নিউজ ডেস্ক: গত কয়েক বছর ধরেই চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তানের ইমরান খান-সরকার৷ সংকট কাটাতে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ভাড়া দেওয়ার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে৷ কিন্তু তাতেও সরকারকে দেউলিয়াপনা থেকে উদ্ধার করতে পারছে না ইমরান খান৷ তাই এবার গাঁজা চাষে মন দিয়েছেন তিনি ও তাঁর সরকার৷
পাকিস্তান সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শিল্পের জন্য বৃহদাকারে গাঁজা চাষের অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তান সরকার৷ এর মাধ্যমে আগামী তিন বছরে ১০০ কোটি ডলার আয়ের সম্ভাবনা দেখছে ইমরান খানের সরকার৷
অনেকের কাছে মাদক হিসেবে পরিচিত হলেও, চিকিৎসায় গাঁজা ব্যবহার হচ্ছে যুগ-যুগান্ত ধরে৷ ওষুধ শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে রয়েছে গাঁজার ব্যাপক চাহিদা৷ বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল মার্কেট ইনসাইটের গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বে গাঁজার বৈধ বাজারের আকার ৫৯ হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে৷
সম্প্রতি সদস্য দেশগুলোর এক ভোটাভুটির মাধ্যম গাঁজাকে চরম মাদকের তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ৷ চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় গাঁজার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয় এই সিদ্ধান্ত৷ এর আগে ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এই বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল৷
গত কয়েক বছর ধরেই মোটেই ভালো যাচ্ছে না পাকিস্তানের অর্থনীতি৷ দেশের কৃষি শিল্প পড়তির দিকে৷ রপ্তানির ৬৪ ভাগ যে তুলা থেকে আসে, ২০১৯ সালে তার উৎপাদন ২০ ভাগ কমে গিয়েছে৷ এই কারণে লোকসানে পড়ছেন কৃষকরা৷ সেই জায়গায় গাঁজা চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছে ইমরান খান সরকার৷
শিল্পে ব্যবহারের জন্য গাঁজা চাষের অনুমতি দেবে পাকিস্তান৷ গত সেপ্টেম্বরে এমন ঘোষণা করা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে৷ দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের একটি অংশ ধরতে পারলে তিন বছরে এই খাত থেকে পাকিস্তানের আয় দাঁড়াবে ১০০ কোটি ডলার৷ যেখানে গোটা আন্তর্জাতিক বাজারের আকার এখন ২৫ হাজার কোটি ডলার৷
পাকিস্তানে বসবাসরত জার্মান পরিবেশবিদ হেলগা আহমেদ একটি জার্মান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গাঁজা এমনকি খারাপ আবহাওয়াতেও সহজে চাষ করা সম্ভব৷ এর উৎপাদনে কোনও কীটনাশকের প্রয়োজন নেই৷ যার কারণে এটি পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ৷ এমনকি অল্প জমিতেও এটি যথেষ্ট জন্মে এবং তুলার চাষের চেয়ে কম জলের প্রয়োজন হয়৷
অ্যালকোহলের বিষয়ে রক্ষণশীল হলেও, পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্যানাবিস বা গাঁজা উন্মুক্তভাবেই চাষ এবং বেচাকেনা হয়ে আসছে৷ বিশেষ করে আফগানিস্তানের কাছে সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী অনেক আগে থেকেই গাঁজা চাষ করছে৷ সেসব ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল হিসেবেও কার্যকর৷