নিউজ ডেস্ক: বছর কুড়ি আগে আমেরিকার ট্যুইন টাওয়ার ধ্বংস করে আফগানিস্তানের তালিবানরা৷ তারই প্রতিশোধ নিতে রাতারাতি আফগানিস্তানে ওসামা বিন লাদেনের তালিবান জঙ্গিদের নিকেষ অভিযান শুরু করে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ৷ দুই দশক পরে আফগানিস্তানে তালিবানদের সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করে পাতাতাড়ি গুটিয়ে দেশে ফিরছে মার্কিন সেনাবাহিনী৷
৯/১১ হামলার পরে আফগানিস্তানে প্রথম সেনা পাঠান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। তিনি জানিয়েছিলেন, এ হল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই। তালিবানদের সঙ্গে যুদ্ধ করেও আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বার করতেই বহু বছর সময় লেগে গিয়েছে মার্কিন সেনার। শেষপর্যন্ত পাকিস্তানে তাকে হত্যা করা হয়। আফগানিস্তানে বহু তালিবান নেতার মৃত্যু হয়েছে মার্কিন সেনার হাতে।
গত প্রায় বিশ বছরে শুধু আফগানিস্তানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ন্যাটো বাহিনীর মৃত্যু হয়েছে। যার অধিকাংশই মার্কিন। ৪৭ হাজার আফগান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ৬৬ হাজার আফগান সেনা মারা গিয়েছেন। লক্ষাধিক আফগান নাগরিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা। যুদ্ধের চিহ্ন সর্বত্র। আর্থ-সামাজিক দিক থেকেও দেশটির অবস্থা ভয়াবহ।
এতদিন যুদ্ধের পর বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আর যুদ্ধ নয়৷ অগাস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সেনা ফেরত আনা হবে। আফগানিস্তানের দায়িত্ব আমেরিকা আর নিতে পারবে না।
মার্কিন সেনা ফিরতে শুরু করার পরেই ফের আফগানিস্তানের দখল নিতে শুরু করেছে তালিবান। আফগানিস্তান কার্যত গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি।
আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করা মার্কিন সেনাদের একাংশ বলছেন, এটা আসলে আমেরিকার হার। ২০ বছরেও যুদ্ধ জয় করতে পারেনি আমেরিকা। কেউ কেউ এই হারকে ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা করছেন। তাদের দাবি, ভিয়েতনাম থেকেও শেষ পর্যন্ত মার্কিন সেনাকে ফিরে আসতে হয়েছিল। আফগানিস্তানেও তাই হল।
তাদের দাবি, ভিয়েতনামের মতোই আফগানিস্তানে আমেরিকার কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না। কিছু নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সার্বিক পরিবর্তন ঘটানো যায়নি। নতুন করে আবার তালিবানরা আফগানিস্তানে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে শুরু করেছে৷