লোকসভা, বিধানসভার নির্বাচনে যা হয় না, পঞ্চায়েত ভোটে তেমনই হলো। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করল। সাইট খুললে কিছু দেখা যাচ্ছে না বলেই অভিযোগ। বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশনের সাইট কারচুপি করে ভুয়ো ফলাফল দেখানোর চেষ্টা চলছে। তবে এটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি বলেও মনে করা হচ্ছে। এদিকে রাজনৈতিক মহলের কটাক্ষ, পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল ঘোষণার দিনই সাইট ক্র্যাশ কেন করল? এ বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে নিরুত্তর।
http://wbsec.gov.in এই ওয়েবসাইটে ক্লিক করলে ‘গেটওয়ে টাইম আউট’ তথ্য সামনে আসছে। ফলে এই ওয়েবসাইটে কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না। ভোটের ফলাফলের দিন কি তবে যান্ত্রিক সমস্যায় পড়েছে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে।
কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকে সাহায্য কী ভাবে পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কিত তথ্য, প্রার্থীদের তথ্য। এই ওয়েবসাইটটিকে সচল করতে ঠিক কী পদক্ষেপ করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়। মঙ্গলবার সকাল ৯.৩০ মিনিট পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে এসে পৌঁছননি রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা।
রাজ্যে ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচন। উল্লেখ্য, গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল বলেন, “যাঁরা আইনভঙ্গ করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।”
পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক বুথ দখলে অভিযুক্ত শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। পুনর্নির্বাচনেও চলে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ। রাজ্যে ভোট পর্বে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। মুর্শিদাবাদে সর্বাধিক নিহত।
গণনা শুরু হয়েছে। চলছে তীব্র বিশৃঙ্খলা, মারামারি। জেলায় জেলায় চলছে গণনা কেন্দ্রে সংঘর্ষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শাসক তৃ়ণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ। সংঘর্ষের মূল প্রতিপক্ষ বাম শিবির। তবে বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও হামলার অভিযোগে সরব। একাধিক জেলায় থানা ঘেরাও করছে বিজেপি। গণনা ঘিরে সংঘর্ষ তীব্র হয়েছে মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়।
গণনা শুরুর পর থেকে এই দুটি জেলাতে চলছে তীব্র বোমাবাজি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মণ্ডহারবার ও মুর্শিদাবাদের জাঙ্গিপাড়া, হরিহরপাড়াতে তৃণমূল ও বাম-কংগ্রেস জোট সংঘর্ষে তীব্র উত্তেজনার পরিস্থিতি।
গ্রাম বাংলার রায় ব্যালটবাক্স বন্দি। সেই ব্যালট গণনার সর্বশষ ফলাফল আসতে রাত হয়ে যাবে। চূড়ান্ত ফলাফল তারও পরে। তবে এসবের মধ্যে একটি প্রশ্ন ও একটি আশঙ্কা প্রবল। প্রথমত গ্রামাঞ্চলে বিরোধী পক্ষ কারা? দ্বিতীয়ত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তায় গণণা হলেও গণনা কেন্দ্রের বাইরে খুন হবে না তো?
কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে চলবে গণনা। জেলায় জেলায় রাজনৈতিক পারদ চড়ছে। ফলাফল ঘোষণার আগেই বিজয় উৎসবের বার্তা দিয়ে রেখেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নজর রেখেছেন, বিরোধীদের ভোট প্রাপ্তির দিকে। নজরে থাকছে বিধানসভায় বিরোধী দল বিজেপি নাকি বর্তমান বিধানসভায় না থাকা পূর্বতন দুই শাসক দল কংগ্রেস ও সিপিআইএম জোট-কোন পক্ষ গ্রামাঞ্চলে নিজেদের শক্তি দেখাল।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে থাকবে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার বলয়। প্রতিটি জেলায় এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সঙ্গে রাজ্য পুলিসের সশস্ত্র বাহিনী থাকবে। সিসিটিভির নজরদারিতে হবে গণনা। গণনা কেন্দ্রেও সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকছে। ভোট পরবর্তী সংঘর্ষে রক্তাক্ত পরিস্থিতির তীব্র আশঙ্কা।