নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: সেনাবাহিনীর সদস্যরা গোটা দেশের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। সেনা জওয়ানরা আছেন বলেই দেশের মানুষ নিরাপদে রাতে ঘুমোতে পারেন। সেনারা যেমন দেশের সেবা করছেন তেমনই সেনা ও তাঁদের পরিবারের উন্নতির প্রতি সমাজেরও একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। যে সকল বীর জওয়ান দেশের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ভাল রাখার নৈতিক দায়িত্ব সমাজের প্রতিটি মানুষের উপরেই বর্তায়। কারণ আমাদের মনে রাখা উচিত, দেশবাসীকে সুরক্ষা দিতে গিয়েই জওয়ানরা শহিদ হয়েছেন।দিল্লিতে সশস্ত্র জওয়ানদের এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Defence Minister Rajnath Singh)।
ওই অনুষ্ঠানে রাজনাথ স্পষ্ট বলেন, যেভাবে সেনা জওয়ানরা দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেন একই রকমভাবে আমাদেরও তাঁদের কিছু ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। আমাদেরকে সুরক্ষা দিতে গিয়েই প্রতিবছর বহু জওয়ান শহিদ হন। এই শহিদ জওয়ানদের পরিবারকে ভাল রাখার দায়িত্ব আমার-আপনার সকলের। আমাদের মনে রাখা উচিত, জওয়ানরা যদি আমাদের নিরাপত্তার দিকটি না ভাবতেন তাহলে কিন্তু তাঁরা কখনওই শহিদ হতেন না। তাঁরা অনায়াসেই আত্মরক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা সেটা না করে নির্ভয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গিয়েছেন। সেনা জওয়ানদের এই অবদান আমরা কোনওভাবেই ভুলতে পারি না। কৃতজ্ঞতাবশতই এই সমস্ত জওয়ানদের পরিবারের পাশে থাকা দরকার। মৃত জওয়ানদের পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রতিবেশীদের এগিয়ে আসা উচিত।
ওই অনুষ্ঠানে রাজনাথ সরাসরি পাকিস্তানের নাম না করে বলেন, আমাদের কিছু প্রতিবেশী দেশ নিজেদের উন্নয়নের কথা ভাবে না। সে দেশের মানুষ অনাহারে, অপুষ্টিতে দিন কাটালেও তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা করে না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হল জঙ্গিদের মদত জুগিয়ে চলা। আসলে এই প্রতিবেশী দেশটি আমাদের দেখে হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে ভারত যখন গোটা বিশ্বের সামনে নিজেদেরকে মেলে ধরেছে, গোটা বিশ্বকে বাধ্য করেছে ভারতকে সমীহ করতে তখন সেই দেশ ক্রমশ পিছিয়ে চলেছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের গায়ে কালি ছেটাতে গিয়ে তারা আরও বেশি করে একঘরে হয়ে পড়েছে কিন্তু তাতেও ওই দেশের কোন শিক্ষা নেই। লজ্জা বোধ নেই।
রাজনাথ পাকিস্তানকে কটাক্ষ করে আরও বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশের হিংসা ও উস্কানিমূলক আচরণের জন্যই আমাদের অস্ত্রশস্ত্র বাবদ বিপুল খরচ করতে হয়। কিন্তু প্রতিবেশী দেশটি যদি অস্ত্রের পিছনে না ছুটে জঙ্গিদের হাতে অর্থ তুলে দিতে গিয়ে অর্থের অপচয় না করত তবে সেই অর্থ দিয়ে তারা দেশের উন্নয়ন করতে পারত। একই কথা প্রযোজ্য আমাদের ক্ষেত্রেও। কারণ আমরাও প্রতিবছর অস্ত্র কিনতে বিপুল টাকা খরচ করি। তবে আমরা কিন্তু শখ করে এই কাজ করি না। আমরা নিজেদের আত্মরক্ষার্থেই অস্ত্র কিনে থাকি। কিন্তু আমরা যে টাকা দিয়ে প্রতিবছর অস্ত্র কিনি সেই টাকা দেশের উন্নয়নের পিছনে খরচ করা গেলে আমরা আরও অনেক এগিয়ে যেতে পারতাম।