বায়োস্কোপ ডেস্ক: রুপোলি জগতে তাদের সাফল্য ছিল নজির বিহীন। রঙিন ঝলমলে জগতের আড়ালে যে কতটা অন্ধকার লুকিয়ে থাকে, তা দেখিয়ে দিয়েছিল তাদের জীবন। অসংখ্য অনুরাগীদের মাঝেও তাদের জীবন জুড়ে ছিল একাকীত্ব।
আর একাকিত্বের জেরেই খ্যাতির শীর্ষে থাকার সত্বেও হঠাৎই বিষাদময় সমাপ্তি ঘটে তাদের জীবনের। নজর দেওয়া যাক এমনই কয়েকজন রুপোলি পর্দার অভিনেত্রীদের ওপর, যাদের জীবনের সমাপ্তির গল্প নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে:
১. মীনা কুমারী
শৈশবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখে মীনা কুমারি ৩০ বছর বয়সের মধ্যে অভিনয় করেছিলেন ৯০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে। সাহেব বিবি আউর গুলাম, পরিণীতা, বাইজু বাওড়া আর পাকিজার মত ছবির মাধ্যমেই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের ছাপ রেখে গিয়েছেন মীনা কুমারী। তার সবচেয়ে প্রশংসিত ছবি পকিজার মুক্তির মাত্র তিন সপ্তাহের মাথায় লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। শোনা যায়, অসুস্থ অবস্থায় এই ছবির শুটিং শেষ করেছিলেন অভিনেত্রী। এরপর হসপিটালের বিল মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকাও ছিল না তার কাছে।
২. মধুবালা
অনুরাগীদের ভালোবাসার অভাব না থাকলেও বাস্তব জীবনে প্রেমই অন্ধকারে মুরে দিয়েছিল মধুবালার জীবনকে। মধুবালা এবং দিলীপ কুমারের অসম্পূর্ণ প্রেম সম্ভবত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বেদনাদায়ক গল্প। এরপর ১৯৫৪ সাল নাগাদ তিনি কঠিন হূদরোগে আক্রান্ত হন। অসুস্থ অবস্থাতেও দীর্ঘদিন ছবির শুটিং চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে দীর্ঘ আট বছর শয্যাশায়ী অবস্থায় থাকার পর ১৯৬৮ সালে মৃত্যু হয় মধুবালার।
৩. স্মিতা পাতিল
আশির দশকে স্মিতা পাতিল ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির একজন জনপ্রিয় মুখ। ভূমিকা, অর্ধ সত্য, অর্থের মতো ছবিতে নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু রাজ বাব্বারের সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন তার অবসাদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এরপর তাদের সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে প্রসবের সময়ই মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর।
৪. পারভীন ববি
আশির দশকের অন্যতম জনপ্রিয় লাস্যময়ী নায়িকার জীবনের সমাপ্তি অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে। মহেশ ভাটের সাথে তার সম্পর্ককে ঘিরে বহুবার সংবাদমাধ্যমের তির্যক কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয় পারভিন ববিকে। তাদের সম্পর্কের ইতি ঘটার পর স্কিৎজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশ ছেড়ে নিউইয়র্ক এ চলে যান পারভিন। বহুদিন পর দেশে ফিরে এলেও জনসংযোগ বেশ এড়িয়ে চলতেন তিনি। এরপর ২০০৫ সালে নিজস্ব বিলাসবহুল বহুতল থেকে তারপর পচা গলা দেহ উদ্ধার হয়।
৫. দিব্যা ভারতী
অত্যন্ত অল্প বয়সেই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পর মাত্র দু’বছরের মধ্যেই আকাশছোঁয়া খ্যাতি লাভ করেছিলেন দিব্যা ভারতী। বালওয়ান, বিশ্বআত্মা, দিওয়ানা, শলা আউর শবনমের মতো হিট ছবিতে অভিনয় করেছিলেন নায়িকা। ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে হঠাৎই নিজের পাঁচ তলা ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে দুর্ঘটনাক্রমে পরে গিয়ে মৃত্যু হয় তার। ওই ফ্ল্যাটে তিনি তার স্বামী সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার সাথে একা থাকতেন তিনি।