News Desk: রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেওয়া ধ্যানমগ্ন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আচমকা সক্রিয়তায় ‘আত্মহারা’ বাম মহল। রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়েছে তাঁর একটি ফোনকল নিয়ে। বাম মহল তথা সিপিআইএমের মধ্যেই প্রশ্ন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পরাজয় মানতে না পেরে গৃহবন্দি জীবন বেছে নিয়েছেন, অসুস্থ হয়ে আরও নিষ্ক্রিয় তিনি হঠাৎ কোন জাদুমন্ত্রে রাজনৈতিক বিষয়ে ফের নাক গলাতে শুরু করলেন।
যাবতীয় ঘটনার কেন্দ্রে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে আরও এক বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের ফোনালাপ। শিলিগুড়ি পুর নিগমের ভোটে অশোকবাবুকে নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেকথা ‘পাব্লিকলি’ জানাতেই রাজ্য জুড়ে শোরগোল। আহ্লাদে আটখানা সিপিআইএম।
লোকসভা ও বিধানসভার ভোটে ঐতিহাসিক শূন্য প্রাপ্তির পর কলকাতা পুর নিগমের ভোটে ততোধিক নজরকাড়া পরিসংখ্যান নিয়ে ফের হাজির বামেরা। একধাক্কায় বিরোধী দল বিজেপির থেকে ভোটের নিরিখে উপরে বামফ্রন্ট। কার্যত কলকাতায় বামেরা এখন বিরোধী দল হিসেবে চিহ্নিত। তবে তাদের সংগ্রহে দুটি ওয়ার্ড!
এই ফলাফলেই কি রাজনৈতিক ঘুম ভাঙল বুদ্ধদেববাবুর? প্রশ্ন এখানেই। বামপন্থী নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের বড় অংশ মনে করছেন, শিলিগুড়িতে সিপিআইএমের পক্ষে পুরবোর্ড গড়ার বড় সম্ভাবনা। তৃণমূল জমানাতেও বামেরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে বোর্ড চালিয়েছে। আসন্ন পুর নিগমের ভোটে তাই শিলিগুড়ি দখল করতে অশোক ভট্টাচার্যের উপরেই দায়িত্ব দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভার ভোটে শিলিগুড়িতে প্রবল উদ্দিপনা জাগিয়েও আসনটি ধরে রাখতে পারেননি প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। পরাজিত হয়েই পুর নিগমের পুর প্রশাসকের দায়িত্ব ছেড়ে দেন। চটজলদি সেই পদে গৌতম দেবকে বসিয়ে দেন মু়খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা ভোটের হিসেবে না বাম না তৃণমূল কংগ্রেস বরং শিলিগুড়ি চলে গিয়েছে বিজেপির দখলে। অশোকবাবুর রাজনৈতিক শিষ্য শংকর ঘোষ বিধায়ক হয়েছেন। তিনিই পুর নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বে নাকি তৃ়নমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন তাই নিয়ে প্রবল চর্চা।
ভোট বিশ্লেষকদের মতে আসন্ন পৌর ভোট ও পুরনিগমগুলির নির্বাচনে বিরোধী দল বিজেপির ছন্নছাড়া পরিস্থিতির মাঝে নতুন করে বামেদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। সেই সুযোগ নিতে বামেরা কতটা তৈরি তা স্পষ্ট নয়। তবে প্রাক্তন মু়খ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ফোন ইঙ্গিত দিচ্ছে, তিনি এখনও আলোড়ন ফেলতে পারেন ।