নিউজ ডেস্ক: কী হবে এবার? বিদ্রোহী বিধায়কদের চাহিদা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী বদল নাকি পুরো বিজেপিটাই পড়ে যাবে-দুটি প্রশ্ন নিয়েই টালমাটাল ত্রিপুরা। আগরতলার কৃষ্ণনগরে বিজেপির প্রদেশ কার্যালয়ের সামনে যেন হাজির হয়েছে আশঙ্কার বুলডোজার।
সোমবার সন্ধের পরেই মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ, শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ সহ মন্ত্রিসভার বিপ্লব শিবিরের সবাই মুখ ভার করে ঢুকেছেন বৈঠকে। আগরতলায় এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক দিলীপ সইকিয়া। তাঁর উপস্থিতিতেই বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রবিবার দল ও সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নেতা সংস্কারপন্থী সুদীপ রায় বর্মণ। তাঁর উদ্যোগে আগরতলায় বিরাট সমাবেশ হয়। তাতে যোগ দেন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক ও সমর্থকরা। মঞ্চ থেকেই সুদীপবাবু সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন, শেষ সুযোগ দিচ্ছি। শুধরে যান। কর্মীদের কথা শোনা হোক দলে। নতুবা চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সুদীপবাবুর হুমকির পরেই প্রবল আলোড়ন ছড়ায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যতম বাংলাভাষী রাজ্য ত্রিপুরায়। গুঞ্জন, সুদীপবাবু ফের তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরবেন। তবে তিনি এই বিষয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু তাঁর হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ইঙ্গিত। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বনাম সুদীপ রাযবর্মণের সংঘাত চলছেই।
ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের দাবি, যে কোনও দিন সরকার পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে সুদীপ রায়বর্মণ নেবেন মুখ্য ভূমিকা। রাজ্যে সংস্কারপন্থী বিধায়কদের তিনিই নেতা। বিজেপির অভ্যন্তরে বিদ্রোহের ছায়া ক্রমে লম্বা হচ্ছে।
বিধানসভায় বিরোধী দল সিপিআইএম। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী নেতা মানিক সরকারের দাবি, বিজেপির অ-গণতান্ত্রিক রাজনীতি রাজ্যে অসহনীয় পরিবেশ তৈরি করেছে। নির্বাচনে তাদের পতন নিশ্চিত। শক্তি প্রদর্শন করতে বিলোনিয়া, ধর্মনগর, সাব্রুম, আগরতলায় বড়বড় মিছিল করছে বামেদের শাখা সংগঠনগুলি।
পশ্চিমবঙ্গে তিনবার ক্ষমতা ধরে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস এবার ত্রিপুরায় ঝাঁপাচ্ছে। গত বিধানসভা ভোটের আগে তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়করা দলত্যাগ করে প্রথমে তৃণমূলেই গিয়েছিলেন। তাঁরা পরে বিজেপি হন। ভোটে বিজেপি জোট সরকার গড়ে। ২৫ বছরের বাম সরকার পড়ে যায়। আগামী বিধানসভা ভোটের আগে ফের সেই বিধায়কদের বিদ্রোহ যেন বুলডোজার হয়ে সবকিছু গুঁড়িয়ে দিতে তৈরি।