নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা শরণার্থী আন্তর্জাতিক পরিচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে (Mohib Ullah) গুলি করে খুনের ঘটনায় উঠে আসছে জঙ্গি সংযোগ। এই খুনের ঘটনায় উদ্বেগ জানাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার। মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিমকেন জানান মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও চিন্তিত। চিন্তিত রাষ্ট্রসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (UNHCR)।
নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর পরিবারের অভিযোগ, মায়ানমার সরকার আরসা আরসা(ARSA)জঙ্গিদের মদতে এই খুন করিয়েছে। কারণ, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে এই জঙ্গি সংগঠনের অনেকেই ভুয়ো পরিচয় নিয়ে আছে। অভিযোগ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে রাতে জঙ্গি সংগঠন ও বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় থাকে।
মুহিবুল্লাহ চট্টগ্রাম বিভাগের কুতুপালং শিবিরে থাকতেন। তিনিও মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযান ও গণহত্যা শুরু হতেই লক্ষ লক্ষ শরণার্থীদের মিছিলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ (পূর্বতন আরাকান) লাগোয়া। মানবাধিকার রক্ষায় লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশ সরকার আশ্রয় দেয়। ঢাকার অভিযোগ, তাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে নোবেল জয়ী নেত্রী সু কি নেতৃত্বে চলা সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। আর বর্তমান মায়ানমারের সামরিক সরকারও পদক্ষেপ নিচ্ছেনা।
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর বিষয়ে মুহিবুল্লাহ উদ্যোগী হন। এই বিষয়ে তিনি রাষ্ট্রসংঘ ও তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিবিসি জানাচ্ছে, চট্টগ্রামের কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে এই খুনের তদন্ত করছে কক্সবাজারের পুলিশ। সন্দেহজনক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তদন্তে উঠে আসছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা সংগঠনের নাম। কক্সবাজার, টেকনাফ সহ চট্টগ্রামে এই জঙ্গি সংগঠনটি সক্রিয়। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই (ISI) মদতে করাচির বাসিন্দা পরে সৌদি আরবে চলে যাওয়া জঙ্গি নেতা আতাউল্লাহ আবু আরসা তৈরি করে। মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের মধ্যে পাকিস্তানের জঙ্গি জাল ছড়ানোর জন্য আরসা গঠন করা হয় ২০১৩ সালে।
মায়ানমারের সেনার হামলায় রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু হতেই বাংলাদেশের দিকে চলে আসা লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর মধ্যে আরসা জঙ্গিরা নিজেদের মিশিয়ে নেয়। কক্সবাজার পুলিশের বেশ কয়েকটি অভিযানে আরসা জঙ্গিদের অস্তিত্ব প্রকাশ হয়েছে।