বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাওয়া বদলানোর আভাস মিলেছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। কিন্তু সে সব এখন ইতিহাসের পাতায়। ২ মে লেখা হয়ে গিয়েছিল উপসংহার৷ সেই শুরু। ক্রমে ধ্বংসের পথে পদ্ম-কানন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের কথা বলে চমক দিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)। দেশের নাগরিকদের একাংশ ছিলেন এই আইনের পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। বিজেপির প্রতিশ্রুতি যে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। শান্তনু ঠাকুররাও আটকা পড়েছিলেন ‘শাহী’ ফাঁসে। দিনের পর দিন কেটে গেলেও বাস্তবায়িত হয়নি প্রতিশ্রুতি। ধৈর্য্য ক্রমে পৌঁছাচ্ছিল অন্তিম সীমায়। ড্যামেজ কন্ট্রোলে শান্তনুকে নিয়ে আসা হল প্রধানমন্ত্রীর ক্যাবিনেটে। কিন্তু তাতেও কি হবে শেষরক্ষা? প্রশ্ন উঠছে কারণ তিনি লেফট করেছে বিজেপির সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপির প্রতি বিদ্রোহের ইঙ্গিত।
গ্রুপ ছাড়ার পর মঙ্গলবার দলের মতুয়া বিধায়কদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন শান্তনু। হাজির ছিলেন সুব্রত ঠাকুর, অশোক কীর্তনীয়া, অসীম সরকার, অম্বিকা রায় এবং মুকুটমণি অধিকারী, আশিস বিশ্বাস এবং বঙ্কিম ঘোষেরা। এনারা সকলেই বিজেপি বিধায়ক। অসীম সরকার বলেছেন, “ঠাকুরমশাইকে আমরা মানি”।
বনগাঁর সাংসদের পর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়। খড়গপুর থেকে জয় পাওয়ার পরেও তিনি হয়েছিলেন বেসুরো। এবার গ্রুপ লেফট। বৃহস্পতিবার সকালে খবর মিলল, দলত্যাগ করেছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিজেপি মহিলা মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি তনুশ্রী রায়। গেরুয়া শিবিরে অন্তর্দ্বন্দ এখন চরমে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। দল ছাড়ার পর তাঁর বক্তব্য, ‘বিজেপির চলন বাঁকা’।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে একে একে পদ্ম শিবিরে গিয়েছিলেন হেভিওয়েটরা। ফল প্রকাশের পর হল উল্টোটা। ঘরওয়াপসির পালা। মুকুল রায় পর্যন্ত বড় পদ ছেড়ে ফিরলেন পুরনো দলে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর রাজীবও ফিরলেন তৃণমূলে। সব্যসাচী দত্তও বন্ধু মুকুলের পাশে। সৌমিত্র খাঁ বহুবার প্রকাশ্যে করেছেন দলের সমালোচনা। ক্রমেই যেন ম্লান হচ্ছে সাধের পদ্ম-কানন।