বিশেষ প্রতিবেদন: কাবুলসহ আফগানিস্তানের অধিকাংশ এলাকা তালিবানদের দখলে৷ দেশে তালিবানিরাজ কায়েম করেছে৷ তাসত্বেও এখনও এমন অনেক এলাকা আছে, যেখানে মানুষ এই ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পতাকা তুলছে। তার মধ্যে অন্যতম হল নর্দান অ্যালায়েন্সের প্রাক্তন কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদের শক্ত ঘাঁটি পঞ্জশির উপত্যকা।
আরও পড়ুন তালিবান উৎখাতে আফগান নাগরিকদের ভরসা ‘রিয়েল হিরো’ আমরুল্লাহ সালেহ
এবার পঞ্জশির দখলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করল তালিবানরা। রাজধানী কাবুলের খুব কাছেই এই উপত্যকাটি৷ এখানে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের বসবাস৷ এলাকাটি এতটাই বিপজ্জনক যে, ১৯৮০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তালিবানদের কব্জায় আসেনি এই উপত্যকাটি। এবার সেই উপত্যকার দখল নিতে মরিয়া তালিবানরা। অন্যদিকে, তালিবানদের রুখতে তৈরি নর্দান অ্যালায়েন্সও।
দিনকয়েক আগেই বিখ্যাত তালিবান-বিরোধী নেতা আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ অস্ত্র সাহায্য চেয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। জানিয়েছিলেন যে তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি তাদের আছে, কিন্তু তার জন্য আমেরিকার সাহায্য দরকার। আহমেদ মাসুদ বলেন, “আমি পঞ্জশির উপত্যকা থেকে লিখছি, আমার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করার জন্য আমি প্রস্তুত। মুজাহিদিন যোদ্ধারা আবারও তালিবানদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।”
আশরফ গনি জমানার ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহও রয়েছেন তাঁর সঙ্গে। আফগান বাহিনীর একটা অংশও যোগ দিয়েছে তাঁদের সঙ্গে। এই বাহিনীর সামনে পড়ে গত কয়েক দিনে বেশ কয়েক বার পিছু হটেছে তালিবান। সেই পঞ্জশির দখলে এ বার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে তালিবানরা। সম্প্রতি তালিবানের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা হয়েছে, ‘পঞ্জশিরের স্থানীয় প্রশাসন শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করছে রাজি হয়নি। তাই ইসলামিক আমিরশাহির শতাধিক মুজাহিদিন সদস্য পঞ্জশির দখলের জন্য যাচ্ছে।’
অন্যদিকে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকেরা পঞ্জশিরে জড়ো হচ্ছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। প্রয়াত আহমেদ শাহ মাসুদের স্বপ্ন পূরনে মরিয়া তাঁরা। আহমেদ মাসুদও এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পূর্বতন আফগান সরকারের বহু সেনা পঞ্জশিরে এসেছেন। তালিবানদের মোকাবিলা করার জন্য নর্দান অ্যালায়েন্স এবং অন্যান্যরা তৈরি।’’
আফগানিস্তানের পঞ্জশির এলাকার ভৌগোলিক কাঠামো এমন যে, কোন সেনাবাহিনী এই এলাকায় প্রবেশ করার সাহস দেখাতে পারে না। চারদিকে উঁচু পাহাড় দিয়ে ঘেরা এই অঞ্চলের মাঝখানে সমতল ভূমি রয়েছে। সেখানকার গোলকধাঁধা সবার জন্য সহজ হয় না৷ কার্যত গোটা দেশ দখলের পর এই এলাকায় বাধা পেয়েছে বিপজ্জনক তালিবানরা। এবার আগামী কয়েকদিনে তারা এই এলাকা দখল করতে পারে, না নর্দান অ্যালায়েন্স নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েম রাখে সেদিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।