নিউজ ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের উত্তরাঞ্চলে তিন সপ্তাহ ধরে চলা দাবানলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ ওরেগনে ভয়াবহ দাবানলে চারশ’টিরও বেশি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে৷ পুড়ে গিয়েছে ৩৪০টি যানবাহন৷
তিন সপ্তাহ ধরে চলা এই দাবানল চার লক্ষ ১০ হাজার ৭৩১ একর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, যা পুরো এলাকার ৫৩ ভাগ৷ ১৬১ টি বাড়ি এবং ২৪৭টি বাণিজ্যিক ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে৷ চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস৷ ফলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে৷
ন্যাশনাল ইন্টারএজেন্সি ফায়ার সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এই বছর যুক্তরাষ্ট্রে যত দাবানলের ঘটনা ঘটেছে তাতে ২৮ লক্ষ ২০ হাজার একর এলাকা আগুনের কবলে পড়েছে৷ এর বেশিরভাগই পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে৷ পুড়ে গিয়েছে ১৫ লক্ষ একর এলাকা৷ ১২টি অঙ্গরাজ্যে ৭৯টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে এ বছর৷
এ সপ্তাহে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় দু’টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে৷ ডিক্সি এবং ফ্লাই ফায়ার্স৷ এর ফলে লাসেন এবং প্লামাস ন্যাশনাল ফরেস্টে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে৷ রাজ্যের ইতিহাসে এটিকে ১৫তম ভয়াবহ দাবানল বলা হচ্ছে৷ দুটি কাউন্টির অন্তত আট হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ দাবানলে দুই লক্ষ ৮ হাজার একর এলাকা পুড়ে গিয়েছে৷
দাবানলের প্রভাব পড়েছে বাতাসে৷ ভবন, যানবাহন পোড়ার ধোঁয়া আর ছাইয়ের কারণে বাতাস দূষিত হয়ে পড়েছে, জারি করা হয়েছে সতর্কতা৷ ৪ কোটি মানুষ ‘হিট অ্যালার্টের’ মধ্যে রয়েছেন৷
প্লামাস কাউন্টির শেরিফের অফিস থেকে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ বারবার বলা হচ্ছে, এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য৷ স্থানীয় শেরিফ বলছেন, ‘‘এই ধোঁয়া অ্যাসিডের মতো৷ আপনার ফুসফুস পুড়িয়ে দেবে৷ অক্সিজেনের মাত্রা অনেক কমে গিয়েছে এখানে৷’’
এই ফরেস্টের সুপারভাইজার ক্রিস কার্লটন জানিয়েছেন, ‘‘অনেক মানুষ ঘর-বাড়ি হারিয়েছেন৷ ডিক্সি ফায়ারের ভয়াবহতা এমন যে, ৮২ মাইল দূর থেকেও তা দেখা গিয়েছে৷ ’’
ভয়াবহ এই দাবানল নিয়ন্ত্রণে দমকলকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে৷ একদিকে আগুনের ভয়াবহতা, অন্যদিকে গাছগুলো হঠাৎ করে পড়ে যাচ্ছে, সেগুলো সরানো এবং সেগুলোর হাত থেকে নিজেদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ছে দমকলকর্মীদের৷