবার এসেছেন বাংলাদেশের এই নন্দিত লেখক।

<

p style=”text-align: justify;”>১৯৭০ সালে ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা একাডেমি পুরষ্কার পান। ১৯৯৯ সালে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বচ্চো অসমারিক পুরষ্কার একুশে পদক পান। তাঁর প্রয়াণে শেষ হলো বাংলা সাহিত্য মহলের একটি পর্ব। এই তালিকায় কাজী নজরুল ইসলামের পর বর্ধমানিয়া হিসেবে তিনিই সম্ভবত শেষ ব্যক্তিত্ব।

]]>
গাড়িতে যেন নতুন করে পেট্রোল-ডিজেল দেওয়া হয়েছে: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় https://ekolkata24.com/uncategorized/interview-of-sanjib-chattopadhyay Sun, 07 Nov 2021 06:23:57 +0000 https://www.ekolkata24.com/?p=10586 সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের সুপরিচিত নাম। ১৯৩৬ সালে কলকাতায় জন্ম। মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং হুগলি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক। বহু উপন্যাস, ছোটগল্প ও প্রবন্ধের রচয়িতা। তাঁর রচনায় হাস্যরসের সঙ্গে তীব্র শ্লেষ ও ব্যঙ্গ মেশানো থাকে– এটাই তাঁর লেখার বৈশিষ্ট। ছোটদের জন্য লিখেছেন অনেক। ‘লোটাকম্বল’ তাঁকে তুমুল জনপ্রিয়তা দিয়েছে। ‘শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন’ বইয়ের জন্য ২০১৮ সালে পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। সেই সময় এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় বরাহনগরে লেখকের বাসভবনে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অরুণাভ রাহারায়

অরুণাভ: সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেলেন। কেমন লাগছে?
সঞ্জীব: প্রশ্নটা খুব স্বাভাবিক। হ্যাঁ ভালোই লাগছে। বেশ একটা কেমন কেমন লাগছে। এ প্রসঙ্গে বলি– এতকাল হাতুড়ে চিকিৎসক ছিলাম তো; এবার যেন পাশকরা ডাক্তার হলাম আর কি! এর আগে অনেকেই বলতো কী কী পুরস্কার পেয়েছেন? দুঃখের সুরেই বলতাম কোনো বড়ো পুরস্কার তো পাইনি! আসলে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকের কথাই সকলে শুনবে; এমন এক ট্রেন্ড আছে চিরকালই। এই পরিসরে এক মজার কাহিনি বলি। আমি এক জ্যোতিষীকে বলি আপনি তো বলেছিলেন, আমি মস্ত বড়ো পুরস্কার পাব! কোথায়? তখন তিনি বলেন, একজনের কুষ্টি দেখে বলেছিলাম– তুমি লটারিতে বড়ো পুরস্কার পাবে। সে গিয়ে পাড়ার লটারিতে এক টাকার লটারি কেনে এবং প্রথম পুরস্কার পায়। সেই পুরস্কার ছিল এক নাগড়ি গুড়! আমারও নাকি এমনই হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তুমি পাড়ার দুগ্গাপুজোয় বিচারক হয়ে গিয়ে গলায় একটা ব্যাচ ঝুলিয়ে ঘুরেছো। এতে তোমার বড় পুরস্কারের ভাগ্য নষ্ট হয়েছে! তারপর ভাবলাম পুরস্কার পাওয়ার জন্যই লিখতে হয় বুঝি!

অরুণাভ: লেখালিখির বাইরে আপনার অবসর যাপন….
সঞ্জীব: কলকাতায় এই বাড়িতে আসার পর এখানে অনেক বড় বড় গাছের সমাহার দেখা যেত! আমি এবং আমার পিতৃদেব মাটির চালুনিতে চেলে সহজেই ভূমিজাত কিছু গাছ লাগিয়েছি। এরপর কৃষ্ণচূড়া, আম, চেরি গাছ! পরবর্তীতে কেটে ফেলতে হয়! আগে মরশুমি ফুলের প্রস্ফুটনে পুরো বাগান ফুলে ছয়লাপ হয়ে যেত। এখন বাড়িতে একা হয়ে যাওয়ায় তেমন পরিচর্যা করা হয় না। এক টব এখান থেকে ওখানে সরিয়ে কেবন টব স্থানান্তরের খেলা চলে। বর্ষায় এই সব টব জলে টুইটুম্বর হয়ে যায়। এই সব গাছ এক এক স্মৃতি। বাগানে একটা গুলঞ্চ গাছ আছে। আমার বাবা গঙ্গার জল থেকে তার ডাল পুঁতেছিলেন। সেটা এখনও আমাদের বাড়িতে আছে।

অরুণাভ: আপনার কি মনে হয় সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেতে অনেক দেরি হয়ে গেল?
সঞ্জীব: এই আক্ষেপটা আমার পাঠক-পাঠিকাদের। যারা আমার লেখা ভালোবাসে। আমি এক বিষয় আবিস্কার করলাম, আমি মহানন্দে শুধুই লিখে গিয়েছি। সেই লেখা পাঠক-পাঠিকাদের হৃদয় জয় করেছে। তাই পুরস্কারের চিন্তা ছিল না। কিন্তু এই যে পুরস্কার এল, যেন এক প্রবল উচ্ছ্বসের মতো! পুরস্কার ঘোষণার পর সারারাত কিছু সময় ঘুমিয়েছি। যারা আরও কম বয়সে এই পুরস্কার পেয়েছে, সেই পুরস্কারে এখন ঘুণ ধরে গিয়েছে। ঘুণ ধরেছে লেখকের কর্মজীবনেও। সাহিত্য আকাদেমি পাওয়ার পর আমার মনে হল গাড়িতে যেন নতুন করে পেট্রোল-ডিজেল দেওয়া হয়েছে। এবার উদ্যোম গতিতে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেব। হ্যাঁ, এটাই আমার বড়ো পাওয়া। বেলুড় মঠের মহারাজ এই দেরি প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন। আমি বলি, মহারাজ দেরি হওয়াই ভালো। আসলে জীবনের শেষ ভাগটা খুব শুকনো। বন্ধুবান্ধবহীন জীবনে একাকীত্ব চলে আসে। শেক্সপিয়ার বলেছেন, suns shine, sun steingth, suns availability. গৃহবন্দি জন্তু হয়ে যাওয়ার মুহূর্তে এই পুরস্কারটা এলো। আমি ঠাকুরমা স্বামীজিকে বিশ্বাস করি, তাঁরাই হয়তো এটা আটকে রেখেছিল এতদিন…

অরুণাভ: শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতায় আছে, ‘দেরি করে যে এসেছে, ইচ্ছে করে ভালোবাসি তাকে।’ ব্যাপারটা তেমনই তো?
সঞ্জীব: হ্যাঁ একদম। আর দেরি করে যে এসেছে সে তো যুবতী নারী, বৃদ্ধা নয়। সেই নতুন প্রেম, নতুন করে ভালোবাসা…..

অরুণাভ: আপনার লেখায় ও জীবনে রামকৃষ্ণ, সারদা মা এবং স্বামীজির প্রভাব প্রভাব লক্ষ্য করা যায়
সঞ্জীব: এ এক মস্ত বড়ো গল্প। আমি স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে পাশ করে অবসর সময়ে দর্শনের অনেক বই পড়তে লাগলাম এক সময়। তার মধ্যে ছিল, ভ্যান গখের মতো দার্শনিকদের বইও। আমাদের বাড়িতে এমন শিক্ষা দেওয়া হত, যা কিছু পড়বে, পরে যেন সেটা কাজে লাগে। সেই ভাবনায় দীক্ষিত হয়ে আমি জীবনের প্রথম লেখা লিখলাম ‘মানুষ’। যার প্রথম লাইনই ছিল ‘Man is a biped without wings’। মানুষ কে যতই দেবতা করে দেখানো হোক না কেন, আসলে সে এক জন্তু! সেই লেখা রামকৃষ্ণ মিশনের কাগজ ‘উদ্বোধন’-এ পাঠাই। কিছু দিন বাদে একটি চিঠি পেলাম। তাতে আমাকে দেখা করতে বলা হয়েছে। আমি গিয়ে সম্পাদক মশাইয়ের সঙ্গে দেখা করি। উনি তো আমাকে দেখে হেসে অস্থির। আমি ভাবছি, এত খারাপ লিখেছি যে আমাকে ডেকে এনে উনি বুঝি হাসছেন! তাঁকে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম– কী ব্যাপার? উনি বললেন, তোমার প্রবন্ধ পড়ে মনে হল, তোমার বুঝি অনেক বয়স! বড় বড় চুল থাকবে, চোখে বড় লেন্সের চশমা। কিন্তু এ তো দেখছি ছোট ছেলে! এর পর তাঁর সঙ্গে সখ্য তৈরি হল। সেই আমার এই জগতে প্রবেশ। এরপর দেওঘর বিদ্যাপীঠে পড়াতে গেলাম। সেখানে যাওয়ার কারণ অবশ্য ছিল। আমি সন্ন্যাসী হতে চেয়েছিলাম। সে সময় এক সমস্যাও হল। কারণ, বাড়িতে বাবা ছাড়া কেউ নেই। তিনি আমার এই সিদ্ধান্ত কীভাবে নেবেন? আমার গুরুদেব বললেন, তুমি যদি বলে সন্ন্যাসী হব, তা হলে উনি হয়ত আহত হবেন। তুমি বরং বলে, ওখানে শিক্ষকতা করবে। আমি সেই মতো ওনাকে জানিয়ে দেওঘর গেলাম। কিন্তু সন্ন্যাসী হওয়া আমার আর হল না। ঢুকে পড়লাম লেখার জগতে। এই পরিবেশে আসার আগে আমাকে অনেক চাকরির গন্ডি পার হতে হয়েছে। আমাকে একজন বলেছিলেন, তুমি যত পড়বে, ততো পরিশীলিত হবে। ভালো ভালো সাহিত্য পড়লে বুঝতে শিখবে। আর সব শেষে তোমার সাহিত্যযাপনে যেন কান্না থাকে…।

অরুণাভ: সেই কান্না ছাপিয়ে আপনার লেখায় এত হাসি…
সঞ্জীব: পৃথিবীতে যখন এসেছিলাম তখন ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদেছিলাম। আর যে শিশু জন্মানোর পর কাঁদে না তাকে নিয়ে সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করে। তখন তাকে কাঁদানোর জন্য পিঠে চাপড় দেওয়া হয়- একটু কাঁদ বাছা। এক্ষেত্রে তুলসী দাস বলছেন, তুলসী যাব যগ মে আয়ো, তুলসী রোয়ে জাগ হাসে! সবাই তো খুশি ছেলে হয়েছে, ছেলে হয়েছে। কিন্তু তুলসী যগ মে যায়ো, তুলসী হাসে যগ রয়ে। অর্থাৎ তুমি জীবনটাকে এমন করো যাতে সবাই কাঁদে। এই দোঁহাই আমার জীবনে কাজে লেগেছিল। আর চারদিকে তাকাই, তখন যতই গণতন্ত্র-প্রজাতন্ত্রের বুলি আওরালেও জগতে একটা কথা আছে Have’s ও Havesn’t. মানে এক শ্রেণীর মানুষ খেয়ে শেষ করতে পারছে না, আর এক শ্রেণীর মানুষ দু’বেলা খেতেই পারছে না। আর যারা খেয়ে শেষ করতে পারছে না, তারাই গণতন্ত্রের মাথায় বসে আছে। তাদের মুখে বড় বড় কথা। এক্ষেত্রে আরও এক কথা বলি। আমি প্রচুর শ্রুতি নাটক করতাম। তুলসী রায় ছিলেন সেসব শ্রূতি নাটকে, এইসব নাটক রবীন্দ্রসদন, মহাজাতি সদন, নিরঞ্জন সদন-সহ বিভিন্ন জায়গায় হত। একদিন নাটক শেষে বললেন, আপনি আজ তেমন হাসাতে পারেননি! রাগান্বিত হয়ে বলে ফেললাম– আজকে আমি হাসাতে আসিনি। কাঁদাতেই চেয়েছি। মোহিত লাল মজুমদারের কবিতা বলতে ইচ্ছে করছে, যত ব্যথা পাই তত গান গাই– গাঁথি যে সুরের মালা! ওগো সুন্দর! নয়নে আমার নীল কাজলের জ্বালা! এই লাইনের মতো সবাই আমাকে বলে বসল– তুমি বাংলা সাহিত্যের চার্লি চ্যাপলিন।

অরুণাভ: আপনি প্রথম জীবনে সন্ন্যাসী হতে চাইলেও জীবন আপনাকে করে তুলল বাংলা সাহিত্যের চার্লি চ্যাপলিন! এখন প্রতিদিনই আপনাকে বিভিন্ন সাহিত্যের অনুষ্ঠানে যেতে হয়। এ ছাড়া কলেজ স্ট্রিটের কাছে ঝামাপুকুর লেনে রামকৃষ্ণ সংঘে আপনি নিয়মিত পড়াতে যান। সেই যাপনের কথা কিছু বলুন…
সঞ্জীব: আমি কখনওই ইচ্ছে করে কোনও অনুষ্ঠানে যেতাম না। জোর করে অনেকে নিয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে আমার জীবনে ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য উদ্বোধন পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক স্বামী অব্জজানন্দ বলেন সাহিত্যিকদের লেখায় ঠাকুরের কথা লিখে সাধারণ মানুষদের আকৃষ্ট করতে হবে। তারপর দীর্ঘ ষোল বছর সেই পত্রিকাতে ‘পরমপদকমলে’ বিভাগে লিখেছি ঠাকুর রামকৃষ্ণের কথা। যা দিয়ে আমার সারা জীবন ধরে রামকৃষ্ণকে নিয়ে লেখা। পরে বই হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে। শুনেছি সেই বই বেস্টসেলার হয়েছে। আমি সেই বইয়ে রামকৃষ্ণের কথা লিখেছি। তাঁর মুখ দিয়েই তাঁকে কথা বলিয়েছি। যেমন ‘শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন’ বইয়েও করেছি। আমি তাঁকে প্রশ্ন করেছি আপনি যেসব বলে গিয়েছেন, এখন জীবন পাল্টেছে; আমরা এখন কী করব? আপনি বলে দিন। আমি ঠাকুরকে মহাঅবতার না করে, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছি। আর আমার এই আঙ্গিকই শ্রোতাদের মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।

]]>